ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গা সংকটে জঙ্গি উত্থানের আশঙ্কা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:৫১:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ ডিসেম্বর ২০১৬
  • / ২৯৫ বার পড়া হয়েছে

43941_f1

সমীকরণ ডেস্ক: রোহিঙ্গা সংকটে জটিল হয়ে উঠছে এ অঞ্চলের পরিস্থিতি। শরণার্থীদের ঢেউ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। এরই মধ্যে দুই বিশ্লেষক সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছেন,  রোহিঙ্গা সংকট  অবিলম্বে সমাধা করা না গেলে তা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় জঙ্গিবাদের উত্থান হতে পারে। জাসমিন্দার সিং ও মোহাম্মদ হাজিক জানি সিঙ্গাপুরের স্ট্রেইটস টাইমসে লেখা এক নিবন্ধে এ শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। মালয়েশিয়ার  সশস্ত্রবাহিনীর প্রধান জেনারেল জুলকিফেলি মোহাম্মদ জিনও একই আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গা পরিস্থিতির যদি শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধান না করা যায় তাহলে এ অঞ্চলে আইসিসের বিস্তার হতে পারে।
বিশ্লেষকরা এমন এক সময়ে এই সতর্কবার্তা উচ্চারণ করলেন, যখন জঙ্গিবাদের হুমকিতে এশিয়ার দেশগুলোকে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যে আইসিস তাদের জমি হারালে অন্য কোথাও তাদের উত্থানের আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। স্ট্রেইটস টাইমসে  লেখা নিবন্ধে সিঙ্গাপুরের নানইয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটির এস. রাজারতনম স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (আরএসআইএস)-এর ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর পলিটিক্যাল ভায়োলেন্স অ্যান্ড টেরোরিজম রিসার্চের সিনিয়র বিশ্লেষক জাসমিন্দার সিং এবং একই প্রতিষ্ঠানের গবেষণা বিম্লেষক মুহাম্মদ হাজিক জানি লিখেছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে যা ঘটছে তা শুধু মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোরই নয় বরং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কট্টরপন্থি ও জঙ্গিদেরও মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বেশির ভাগই বৌদ্ধ। আর রোহিঙ্গারা মুসলিম হওয়ায় চলমান পরিস্থিতিতে ধর্মীয় উপাদান যোগ হয়েছে। রোহিঙ্গাদের হয়ে জিহাদ করার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছে ইন্দোনেশিয়ার অনলাইন জঙ্গিরা। রোহিঙ্গা সংকট দ্রুতই পরিণত হচ্ছে জিহাদের অনুপ্রেরণায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কয়েকজন ইন্দোনেশিয়ান রোহিঙ্গাদের জন্য আত্মঘাতী হামলা চালাতে প্রস্তুত বলেও ঘোষণা দিয়েছে। এর আগে ২০১২ সালে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের পর ২০১৩ সালে ইন্দোনেশিয়ার কয়েকটি গ্রুপ সিদ্ধান্ত নেয় রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার একমাত্র সমাধান হলো জঙ্গি কর্মকা-। এদিকে, আঞ্চলিক অনলাইন জঙ্গিরা রোহিঙ্গাদের সমর্থনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা প্রচারণা চালাচ্ছে। অনেকে তাদের প্রোফাইলে আইসিসের পতাকা দিয়েছে। হ্যাশট্যাগ দিয়ে তারা পোস্ট দিচ্ছে এতে ফিলিস্তিন, আফ্রিকা, রোহিঙ্গা, ইরাক ও সিরিয়ার সংঘাতপূর্ণ এলাকাগুলোর কথা বোঝানো হয়েছে। এ স্থানগুলোর নামের আদ্যাক্ষর নিয়ে । এছাড়া, রোহিঙ্গা সংশ্লিষ্ট নানা পোস্ট ও ছবি প্রচার করছে ইন্দোনেশিয়ায় অনলাইনে সক্রিয় জঙ্গিরা। এমনকি একটা ম্যাপও তারা দিয়েছে যেখানে মিয়ানমারে প্রবেশের সম্ভাব্য রাস্তা দেখানো হয়েছে। মালয়েশিয়ানরাও রোহিঙ্গা সংকটে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। মালয়েশিয়ান এক আইসিস যোদ্ধা মুহাম্মদ ওয়ান্ডি তার সমর্থকদের আহ্বান জানিয়েছেন মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় বসবাসরত মিয়ানমারের বৌদ্ধ নাগরিকদের হত্যা করে প্রমাণ করতে যে, তারা শুধু কম্পিউটারের কী বোর্ড যোদ্ধা নয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

রোহিঙ্গা সংকটে জঙ্গি উত্থানের আশঙ্কা

আপলোড টাইম : ১২:৫১:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ ডিসেম্বর ২০১৬

43941_f1

সমীকরণ ডেস্ক: রোহিঙ্গা সংকটে জটিল হয়ে উঠছে এ অঞ্চলের পরিস্থিতি। শরণার্থীদের ঢেউ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। এরই মধ্যে দুই বিশ্লেষক সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছেন,  রোহিঙ্গা সংকট  অবিলম্বে সমাধা করা না গেলে তা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় জঙ্গিবাদের উত্থান হতে পারে। জাসমিন্দার সিং ও মোহাম্মদ হাজিক জানি সিঙ্গাপুরের স্ট্রেইটস টাইমসে লেখা এক নিবন্ধে এ শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। মালয়েশিয়ার  সশস্ত্রবাহিনীর প্রধান জেনারেল জুলকিফেলি মোহাম্মদ জিনও একই আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গা পরিস্থিতির যদি শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধান না করা যায় তাহলে এ অঞ্চলে আইসিসের বিস্তার হতে পারে।
বিশ্লেষকরা এমন এক সময়ে এই সতর্কবার্তা উচ্চারণ করলেন, যখন জঙ্গিবাদের হুমকিতে এশিয়ার দেশগুলোকে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যে আইসিস তাদের জমি হারালে অন্য কোথাও তাদের উত্থানের আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। স্ট্রেইটস টাইমসে  লেখা নিবন্ধে সিঙ্গাপুরের নানইয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটির এস. রাজারতনম স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (আরএসআইএস)-এর ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর পলিটিক্যাল ভায়োলেন্স অ্যান্ড টেরোরিজম রিসার্চের সিনিয়র বিশ্লেষক জাসমিন্দার সিং এবং একই প্রতিষ্ঠানের গবেষণা বিম্লেষক মুহাম্মদ হাজিক জানি লিখেছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে যা ঘটছে তা শুধু মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোরই নয় বরং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কট্টরপন্থি ও জঙ্গিদেরও মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বেশির ভাগই বৌদ্ধ। আর রোহিঙ্গারা মুসলিম হওয়ায় চলমান পরিস্থিতিতে ধর্মীয় উপাদান যোগ হয়েছে। রোহিঙ্গাদের হয়ে জিহাদ করার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছে ইন্দোনেশিয়ার অনলাইন জঙ্গিরা। রোহিঙ্গা সংকট দ্রুতই পরিণত হচ্ছে জিহাদের অনুপ্রেরণায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কয়েকজন ইন্দোনেশিয়ান রোহিঙ্গাদের জন্য আত্মঘাতী হামলা চালাতে প্রস্তুত বলেও ঘোষণা দিয়েছে। এর আগে ২০১২ সালে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের পর ২০১৩ সালে ইন্দোনেশিয়ার কয়েকটি গ্রুপ সিদ্ধান্ত নেয় রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার একমাত্র সমাধান হলো জঙ্গি কর্মকা-। এদিকে, আঞ্চলিক অনলাইন জঙ্গিরা রোহিঙ্গাদের সমর্থনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা প্রচারণা চালাচ্ছে। অনেকে তাদের প্রোফাইলে আইসিসের পতাকা দিয়েছে। হ্যাশট্যাগ দিয়ে তারা পোস্ট দিচ্ছে এতে ফিলিস্তিন, আফ্রিকা, রোহিঙ্গা, ইরাক ও সিরিয়ার সংঘাতপূর্ণ এলাকাগুলোর কথা বোঝানো হয়েছে। এ স্থানগুলোর নামের আদ্যাক্ষর নিয়ে । এছাড়া, রোহিঙ্গা সংশ্লিষ্ট নানা পোস্ট ও ছবি প্রচার করছে ইন্দোনেশিয়ায় অনলাইনে সক্রিয় জঙ্গিরা। এমনকি একটা ম্যাপও তারা দিয়েছে যেখানে মিয়ানমারে প্রবেশের সম্ভাব্য রাস্তা দেখানো হয়েছে। মালয়েশিয়ানরাও রোহিঙ্গা সংকটে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। মালয়েশিয়ান এক আইসিস যোদ্ধা মুহাম্মদ ওয়ান্ডি তার সমর্থকদের আহ্বান জানিয়েছেন মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় বসবাসরত মিয়ানমারের বৌদ্ধ নাগরিকদের হত্যা করে প্রমাণ করতে যে, তারা শুধু কম্পিউটারের কী বোর্ড যোদ্ধা নয়।