ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মুজিবনগরে পুলিশের তাড়া’য় পানিতে ডুবে ফলব্যবসায়ীর মৃত্যু

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:০২:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মার্চ ২০১৭
  • / ৩৬৩ বার পড়া হয়েছে

20170306_105629

মুজিবনগর প্রতিনিধি: পুলিশের তাড়া খেয়ে পানিতে ডুবে আলমগীর হোসেন (৪৫) নামের এক ফল ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। রবিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার রসিকপুর গ্রামে পুলিশের তাড়া খেয়ে ভৈরব নদীতে ঝাপ দেয়ার পর সোমবার ভোর ৫টার দিকে স্থানীয়রা ভৈরব নদী থেকে আলমগীরের মরদেহ উদ্ধার করে। তার মৃত্যুর জন্য পুলিশকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা। আলমগীর হোসেন ভোলা জেলার ইলিশা জংশন বাজারের আব্দুর রবের ছেলে এবং রসিকপুর গ্রামের আনিছুর রহমানের বিয়াই ও আমিরুল ইসলামের শ্বশুর। তিনি ঢাকার একজন ফলব্যবসায়ী। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আলমগীর হোসেন আম-লিচু ব্যবসায়ী হওয়ায় এ অঞ্চলে আম-লিচুর বাগান  কিনে ব্যবসা করতেন এবং ব্যবসায়ীক প্রয়োজনে মাঝে মধ্যেই তিনি এই এলাকায় আসলে রশিকপুরে তার বেয়াই বাড়ি থাকতেন। তার সাথে সকলেরই সুসম্পর্ক ছিলো। গতরাত সাড়ে ৯টার দিকে বেয়াই বাড়িতে খাওয়া দাওয়া শেষে রশিকপুর গ্রামের ভৈরব নদীর ধারে মোতালেব হোসেনের চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন আর তাস খেলা দেখছিলেন। তখন রাত সাড়ে ১১টার দিকে মুজিবনগর থানা পুলিশের একটি দল তাদের ধাওয়া দেয়। পুলিশের ভয়ে তাস খেলোয়াড়সহ দোকানে বসে থাকা লোকজন দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এরমধ্যে আলমগীর হোসেনসহ কয়েকজন কোন দিশা না পেয়ে পাশের ভৈরব নদীতে ঝাপ দেয়। এসময় নদী থেকে খোকন ও বাবুকে পুলিশ আটক করলেও আলমগীরের কোন হদিস মেলেনি। পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে পুলিশ খোকন ও বাবুকে ছেড়ে দিলে তারা এসে বলে যে আলমগীর নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিল। কিন্তু তাকে নদী থেকে উঠতে কেউ দেখেনি। এ কথা শোনার পর স্থানীয়রা তাকে খোজাখুজি শুরু করলে সকাল সাড়ে ৫টার দিকে তার মরদেহ নদী থেকে উদ্ধার করা হয়। আলমগীরের বিয়াই আনিছুর খাঁ ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, নদী থেকে তাদের আটক করার চেষ্টাকালে পুলিশ সেখানে কাউকে যেতে দেয়নি। আলমগীর হয়তো সাঁতার জানতেন না। এ কারণে পানিতে ডুবে তার মৃত্যু হয়েছে। তার মৃত্যুর জন্য পুলিশকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা। এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে মুজিবনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী কামাল হোসেন জানান, মাদকের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযানের অংশ হিসাবে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। চায়ের দোকানের লোকজন পুলিশ দেখে পালাতে শুরু করে। এ সময় পুলিশ  দুজনকে আটক করে কিন্তু তাদের কাছে মাদক দ্রব্য ও জুয়া খেলার কোন আলামত না পাওয়ায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। আলমগীর যে ডুবে গেছে পুলিশ তা জানত না, সকালে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ হেফাজতে নেয়। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ এবং ময়নাতদন্তের পরে লাশ তার আতœীয়স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সহকারি পুলিশ সুপার আহসান হাবিব জানান আলমগীর পুলিশের তাড়া খেয়ে পানিতে ঝাঁপ দিয়েছিল কি-না তা তদন্ত করে দেখা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

মুজিবনগরে পুলিশের তাড়া’য় পানিতে ডুবে ফলব্যবসায়ীর মৃত্যু

আপলোড টাইম : ০৫:০২:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মার্চ ২০১৭

20170306_105629

মুজিবনগর প্রতিনিধি: পুলিশের তাড়া খেয়ে পানিতে ডুবে আলমগীর হোসেন (৪৫) নামের এক ফল ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। রবিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার রসিকপুর গ্রামে পুলিশের তাড়া খেয়ে ভৈরব নদীতে ঝাপ দেয়ার পর সোমবার ভোর ৫টার দিকে স্থানীয়রা ভৈরব নদী থেকে আলমগীরের মরদেহ উদ্ধার করে। তার মৃত্যুর জন্য পুলিশকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা। আলমগীর হোসেন ভোলা জেলার ইলিশা জংশন বাজারের আব্দুর রবের ছেলে এবং রসিকপুর গ্রামের আনিছুর রহমানের বিয়াই ও আমিরুল ইসলামের শ্বশুর। তিনি ঢাকার একজন ফলব্যবসায়ী। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আলমগীর হোসেন আম-লিচু ব্যবসায়ী হওয়ায় এ অঞ্চলে আম-লিচুর বাগান  কিনে ব্যবসা করতেন এবং ব্যবসায়ীক প্রয়োজনে মাঝে মধ্যেই তিনি এই এলাকায় আসলে রশিকপুরে তার বেয়াই বাড়ি থাকতেন। তার সাথে সকলেরই সুসম্পর্ক ছিলো। গতরাত সাড়ে ৯টার দিকে বেয়াই বাড়িতে খাওয়া দাওয়া শেষে রশিকপুর গ্রামের ভৈরব নদীর ধারে মোতালেব হোসেনের চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন আর তাস খেলা দেখছিলেন। তখন রাত সাড়ে ১১টার দিকে মুজিবনগর থানা পুলিশের একটি দল তাদের ধাওয়া দেয়। পুলিশের ভয়ে তাস খেলোয়াড়সহ দোকানে বসে থাকা লোকজন দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এরমধ্যে আলমগীর হোসেনসহ কয়েকজন কোন দিশা না পেয়ে পাশের ভৈরব নদীতে ঝাপ দেয়। এসময় নদী থেকে খোকন ও বাবুকে পুলিশ আটক করলেও আলমগীরের কোন হদিস মেলেনি। পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে পুলিশ খোকন ও বাবুকে ছেড়ে দিলে তারা এসে বলে যে আলমগীর নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিল। কিন্তু তাকে নদী থেকে উঠতে কেউ দেখেনি। এ কথা শোনার পর স্থানীয়রা তাকে খোজাখুজি শুরু করলে সকাল সাড়ে ৫টার দিকে তার মরদেহ নদী থেকে উদ্ধার করা হয়। আলমগীরের বিয়াই আনিছুর খাঁ ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, নদী থেকে তাদের আটক করার চেষ্টাকালে পুলিশ সেখানে কাউকে যেতে দেয়নি। আলমগীর হয়তো সাঁতার জানতেন না। এ কারণে পানিতে ডুবে তার মৃত্যু হয়েছে। তার মৃত্যুর জন্য পুলিশকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা। এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে মুজিবনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী কামাল হোসেন জানান, মাদকের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযানের অংশ হিসাবে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। চায়ের দোকানের লোকজন পুলিশ দেখে পালাতে শুরু করে। এ সময় পুলিশ  দুজনকে আটক করে কিন্তু তাদের কাছে মাদক দ্রব্য ও জুয়া খেলার কোন আলামত না পাওয়ায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। আলমগীর যে ডুবে গেছে পুলিশ তা জানত না, সকালে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ হেফাজতে নেয়। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ এবং ময়নাতদন্তের পরে লাশ তার আতœীয়স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সহকারি পুলিশ সুপার আহসান হাবিব জানান আলমগীর পুলিশের তাড়া খেয়ে পানিতে ঝাঁপ দিয়েছিল কি-না তা তদন্ত করে দেখা হবে।