ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গাদের নিয়ে সাগরে ট্রলার ডুবি, নিহত ১৫

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:২০:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • / ২৩৩ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন
অবৈধভাবে সাগর পাড়ি দিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে বঙ্গোপসাগরের সেন্টমার্টিনের কাছে ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৫ রোহিঙ্গা নাগরিকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১১ জনই নারী ও ৪ জন শিশু রয়েছে। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৭২ জনকে। দালালের মাধ্যমে রোহিঙ্গা শিবির থেকে সাগরপথে মালয়েশিয়া যাচ্ছিলেন তারা। জানা যায়, গতকাল ভোররাতে রোহিঙ্গাদের বহনকারী একটি ট্রলার অবৈধ ভাবে সাগর পাড়ি দিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে ডুবে যায়। ডুবে যাওয়ার প্রাক্কালে কয়েকজন সাঁতরিয়ে কূলে আসার পর বিষয়টি জানা যায়। বাহারছড়া উপকূল হয়ে ছেড়ে আসা ২টি ট্রলার সেন্টমার্টিনের দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের অদূরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ডুবে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড পূর্ব জোনের সেন্টমার্টিন বিসিজি ক্যাম্পের একটি দল উদ্ধার অভিযানে যায়।
এ সময় সাগরে ১টি ডুবে গেলেও নৌবাহিনীর ডুবুরি দল, কোস্টগার্ডের উদ্ধারকারী টিম, বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় অপর ১টি ট্রলার এবং সাগর থেকে ভাসমান ১১ জন নারী, ৪ জন শিশুর মৃতদেহ এবং ৭২ জন নারী-পুরুষ ও শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে ৪৬ জন নারী ও ২৬ জন পুরুষ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। অনেকে আবার সাঁতরিয়ে উপকূলে উঠে গাঢাকা দিয়েছে বলে জানা গেছে।
কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মালয়েশিয়াগামী খালেদা বেগম (৩৫) জানান, তার স্বামী মালয়েশিয়া রয়েছেন। সেখানে তার ছেলে মো. শাহাদ ও মেয়ে নাছিমাকে নিয়ে গত রোববার রাতে মালয়েশিয়া পাড়ি দিতে সাগর পথে রওনা হয়। রাত আনুমানিক তিনটার দিকে ট্রলার ডুবে গেলে সে ডুবন্ত ট্রলারের কাঠ ধরে কোনোমতে প্রাণে বাঁচলেও দুই সন্তানকে চিরতরে হারায়। উদ্ধারকৃতরা আরো জানায়, তাদের সঙ্গে প্রায় ১শ’ ৩৮ জন যাত্রী ছিল। তারা সকলে উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা এবং কয়েকজন বাংলাদেশি। এদের মধ্যে নারী, শিশু ও পুরুষ রয়েছে। কোস্টগার্ডের অপর একটি আভিযানিক দল ডুবে যাওয়া ট্রলারটি উদ্ধার এবং সাগরে জীবিত বা মৃতদেহ উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে। মৃতদেহ আরো বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সেন্টমার্টিনস্থ নৌবাহিনীর লে. কমান্ডার এসএম জায়েদুল ইসলাম জানান, সর্বশেষ বিকাল ৫টা পর্যন্ত ১৫ জনের মৃতদেহ এবং ৭২ জনকে জীবিত উদ্ধার করে সেন্টমার্টিনে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর টেকনাফে নিয়ে আসার প্রক্রিয়াধীন এবং এখনো অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
কোস্টগার্ডের সেন্টমার্টিনস্থ উদ্ধারকারী অফিসার মো. দেলোয়ার জানান, ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ২ দালালকে আটক করা হয়েছে। আটককৃত দালালরা জানিয়েছেন, প্রতিজন মালয়েশিয়াগামী থেকে ৩০ হাজার টাকা করে নেয়া হয়েছে। এরা সকলকে টেকনাফ সাগর উপকূলীয় এলাকা বাহারছড়ার নোয়াখালী, জুম্মাপাড়া, কচ্চপিয়া, বাঘঘোনা বাজার, টেকনাফ সদরের রাজারছড়া, লম্বরী, তুলাতুলি, হাবিরছড়া, মিঠাপানিরছড়াসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্ট থেকে ছোট ফিশিং ট্রলারে করে গভীর সাগরে অপেক্ষমাণ বড় ট্রলারে মালয়েশিয়া পাচারের জন্য উঠানো হয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

রোহিঙ্গাদের নিয়ে সাগরে ট্রলার ডুবি, নিহত ১৫

আপলোড টাইম : ১০:২০:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২০

সমীকরণ প্রতিবেদন
অবৈধভাবে সাগর পাড়ি দিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে বঙ্গোপসাগরের সেন্টমার্টিনের কাছে ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৫ রোহিঙ্গা নাগরিকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১১ জনই নারী ও ৪ জন শিশু রয়েছে। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৭২ জনকে। দালালের মাধ্যমে রোহিঙ্গা শিবির থেকে সাগরপথে মালয়েশিয়া যাচ্ছিলেন তারা। জানা যায়, গতকাল ভোররাতে রোহিঙ্গাদের বহনকারী একটি ট্রলার অবৈধ ভাবে সাগর পাড়ি দিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে ডুবে যায়। ডুবে যাওয়ার প্রাক্কালে কয়েকজন সাঁতরিয়ে কূলে আসার পর বিষয়টি জানা যায়। বাহারছড়া উপকূল হয়ে ছেড়ে আসা ২টি ট্রলার সেন্টমার্টিনের দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের অদূরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ডুবে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড পূর্ব জোনের সেন্টমার্টিন বিসিজি ক্যাম্পের একটি দল উদ্ধার অভিযানে যায়।
এ সময় সাগরে ১টি ডুবে গেলেও নৌবাহিনীর ডুবুরি দল, কোস্টগার্ডের উদ্ধারকারী টিম, বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় অপর ১টি ট্রলার এবং সাগর থেকে ভাসমান ১১ জন নারী, ৪ জন শিশুর মৃতদেহ এবং ৭২ জন নারী-পুরুষ ও শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে ৪৬ জন নারী ও ২৬ জন পুরুষ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। অনেকে আবার সাঁতরিয়ে উপকূলে উঠে গাঢাকা দিয়েছে বলে জানা গেছে।
কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মালয়েশিয়াগামী খালেদা বেগম (৩৫) জানান, তার স্বামী মালয়েশিয়া রয়েছেন। সেখানে তার ছেলে মো. শাহাদ ও মেয়ে নাছিমাকে নিয়ে গত রোববার রাতে মালয়েশিয়া পাড়ি দিতে সাগর পথে রওনা হয়। রাত আনুমানিক তিনটার দিকে ট্রলার ডুবে গেলে সে ডুবন্ত ট্রলারের কাঠ ধরে কোনোমতে প্রাণে বাঁচলেও দুই সন্তানকে চিরতরে হারায়। উদ্ধারকৃতরা আরো জানায়, তাদের সঙ্গে প্রায় ১শ’ ৩৮ জন যাত্রী ছিল। তারা সকলে উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা এবং কয়েকজন বাংলাদেশি। এদের মধ্যে নারী, শিশু ও পুরুষ রয়েছে। কোস্টগার্ডের অপর একটি আভিযানিক দল ডুবে যাওয়া ট্রলারটি উদ্ধার এবং সাগরে জীবিত বা মৃতদেহ উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে। মৃতদেহ আরো বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সেন্টমার্টিনস্থ নৌবাহিনীর লে. কমান্ডার এসএম জায়েদুল ইসলাম জানান, সর্বশেষ বিকাল ৫টা পর্যন্ত ১৫ জনের মৃতদেহ এবং ৭২ জনকে জীবিত উদ্ধার করে সেন্টমার্টিনে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর টেকনাফে নিয়ে আসার প্রক্রিয়াধীন এবং এখনো অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
কোস্টগার্ডের সেন্টমার্টিনস্থ উদ্ধারকারী অফিসার মো. দেলোয়ার জানান, ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ২ দালালকে আটক করা হয়েছে। আটককৃত দালালরা জানিয়েছেন, প্রতিজন মালয়েশিয়াগামী থেকে ৩০ হাজার টাকা করে নেয়া হয়েছে। এরা সকলকে টেকনাফ সাগর উপকূলীয় এলাকা বাহারছড়ার নোয়াখালী, জুম্মাপাড়া, কচ্চপিয়া, বাঘঘোনা বাজার, টেকনাফ সদরের রাজারছড়া, লম্বরী, তুলাতুলি, হাবিরছড়া, মিঠাপানিরছড়াসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্ট থেকে ছোট ফিশিং ট্রলারে করে গভীর সাগরে অপেক্ষমাণ বড় ট্রলারে মালয়েশিয়া পাচারের জন্য উঠানো হয়।