ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গা শিবিরে নতুন সংকট

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২৫:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০১৯
  • / ২৬০ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের জন্য রোহিঙ্গা সমস্যা এখন বড় একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি আশ্রয় গ্রহণকারী মিয়ানমারের এই জনগোষ্ঠী একেবারেই শ্রদ্ধাশীল নয়। কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরগুলোতে নতুন নতুন সন্ত্রাসী গ্রুপ গড়ে উঠছে। মিয়ানমার সরকারের মদদে এসব সন্ত্রাসী গ্রুপ সশস্ত্র তৎপরতা চালাতে শুরু করেছে। গতকাল একটি জাতীয় পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরের পরিস্থিতি ক্রমেই হানাহানির দিকে মোড় নিচ্ছে। শিবিরের অভ্যন্তরে গড়ে উঠছে সশস্ত্র গ্রুপ। রাতেই শুধু নয়, দিনের বেলায়ই চলছে অস্ত্রের ঝনঝনানি। পরস্পরবিরোধী গ্রুপগুলো মুখোমুখি অবস্থান নেওয়ায় উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তে তিনটি রোহিঙ্গা শিবির উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। খুনাখুনি, অপহরণ, গুম, লুটপাটসহ নানা জঘন্য অপরাধের ঘটনা ঘটেছে সেখানে। এরই মধ্যে বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঠেকিয়ে দিয়েছেন সেনা সদস্যরা। মিয়ানমারের আরসা বা আরএসও নামের সংগঠনের সদস্যরা রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে নতুন নামে সংগঠন করেছে। একটি ডাকাত বাহিনীও রোহিঙ্গা শিবিরে ত্রাস হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। মিয়ানমার সরকার সরাসরি এসব সন্ত্রাসী সংগঠনাকে মদদ জোগাচ্ছে। প্রত্যাবাসন বন্ধ রেখে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গড়ে ওঠা রোহিঙ্গা শিবিরে সশস্ত্র সংগঠন তৈরির পেছনেও রয়েছে সুদূরপ্রসারী চিন্তা। এখানে সশস্ত্র গ্রুপগুলো সক্রিয় হলে রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী হিসেবে প্রমাণ করা সহজ হবে। তখন সন্ত্রাসীদের প্রত্যাবাসনের বিরুদ্ধে অভিমত গড়ে তুলতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে যেতে পারবে তারা। আর সে কারণেই এসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে ইন্ধন জুগিয়ে যাচ্ছে তারা। একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবরে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। রয়েছে এসব গ্রুপের কাছে থাকা অস্ত্রের বিবরণও। এসব খবর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদেরও অজানা নয়। তাঁদের কাছেও রয়েছে অনেক তথ্য-প্রমাণ।
আপাতত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিলেও বাংলাদেশের মতো একটি দুর্বল অর্থনীতির দেশ দীর্ঘদিন রোহিঙ্গাদের ভার বহন করতে পারবে না। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা-ের সঙ্গে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশের যোগসাজশ রয়েছে। নতুন নতুন নেটওয়ার্কও তৈরি হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে গড়ে উঠছে নতুন নেটওয়ার্ক, তৈরি করা হচ্ছে নতুন নতুন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, যাদের অপরাধমূলক কর্মকা-ে নিরীহ রোহিঙ্গারা শুধু নয়, কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দারাও সন্ত্রস্ত। এ অবস্থায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। রোহিঙ্গা শিবিরে যেসব গ্রুপ সন্ত্রাসী কর্মকা- পরিচালনা করছে, তাদের পরিচয়ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জানা আছে। এসব গ্রুপের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান পরিচালনার কোনো বিকল্প নেই। রোহিঙ্গা শিবিরের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে সর্বাত্মক অভিযান পরিচালনার কোনো বিকল্প দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আছে বলে মনে হয় না। আমরা আশা করব, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুত রোহিঙ্গা শিবিরগুলোর অবৈধ অস্ত্র ও সন্ত্রাসীমুক্ত করবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

রোহিঙ্গা শিবিরে নতুন সংকট

আপলোড টাইম : ০৯:২৫:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০১৯

বাংলাদেশের জন্য রোহিঙ্গা সমস্যা এখন বড় একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি আশ্রয় গ্রহণকারী মিয়ানমারের এই জনগোষ্ঠী একেবারেই শ্রদ্ধাশীল নয়। কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরগুলোতে নতুন নতুন সন্ত্রাসী গ্রুপ গড়ে উঠছে। মিয়ানমার সরকারের মদদে এসব সন্ত্রাসী গ্রুপ সশস্ত্র তৎপরতা চালাতে শুরু করেছে। গতকাল একটি জাতীয় পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরের পরিস্থিতি ক্রমেই হানাহানির দিকে মোড় নিচ্ছে। শিবিরের অভ্যন্তরে গড়ে উঠছে সশস্ত্র গ্রুপ। রাতেই শুধু নয়, দিনের বেলায়ই চলছে অস্ত্রের ঝনঝনানি। পরস্পরবিরোধী গ্রুপগুলো মুখোমুখি অবস্থান নেওয়ায় উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তে তিনটি রোহিঙ্গা শিবির উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। খুনাখুনি, অপহরণ, গুম, লুটপাটসহ নানা জঘন্য অপরাধের ঘটনা ঘটেছে সেখানে। এরই মধ্যে বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঠেকিয়ে দিয়েছেন সেনা সদস্যরা। মিয়ানমারের আরসা বা আরএসও নামের সংগঠনের সদস্যরা রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে নতুন নামে সংগঠন করেছে। একটি ডাকাত বাহিনীও রোহিঙ্গা শিবিরে ত্রাস হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। মিয়ানমার সরকার সরাসরি এসব সন্ত্রাসী সংগঠনাকে মদদ জোগাচ্ছে। প্রত্যাবাসন বন্ধ রেখে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গড়ে ওঠা রোহিঙ্গা শিবিরে সশস্ত্র সংগঠন তৈরির পেছনেও রয়েছে সুদূরপ্রসারী চিন্তা। এখানে সশস্ত্র গ্রুপগুলো সক্রিয় হলে রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী হিসেবে প্রমাণ করা সহজ হবে। তখন সন্ত্রাসীদের প্রত্যাবাসনের বিরুদ্ধে অভিমত গড়ে তুলতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে যেতে পারবে তারা। আর সে কারণেই এসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে ইন্ধন জুগিয়ে যাচ্ছে তারা। একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবরে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। রয়েছে এসব গ্রুপের কাছে থাকা অস্ত্রের বিবরণও। এসব খবর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদেরও অজানা নয়। তাঁদের কাছেও রয়েছে অনেক তথ্য-প্রমাণ।
আপাতত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিলেও বাংলাদেশের মতো একটি দুর্বল অর্থনীতির দেশ দীর্ঘদিন রোহিঙ্গাদের ভার বহন করতে পারবে না। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা-ের সঙ্গে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশের যোগসাজশ রয়েছে। নতুন নতুন নেটওয়ার্কও তৈরি হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে গড়ে উঠছে নতুন নেটওয়ার্ক, তৈরি করা হচ্ছে নতুন নতুন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, যাদের অপরাধমূলক কর্মকা-ে নিরীহ রোহিঙ্গারা শুধু নয়, কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দারাও সন্ত্রস্ত। এ অবস্থায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। রোহিঙ্গা শিবিরে যেসব গ্রুপ সন্ত্রাসী কর্মকা- পরিচালনা করছে, তাদের পরিচয়ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জানা আছে। এসব গ্রুপের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান পরিচালনার কোনো বিকল্প নেই। রোহিঙ্গা শিবিরের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে সর্বাত্মক অভিযান পরিচালনার কোনো বিকল্প দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আছে বলে মনে হয় না। আমরা আশা করব, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুত রোহিঙ্গা শিবিরগুলোর অবৈধ অস্ত্র ও সন্ত্রাসীমুক্ত করবে।