ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ষোড়শ সংশোধনী রায়ের পর্যবেক্ষণের বিরুদ্ধে জনমত গঠনের কৌশল আ. লীগের

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:৩৬:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ অগাস্ট ২০১৭
  • / ৪১৭ বার পড়া হয়েছে

ষোড়শ সংশোধনী  রায়ের পর্যবেক্ষণের বিরুদ্ধে জনমত গঠনের কৌশল আ. লীগের
আজ আ.লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করবে বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ
সমীকরণ ডেস্ক: ষোড়শ সংশোধনী বাতিলে আপিল বিভাগের রায়ের বিষয়ে কী করা হবে, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত না হলেও এ রায়ের সঙ্গে দেওয়া পর্যবেক্ষণগুলোর বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে ‘মুক্তিযুদ্ধ একক নেতৃত্বে আসেনি’ রায়ের এই পর্যবেক্ষণ ক্ষমতাসীনদের ভীষণ ক্ষব্ধ করেছে। আর পর্যবেক্ষণে বিএনপির মিথ্যাচারের পক্ষে সাফাই করা হয়েছে বলেও মনে করে সরকারের শীর্ষ মহল।
এরই অংশ হিসেবে পর্যবেক্ষণগুলো যে অপ্রয়োজনীয় ও দুরভিসন্ধিমূলক, তা প্রতিষ্ঠিত করার পরে রায় নিয়ে মাথা ঘামাবে ক্ষমতাসীনরা। এজন্য ঢাকাসহ সারাদেশে দলের সমর্থক আইনজীবীদের মাধ্যমে সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, আলোচনা সভা করার মধ্য দিয়ে জনসচেতনতা ও জনমত তৈরির কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। দলের সম্পাদকম-লীর দুই সদস্য জানিয়েছেন, সারাদেশে আইন পেশার সঙ্গে যুক্ত নেতাদের ঢাকা থেকে এ পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে আজ শনিবার আ.লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করবে বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ।
এরআগে গত বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) আওয়ামী লীগ সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে দলের সভাপতি ও সম্পাদকম-লীর সভায় শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা প্রথমে রায়ের সঙ্গে দেওয়া পর্যবেক্ষণগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সমন্বিত কৌশল গ্রহণ করেছেন বলে দলের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর দুই জন সদস্য বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার মনে করে, আপিল বিভাগের রায়ের সঙ্গে দেওয়া পর্যবেক্ষণ একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো- পর্যবেক্ষণগুলো ভালো করে খেয়াল করলে দেখা যায়, সংবিধানের সঙ্গে কনফ্লিক্ট তৈরি করে। ফলে সরকার মনে করে, এটা ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিত ।
সম্পাদকম-লীর তিন জন নেতা বলেন, ‘রায়ের চেয়ে পর্যবেক্ষণগুলোকে অনাহুত মনে করে সরকার। ফলে পর্যবেক্ষণ নিয়ে জনমত তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ তারা বলেন, রায়ের পর্যবেক্ষণে মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক হিসেবে স্বীকৃত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। এটা জাতির জন্যে দুর্ভাগ্যজনক।’
সম্পাদকম-লীর অন্য দু’জন নেতা বলেন, ‘আমরা অনাকাঙ্খিতভাবে দেওয়া পর্যবেক্ষণগুলো নিয়ে জনমত তৈরি করব। সরকার এগুলো বাতিল করতে যথাযথ মাধ্যম অনুসরণ করে আবেদনও করবে।’ তারা বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনী পুনর্বহাল করতে করণীয় নির্ধারণ করা হবে পরে।’
অবশ্য সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, ‘পর্যবেক্ষণ রায়ের অংশ নয়। এটা মানতে হবে এমন বাধ্য বাধকতা নাই।’
জানতে চাইলে সভাপতিম-লীর সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু বলেন, ‘রায়ের সঙ্গে দেওয়া পর্যবেক্ষণ অনাহুত। এর মাধ্যমে ভিন্ন অভিপ্রায় রয়েছে বলে আমরা মনে করি। এর ফলে কিছু দায়িত্ব সরকারের  ঘাড়ে এসে পড়ে। ফলে এখানে সরকারেরও নিশ্চয়ই কিছু করণীয় থেকে যায়। চিন্তা ভাবনা করে তা করা হবে ।’
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ.ম.রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা কী করব,তা পরিকল্পনাধীন। নিশ্চয়ই একটা পদক্ষেপ তো নেওয়া হবেই।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ষোড়শ সংশোধনী রায়ের পর্যবেক্ষণের বিরুদ্ধে জনমত গঠনের কৌশল আ. লীগের

আপলোড টাইম : ০৫:৩৬:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ অগাস্ট ২০১৭

ষোড়শ সংশোধনী  রায়ের পর্যবেক্ষণের বিরুদ্ধে জনমত গঠনের কৌশল আ. লীগের
আজ আ.লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করবে বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ
সমীকরণ ডেস্ক: ষোড়শ সংশোধনী বাতিলে আপিল বিভাগের রায়ের বিষয়ে কী করা হবে, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত না হলেও এ রায়ের সঙ্গে দেওয়া পর্যবেক্ষণগুলোর বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে ‘মুক্তিযুদ্ধ একক নেতৃত্বে আসেনি’ রায়ের এই পর্যবেক্ষণ ক্ষমতাসীনদের ভীষণ ক্ষব্ধ করেছে। আর পর্যবেক্ষণে বিএনপির মিথ্যাচারের পক্ষে সাফাই করা হয়েছে বলেও মনে করে সরকারের শীর্ষ মহল।
এরই অংশ হিসেবে পর্যবেক্ষণগুলো যে অপ্রয়োজনীয় ও দুরভিসন্ধিমূলক, তা প্রতিষ্ঠিত করার পরে রায় নিয়ে মাথা ঘামাবে ক্ষমতাসীনরা। এজন্য ঢাকাসহ সারাদেশে দলের সমর্থক আইনজীবীদের মাধ্যমে সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, আলোচনা সভা করার মধ্য দিয়ে জনসচেতনতা ও জনমত তৈরির কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। দলের সম্পাদকম-লীর দুই সদস্য জানিয়েছেন, সারাদেশে আইন পেশার সঙ্গে যুক্ত নেতাদের ঢাকা থেকে এ পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে আজ শনিবার আ.লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করবে বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ।
এরআগে গত বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) আওয়ামী লীগ সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে দলের সভাপতি ও সম্পাদকম-লীর সভায় শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা প্রথমে রায়ের সঙ্গে দেওয়া পর্যবেক্ষণগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সমন্বিত কৌশল গ্রহণ করেছেন বলে দলের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর দুই জন সদস্য বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার মনে করে, আপিল বিভাগের রায়ের সঙ্গে দেওয়া পর্যবেক্ষণ একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো- পর্যবেক্ষণগুলো ভালো করে খেয়াল করলে দেখা যায়, সংবিধানের সঙ্গে কনফ্লিক্ট তৈরি করে। ফলে সরকার মনে করে, এটা ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিত ।
সম্পাদকম-লীর তিন জন নেতা বলেন, ‘রায়ের চেয়ে পর্যবেক্ষণগুলোকে অনাহুত মনে করে সরকার। ফলে পর্যবেক্ষণ নিয়ে জনমত তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ তারা বলেন, রায়ের পর্যবেক্ষণে মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক হিসেবে স্বীকৃত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। এটা জাতির জন্যে দুর্ভাগ্যজনক।’
সম্পাদকম-লীর অন্য দু’জন নেতা বলেন, ‘আমরা অনাকাঙ্খিতভাবে দেওয়া পর্যবেক্ষণগুলো নিয়ে জনমত তৈরি করব। সরকার এগুলো বাতিল করতে যথাযথ মাধ্যম অনুসরণ করে আবেদনও করবে।’ তারা বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনী পুনর্বহাল করতে করণীয় নির্ধারণ করা হবে পরে।’
অবশ্য সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, ‘পর্যবেক্ষণ রায়ের অংশ নয়। এটা মানতে হবে এমন বাধ্য বাধকতা নাই।’
জানতে চাইলে সভাপতিম-লীর সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু বলেন, ‘রায়ের সঙ্গে দেওয়া পর্যবেক্ষণ অনাহুত। এর মাধ্যমে ভিন্ন অভিপ্রায় রয়েছে বলে আমরা মনে করি। এর ফলে কিছু দায়িত্ব সরকারের  ঘাড়ে এসে পড়ে। ফলে এখানে সরকারেরও নিশ্চয়ই কিছু করণীয় থেকে যায়। চিন্তা ভাবনা করে তা করা হবে ।’
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ.ম.রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা কী করব,তা পরিকল্পনাধীন। নিশ্চয়ই একটা পদক্ষেপ তো নেওয়া হবেই।’