ইপেপার । আজমঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শরিফা চাষে সফল জীবননগরের সাদ্দাম

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১৩:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ অগাস্ট ২০২০
  • / ৭৮৪ বার পড়া হয়েছে

মিঠুন মাহমুদ:
জীবননগন উপজেলার প্রত্যান্ত অঞ্চলে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে শরিফা (মেওয়া ফল) চাষ করেছেন সাদ্দাম হোসেন। জীবননগর উপজেলার রায়পুর গ্রামে শরিফা থাই বারোমাসি ফল চাষ করে যাদুকরী সাফল্য পেয়েছেন তরুণ এই উদ্যোক্তা। ২০১৫ সালে লাগানো বাগানে এখন থোকায় থোকায় ঝুলছে সুন্দর সবুজ ও সোনালী রঙের সুমিষ্ট শরিফা ফল। বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক হওয়ায় শরিফা চাষে আগ্রহী হয়েছেন অনেকে। জীবননগর উপজেলার মাটি সব ফসলের জন্য উপযোগী হলেও এই প্রথম একজন শিক্ষিত উদ্যোমি চাষি রায়পুর গ্রামের রুহুল কুদ্দুসের ছেলে সাদ্দাম হোসেন শরিফা চাষ করে সফল হয়েছেন।
জানা গেছে, ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে জীবননগর উপজেলার রায়পুর গ্রামে সাড়ে তিন বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে শরিফা বারোমাসি জাতের ৪০০টি চারা রোপণ করেন কৃষক সাদ্দাম হোসেন। চারা লাগানোর পর নিবিড় পরিচর্যা ও জৈব প্রযুক্তি (কেঁচো সার) ব্যবহার করে মাত্র এক বছর বয়সে সামান্য পরিমাণ ফলন এলেও এবার প্রতিটি গাছে ৩৫ থেকে ৪০ কেজি ফল ধরছে। রায়পুর বাজারের পাশে সাদ্দামের স্বপ্নের শরিফা বাগানে গিয়ে দেখা যায়, ছোট ছোট শরিফা গাছে ঝুলছে থোকায় থোকায় ফল।
তরুণ উদ্যোক্তা সাদ্দাম হোসেন জানান, প্রথম দিকে একটু খরচ হলেও পরবর্তী বছরে গাছে ফল ধরা শুরু হয়। প্রতিটি গাছে ৩৫ থেকে ৪০ কেজি করে ফল ধরেছে। প্রতি বিঘা জমিতে বছরে খরচ হয় ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা। প্রতি কেজি ফল বিক্রয় করা হয় সাড়ে ৪ শ থেকে ৫ শ টাকা কেজি দরে। এ ফলনে দারুন খুশি তিনি। তাঁর বাগানে উৎপাদিত শরিফা ফল বিদেশ থেকে আমদানীকৃত যেকোনো ফলের চেয়ে রসালো সুস্বাদু এবং বেশি মিষ্টি। তাঁর সাফল্য দেখে অনেকে শরিফা চাষ করছেন এবং তাঁর বাগানে আসছেন মানসম্মত চারা সংগ্রহের জন্য। চলতি বছরে প্রায় ১৬ বিঘা জমিতে লাগানো চারা সরবরাহ করছেন বলে তিনি জানান। শুধু শরিফা চাষ নয়, তিনি ইতোমধ্যেই পেয়ারা ও মাল্টা নতুন করে একই সঙ্গে আপেলের চাষ শুরু করেছেন তিনি। এসব ফল নিজের বাগানে প্যাকেটজাত করে রাজধানী ঢাকার কারওয়ান বাজার, উত্তরাসহ শহরের বেশ কিছু পাইকারি ফলের আড়তে বিক্রয় করে থাকেন।
এ ব্যাপারে জীবননগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান, শরিফা চাষি সাদ্দাম হোসেন একজন সৎ কর্মঠ ও সচেতন চাষি। তিনি সম্পূর্ণ রাসায়নিকমুক্তভাবে জৈব সার এবং জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করে শরিফা চাষ করছেন। কৃষি বিভাগ তার সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে, যা আগামিতে অব্যহত থাকবে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে জীবননগর উপজেলায় ব্যাপক হারে শরিফা চাষে বিপ্লব ঘটবে। সরকারি-বেসরকারিভাবে কৃষকদের শরিফাসহ নানা ধরনের ফলের চাষে উৎসাহিত করা হলে আমদানী নির্ভরতা কমার ফলে দেশের অর্থনীতিতে দেশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

শরিফা চাষে সফল জীবননগরের সাদ্দাম

আপলোড টাইম : ০৯:১৩:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ অগাস্ট ২০২০

মিঠুন মাহমুদ:
জীবননগন উপজেলার প্রত্যান্ত অঞ্চলে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে শরিফা (মেওয়া ফল) চাষ করেছেন সাদ্দাম হোসেন। জীবননগর উপজেলার রায়পুর গ্রামে শরিফা থাই বারোমাসি ফল চাষ করে যাদুকরী সাফল্য পেয়েছেন তরুণ এই উদ্যোক্তা। ২০১৫ সালে লাগানো বাগানে এখন থোকায় থোকায় ঝুলছে সুন্দর সবুজ ও সোনালী রঙের সুমিষ্ট শরিফা ফল। বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক হওয়ায় শরিফা চাষে আগ্রহী হয়েছেন অনেকে। জীবননগর উপজেলার মাটি সব ফসলের জন্য উপযোগী হলেও এই প্রথম একজন শিক্ষিত উদ্যোমি চাষি রায়পুর গ্রামের রুহুল কুদ্দুসের ছেলে সাদ্দাম হোসেন শরিফা চাষ করে সফল হয়েছেন।
জানা গেছে, ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে জীবননগর উপজেলার রায়পুর গ্রামে সাড়ে তিন বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে শরিফা বারোমাসি জাতের ৪০০টি চারা রোপণ করেন কৃষক সাদ্দাম হোসেন। চারা লাগানোর পর নিবিড় পরিচর্যা ও জৈব প্রযুক্তি (কেঁচো সার) ব্যবহার করে মাত্র এক বছর বয়সে সামান্য পরিমাণ ফলন এলেও এবার প্রতিটি গাছে ৩৫ থেকে ৪০ কেজি ফল ধরছে। রায়পুর বাজারের পাশে সাদ্দামের স্বপ্নের শরিফা বাগানে গিয়ে দেখা যায়, ছোট ছোট শরিফা গাছে ঝুলছে থোকায় থোকায় ফল।
তরুণ উদ্যোক্তা সাদ্দাম হোসেন জানান, প্রথম দিকে একটু খরচ হলেও পরবর্তী বছরে গাছে ফল ধরা শুরু হয়। প্রতিটি গাছে ৩৫ থেকে ৪০ কেজি করে ফল ধরেছে। প্রতি বিঘা জমিতে বছরে খরচ হয় ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা। প্রতি কেজি ফল বিক্রয় করা হয় সাড়ে ৪ শ থেকে ৫ শ টাকা কেজি দরে। এ ফলনে দারুন খুশি তিনি। তাঁর বাগানে উৎপাদিত শরিফা ফল বিদেশ থেকে আমদানীকৃত যেকোনো ফলের চেয়ে রসালো সুস্বাদু এবং বেশি মিষ্টি। তাঁর সাফল্য দেখে অনেকে শরিফা চাষ করছেন এবং তাঁর বাগানে আসছেন মানসম্মত চারা সংগ্রহের জন্য। চলতি বছরে প্রায় ১৬ বিঘা জমিতে লাগানো চারা সরবরাহ করছেন বলে তিনি জানান। শুধু শরিফা চাষ নয়, তিনি ইতোমধ্যেই পেয়ারা ও মাল্টা নতুন করে একই সঙ্গে আপেলের চাষ শুরু করেছেন তিনি। এসব ফল নিজের বাগানে প্যাকেটজাত করে রাজধানী ঢাকার কারওয়ান বাজার, উত্তরাসহ শহরের বেশ কিছু পাইকারি ফলের আড়তে বিক্রয় করে থাকেন।
এ ব্যাপারে জীবননগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান, শরিফা চাষি সাদ্দাম হোসেন একজন সৎ কর্মঠ ও সচেতন চাষি। তিনি সম্পূর্ণ রাসায়নিকমুক্তভাবে জৈব সার এবং জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করে শরিফা চাষ করছেন। কৃষি বিভাগ তার সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে, যা আগামিতে অব্যহত থাকবে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে জীবননগর উপজেলায় ব্যাপক হারে শরিফা চাষে বিপ্লব ঘটবে। সরকারি-বেসরকারিভাবে কৃষকদের শরিফাসহ নানা ধরনের ফলের চাষে উৎসাহিত করা হলে আমদানী নির্ভরতা কমার ফলে দেশের অর্থনীতিতে দেশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।