ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শ্রীমন্ত টাউন হল ভেঙে কোনো বাণিজ্যিক ভবন হতে দেওয়া যাবে না

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৪১:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২০
  • / ২১৭ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গায় অরিন্দম সাংস্কৃতিক উৎসবের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ
বিশেষ প্রতিবেদক:
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাংস্কৃতিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন, সাংস্কৃতিক বিকাশে উদ্যোগ নিয়েছেন। আমাদের জাতির পিতা যদি সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে পারেন, তাঁর তনয়া জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি সংস্কৃতির উন্নয়নে কাজ করতে পারেন, তবে আমরা কেনো পারব না? আর আমরা এই চুয়াডাঙ্গা জেলার ঐতিহ্যের অন্যতম ধারক-বাহক শ্রীমন্ত টাউন হল ভেঙে অট্টালিকা বানাব, শুধুমাত্র টাকার জন্য! এটি যেন না হয়। সাংস্কৃতিক কর্মীদের অন্তত একটু নিঃশ্বাস রাখার জায়গা আমাদের দিতে হবে। জেলা প্রশাসক যদি একটি চিঠি দিয়ে আমাকে জানান, তবে এটি সংস্কারে আমি সার্বিক সহযোগিতা করব। যত টাকাই লাগুক, এটি সংস্কার করে অনুষ্ঠান উপযোগী করে তুলতে হবে।’ গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা জেলা শিল্পকলা একাডেমির উন্মুক্ত মঞ্চে ‘অরিন্দম সাংস্কৃতিক সংগঠন’ আয়োজিত সাংস্কৃতিক উৎসবের উদ্বোধন পরবর্তী আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ আরও বলেন, ‘এখানকার মানুষদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম চুয়াডাঙ্গার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য একটিও হলরুম নেই। এটি একটি অবাক কাণ্ড। আমাকে বিস্মিত করেছে। আমাদের এলাকায় জেলা-উপজেলা পর্যায়েও অডিটরিয়াম আছে। যা একটি নামমাত্র শ্রীমন্ত টাউন হল রয়েছে, সেটিরও নাম মুছে ফেলা হয়েছে। এটি কিন্তু হতে দেওয়া যাবে না। সাংস্কৃতিক কর্মীদের কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য এটিকে ভেঙে একটি ১০ তলা বাণিজ্যিক ভবন বানান হবে, মার্কেট বানানো হবে! তাহলে আমাদের সংস্কৃতি যদি না থাকে, শিল্প-সাহিত্য-ঐতিহ্য যদি না থাকে, তবে অর্থ দিয়ে কী করব? ব্রিটিশদের সেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ২০০ বছর শাসন করে গেছে, প্রচুর অর্থ-প্রাচুর্যতা দেখিয়েছে। তাতে কি আমাদের ক্ষতি ছাড়া কোনো উপকার হয়েছে? তাহলে কি আমরা শুধু অর্থের পিছনেই ছুটব, সংস্কৃতিকে ধারণ ও লালন করব না? তাই যদি করব, তবে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে সংস্কৃতি নিয়ে কথা বলতেন না বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’
চুয়াডাঙ্গার সঙ্গে নিজের সম্পর্কের কথা তুলে ধরে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গার সঙ্গে আমার অনেক পুরোনো সম্পর্ক রয়েছে। এই চুয়াডাঙ্গায় অনেকগুলো সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে। সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের অনেক বরেণ্য ব্যক্তি এখানে এসেছেন এবং উজ্জ¦ল করেছেন। তাঁদের মধ্যে দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের পদচারণা উল্লেখযোগ্য। তাঁর পদচিহ্ন যেখানে পড়েছে, আমি সেখানে গিয়েছিলাম। সেটি রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে কিছু দাবি-দাওয়া করা হয়েছে। আমি বলেছি, করে দেব। এটি শুধু বলার জন্য বলিনি। সত্যি কাজে করে দেখাব। সেখানে যে ডিগ্রি কলেজটি রয়েছে, সেটি কাজী নজরুল ইসলামের নামে নামকরণ করা হবে।’
অরিন্দম সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি বজলুর রহমান জোয়ার্দ্দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক কৃষিবিদ হামিদুর রহমান, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএআরআই) মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রধান ড. সোহেলা আক্তার, জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কানাই লাল সরকার। অরিন্দম-এর সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম সৈকত ও নুঝাত পারভীনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন উৎসব উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক মো. আলাউদ্দীন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

শ্রীমন্ত টাউন হল ভেঙে কোনো বাণিজ্যিক ভবন হতে দেওয়া যাবে না

আপলোড টাইম : ১০:৪১:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২০

চুয়াডাঙ্গায় অরিন্দম সাংস্কৃতিক উৎসবের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ
বিশেষ প্রতিবেদক:
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাংস্কৃতিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন, সাংস্কৃতিক বিকাশে উদ্যোগ নিয়েছেন। আমাদের জাতির পিতা যদি সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে পারেন, তাঁর তনয়া জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি সংস্কৃতির উন্নয়নে কাজ করতে পারেন, তবে আমরা কেনো পারব না? আর আমরা এই চুয়াডাঙ্গা জেলার ঐতিহ্যের অন্যতম ধারক-বাহক শ্রীমন্ত টাউন হল ভেঙে অট্টালিকা বানাব, শুধুমাত্র টাকার জন্য! এটি যেন না হয়। সাংস্কৃতিক কর্মীদের অন্তত একটু নিঃশ্বাস রাখার জায়গা আমাদের দিতে হবে। জেলা প্রশাসক যদি একটি চিঠি দিয়ে আমাকে জানান, তবে এটি সংস্কারে আমি সার্বিক সহযোগিতা করব। যত টাকাই লাগুক, এটি সংস্কার করে অনুষ্ঠান উপযোগী করে তুলতে হবে।’ গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা জেলা শিল্পকলা একাডেমির উন্মুক্ত মঞ্চে ‘অরিন্দম সাংস্কৃতিক সংগঠন’ আয়োজিত সাংস্কৃতিক উৎসবের উদ্বোধন পরবর্তী আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ আরও বলেন, ‘এখানকার মানুষদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম চুয়াডাঙ্গার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য একটিও হলরুম নেই। এটি একটি অবাক কাণ্ড। আমাকে বিস্মিত করেছে। আমাদের এলাকায় জেলা-উপজেলা পর্যায়েও অডিটরিয়াম আছে। যা একটি নামমাত্র শ্রীমন্ত টাউন হল রয়েছে, সেটিরও নাম মুছে ফেলা হয়েছে। এটি কিন্তু হতে দেওয়া যাবে না। সাংস্কৃতিক কর্মীদের কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য এটিকে ভেঙে একটি ১০ তলা বাণিজ্যিক ভবন বানান হবে, মার্কেট বানানো হবে! তাহলে আমাদের সংস্কৃতি যদি না থাকে, শিল্প-সাহিত্য-ঐতিহ্য যদি না থাকে, তবে অর্থ দিয়ে কী করব? ব্রিটিশদের সেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ২০০ বছর শাসন করে গেছে, প্রচুর অর্থ-প্রাচুর্যতা দেখিয়েছে। তাতে কি আমাদের ক্ষতি ছাড়া কোনো উপকার হয়েছে? তাহলে কি আমরা শুধু অর্থের পিছনেই ছুটব, সংস্কৃতিকে ধারণ ও লালন করব না? তাই যদি করব, তবে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে সংস্কৃতি নিয়ে কথা বলতেন না বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’
চুয়াডাঙ্গার সঙ্গে নিজের সম্পর্কের কথা তুলে ধরে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গার সঙ্গে আমার অনেক পুরোনো সম্পর্ক রয়েছে। এই চুয়াডাঙ্গায় অনেকগুলো সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে। সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের অনেক বরেণ্য ব্যক্তি এখানে এসেছেন এবং উজ্জ¦ল করেছেন। তাঁদের মধ্যে দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের পদচারণা উল্লেখযোগ্য। তাঁর পদচিহ্ন যেখানে পড়েছে, আমি সেখানে গিয়েছিলাম। সেটি রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে কিছু দাবি-দাওয়া করা হয়েছে। আমি বলেছি, করে দেব। এটি শুধু বলার জন্য বলিনি। সত্যি কাজে করে দেখাব। সেখানে যে ডিগ্রি কলেজটি রয়েছে, সেটি কাজী নজরুল ইসলামের নামে নামকরণ করা হবে।’
অরিন্দম সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি বজলুর রহমান জোয়ার্দ্দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক কৃষিবিদ হামিদুর রহমান, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএআরআই) মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রধান ড. সোহেলা আক্তার, জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কানাই লাল সরকার। অরিন্দম-এর সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম সৈকত ও নুঝাত পারভীনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন উৎসব উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক মো. আলাউদ্দীন।