ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বীজের প্রশংসায় ডিলারদের প্রচারণা : ফলন না হলে জমির দোষ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:২৭:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৭
  • / ১২১৭ বার পড়া হয়েছে

দর্শনাসহ আশপাশ এলাকার শুরু হয়েছে ভুট্টা রোপন মৌসুম

ওয়াসিম রয়েল: প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও শুরু হয়েছে দর্শনাসহ আশপাশ এলাকার ভুট্টা রোপন মৌসুম। ডিলার ও বিভিন্ন কোম্পানীর অফিসারদের স্ব স্ব বীজের প্রশংসার শেষ নেই। নিজ কোম্পানির বীজ বিক্রি করতে কৃষকদের বিভিন্ন স্বপ্ন দেখাতে থাকেন তারা। আবার ফলন ভালো না হলে এ সকল কোম্পানীর অফিসাররা জমির দোষ আছে বলে বুঝিয়ে দেয় সহজ সরল গরীব চাষীদের।
দর্শনায় ৫টি ভুট্টা বীজ কোম্পানীর ডিলারের মধ্যে ৮টি বীজ কোম্পানী প্রায় ৩০ রকমের ভুট্টা বীজ সরবরাহ করে থাকে। এসকল ভুট্টা বীজ কোম্পানী গুলোর মধ্যে রয়েছে থ্রী এস, ব্যাবিলিয়ন, এসিআই, মুনসেন্টো, অটো, ইস্পাহানী, নীল সাগর ও ইয়োন এগ্রো। দর্শনায় এসকল ভুট্টা বীজ কোম্পানীর বেশ কয়েকটি নামিদামি ডিলার রয়েছে। প্রত্যেক কোম্পানীর পলিসি অনুযায়ী বীজ বিক্রয়ের জন্য স্ব স্ব ডিলারদের অনুকুলে অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যারা বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে সহজসরলমনা চাষীদের বুঝিয়ে তাদের বীজ বিক্রয়ের জন্য ব্যাস্ত দিন কাটাচ্ছে। কিন্তু গ্রামের গরীব চাষীগুলি ঐ শিক্ষিত নিয়োগ প্রাপ্ত সুচতুর অফিসারদের কথায় ভিজে তার চাষের পুজির বেশিরভাগ অংশ এই ভুট্টা চাষে ব্যায় করছে। ফলে যখন ঐ আবাদী জমিতে বীজ রোপনের পর চারা বের না হচ্ছে তখন কোম্পানীর অফিসার ও ডিলারদের কাছে অভিযোগ করলে তারা আবার নতুন করে বীজ দিয়ে রোপনের পরামর্শ দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে এলাকাই। তাই ঐ চাষী নীরবে ঠকছে কারন এক বিঘা জমি ভুট্টা লাগানোর পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত রোপন উপযোগী করতে প্রায় ৪-৫হাজার টাকা ব্যায় হয়। আবার পুনরায় যদি ঐ বীজের চারা না হয় তাহলে কোম্পানীর সুচতুর অফিসারেরা ঐ চাষীকে আপনার জমির দোষ আছে বলে কাটিয়ে দিচ্ছে কি›তু একবারও তাদের বীজের দোষ স্বীকার করছে না। এমনই ভুক্তভোগী চাষী দর্শনা বাসস্ট্যান্ডপাড়ার বকুল। সে গত বছর এই মৌসুমে তার আবাদি জমিতে ব্যাবিলিয়ন কোম্পানীর (কাবেরী ১০০) নামের ভুট্টার বীজ রোপন করে। প্রথম সময় তার বীজের চারা না বের হলে কোম্পানীর অফিসার ও ডিলারের কাছে অভিযোগ দিলে তারা আবাদী জমি পরিদর্শন করে। জমিতে কোন কিছুর ঘাটতি না থাকায় অফিসার ও ডিলার দুজনে যুক্তি করে পুনরায় বীজ রোপনের জন্য কোম্পানীর ফ্রি বীজ দেয়। এসময় আবার বীজ রোপন করে চাষী বকুল। কিন্তু ফলনের সময় দেখা যায় অফিসার ও ডিলারের প্রতিশ্রুতির এক অংশ উৎপাদন হয়। এ নিয়ে চাষী বকুল অন্যান্ন চাষীদের জানাতে চায় এবং প্রতিবাদ করে। এক পর্যায়ে তাকে একটি রাইচ কুকার কিনে দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু যে সকল চাষীরা জানাতে বা প্রতিবাদ করতে পারে না তারা নীরবেই ঠকে যায়। এমনই প্রায় সব কোম্পানীর ভুট্টার বীজ নিয়ে চাষীদের মনে এখন আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

বীজের প্রশংসায় ডিলারদের প্রচারণা : ফলন না হলে জমির দোষ

আপলোড টাইম : ১০:২৭:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৭

দর্শনাসহ আশপাশ এলাকার শুরু হয়েছে ভুট্টা রোপন মৌসুম

ওয়াসিম রয়েল: প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও শুরু হয়েছে দর্শনাসহ আশপাশ এলাকার ভুট্টা রোপন মৌসুম। ডিলার ও বিভিন্ন কোম্পানীর অফিসারদের স্ব স্ব বীজের প্রশংসার শেষ নেই। নিজ কোম্পানির বীজ বিক্রি করতে কৃষকদের বিভিন্ন স্বপ্ন দেখাতে থাকেন তারা। আবার ফলন ভালো না হলে এ সকল কোম্পানীর অফিসাররা জমির দোষ আছে বলে বুঝিয়ে দেয় সহজ সরল গরীব চাষীদের।
দর্শনায় ৫টি ভুট্টা বীজ কোম্পানীর ডিলারের মধ্যে ৮টি বীজ কোম্পানী প্রায় ৩০ রকমের ভুট্টা বীজ সরবরাহ করে থাকে। এসকল ভুট্টা বীজ কোম্পানী গুলোর মধ্যে রয়েছে থ্রী এস, ব্যাবিলিয়ন, এসিআই, মুনসেন্টো, অটো, ইস্পাহানী, নীল সাগর ও ইয়োন এগ্রো। দর্শনায় এসকল ভুট্টা বীজ কোম্পানীর বেশ কয়েকটি নামিদামি ডিলার রয়েছে। প্রত্যেক কোম্পানীর পলিসি অনুযায়ী বীজ বিক্রয়ের জন্য স্ব স্ব ডিলারদের অনুকুলে অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যারা বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে সহজসরলমনা চাষীদের বুঝিয়ে তাদের বীজ বিক্রয়ের জন্য ব্যাস্ত দিন কাটাচ্ছে। কিন্তু গ্রামের গরীব চাষীগুলি ঐ শিক্ষিত নিয়োগ প্রাপ্ত সুচতুর অফিসারদের কথায় ভিজে তার চাষের পুজির বেশিরভাগ অংশ এই ভুট্টা চাষে ব্যায় করছে। ফলে যখন ঐ আবাদী জমিতে বীজ রোপনের পর চারা বের না হচ্ছে তখন কোম্পানীর অফিসার ও ডিলারদের কাছে অভিযোগ করলে তারা আবার নতুন করে বীজ দিয়ে রোপনের পরামর্শ দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে এলাকাই। তাই ঐ চাষী নীরবে ঠকছে কারন এক বিঘা জমি ভুট্টা লাগানোর পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত রোপন উপযোগী করতে প্রায় ৪-৫হাজার টাকা ব্যায় হয়। আবার পুনরায় যদি ঐ বীজের চারা না হয় তাহলে কোম্পানীর সুচতুর অফিসারেরা ঐ চাষীকে আপনার জমির দোষ আছে বলে কাটিয়ে দিচ্ছে কি›তু একবারও তাদের বীজের দোষ স্বীকার করছে না। এমনই ভুক্তভোগী চাষী দর্শনা বাসস্ট্যান্ডপাড়ার বকুল। সে গত বছর এই মৌসুমে তার আবাদি জমিতে ব্যাবিলিয়ন কোম্পানীর (কাবেরী ১০০) নামের ভুট্টার বীজ রোপন করে। প্রথম সময় তার বীজের চারা না বের হলে কোম্পানীর অফিসার ও ডিলারের কাছে অভিযোগ দিলে তারা আবাদী জমি পরিদর্শন করে। জমিতে কোন কিছুর ঘাটতি না থাকায় অফিসার ও ডিলার দুজনে যুক্তি করে পুনরায় বীজ রোপনের জন্য কোম্পানীর ফ্রি বীজ দেয়। এসময় আবার বীজ রোপন করে চাষী বকুল। কিন্তু ফলনের সময় দেখা যায় অফিসার ও ডিলারের প্রতিশ্রুতির এক অংশ উৎপাদন হয়। এ নিয়ে চাষী বকুল অন্যান্ন চাষীদের জানাতে চায় এবং প্রতিবাদ করে। এক পর্যায়ে তাকে একটি রাইচ কুকার কিনে দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু যে সকল চাষীরা জানাতে বা প্রতিবাদ করতে পারে না তারা নীরবেই ঠকে যায়। এমনই প্রায় সব কোম্পানীর ভুট্টার বীজ নিয়ে চাষীদের মনে এখন আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।