ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

রোজায় দেহের কল্যাণ মনের প্রশান্তি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১৮:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০১৯
  • / ২৫৭ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক:
আল্লাহ বলেন, শাহরু রামাদ্বানাল্লাজি উনজিলা ফিহিল কোরআনা হুদাল্লিন্নাস- রমজান সেই মাস, যে মাসে কোরআন নাজিল হয়েছে মানুষের হেদায়েতের জন্য। কিন্তু রমজান আসে রমজান যায়, মানুষ হেদায়েত থেকে দূরে সরে যাচ্ছে কেন? রমজান এলে নিত্যপণ্যের মূল্য কেন বাড়ে? রোজা ফরজ হয়েছে মুত্তাকি হওয়ার জন্য। আল্লাহ বলেন, কুতিবা আলাইকুমুস সিয়াম- তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে। কামা কুতিবা আলাল্লাজিনা মিন কাবলিকুম- তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর যেমন ফরজ ছিল। লাআল্লাকুম তাত্তাকুন- যেন তোমরা মুত্তাকি হতে পারো। কিন্তু মুত্তাকি হতে পারি না বলেই রমজানের ফায়দা থেকে বঞ্চিত হই। রহমতের দশকের শেষদিকে আমরা চলে এসেছি। কিন্তু মুত্তাকি কি হতে পেরেছি? না মুত্তাকি সেজে আছি? আমাদের মনে রাখতে হবেম সাজুগুজু ইবাদতের কোনো দাম নেই খোদার কাছে। নবীজি (সা.) বলেন, হাশরের ময়দানে তার চেয়ে নিঃস্ব আর কেউ হবে না, যার আমলনামায় নামাজ, রোজা, হজ ও যাকাতের কমতি নেই, কিন্তু ইবাদতে এখলাসের অভাবে আল্লাহর কাছে তার কোনো মূল্য থাকবে না। মুত্তাকি হলেই আমল-এখলাস সমৃদ্ধ হয়। মুত্তাকি হওয়ার জন্য রোজা হল অব্যর্থ ওষুধতুল্য। আমাদের জন্য সুস্বাস্থ্য সবচেয়ে বড় নেয়ামত ও রহমত। রোজা আমাদের শরীরে জমা অনেক টক্সিন বিনাশ করে শরীরকে চাঙ্গা করে। চিকিৎসাবিজ্ঞান স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে, রোজায় একজন রোজাদারের শরীরের বিবিধ কল্যাণ সাধিত হয়। কিছুদিন আগেও মনে করা হতো, রোজার একমাত্র উপকারিতা হচ্ছে- হজম শক্তিতে আরাম পাওয়া। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নতির কারণে আমরা আজ জানতে পেরেছি- রোজা সত্যিই একটি অসাধারণ মোজেজা। এটি চিকিৎসাবিজ্ঞানের জন্য একটি বিস্ময়। ইসলাম রোজাকে মুমিনের জন্য তাকওয়া অর্জনের মাধ্যম হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিফা বা আরোগ্যের ব্যবস্থা বলে আখ্যায়িত করেছে। এ বিষয়ে ভিন্নধর্মীদের মতামতও তুলে ধরা হল। ১৭৬৯ সালে মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. পিটার ভেনিয়ামিনভ রোজা নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেন। সেই রিপোর্টে তিনি মানুষকে রোজা রাখার উপদেশ দেন। তার যুক্তি হল, রোজার কারণে পরিপাকতন্ত্র একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিশ্রাম পায়। ফলে ইফতার করার পর তা ঠিকমতো নিজের কাজ চালাতে পারে। মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম শিক্ষক ড. পিজি স্পাসকি বলেন, রোজার মাধ্যমে কালাজ্বর এবং শরীরের অন্য পুরনো রোগ ওষুধ ছাড়াই ভালো হয়ে যায়। ইতালির বিখ্যাত শিল্পী মাইকেল অ্যাঞ্জেলো ভালো স্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন। ৯০ বছর পার হওয়ার পরও তিনি কর্মক্ষম এবং কর্মঠ ছিলেন। তাকে এর রহস্য জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি বহুবছর আগ থেকে মাঝেমধ্যে রোজা রেখে এসেছি। আমি প্রত্যেক বছর ১ মাস এবং প্রতিমাসে ১ সপ্তাহ রোজা পালন করেছি।’ আমেরিকান চিন্তাবিদ গ্রেগরি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও ক্লাবে তার বক্তৃতায় রোজা রাখার কথা বলতেন। তিনি বলতেন, রোজার মাধ্যমে শরীরের পবিত্রতা অর্জন হয় এবং শরীরের ক্ষতিকর জিনিসগুলো দূর হয়। আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট এবং এরিস্টটল এ দু’জন মাঝেমধ্যে ক্ষুধার্ত বা উপবাস থাকাকে দেহের সুস্থতা-সবলতার জন্য খুবই প্রয়োজনীয় মনে করতেন। আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট বলেন, যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় দু’বেলা আহার করে, সে রোগমুক্ত স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে পারে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

রোজায় দেহের কল্যাণ মনের প্রশান্তি

আপলোড টাইম : ০৯:১৮:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০১৯

ধর্ম ডেস্ক:
আল্লাহ বলেন, শাহরু রামাদ্বানাল্লাজি উনজিলা ফিহিল কোরআনা হুদাল্লিন্নাস- রমজান সেই মাস, যে মাসে কোরআন নাজিল হয়েছে মানুষের হেদায়েতের জন্য। কিন্তু রমজান আসে রমজান যায়, মানুষ হেদায়েত থেকে দূরে সরে যাচ্ছে কেন? রমজান এলে নিত্যপণ্যের মূল্য কেন বাড়ে? রোজা ফরজ হয়েছে মুত্তাকি হওয়ার জন্য। আল্লাহ বলেন, কুতিবা আলাইকুমুস সিয়াম- তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে। কামা কুতিবা আলাল্লাজিনা মিন কাবলিকুম- তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর যেমন ফরজ ছিল। লাআল্লাকুম তাত্তাকুন- যেন তোমরা মুত্তাকি হতে পারো। কিন্তু মুত্তাকি হতে পারি না বলেই রমজানের ফায়দা থেকে বঞ্চিত হই। রহমতের দশকের শেষদিকে আমরা চলে এসেছি। কিন্তু মুত্তাকি কি হতে পেরেছি? না মুত্তাকি সেজে আছি? আমাদের মনে রাখতে হবেম সাজুগুজু ইবাদতের কোনো দাম নেই খোদার কাছে। নবীজি (সা.) বলেন, হাশরের ময়দানে তার চেয়ে নিঃস্ব আর কেউ হবে না, যার আমলনামায় নামাজ, রোজা, হজ ও যাকাতের কমতি নেই, কিন্তু ইবাদতে এখলাসের অভাবে আল্লাহর কাছে তার কোনো মূল্য থাকবে না। মুত্তাকি হলেই আমল-এখলাস সমৃদ্ধ হয়। মুত্তাকি হওয়ার জন্য রোজা হল অব্যর্থ ওষুধতুল্য। আমাদের জন্য সুস্বাস্থ্য সবচেয়ে বড় নেয়ামত ও রহমত। রোজা আমাদের শরীরে জমা অনেক টক্সিন বিনাশ করে শরীরকে চাঙ্গা করে। চিকিৎসাবিজ্ঞান স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে, রোজায় একজন রোজাদারের শরীরের বিবিধ কল্যাণ সাধিত হয়। কিছুদিন আগেও মনে করা হতো, রোজার একমাত্র উপকারিতা হচ্ছে- হজম শক্তিতে আরাম পাওয়া। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নতির কারণে আমরা আজ জানতে পেরেছি- রোজা সত্যিই একটি অসাধারণ মোজেজা। এটি চিকিৎসাবিজ্ঞানের জন্য একটি বিস্ময়। ইসলাম রোজাকে মুমিনের জন্য তাকওয়া অর্জনের মাধ্যম হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিফা বা আরোগ্যের ব্যবস্থা বলে আখ্যায়িত করেছে। এ বিষয়ে ভিন্নধর্মীদের মতামতও তুলে ধরা হল। ১৭৬৯ সালে মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. পিটার ভেনিয়ামিনভ রোজা নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেন। সেই রিপোর্টে তিনি মানুষকে রোজা রাখার উপদেশ দেন। তার যুক্তি হল, রোজার কারণে পরিপাকতন্ত্র একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিশ্রাম পায়। ফলে ইফতার করার পর তা ঠিকমতো নিজের কাজ চালাতে পারে। মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম শিক্ষক ড. পিজি স্পাসকি বলেন, রোজার মাধ্যমে কালাজ্বর এবং শরীরের অন্য পুরনো রোগ ওষুধ ছাড়াই ভালো হয়ে যায়। ইতালির বিখ্যাত শিল্পী মাইকেল অ্যাঞ্জেলো ভালো স্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন। ৯০ বছর পার হওয়ার পরও তিনি কর্মক্ষম এবং কর্মঠ ছিলেন। তাকে এর রহস্য জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি বহুবছর আগ থেকে মাঝেমধ্যে রোজা রেখে এসেছি। আমি প্রত্যেক বছর ১ মাস এবং প্রতিমাসে ১ সপ্তাহ রোজা পালন করেছি।’ আমেরিকান চিন্তাবিদ গ্রেগরি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও ক্লাবে তার বক্তৃতায় রোজা রাখার কথা বলতেন। তিনি বলতেন, রোজার মাধ্যমে শরীরের পবিত্রতা অর্জন হয় এবং শরীরের ক্ষতিকর জিনিসগুলো দূর হয়। আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট এবং এরিস্টটল এ দু’জন মাঝেমধ্যে ক্ষুধার্ত বা উপবাস থাকাকে দেহের সুস্থতা-সবলতার জন্য খুবই প্রয়োজনীয় মনে করতেন। আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট বলেন, যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় দু’বেলা আহার করে, সে রোগমুক্ত স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে পারে।