ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বড় ঘাতক পরিবেশদূষণ : মানুষের সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:৫৮:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  • / ২৬৪ বার পড়া হয়েছে

অসুখবিসুখসহ নানা কারণে দেশে প্রতিবছর যত মানুষ মারা যায়, তার মধ্যে ২৮ শতাংশই মারা যায় পরিবেশদূষণজনিত কারণে। এদিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় এক নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের পরে আছে ভারত (২৬.৫), পাকিস্তান (২৫.৮), নেপাল (২৫.৪ শতাংশ) ও অন্যান্য দেশ। ‘বাংলাদেশের পরিবেশগত বিশ্লেষণ ২০১৮’ শিরোনামে বিশ্বব্যাংক প্রণীত এক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমনই তথ্য। এই গবেষণায় মূলত ২০১৫ সালের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বাংলাদেশে ২০১৫ সালে নানা কারণে আট লাখ ৪৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে দুই লাখ ৩৪ হাজার মানুষেরই মৃত্যু হয়েছে পরিবেশদূষণজনিত কারণে। বলা বাহুল্য, এরপরও পরিবেশদূষণ থেমে নেই, ক্রমাগত তা বেড়ে চলেছে। ২০১৭ বা ২০১৮ সালের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করলে হয়তো মৃত্যুর হার আরো বেশিই পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হচ্ছে। কিন্তু কিসের বিনিময়ে? মানুষের জীবনের বিনিময়ে! দেশে ক্রমেই বেশি হারে শিল্প, কলকারখানা স্থাপিত হচ্ছে। কিন্তু কোথায় হচ্ছে? বসতবাড়ির পাশেই গড়ে উঠছে কারখানা। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কোনো বালাই নেই। পরিশোধন ছাড়াই তরল ও কঠিন বর্জ্য যেখানে-সেখানে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। দূষিত হচ্ছে মাটি ও পানি। নির্গত ধোঁয়া মানুষের নিঃশ্বাসে গিয়ে মিশছে। মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে নানা ধরনের রোগব্যাধিতে।
পরিবেশদূষণজনিত কারণে মৃত্যু হয় ধীরে ধীরে, তাই বিষয়টিকে আমরা খুব একটা গ্রাহ্য করি না। ২০১৫ সালে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ২১ হাজার ২৮৬ জনের। পরিবেশদূষণজনিত কারণে মৃত্যুর সংখ্যা তার ১০ গুণ। সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলন হলেও এ ক্ষেত্রে তা হয় না। কারণ এই মৃত্যু তাৎক্ষণিক নয়, ধুঁকে ধুঁকে সময় নিয়ে মৃত্যু হয়। কিন্তু দেশের সরকারের তো তা অজানা নয়। নানা গবেষণায়, নানা ফোরামে অনবরত বিষয়গুলো ওঠে আসছে। আমরা চাই, উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবেশের সুস্থতা রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হোক। দূষণের প্রধান উৎসগুলো দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা হোক।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

বড় ঘাতক পরিবেশদূষণ : মানুষের সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে

আপলোড টাইম : ০৭:৫৮:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

অসুখবিসুখসহ নানা কারণে দেশে প্রতিবছর যত মানুষ মারা যায়, তার মধ্যে ২৮ শতাংশই মারা যায় পরিবেশদূষণজনিত কারণে। এদিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় এক নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের পরে আছে ভারত (২৬.৫), পাকিস্তান (২৫.৮), নেপাল (২৫.৪ শতাংশ) ও অন্যান্য দেশ। ‘বাংলাদেশের পরিবেশগত বিশ্লেষণ ২০১৮’ শিরোনামে বিশ্বব্যাংক প্রণীত এক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমনই তথ্য। এই গবেষণায় মূলত ২০১৫ সালের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বাংলাদেশে ২০১৫ সালে নানা কারণে আট লাখ ৪৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে দুই লাখ ৩৪ হাজার মানুষেরই মৃত্যু হয়েছে পরিবেশদূষণজনিত কারণে। বলা বাহুল্য, এরপরও পরিবেশদূষণ থেমে নেই, ক্রমাগত তা বেড়ে চলেছে। ২০১৭ বা ২০১৮ সালের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করলে হয়তো মৃত্যুর হার আরো বেশিই পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হচ্ছে। কিন্তু কিসের বিনিময়ে? মানুষের জীবনের বিনিময়ে! দেশে ক্রমেই বেশি হারে শিল্প, কলকারখানা স্থাপিত হচ্ছে। কিন্তু কোথায় হচ্ছে? বসতবাড়ির পাশেই গড়ে উঠছে কারখানা। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কোনো বালাই নেই। পরিশোধন ছাড়াই তরল ও কঠিন বর্জ্য যেখানে-সেখানে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। দূষিত হচ্ছে মাটি ও পানি। নির্গত ধোঁয়া মানুষের নিঃশ্বাসে গিয়ে মিশছে। মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে নানা ধরনের রোগব্যাধিতে।
পরিবেশদূষণজনিত কারণে মৃত্যু হয় ধীরে ধীরে, তাই বিষয়টিকে আমরা খুব একটা গ্রাহ্য করি না। ২০১৫ সালে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ২১ হাজার ২৮৬ জনের। পরিবেশদূষণজনিত কারণে মৃত্যুর সংখ্যা তার ১০ গুণ। সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলন হলেও এ ক্ষেত্রে তা হয় না। কারণ এই মৃত্যু তাৎক্ষণিক নয়, ধুঁকে ধুঁকে সময় নিয়ে মৃত্যু হয়। কিন্তু দেশের সরকারের তো তা অজানা নয়। নানা গবেষণায়, নানা ফোরামে অনবরত বিষয়গুলো ওঠে আসছে। আমরা চাই, উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবেশের সুস্থতা রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হোক। দূষণের প্রধান উৎসগুলো দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা হোক।