ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মোস্তাফিজ ম্যাজিকে জিতল রাজশাহী

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫৫:৪৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ জানুয়ারী ২০১৯
  • / ৯৩০ বার পড়া হয়েছে

খেলাধুলা ডেস্ক: আরো একবার বল হাতে জাদু দেখালেন মোস্তাফিজুর রহমান। সুইং-কাটারে বিভ্রান্ত করলেন ফরহাদ রেজা-ইনফর্ম রাইলি রুশোকে। শেষ ওভারে জয়ের জন্য রংপুর রাইডার্সের দরকার ছিল মাত্র ৯ রান। সেখানে কাটার মাস্টারের ওভারে তারা নিতে পারলেন কেবল ৩ রান। ফিজের অবিশ্বাস্য বোলিংয়ে ৫ রানে জিতল রাজশাহী কিংস। ১৩৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে সূচনাটা ভালো হয়নি রংপুরে। সবাইকে অবাক করে দিয়ে ওপেনিংয়ে নামেন মাশরাফি। কিন্তু কিছুই করতে পারেননি তিনি। রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন কামরুল ইসলাম রাব্বির শিকার হয়ে। পরক্ষণেই ঝড় তোলেন ক্রিস গেইল। রীতিমতো কামরুল ইসলাম রাব্বিকে কোপাতে থাকেন তিনি। তবে কোপটা বেশিক্ষণ দাগাতে পারেননি ক্যারিবীয় দানব। সেই রাব্বির শিকার হয়েই ফেরেন টি-টোয়েন্টি কিং। ফেরার আগে ১৪ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ২৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। তৃতীয় উইকেটে রাইলি রুশোকে নিয়ে এগিয়ে যান মোহাম্মদ মিথুন। একপর্যায়ে জমাট বেঁধে ওঠে তাদের জুটি। তাতে দুরন্ত গতিতে ছোটে রংপুর। ভালো খেলতে খেলতে তাৎক্ষণিক থেমে যান মিথুন। মোহাম্মদ হাফিজের বলে লরি ইভানসের দুর্দান্ত ক্যাচ হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। ফেরার আগে খেলেন ৩১ বলে ২ ছক্কায় ৩০ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস। তবে দায়িত্বের পরিচয় দিতে পারেননি রবি বোপারা। দ্য প্রফেসরখ্যাত হাফিজের বলে পরিষ্কার বোল্ড হয়ে ফিনিশ হন তিনি। পরক্ষণেই রানআউট হয়ে ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন বেনি হাওয়েল। এরপর ইসরু উদানার বলে আউট হন নাহিদুল ইসলাম। এতে খেলা জমে ওঠে। ধারাবাহিক বিরতিতে ব্যাটসম্যানরা ফিরলেও থেকে যান রুশো। এবারের বিপিএলে ফর্মের মগডালে আছেন তিনি। আতংক হয়ে ছিলেন এ আফ্রিকানই। তবে শেষ ওভারে মোস্তাফিজের মাত্র ২ বল মোকাবেলার সুযোগ পান তিনি। নিতে পারেন সবে ২ রান। আর ৪ বল খেলেন ফরহাদ। তিনি কোনো রানই নিতে পারেননি। তার পায়ে লেগে আসে ১ রান। শেষ পর্যন্ত ফিজের ম্যাজিকাল বোলিংয়ে ৫ রানে জেতে রাজশাহী। নিজেদের সবশেষ ম্যাচে পরাজয় বরণ করে দুই দলই। ফলে জয়ের খোঁজে ছিল উভয়ই। সেই লক্ষ্যে টস ভাগ্যকে পাশে পান মাশরাফি বিন মুর্তজা। টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন রংপুর রাইডার্স অধিনায়ক। ফলে প্রথমে ব্যাট করতে নামে মেহেদী হাসান মিরাজের রাজশাহী কিংস। তবে শুরুটা শুভ হয়নি বরেন্দ্রভূমির দলটির। দুই অধিনায়কের লড়াইয়ে হার মানেন মিরাজ। সূচনালগ্নেই মাশরাফির শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ওয়ানডাউনে নামা সৌম্য সরকারকে নিয়ে শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন মুমিনুল হক। তবে ধৈর্যের পরিচয় দিতে পারেননি তিনি। ক্রিজ ছেড়ে সোহাগ গাজীকে তেড়েফুঁড়ে মারতে এসে মোহাম্মদ মিথুনের স্ট্যাম্পিং হয়ে ফেরেন পয়েট অব ডায়নামো। মুমিনুল ফিরলে স্থায়ী হতে পারেননি সৌম্যও। তার ঘাড়েও চেপে বসে অশুভ ভূত। অযাচিতভাবে মাশরাফিকে ওভার বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ফরহাদ রেজাকে তিনি ক্যাচ দিয়ে এলে চাপে পড়ে রাজশাহী। পরে জাকির হাসানকে নিয়ে তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন মোহাম্মদ হাফিজ। দারুণ খেলছিলেন তারা। দুজনের মধ্যে ভালো মেলবন্ধনও গড়ে উঠেছিল। ফলে চাপ কাটিয়ে উঠছিল উত্তরবঙ্গের দলটি। তবে হঠাই খেই হারান হাফিজ। ২৯ বলে ১ চারে ব্যক্তিগত ২৬ করে রানআউটে কাটা পড়েন তিনি। এ পরিস্থিতিতে রেজার শিকারে পরিণত হন লরি ইভান্স। আর রায়ান টেন ডেসকাট রানআউট হলে ফের চাপে পড়ে রাজশাহী। এর মধ্যে রেজার বলির পাঁঠা হন ইসুরু উদানা। সেই জের না কাটতেই শফিউল ইসলামের বলে ক্লিন বোল্ড হন আরাফাত সানি। একে একে সবাই যাওয়া-আসার মধ্যে যোগ দিলেও একপ্রান্ত আগলে থেকে যান জাকির। তার ৩৬ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৪২ রানের লড়াকু ইনিংসে শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে ১৩৫ রান তুলতে সামর্থ্য হয় রাজশাহী। রংপুরের হয়ে মাশরাফি ও ফরহাদ নেন ২টি করে উইকেট।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

মোস্তাফিজ ম্যাজিকে জিতল রাজশাহী

আপলোড টাইম : ০৯:৫৫:৪৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ জানুয়ারী ২০১৯

খেলাধুলা ডেস্ক: আরো একবার বল হাতে জাদু দেখালেন মোস্তাফিজুর রহমান। সুইং-কাটারে বিভ্রান্ত করলেন ফরহাদ রেজা-ইনফর্ম রাইলি রুশোকে। শেষ ওভারে জয়ের জন্য রংপুর রাইডার্সের দরকার ছিল মাত্র ৯ রান। সেখানে কাটার মাস্টারের ওভারে তারা নিতে পারলেন কেবল ৩ রান। ফিজের অবিশ্বাস্য বোলিংয়ে ৫ রানে জিতল রাজশাহী কিংস। ১৩৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে সূচনাটা ভালো হয়নি রংপুরে। সবাইকে অবাক করে দিয়ে ওপেনিংয়ে নামেন মাশরাফি। কিন্তু কিছুই করতে পারেননি তিনি। রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন কামরুল ইসলাম রাব্বির শিকার হয়ে। পরক্ষণেই ঝড় তোলেন ক্রিস গেইল। রীতিমতো কামরুল ইসলাম রাব্বিকে কোপাতে থাকেন তিনি। তবে কোপটা বেশিক্ষণ দাগাতে পারেননি ক্যারিবীয় দানব। সেই রাব্বির শিকার হয়েই ফেরেন টি-টোয়েন্টি কিং। ফেরার আগে ১৪ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ২৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। তৃতীয় উইকেটে রাইলি রুশোকে নিয়ে এগিয়ে যান মোহাম্মদ মিথুন। একপর্যায়ে জমাট বেঁধে ওঠে তাদের জুটি। তাতে দুরন্ত গতিতে ছোটে রংপুর। ভালো খেলতে খেলতে তাৎক্ষণিক থেমে যান মিথুন। মোহাম্মদ হাফিজের বলে লরি ইভানসের দুর্দান্ত ক্যাচ হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। ফেরার আগে খেলেন ৩১ বলে ২ ছক্কায় ৩০ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস। তবে দায়িত্বের পরিচয় দিতে পারেননি রবি বোপারা। দ্য প্রফেসরখ্যাত হাফিজের বলে পরিষ্কার বোল্ড হয়ে ফিনিশ হন তিনি। পরক্ষণেই রানআউট হয়ে ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন বেনি হাওয়েল। এরপর ইসরু উদানার বলে আউট হন নাহিদুল ইসলাম। এতে খেলা জমে ওঠে। ধারাবাহিক বিরতিতে ব্যাটসম্যানরা ফিরলেও থেকে যান রুশো। এবারের বিপিএলে ফর্মের মগডালে আছেন তিনি। আতংক হয়ে ছিলেন এ আফ্রিকানই। তবে শেষ ওভারে মোস্তাফিজের মাত্র ২ বল মোকাবেলার সুযোগ পান তিনি। নিতে পারেন সবে ২ রান। আর ৪ বল খেলেন ফরহাদ। তিনি কোনো রানই নিতে পারেননি। তার পায়ে লেগে আসে ১ রান। শেষ পর্যন্ত ফিজের ম্যাজিকাল বোলিংয়ে ৫ রানে জেতে রাজশাহী। নিজেদের সবশেষ ম্যাচে পরাজয় বরণ করে দুই দলই। ফলে জয়ের খোঁজে ছিল উভয়ই। সেই লক্ষ্যে টস ভাগ্যকে পাশে পান মাশরাফি বিন মুর্তজা। টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন রংপুর রাইডার্স অধিনায়ক। ফলে প্রথমে ব্যাট করতে নামে মেহেদী হাসান মিরাজের রাজশাহী কিংস। তবে শুরুটা শুভ হয়নি বরেন্দ্রভূমির দলটির। দুই অধিনায়কের লড়াইয়ে হার মানেন মিরাজ। সূচনালগ্নেই মাশরাফির শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ওয়ানডাউনে নামা সৌম্য সরকারকে নিয়ে শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন মুমিনুল হক। তবে ধৈর্যের পরিচয় দিতে পারেননি তিনি। ক্রিজ ছেড়ে সোহাগ গাজীকে তেড়েফুঁড়ে মারতে এসে মোহাম্মদ মিথুনের স্ট্যাম্পিং হয়ে ফেরেন পয়েট অব ডায়নামো। মুমিনুল ফিরলে স্থায়ী হতে পারেননি সৌম্যও। তার ঘাড়েও চেপে বসে অশুভ ভূত। অযাচিতভাবে মাশরাফিকে ওভার বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ফরহাদ রেজাকে তিনি ক্যাচ দিয়ে এলে চাপে পড়ে রাজশাহী। পরে জাকির হাসানকে নিয়ে তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন মোহাম্মদ হাফিজ। দারুণ খেলছিলেন তারা। দুজনের মধ্যে ভালো মেলবন্ধনও গড়ে উঠেছিল। ফলে চাপ কাটিয়ে উঠছিল উত্তরবঙ্গের দলটি। তবে হঠাই খেই হারান হাফিজ। ২৯ বলে ১ চারে ব্যক্তিগত ২৬ করে রানআউটে কাটা পড়েন তিনি। এ পরিস্থিতিতে রেজার শিকারে পরিণত হন লরি ইভান্স। আর রায়ান টেন ডেসকাট রানআউট হলে ফের চাপে পড়ে রাজশাহী। এর মধ্যে রেজার বলির পাঁঠা হন ইসুরু উদানা। সেই জের না কাটতেই শফিউল ইসলামের বলে ক্লিন বোল্ড হন আরাফাত সানি। একে একে সবাই যাওয়া-আসার মধ্যে যোগ দিলেও একপ্রান্ত আগলে থেকে যান জাকির। তার ৩৬ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৪২ রানের লড়াকু ইনিংসে শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে ১৩৫ রান তুলতে সামর্থ্য হয় রাজশাহী। রংপুরের হয়ে মাশরাফি ও ফরহাদ নেন ২টি করে উইকেট।