ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নযোগ্য বাজেট করুন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১৯:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ মে ২০২০
  • / ১৫২ বার পড়া হয়েছে

বাজেট আসছে। কারোনাভাইরাসের আঘাতের এবারের বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন অত্যন্ত কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। এরই মধ্যে করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনীতিতে সৃষ্ট ক্ষত ক্রমেই দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। বিশ্বব্যাপী চাহিদা কমে যাওয়ায় দেশের রপ্তানি আয়ে ধস নেমেছে। গত অর্থবছরের এপ্রিলের চেয়ে চলতি অর্থবছরের এপ্রিল মাসে রপ্তানি আয় কম হয়েছে প্রায় ৮৩ শতাংশ। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি ভালো ছিল না। প্রকাশিত খবর বলছে, ওই সময়ে প্রত্যাশা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হয়নি। ফলে ঘাটতি বেড়ে যায়। স্বাভাবিক অবস্থায় চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি মাত্র ৬ শতাংশ। মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে এনবিআর দুই লাখ ২১ হাজার কোটি টাকার বিপরীতে আদায় করতে পেরেছে মাত্র এক লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ এরই মধ্যেই ৫৬ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা শুরু থেকেই অবশ্য বলে আসছিলেন এ বছর একটা বড় ধরনের ঘাটতি আসবে। করোনাভাইরাসের প্রভাবে ঘাটতি আরো বেশি হতে পারে বলে অর্থনীতিবিদদের ধারণা। কারণ অঘোষিত লকডাউনে উৎপাদন বন্ধ। পণ্য চলাচল বাধাগ্রস্ত, তাই বিক্রি নেই। সীমিত পণ্য আমদানি হলেও চাহিদা না থাকায় খালাস হচ্ছে না। ফলে শুল্ক আদায় হচ্ছে না কাঙ্ক্ষিত হারে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানের চাকা ঘুরছে না; তাই কম্পানির আয় নেই। ফলে আয়করের খাতাও খালি। দোকানপাট ও সেবা প্রতিষ্ঠানে তালা, বিক্রি নেই। ফলে ভ্যাট আদায়ও তলানিতে। প্রকাশিত খবর অনুযায়ী পুরো অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের দীর্ঘমেয়াদি স্থবিরতায় সরকারের আয় বা রাজস্বে রীতিমতো খরা চলছে। আর এই অবস্থায় অর্থ মন্ত্রণালয় বিপুল রাজস্ব আয়ের স্বপ্ন দেখছে; হিসাব কষছে বড় অঙ্কের রাজস্ব আদায়ের। প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, এই অঙ্ক প্রায় তিন লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের রাজস্ব প্রাক্কলন সম্পূর্ণ অসম্ভব ও অবাস্তব। এবার রীতি মেনে বড় লক্ষ্যমাত্রার রাজস্ব দেওয়ার মতো অবস্থা নেই। শিল্পের উৎপাদন নেই, কম্পানির আয় নেই। ব্যাংকের গ্রাহকদের ঋণের কিস্তি স্থগিত করা হয়েছে। দুই মাসের জন্য সুদ মওকুফ করা হয়েছে। ফলে ব্যাংকেরও আয় কমে গেছে। এ রকম অবস্থায় অর্জন করা যাবে, এমন লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা উচিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। আমরা মনে করি সহজে বাস্তবায়নযোগ্য বাজেট করা উচিত।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নযোগ্য বাজেট করুন

আপলোড টাইম : ১০:১৯:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ মে ২০২০

বাজেট আসছে। কারোনাভাইরাসের আঘাতের এবারের বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন অত্যন্ত কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। এরই মধ্যে করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনীতিতে সৃষ্ট ক্ষত ক্রমেই দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। বিশ্বব্যাপী চাহিদা কমে যাওয়ায় দেশের রপ্তানি আয়ে ধস নেমেছে। গত অর্থবছরের এপ্রিলের চেয়ে চলতি অর্থবছরের এপ্রিল মাসে রপ্তানি আয় কম হয়েছে প্রায় ৮৩ শতাংশ। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি ভালো ছিল না। প্রকাশিত খবর বলছে, ওই সময়ে প্রত্যাশা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হয়নি। ফলে ঘাটতি বেড়ে যায়। স্বাভাবিক অবস্থায় চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি মাত্র ৬ শতাংশ। মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে এনবিআর দুই লাখ ২১ হাজার কোটি টাকার বিপরীতে আদায় করতে পেরেছে মাত্র এক লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ এরই মধ্যেই ৫৬ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা শুরু থেকেই অবশ্য বলে আসছিলেন এ বছর একটা বড় ধরনের ঘাটতি আসবে। করোনাভাইরাসের প্রভাবে ঘাটতি আরো বেশি হতে পারে বলে অর্থনীতিবিদদের ধারণা। কারণ অঘোষিত লকডাউনে উৎপাদন বন্ধ। পণ্য চলাচল বাধাগ্রস্ত, তাই বিক্রি নেই। সীমিত পণ্য আমদানি হলেও চাহিদা না থাকায় খালাস হচ্ছে না। ফলে শুল্ক আদায় হচ্ছে না কাঙ্ক্ষিত হারে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানের চাকা ঘুরছে না; তাই কম্পানির আয় নেই। ফলে আয়করের খাতাও খালি। দোকানপাট ও সেবা প্রতিষ্ঠানে তালা, বিক্রি নেই। ফলে ভ্যাট আদায়ও তলানিতে। প্রকাশিত খবর অনুযায়ী পুরো অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের দীর্ঘমেয়াদি স্থবিরতায় সরকারের আয় বা রাজস্বে রীতিমতো খরা চলছে। আর এই অবস্থায় অর্থ মন্ত্রণালয় বিপুল রাজস্ব আয়ের স্বপ্ন দেখছে; হিসাব কষছে বড় অঙ্কের রাজস্ব আদায়ের। প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, এই অঙ্ক প্রায় তিন লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের রাজস্ব প্রাক্কলন সম্পূর্ণ অসম্ভব ও অবাস্তব। এবার রীতি মেনে বড় লক্ষ্যমাত্রার রাজস্ব দেওয়ার মতো অবস্থা নেই। শিল্পের উৎপাদন নেই, কম্পানির আয় নেই। ব্যাংকের গ্রাহকদের ঋণের কিস্তি স্থগিত করা হয়েছে। দুই মাসের জন্য সুদ মওকুফ করা হয়েছে। ফলে ব্যাংকেরও আয় কমে গেছে। এ রকম অবস্থায় অর্জন করা যাবে, এমন লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা উচিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। আমরা মনে করি সহজে বাস্তবায়নযোগ্য বাজেট করা উচিত।