ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মারধরের ভিডিও ভাইরাল, শিমুল আটক

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৪৪:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জুলাই ২০২০
  • / ১৬৭ বার পড়া হয়েছে

মাদকাসক্ত পিতার কাণ্ড, নিজের দুই শিশুসন্তানকে বেঁধে
ঝিনাইদহ অফিস:
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের দুইটি অবুঝ শিশু সন্তানকে নির্দয়ভাবে পিটমোড়া দিয়ে বেঁধে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় পাষণ্ড পিতা হাবিবুর রহমান শিমুলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ধানহাড়িয়া গ্রামে।
পুলিশ ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, মাদকসেবী স্বামী শিমুলের অত্যাচারে ঘর ছেড়ে পিতার বাড়িতে আশ্রয় নেন স্ত্রী শিরিন সুলতানা। স্ত্রী বাড়িতে না আসায় দুই সন্তানকে চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে তা ভিডিও ধারণ করে স্ত্রীর কাছে পাঠান স্বামী। স্ত্রী শিরিন সুলতানা দুইসন্তানকে নির্দয়ভাবে পেটানোর দৃশ্য দেখে আর ঠিক থাকতে পারেননি। তিনি ইবধঁঃরভঁষ ঔযবহধরফধয নামের একটি ফেসবুক পেইজের অ্যাডমিনের কাছে ভিডিওটি পাঠিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্ট করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। গতকাল মঙ্গলবার ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল বাশারের নজরে আসলে তিনি দ্রুত শিশু নির্যাতনকারী পিতাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। ভিডিওটিতে দেখা যায়, নিজের দুই সন্তানকে চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে লাঠি দিয়ে মারধর করছেন পিতা শিমুল। সেই সঙ্গে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলছেন, ‘তোর মা আমার কথা শোনে না কেন?’ শিশুসন্তানকে দিয়ে শিমুল ঘর মোছানোর কাজও করাচ্ছেন।
গ্রামবাসী জানান, ঝিনাইদহ শহর সংলগ্ন ধানহাড়িয়া গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে হাবিবুর রহমান শিমুলের সঙ্গে বিয়ে হয় শহরের আরাপপুর এলাকার শিরিন সুলতানার। তাঁদের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে শিরিনকে মারধর ও অত্যাচার করে আসছিলেন শিমুল। অত্যাচার সইতে না পেরে সন্তানদের রেখে পিতার বাড়িতে চলে যান শিরিন। দুই বছর আগে তাঁদের ছাড়াছাড়ি হয়। তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে আবার বাড়ি ফিরিয়ে আনার দাবিতে ফন্দি আঁটে শিমুল। সোমবার সন্তানদের চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে মারধর ও নির্যাতনের ভিডিও পাঠান স্ত্রীর কাছে। শিরিন সুলতানা জানান, বিয়ের পর থেকে শিমুল তাঁকে মারধর করতেন। এ নিয়ে কয়েকবার শালিস বৈঠক হয়েছে। তাঁর স্বভাব পরিবর্তন না হওয়ায় তিনি তাঁকে তালাক দিয়ে পিতার বাড়িতে চলে এসেছেন। কিন্তু এখন ওদের বাবা তাঁদের ওপর চরম অত্যাচার শুরু করেছে। শিমুল নেশা করেন। তাঁর শ্বশুরও বলেছেন, ‘তুমি এখানে আসলে শিমুল তোমাকে খুন করে ফেলবে।’ সোমবার সাবেক স্বামী শিমুল ভিডিও করে তাঁর কাছে পাঠান। তিনি ফেসবুকে দিয়ে এর প্রতিকার চেয়েছি। এখন তিনি তাঁর বাচ্চাদেরকে তাঁর কাছে রাখতে চান।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল বাশার খবরের সত্যতা স্বীকার করে জানান, এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শিশু নির্যাতনকারী পিতাকে থানায় আনা হয়েছে। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ছেলে দুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। পিতা শিমুলকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

মারধরের ভিডিও ভাইরাল, শিমুল আটক

আপলোড টাইম : ১০:৪৪:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জুলাই ২০২০

মাদকাসক্ত পিতার কাণ্ড, নিজের দুই শিশুসন্তানকে বেঁধে
ঝিনাইদহ অফিস:
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের দুইটি অবুঝ শিশু সন্তানকে নির্দয়ভাবে পিটমোড়া দিয়ে বেঁধে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় পাষণ্ড পিতা হাবিবুর রহমান শিমুলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ধানহাড়িয়া গ্রামে।
পুলিশ ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, মাদকসেবী স্বামী শিমুলের অত্যাচারে ঘর ছেড়ে পিতার বাড়িতে আশ্রয় নেন স্ত্রী শিরিন সুলতানা। স্ত্রী বাড়িতে না আসায় দুই সন্তানকে চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে তা ভিডিও ধারণ করে স্ত্রীর কাছে পাঠান স্বামী। স্ত্রী শিরিন সুলতানা দুইসন্তানকে নির্দয়ভাবে পেটানোর দৃশ্য দেখে আর ঠিক থাকতে পারেননি। তিনি ইবধঁঃরভঁষ ঔযবহধরফধয নামের একটি ফেসবুক পেইজের অ্যাডমিনের কাছে ভিডিওটি পাঠিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্ট করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। গতকাল মঙ্গলবার ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল বাশারের নজরে আসলে তিনি দ্রুত শিশু নির্যাতনকারী পিতাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। ভিডিওটিতে দেখা যায়, নিজের দুই সন্তানকে চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে লাঠি দিয়ে মারধর করছেন পিতা শিমুল। সেই সঙ্গে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলছেন, ‘তোর মা আমার কথা শোনে না কেন?’ শিশুসন্তানকে দিয়ে শিমুল ঘর মোছানোর কাজও করাচ্ছেন।
গ্রামবাসী জানান, ঝিনাইদহ শহর সংলগ্ন ধানহাড়িয়া গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে হাবিবুর রহমান শিমুলের সঙ্গে বিয়ে হয় শহরের আরাপপুর এলাকার শিরিন সুলতানার। তাঁদের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে শিরিনকে মারধর ও অত্যাচার করে আসছিলেন শিমুল। অত্যাচার সইতে না পেরে সন্তানদের রেখে পিতার বাড়িতে চলে যান শিরিন। দুই বছর আগে তাঁদের ছাড়াছাড়ি হয়। তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে আবার বাড়ি ফিরিয়ে আনার দাবিতে ফন্দি আঁটে শিমুল। সোমবার সন্তানদের চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে মারধর ও নির্যাতনের ভিডিও পাঠান স্ত্রীর কাছে। শিরিন সুলতানা জানান, বিয়ের পর থেকে শিমুল তাঁকে মারধর করতেন। এ নিয়ে কয়েকবার শালিস বৈঠক হয়েছে। তাঁর স্বভাব পরিবর্তন না হওয়ায় তিনি তাঁকে তালাক দিয়ে পিতার বাড়িতে চলে এসেছেন। কিন্তু এখন ওদের বাবা তাঁদের ওপর চরম অত্যাচার শুরু করেছে। শিমুল নেশা করেন। তাঁর শ্বশুরও বলেছেন, ‘তুমি এখানে আসলে শিমুল তোমাকে খুন করে ফেলবে।’ সোমবার সাবেক স্বামী শিমুল ভিডিও করে তাঁর কাছে পাঠান। তিনি ফেসবুকে দিয়ে এর প্রতিকার চেয়েছি। এখন তিনি তাঁর বাচ্চাদেরকে তাঁর কাছে রাখতে চান।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল বাশার খবরের সত্যতা স্বীকার করে জানান, এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শিশু নির্যাতনকারী পিতাকে থানায় আনা হয়েছে। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ছেলে দুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। পিতা শিমুলকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।