ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

লিচুর গুটিতে রঙিন স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:০৯:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৯
  • / ৩৫৩ বার পড়া হয়েছে

ইকরামুল হক:
ফুল থেকে কেবল গুটিতে পরিণত হয়েছে লিচু। সবুজ সেই গুটিতেই রঙিন স্বপ্ন দেখছেন চুুয়াডাঙ্গার চাষিরা। তারা বলছেন, ফুল থেকে গুটি হতে খানিকটা সাহায্য করেছে হালকা বৃষ্টি। বৃষ্টিতে প্রাণবন্ত রয়েছে লিচুর গুটিগুলো। অন্য বছরের মতো এবার অতিরিক্ত তাপমাত্রায় লিচুর গুটি পুড়ে যাচ্ছে না, ঝরেও পড়ছে না। তাই লিচুতে এবার তারা ভালো ফলনেরই আশা করছেন চাষিরা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও ফল গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরাও একই কথা বলেছেন। তাদের বক্তব্য, আবহাওয়া এবার লিচু চাষের উপযোগী। লিচুর ফুল থাকাকালে একবার শিলাবৃষ্টি ছাড়া ক্ষতি হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি। সামনের দিনগুলোতে প্রকৃতি সহায় থাকলে লিচুতে মুনাফা করবেন চাষিরা। আর সর্বোচ্চ এক মাসের মধ্যেই বাজারে উঠবে মনজুড়ানো টসটসে লাল রঙের লিচু।
চুুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জে লিচু চাষী সেলিম আহম্মেদ জানান, এক বিঘা জমিতে তার ৩০টি লিচুর গাছ রয়েছে। এবার লিচুর প্রচুর মুকুল এসেছিল। কিন্তু কিছু ফুল ঝরে পড়েছিলো। তারপরেও এখন যে পরিমাণ লিচুর গুটি গাছে রয়েছে সেগুলো শেষ পর্যন্ত ঝরে না পড়লে তিনি লাভবান হবেন। তাই এই মুহুর্তে তিনি লিচু গাছের পরিচর্যায় কোনো ঘাটতি রাখছেন না।
চুুয়াডাঙ্গার ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা এ বিষয়ে জানিয়েছে, সাধারণত হালকা ঠা-া আবেশে লিচুর ফুল ভালো হয়। আর ফুল ফোটার পর বৃষ্টি না হলে তা ঝরেও পড়ে না। এবার ফুল আসার সময় আবহাওয়া ঠা-াই ছিল। তখন বৃষ্টিতে কিছু ফুল ঝরে পড়লেও পর্যাপ্ত গুটি এসেছে। অন্য বছরের মতো এবার গুটি রোদে পুড়ে যাচ্ছে না। লিচুর জন্য এখন কেবল তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার ভয় রয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার লিচুর বাম্পার ফলন হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার ৪৬৫ হেক্টর জমিতে লিচু বাগান রয়েছে। প্রতি হেক্টরে সাড়ে চার টন করে তারা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরেছেন। প্রতিটি বাগানের গাছগুলোতে এখন থোকায় থোকায় লিচুর সবুজ গুটি ঝুলে আছে। যার শোভায় সবুজ প্রকৃতি আরও সবুজ হয়ে উঠেছে। তারা আশা করছেন লিচুর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।
তবে গত কয়েক বছরে আমের পাশাপাশি লিচু চাষ করেও জেলার অনেক চাষি স্বনির্ভর হয়ে উঠেছেন। তাই লিচুর নতুন নতুন বাগান গড়ে উঠছে। বাগান ছাড়াও বসতবাড়িতে দেশি লিচুর পাশাপাশি উচ্চ ফলনশীল চায়না-৩, বোম্বে ও মাদ্রাজি জাতের লিচু চাষ হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গাতে বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে লিচুর চাষ শুরু হয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

লিচুর গুটিতে রঙিন স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা

আপলোড টাইম : ১২:০৯:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৯

ইকরামুল হক:
ফুল থেকে কেবল গুটিতে পরিণত হয়েছে লিচু। সবুজ সেই গুটিতেই রঙিন স্বপ্ন দেখছেন চুুয়াডাঙ্গার চাষিরা। তারা বলছেন, ফুল থেকে গুটি হতে খানিকটা সাহায্য করেছে হালকা বৃষ্টি। বৃষ্টিতে প্রাণবন্ত রয়েছে লিচুর গুটিগুলো। অন্য বছরের মতো এবার অতিরিক্ত তাপমাত্রায় লিচুর গুটি পুড়ে যাচ্ছে না, ঝরেও পড়ছে না। তাই লিচুতে এবার তারা ভালো ফলনেরই আশা করছেন চাষিরা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও ফল গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরাও একই কথা বলেছেন। তাদের বক্তব্য, আবহাওয়া এবার লিচু চাষের উপযোগী। লিচুর ফুল থাকাকালে একবার শিলাবৃষ্টি ছাড়া ক্ষতি হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি। সামনের দিনগুলোতে প্রকৃতি সহায় থাকলে লিচুতে মুনাফা করবেন চাষিরা। আর সর্বোচ্চ এক মাসের মধ্যেই বাজারে উঠবে মনজুড়ানো টসটসে লাল রঙের লিচু।
চুুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জে লিচু চাষী সেলিম আহম্মেদ জানান, এক বিঘা জমিতে তার ৩০টি লিচুর গাছ রয়েছে। এবার লিচুর প্রচুর মুকুল এসেছিল। কিন্তু কিছু ফুল ঝরে পড়েছিলো। তারপরেও এখন যে পরিমাণ লিচুর গুটি গাছে রয়েছে সেগুলো শেষ পর্যন্ত ঝরে না পড়লে তিনি লাভবান হবেন। তাই এই মুহুর্তে তিনি লিচু গাছের পরিচর্যায় কোনো ঘাটতি রাখছেন না।
চুুয়াডাঙ্গার ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা এ বিষয়ে জানিয়েছে, সাধারণত হালকা ঠা-া আবেশে লিচুর ফুল ভালো হয়। আর ফুল ফোটার পর বৃষ্টি না হলে তা ঝরেও পড়ে না। এবার ফুল আসার সময় আবহাওয়া ঠা-াই ছিল। তখন বৃষ্টিতে কিছু ফুল ঝরে পড়লেও পর্যাপ্ত গুটি এসেছে। অন্য বছরের মতো এবার গুটি রোদে পুড়ে যাচ্ছে না। লিচুর জন্য এখন কেবল তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার ভয় রয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার লিচুর বাম্পার ফলন হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার ৪৬৫ হেক্টর জমিতে লিচু বাগান রয়েছে। প্রতি হেক্টরে সাড়ে চার টন করে তারা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরেছেন। প্রতিটি বাগানের গাছগুলোতে এখন থোকায় থোকায় লিচুর সবুজ গুটি ঝুলে আছে। যার শোভায় সবুজ প্রকৃতি আরও সবুজ হয়ে উঠেছে। তারা আশা করছেন লিচুর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।
তবে গত কয়েক বছরে আমের পাশাপাশি লিচু চাষ করেও জেলার অনেক চাষি স্বনির্ভর হয়ে উঠেছেন। তাই লিচুর নতুন নতুন বাগান গড়ে উঠছে। বাগান ছাড়াও বসতবাড়িতে দেশি লিচুর পাশাপাশি উচ্চ ফলনশীল চায়না-৩, বোম্বে ও মাদ্রাজি জাতের লিচু চাষ হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গাতে বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে লিচুর চাষ শুরু হয়েছে।