ইপেপার । আজমঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মাদ্রাসা ঘেরাও; অভিযুক্ত শিক্ষক গ্রেফতার : মামলা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৩৫:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০১৯
  • / ৩৭১ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গায় কওমি মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে বলৎকারের অভিযোগ

নির্যাতনের প্রমাণ মিলেছে; আরও তদন্ত করা হচ্ছে -অতিরিক্ত এসপি কানাই লাল সরকার
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের বাগানপাড়া এলাকায় শারমীনা হক হাফিজিয়া কওমি মাদ্রাসায় প্রথম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে বলৎকারের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি জানাজানি হলে গতকাল রোববার রাতে বিক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষকের বিচারের দাবিতে মাদ্রাসা ঘেরাও করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক জহুরুল ইসলামকে আটক করে থানা হেফাজতে নেয়। আটককৃত শিক্ষক জহুরুল ইসলাম (৫৬) যশোরের ছাতিয়ানতলা রাজাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদ মোল্লার ছেলে।
পুলিশ ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানা যায়, শবে বরাতের রাতে মাদ্রাসার অন্য সব শিক্ষার্থীরা যখন নামায শেষে ঘুমাতে যায়। তখন ওই মাদ্রাসার আরবী শিক্ষক জহুরুল ইসলাম ৯ বছরের ওই শিশুকে উপরে তার কক্ষে নিয়ে যায়। এরপর ওই শিক্ষার্থীকে বলৎকার করে। ঘটনাটি কাউকে না বলার জন্য ওই শিক্ষক শিশুটিকে ১০ টাকা দিয়ে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখায়।
মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা জানান, ঘটনাটি পরদিন সকালে জানাজানি হলে বিষয়টি মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদকে জানানো হয়। কিন্তু গত এক সপ্তাহেও এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। পরে এ ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এবং স্থানীয়রা শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে মাদ্রাসা ঘেরাও করলে পুলিশ এসে অভিযুক্তকে আটক করে।
স্থানীয় বাসিন্দা শামিম হোসেন জানান, রোববার সন্ধ্যার পর বিষয়টি মাদ্রাসার বাইরে জানাজানি হলে স্থানীয় শত শত মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে তারা মাদ্রাসাটি ঘেরাও করে। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছিয়ে অভিযুক্ত আরবী শিক্ষক জহুরুল ইসলামকে আটক করে থানাতে নিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এদিকে, খবর পেয়ে রাতেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কানাই লাল সরকার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াশিমুল বারী, নেজারত ডেপুটি কালেক্টরেট (এনডিসি) সিব্বির আহম্মেদ ও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জিহাদ খাঁন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা শারমীনা হক হাফিজিয়া কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলেন। স্থানীয় বাসিন্দারা এ ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ঘটনার এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও মাদ্রাসাটির পরিচালনা পর্ষদ এ বিষয়ে কোন কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহন করেননি। ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টায় ছিলেন তারা।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কানাই লাল সরকার সাংবাদিকদের জানান, নির্যাতনের শিকার ওই শিশুর জবানবন্দি ও মাদ্রাসার সাধারণ ছাত্রদের সাথে কথা বলে প্রাথমিকভাবে নির্যাতনের প্রমাণ মিলেছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। তিনি আরও জানান, ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও জোর তদন্ত করা হবে। তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে মাদ্রাসাটির পরিচালনা পর্ষদকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ওই মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদের সেক্রেটারী বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

মাদ্রাসা ঘেরাও; অভিযুক্ত শিক্ষক গ্রেফতার : মামলা

আপলোড টাইম : ১১:৩৫:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০১৯

চুয়াডাঙ্গায় কওমি মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে বলৎকারের অভিযোগ

নির্যাতনের প্রমাণ মিলেছে; আরও তদন্ত করা হচ্ছে -অতিরিক্ত এসপি কানাই লাল সরকার
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের বাগানপাড়া এলাকায় শারমীনা হক হাফিজিয়া কওমি মাদ্রাসায় প্রথম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে বলৎকারের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি জানাজানি হলে গতকাল রোববার রাতে বিক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষকের বিচারের দাবিতে মাদ্রাসা ঘেরাও করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক জহুরুল ইসলামকে আটক করে থানা হেফাজতে নেয়। আটককৃত শিক্ষক জহুরুল ইসলাম (৫৬) যশোরের ছাতিয়ানতলা রাজাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদ মোল্লার ছেলে।
পুলিশ ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানা যায়, শবে বরাতের রাতে মাদ্রাসার অন্য সব শিক্ষার্থীরা যখন নামায শেষে ঘুমাতে যায়। তখন ওই মাদ্রাসার আরবী শিক্ষক জহুরুল ইসলাম ৯ বছরের ওই শিশুকে উপরে তার কক্ষে নিয়ে যায়। এরপর ওই শিক্ষার্থীকে বলৎকার করে। ঘটনাটি কাউকে না বলার জন্য ওই শিক্ষক শিশুটিকে ১০ টাকা দিয়ে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখায়।
মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা জানান, ঘটনাটি পরদিন সকালে জানাজানি হলে বিষয়টি মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদকে জানানো হয়। কিন্তু গত এক সপ্তাহেও এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। পরে এ ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এবং স্থানীয়রা শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে মাদ্রাসা ঘেরাও করলে পুলিশ এসে অভিযুক্তকে আটক করে।
স্থানীয় বাসিন্দা শামিম হোসেন জানান, রোববার সন্ধ্যার পর বিষয়টি মাদ্রাসার বাইরে জানাজানি হলে স্থানীয় শত শত মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে তারা মাদ্রাসাটি ঘেরাও করে। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছিয়ে অভিযুক্ত আরবী শিক্ষক জহুরুল ইসলামকে আটক করে থানাতে নিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এদিকে, খবর পেয়ে রাতেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কানাই লাল সরকার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াশিমুল বারী, নেজারত ডেপুটি কালেক্টরেট (এনডিসি) সিব্বির আহম্মেদ ও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জিহাদ খাঁন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা শারমীনা হক হাফিজিয়া কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলেন। স্থানীয় বাসিন্দারা এ ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ঘটনার এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও মাদ্রাসাটির পরিচালনা পর্ষদ এ বিষয়ে কোন কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহন করেননি। ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টায় ছিলেন তারা।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কানাই লাল সরকার সাংবাদিকদের জানান, নির্যাতনের শিকার ওই শিশুর জবানবন্দি ও মাদ্রাসার সাধারণ ছাত্রদের সাথে কথা বলে প্রাথমিকভাবে নির্যাতনের প্রমাণ মিলেছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। তিনি আরও জানান, ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও জোর তদন্ত করা হবে। তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে মাদ্রাসাটির পরিচালনা পর্ষদকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ওই মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদের সেক্রেটারী বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন।