ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

রাজিবকে যাবজ্জীবনসহ ৯ জনের ১৪ বছরের জেল!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১৭:০৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ মে ২০১৯
  • / ৩১৮ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গার হিজলগাড়ী বাজারে ডাকাতির প্রস্তুতিসহ চারটি মামলার রায় ঘোষণা
বিশেষ প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা সদরের হিজলগাড়ী বাজারে একটি হোটেলে বসে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে অস্ত্র ও বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ আটক ৮ জনকে ৭ বছর করে কারাদন্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। সেই সঙ্গে ৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও ৩ মাসের সশ্রম কারাদন্ড ঘোষণা করা হয়েছে। একইদিন চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় ভুয়া পুরোহিত সেজে স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ মামলায় পলাতক রাজিব শেখ নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। সে ফরিদপুর জেলার শিবরামপুর গ্রামের শহিদুল শেখের ছেলে। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক পৃথক এজলাসে এ রায় ঘোষণা করেন।
এদিকে ডাকাতির প্রস্তুতি ও বিস্ফোরকের দুটি মামলায় ১৪ বছর করে সাজা প্রাপ্ত আসামীরা হলেন- ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মহালয়া গ্রামের আজিবর আলীর দুই ছেলে কুরবান আলী (৩২) ও লোকমান আলী (২৪), একই গ্রামের মৃত জামাত আলীর ছেলে তরিকুল ইসলাম (৩২), গোপালপুর গ্রামের মৃত এলেম মন্ডলের ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক (২৪), কোটচাঁদপুর উপজেলার রুদ্রপুর গ্রামের আফজাল মন্ডলের ছেলে লাল চাঁদ (২৮), আসাদুল মন্ডলের ছেলে সোহানুর রহমান জনি (২৫), কলম আলীর ছেলে আকিমুল ইসলাম (২৫) ও লালমনিরহাট জেলার ভাটিবাড়ি গ্রামের জামিনুর রহমানের ছেলে শহিদুল ইসলাম সজিব (২৪)।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৯ আগস্ট সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানাধীন হিজলগাড়ী বাজারের সংগ্রাম হোটেলে বসে গোপণ বৈঠক করছিল একদল ডাকাত। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই আশরাফুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চালিয়ে ৮ জনকে আটক করেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি পুরাতন লোহার তৈরি দেশীয় ৬ বোর রিভলবার ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। ঘটনার রাতেই তাদেরকে সদর থানা হেফাজতে নিয়ে এসআই আশরাফুল ইসলাম বাদী হয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি, অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্যদি আইনে তিনটি মামলা দায়ের করে পরদিন আদালতে প্রেরণ করেন। এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের এসআই জগদীশ চন্দ্র বসু তদন্ত শেষে একই বছরের ১৪ নভেম্বর গ্রেফতারকৃত আটজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চূড়ান্ত অভিযোগপত্র দাখিল করেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক রবিউল ইসলাম এ মামলায় মোট ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও যাচাই শেষে ডাকাতির প্রস্তুতি এবং বিস্ফোরক মামলায় প্রত্যেকের সাত বছর করে ১৪ বছর কারাদন্ডাদে দেন। এছাড়া প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। রায় ঘোষণার সময় আসামী শহিদুল ইসলাম সজিব ও আবু বক্কর পলাতক ছিলেন। অপর অস্ত্র মামলায় সবাইকে খালাস দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে ভুয়া পুরোহিত সেজে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের এক স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ মামলায় রাজিব শেখ নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক জিয়া হায়দার।
এ প্রসঙ্গে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. শামসুজ্জোহা বলেন, ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসের মাঝাঁমাঝি সময়ে ফরিদপুরের গোয়ালচামট গ্রামের এক পুরোহিত তার স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার বিষ্ণুপুর গ্রামে বেড়াতে আসেন। ১৬ অক্টোবর বিকালে রাজিব শেখ নামে স্থানীয় এক বখাটে যুবক পুরোহিত বেশে ওই পুরোহিতের স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরদিন ওই পুরোহিত দামুড়হুদা থানায় মেয়েকে অপহরণের অভিযোগ এনে যুবক রাজিব শেখকে আসামি করে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। দামুড়হুদা থানা পুলিশ এ মামলার তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ১৭ নভেম্বর একমাত্র আসামি রাজিব শেখকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আলোচিত এ মামলার বিজ্ঞ বিচারক মোট ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও যাচাই শেষে একমাত্র আসামি রাজিব শেখকে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ডাদেশ দেন। তবে রায় ঘোষণার সময় উক্ত মামলার একমাত্র আসামী রাজিব শেখ পলাতক ছিলেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

রাজিবকে যাবজ্জীবনসহ ৯ জনের ১৪ বছরের জেল!

আপলোড টাইম : ১০:১৭:০৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ মে ২০১৯

চুয়াডাঙ্গার হিজলগাড়ী বাজারে ডাকাতির প্রস্তুতিসহ চারটি মামলার রায় ঘোষণা
বিশেষ প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা সদরের হিজলগাড়ী বাজারে একটি হোটেলে বসে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে অস্ত্র ও বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ আটক ৮ জনকে ৭ বছর করে কারাদন্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। সেই সঙ্গে ৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও ৩ মাসের সশ্রম কারাদন্ড ঘোষণা করা হয়েছে। একইদিন চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় ভুয়া পুরোহিত সেজে স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ মামলায় পলাতক রাজিব শেখ নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। সে ফরিদপুর জেলার শিবরামপুর গ্রামের শহিদুল শেখের ছেলে। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক পৃথক এজলাসে এ রায় ঘোষণা করেন।
এদিকে ডাকাতির প্রস্তুতি ও বিস্ফোরকের দুটি মামলায় ১৪ বছর করে সাজা প্রাপ্ত আসামীরা হলেন- ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মহালয়া গ্রামের আজিবর আলীর দুই ছেলে কুরবান আলী (৩২) ও লোকমান আলী (২৪), একই গ্রামের মৃত জামাত আলীর ছেলে তরিকুল ইসলাম (৩২), গোপালপুর গ্রামের মৃত এলেম মন্ডলের ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক (২৪), কোটচাঁদপুর উপজেলার রুদ্রপুর গ্রামের আফজাল মন্ডলের ছেলে লাল চাঁদ (২৮), আসাদুল মন্ডলের ছেলে সোহানুর রহমান জনি (২৫), কলম আলীর ছেলে আকিমুল ইসলাম (২৫) ও লালমনিরহাট জেলার ভাটিবাড়ি গ্রামের জামিনুর রহমানের ছেলে শহিদুল ইসলাম সজিব (২৪)।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৯ আগস্ট সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানাধীন হিজলগাড়ী বাজারের সংগ্রাম হোটেলে বসে গোপণ বৈঠক করছিল একদল ডাকাত। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই আশরাফুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চালিয়ে ৮ জনকে আটক করেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি পুরাতন লোহার তৈরি দেশীয় ৬ বোর রিভলবার ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। ঘটনার রাতেই তাদেরকে সদর থানা হেফাজতে নিয়ে এসআই আশরাফুল ইসলাম বাদী হয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি, অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্যদি আইনে তিনটি মামলা দায়ের করে পরদিন আদালতে প্রেরণ করেন। এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের এসআই জগদীশ চন্দ্র বসু তদন্ত শেষে একই বছরের ১৪ নভেম্বর গ্রেফতারকৃত আটজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চূড়ান্ত অভিযোগপত্র দাখিল করেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক রবিউল ইসলাম এ মামলায় মোট ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও যাচাই শেষে ডাকাতির প্রস্তুতি এবং বিস্ফোরক মামলায় প্রত্যেকের সাত বছর করে ১৪ বছর কারাদন্ডাদে দেন। এছাড়া প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। রায় ঘোষণার সময় আসামী শহিদুল ইসলাম সজিব ও আবু বক্কর পলাতক ছিলেন। অপর অস্ত্র মামলায় সবাইকে খালাস দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে ভুয়া পুরোহিত সেজে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের এক স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ মামলায় রাজিব শেখ নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক জিয়া হায়দার।
এ প্রসঙ্গে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. শামসুজ্জোহা বলেন, ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসের মাঝাঁমাঝি সময়ে ফরিদপুরের গোয়ালচামট গ্রামের এক পুরোহিত তার স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার বিষ্ণুপুর গ্রামে বেড়াতে আসেন। ১৬ অক্টোবর বিকালে রাজিব শেখ নামে স্থানীয় এক বখাটে যুবক পুরোহিত বেশে ওই পুরোহিতের স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরদিন ওই পুরোহিত দামুড়হুদা থানায় মেয়েকে অপহরণের অভিযোগ এনে যুবক রাজিব শেখকে আসামি করে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। দামুড়হুদা থানা পুলিশ এ মামলার তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ১৭ নভেম্বর একমাত্র আসামি রাজিব শেখকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আলোচিত এ মামলার বিজ্ঞ বিচারক মোট ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও যাচাই শেষে একমাত্র আসামি রাজিব শেখকে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ডাদেশ দেন। তবে রায় ঘোষণার সময় উক্ত মামলার একমাত্র আসামী রাজিব শেখ পলাতক ছিলেন।