ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মাথাভাঙ্গা নদীতে অবৈধ বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৪৬:৩৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮
  • / ৪৩৫ বার পড়া হয়েছে

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি (আলমডাঙ্গা): আলমডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা নদীতে অবৈধ বাঁধ নির্মাণে ব্যস্ত সময় পার করছে স্থানীয় জেলেরা। সরকারিভাবে বিভিন্ন সময় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জেল-জরিমানা করা হলেও অবৈধ বাঁধ নির্মাণে পিছু হটেনি তারা। সরকারিভাবে নদীর ¯্রােত অব্যাহত রাখতে শত কোটি টাকা ব্যয়ে খনন কাজের উদ্যোগ প্রক্রিয়া চলমান হলেও আবারো অবৈধভাবে মাথাভাঙ্গা নদীর বুকে আড়াআড়িভাবে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করে মাছ চাষের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। তারই সাথে নদীর বুকে কারেন্ট জালসহ নদীতে জালের মধ্যে কচুরিপানা বিছিয়ে বহমান মাছ সংরক্ষণের মাধ্যমে নিধনের নতুন প্রক্রিয়া শুরু করেছে জেলেরা। উপজেলার খুদিয়াখালী, নতিডাঙ্গা, পোলতাডাঙ্গা, হাটবোয়ালিয়া ব্রিজের উপরে দাঁড়িয়ে নদীর দিকে তাকালেই দেখা যাবে হাজারো বাঁধ। ইতিমধ্যে হাটবোয়ালিয়া এলাকায় নদীর পানির সল্পতা কম হওয়ায় এই এলাকাতেই বেশি পরিমাণের বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। মাথাভাঙ্গায় অবৈধভাবে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে চলছে অবাধে মৎস্য শিকার। বাঁধ দিয়ে পানির স্বাভাবিক ¯্রােত বন্ধ করার ফলে নদী তার নাব্যতা হারাচ্ছে, সেইসাথে নদী হয়ে পড়ছে মাছশূন্য। দীর্ঘদিন এভাবে চলতে থাকলেও এ ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া একমাত্র নদী মাথাভাঙ্গার বিভিন্নস্থানে অবৈধভাবে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে ও জালের মধ্যে ঘের বানিয়ে মাছ শিকারের মহোৎসব শুরু হয়েছে। মাথাভাঙ্গা নদীর আলমডাঙ্গা সীমানার মধ্যে খুদিয়াখালী, কেষ্টপুর, গোয়ালবাড়ী, জুগিরহুদা, নতিডাঙ্গা, আঠারোখাদা-অনুপনগর, পোলতাডাঙ্গা, ও হাটবোয়ালিয়া এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ নদীর বিভিন্ন স্থানে বাঁধ দিয়ে ও কোমর ঘিরে অবাধে মাছ শিকার করে আসছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসনের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয় নামধারী দলীয় লোকজনকে বিশেষ ব্যবস্থায় ম্যানেজ করেই তারা মাছ শিকার করে। ফলে এলাকার সাধারণ মানুষ তাদের কিছু বলতে সাহস পায় না। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, এসব বাঁধে ধরা পড়া মাছের একটি অংশ প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাসায় নিয়মিত পাঠানো হয়। নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে বা ¯্রােতে বাধাগ্রস্ত করে মাছ শিকার আইনগতভাবে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও এভাবেই মাথাভাঙ্গা নদীতে অবাধে চলছে মাছ শিকার। নদীতে আড়াআড়িভাবে বাঁধ দেয়ার কারণে স্রোত বাধাপ্রাপ্ত হয়ে বালি মাটি ও পলি পড়ে ভরাট হচ্ছে নদীর তলদেশ। এছাড়া এসব বাঁধে কারেন্ট জাল পেতে রাখার কারণে বড় থেকে ছোট মাছ এমনকি মাছের ছোট ছোট পোনা পর্যন্ত ধরা পড়ছে।
প্রতিদিন বিকেলে এখানে আসে এবং সারারাত মাছ ধরে সকালে মাছ নিয়ে চলে যায়। বাঁধ দিয়ে অবৈধভাবে মাছ শিকারের বিষয়টি চেপে রাখতে ও সেইসাথে বেশি দাম পেতে স্থানীয় বাজারে এসব মাছ বিক্রি না করে এলাকার বাইরে নিয়ে বিক্রি করে থাকে। এমনকি কেউ বাঁধের কাছে গেলেও তার কাছে মাছ বিক্রি করা হয় না বলেও রয়েছে অনেকের অভিযোগ। বাঁধ ছাড়াও নদীতে কারেন্ট জাল ও ঘুনি জাল দিয়ে মাছ ধরার কারণে বড় থেকে খুব ছোট মাছও ধরা পড়ছে। ফলে দিনদিন মাছশূন্য হয়ে পড়ছে নদী। এই ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাহাত মান্নান জানান, কে যদি অবৈধভাবে নদীতে বাঁধ নির্মাণ করে নদীর মাছ নিধন করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

মাথাভাঙ্গা নদীতে অবৈধ বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার!

আপলোড টাইম : ১০:৪৬:৩৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি (আলমডাঙ্গা): আলমডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা নদীতে অবৈধ বাঁধ নির্মাণে ব্যস্ত সময় পার করছে স্থানীয় জেলেরা। সরকারিভাবে বিভিন্ন সময় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জেল-জরিমানা করা হলেও অবৈধ বাঁধ নির্মাণে পিছু হটেনি তারা। সরকারিভাবে নদীর ¯্রােত অব্যাহত রাখতে শত কোটি টাকা ব্যয়ে খনন কাজের উদ্যোগ প্রক্রিয়া চলমান হলেও আবারো অবৈধভাবে মাথাভাঙ্গা নদীর বুকে আড়াআড়িভাবে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করে মাছ চাষের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। তারই সাথে নদীর বুকে কারেন্ট জালসহ নদীতে জালের মধ্যে কচুরিপানা বিছিয়ে বহমান মাছ সংরক্ষণের মাধ্যমে নিধনের নতুন প্রক্রিয়া শুরু করেছে জেলেরা। উপজেলার খুদিয়াখালী, নতিডাঙ্গা, পোলতাডাঙ্গা, হাটবোয়ালিয়া ব্রিজের উপরে দাঁড়িয়ে নদীর দিকে তাকালেই দেখা যাবে হাজারো বাঁধ। ইতিমধ্যে হাটবোয়ালিয়া এলাকায় নদীর পানির সল্পতা কম হওয়ায় এই এলাকাতেই বেশি পরিমাণের বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। মাথাভাঙ্গায় অবৈধভাবে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে চলছে অবাধে মৎস্য শিকার। বাঁধ দিয়ে পানির স্বাভাবিক ¯্রােত বন্ধ করার ফলে নদী তার নাব্যতা হারাচ্ছে, সেইসাথে নদী হয়ে পড়ছে মাছশূন্য। দীর্ঘদিন এভাবে চলতে থাকলেও এ ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া একমাত্র নদী মাথাভাঙ্গার বিভিন্নস্থানে অবৈধভাবে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে ও জালের মধ্যে ঘের বানিয়ে মাছ শিকারের মহোৎসব শুরু হয়েছে। মাথাভাঙ্গা নদীর আলমডাঙ্গা সীমানার মধ্যে খুদিয়াখালী, কেষ্টপুর, গোয়ালবাড়ী, জুগিরহুদা, নতিডাঙ্গা, আঠারোখাদা-অনুপনগর, পোলতাডাঙ্গা, ও হাটবোয়ালিয়া এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ নদীর বিভিন্ন স্থানে বাঁধ দিয়ে ও কোমর ঘিরে অবাধে মাছ শিকার করে আসছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসনের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয় নামধারী দলীয় লোকজনকে বিশেষ ব্যবস্থায় ম্যানেজ করেই তারা মাছ শিকার করে। ফলে এলাকার সাধারণ মানুষ তাদের কিছু বলতে সাহস পায় না। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, এসব বাঁধে ধরা পড়া মাছের একটি অংশ প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাসায় নিয়মিত পাঠানো হয়। নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে বা ¯্রােতে বাধাগ্রস্ত করে মাছ শিকার আইনগতভাবে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও এভাবেই মাথাভাঙ্গা নদীতে অবাধে চলছে মাছ শিকার। নদীতে আড়াআড়িভাবে বাঁধ দেয়ার কারণে স্রোত বাধাপ্রাপ্ত হয়ে বালি মাটি ও পলি পড়ে ভরাট হচ্ছে নদীর তলদেশ। এছাড়া এসব বাঁধে কারেন্ট জাল পেতে রাখার কারণে বড় থেকে ছোট মাছ এমনকি মাছের ছোট ছোট পোনা পর্যন্ত ধরা পড়ছে।
প্রতিদিন বিকেলে এখানে আসে এবং সারারাত মাছ ধরে সকালে মাছ নিয়ে চলে যায়। বাঁধ দিয়ে অবৈধভাবে মাছ শিকারের বিষয়টি চেপে রাখতে ও সেইসাথে বেশি দাম পেতে স্থানীয় বাজারে এসব মাছ বিক্রি না করে এলাকার বাইরে নিয়ে বিক্রি করে থাকে। এমনকি কেউ বাঁধের কাছে গেলেও তার কাছে মাছ বিক্রি করা হয় না বলেও রয়েছে অনেকের অভিযোগ। বাঁধ ছাড়াও নদীতে কারেন্ট জাল ও ঘুনি জাল দিয়ে মাছ ধরার কারণে বড় থেকে খুব ছোট মাছও ধরা পড়ছে। ফলে দিনদিন মাছশূন্য হয়ে পড়ছে নদী। এই ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাহাত মান্নান জানান, কে যদি অবৈধভাবে নদীতে বাঁধ নির্মাণ করে নদীর মাছ নিধন করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।