ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বিসিবির ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৫৭:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০১৯
  • / ১৯৪ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:
সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তোলপাড় চলছে ক্রিকেট বিশে^। শাস্তির পক্ষে-বিপক্ষে মতামত দিচ্ছেন সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটাররা। কার ভুলে শাস্তির পরিমাণ বড় হলো। শাস্তি কমানোর বিষয়ে কার কী ভূমিকা রয়েছে তা নিয়ে চলছে নানা কথা। সাকিবের আগে একই অপরাধ করে অনেকে ছাড়ও পেয়েছেন। সাকিবের শাস্তির পেছনে বিসিবির রহস্য ও ভূমিকা নিয়ে চারদিকে চলছে ব্যাপক আলোচনা। ধর্মঘটে টাইগার অধিনায়ক খেলোয়াড়দের পক্ষে কথা বলায় বিসিবি সভাপতি নারাজ হয়েছিলেন। প্রস্তাবের তথ্য গোপন করে সাকিব ভুল করলেও অপরাধ করেননি বলে সতীর্থদের বিশ^াস। শুধু সাকিবের সতীর্থরা কেন? পুরো দেশবাসীর বিশ^াস। কিন্তু বিসিবি শাস্তির কথা আগে জেনেও না জানার ভান করে যে নাটক সাজাচ্ছে তাতে সাকিব ভক্তরা হতাশ। ম্যাচ ফিক্সিংয়ের দায়ে দুবছর নিষিদ্ধ হওয়া মোহাম্মদ আশরাফুলের আইনজীবী ব্যারিস্টার খালেদ মাহমুদ হামিদ চৌধুরী বলেন, আইসিসির আইনে আপিল করার সুযোগ না থাকলেও এমন কঠিন আইনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে বিষয়টা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। বিসিবি সাকিবের হয়ে আইসিসির কাছে শাস্তি কমানোর অনুরোধ করতে পারে। তিনি আরো বলেন, সাকিবের মতো অন্যরা যেন একই ভুল না করে সে জন্য বিসিবিকে এখন থেকেই সচেতনামূলক কার্যক্রম শুরু করতে হবে।
সাকিব এক বছর মাঠের বাইরে থাকবেন। এ সত্য বেশ পীড়াদায়ক বলে মনে করেন ক্রিকেটবোদ্ধারা। চারদিকে গুঞ্জন চলছে, সাকিবকে যে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে তার পেছনে কলকাঠি নেড়েছে বিসিসিআই ও আইসিসি। আর এ ঘটনার এ টু জেড বিসিসিও জানে বলে সবার সন্দেহ। বিসিবির সাবেক সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী মনে করেন, সাকিবের শাস্তির বিষয়টি পরিকল্পিতভাবে হয়েছে। আইসিসি এবং বিসিবির মধ্যে সম্ভবত সমন্বয় ছিল। তিনি বলেন, একই তারিখে কয়েকটি ঘটনা ঘটল। আইসিসির রিপোর্টে আছে বিস্তারিত। ২৯ অক্টোবর সাকিবকে আনুষ্ঠানিকভাবে জেরা করা হলো। ওই তারিখেই সাকিব স্বীকার করল, লেটার অব এগ্রিমেন্ট সই করল। একই দিনে আইসিসি এই সংবাদ তাদের ওয়েবসাইটে দিল। ২৯ অক্টোবর বিসিবির মিটিং চলল। একই দিনে এই ঘোষণার পর ইন্ডিয়ার টিম ঘোষণা করা হলো। সব একই দিনে! তার মানে এই কাজটি নিশ্চয়ই আইসিসির সঙ্গে সমন্বয় করে ক্রিকেট বোর্ড করেছে। না হলে ক্রিকেট বোর্ডের সভা কেন বিকেল ৩টা থেকে শুরু হবে? শুরু হলেও কেন আইসিসির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা পর্যন্ত চলল। এত ঘটনা একদিনে কীভাবে হয়। বিসিবির বোর্ড মিটিংয়ের শিডিউল ছিল ৩টায়। তারপর আবার টিম ঘোষণা হলো। তার মানে তারা জানত ২৯ অক্টোবর আইসিসির সিদ্ধান্ত আসবে।
আইসিসি ওয়েবসাইটে সাকিবের শাস্তির রায়ের যে কপি দেয়া হয়েছে তার ১৭ ধারার ১.৭.৩.৭ কোডে বলা হয়েছে আইসিসি এবং বিসিসিআইয়ের যৌথ সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে। অন্যদিকে যে আইনে সাকিবকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেই আইনটি বলবৎ হয়েছে ২০১৮ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি। সাকিব প্রথম প্রস্তাব পান ২০১৮ সালের ১৯ জানুয়ারি এর পর ২৩ জানুয়ারি পান দ্বিতীয় প্রস্তাব তদন্ত শুরু হয় ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি। সাকিবকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ২৩ জানুয়ারি এবং ২৭ আগস্ট। ২.৪.৪ কোডে যে শাস্তি দেয়া হয়েছে তা ধোপে টিকে না। তবে ২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল আইপিএল চলাকালে তৃতীয় প্রস্তাব পাওয়ায় আইসিসির ২.৬ ধারায় ছয় মাসের শাস্তি পেতে পারেন সাকিব।
ভারতের ধারাভাষ্যকার ও ক্রিকেট-বিশ্লেষক হর্ষ ভোগলে সাকিবের শাস্তি পাওয়ার বিষয়ে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব খুঁজতে বারণ করেছেন। সাকিবের খেলা তিনি ভালোবাসেন। তবে হর্ষ মনে করেন, বড় বাঁচাই বেঁচে গেছেন সাকিব। ‘স্বীকার করছি সাকিব আল হাসানকে নিয়ে বাংলাদেশে যা ঘটেছে তাতে হতভম্ব ও হতাশ লাগছে। সাকিব ক্রিকেটের বড় তারকা এবং এ মুহূর্তে সবচেয়ে ভালো খেলোয়াড়দের একজন। অনেক অভিজ্ঞ। সে একজন খেলোয়াড় যাকে গোটা দেশ সমর্থন দেয়, তার দিকে তাকিয়ে থাকে। আর তাই সাকিব অনৈতিক প্রস্তাব পাওয়ার কথা জানায়নি, এ ব্যাপারটি ভীষণ বিভ্রান্তিকর। এটা একবার নয়, তিন-তিনবার ঘটেছে। আমি বিস্মিত, কারণ সাকিব এ ধরনের (জুয়াড়ির প্রস্তাব) আচরণ জানানোর ব্যাপারে সব সময়ই সোচ্চার। ২০১৩ সালে বিপিএলে তা করেছে, যেবার মোহাম্মদ আশরাফুল নিষিদ্ধ হলো। সে বাংলাদেশের একজন গর্বিত ক্রিকেটার। তার মতো কেউ অজ্ঞতার ছায়ার আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পারে না।
আকসুর কাছে নিজের দোষ স্বীকার করেছেন সাকিব এবং মেনে নিয়েছেন আইসিসির দেয়া শাস্তি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এখন সাকিবের বিষয়ে কী ভাবছে, এ বিষয়ে গতকাল বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন বলেন, এ বিষয়ে বিসিবির করণীয় খুবই সীমিত। যেহেতু সাকিব এই বিষয়টি স্বীকার করে একটি চুক্তির মধ্যে চলে গেছে। তারপরও আমরা দেখব। আইনি বিষয়গুলো নিয়ে কীভাবে কাজ করা যায়। আমরা ইতোমধ্যে আমাদের আইনি বিভাগের (লিগ্যাল কমিটি) সঙ্গে কথা বলছি। এ বিষয়ে কোনো সুযোগ আছে কিনা, সেটা আমরা ওয়ার্ক আউট করব। বিসিবির প্রধান নির্বাহী এটিও মনে করিয়ে দেন, লিগ্যাল কমিটির সঙ্গে কথা বলা মানেই এমন না যে নিশ্চিতভাবে শাস্তি কমে যাবে সাকিবের। বরং এ বিষয়ে যৌক্তিক আলোচনার পর যদি কোনো পথ মেলে, সেটিই অনুসরণ করবে বিসিবি।
সাকিবের শাস্তির পেছনে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) কোনো ভূমিকা নেই বলে জানিয়েছেন বোর্ডটির দুর্নীতিবিরোধী ইউনিটের প্রধান অজিত সিং। তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ম্যাচে জুয়াড়ির কাছে তৃতীয়বার প্রস্তাব পান তিনি। তাতে সাকিবের এই ঘটনায় জড়িয়ে পড়েছে ভারতেরও নাম। অজিত সিং এই বিষয়ে স্পষ্ট করে জানান, এই তদন্তে বোর্ডের কোনো ভূমিকা নেই এবং সবকিছুই করেছে আইসিসি। বিসিসিআইর এসিইউ প্রধান বলেছেন, আমরা যে আইপিএল মৌসুমের কথা বলছি, ওই সময়ে দুর্নীতিবিরোধী বিষয়গুলো আইসিসি দেখভাল করেছিল। পুরো তদন্তটা হয়েছে আইসিসির মাধ্যমে। এতে বিসিসিআইর কোনো ভূমিকা নেই।
সাকিব ভক্তরা বিসিবি, আইসিসি এবং বিসিসিআইয়ের মিষ্টি মিষ্টি কথা বিশ^াস করছে না। তাদের ধারণা, এই তিন সংস্থার যৌথ ভূমিকার কারণেই লঘু পাপে গুরুদ- পেয়েছেন বাংলাদেশের প্রাণখ্যাত সাকিব আল হাসান। অনেকের অভিমত, সাকিব যদি দ্রুত শাস্তি মেনে নেয়ার সিদ্ধান্ত না নিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের সময় নিতেন তা হলে হয়ত শাস্তি এক বছর না হয়ে ছয় মাস হতো।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

বিসিবির ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ

আপলোড টাইম : ১০:৫৭:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০১৯

সমীকরণ প্রতিবেদন:
সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তোলপাড় চলছে ক্রিকেট বিশে^। শাস্তির পক্ষে-বিপক্ষে মতামত দিচ্ছেন সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটাররা। কার ভুলে শাস্তির পরিমাণ বড় হলো। শাস্তি কমানোর বিষয়ে কার কী ভূমিকা রয়েছে তা নিয়ে চলছে নানা কথা। সাকিবের আগে একই অপরাধ করে অনেকে ছাড়ও পেয়েছেন। সাকিবের শাস্তির পেছনে বিসিবির রহস্য ও ভূমিকা নিয়ে চারদিকে চলছে ব্যাপক আলোচনা। ধর্মঘটে টাইগার অধিনায়ক খেলোয়াড়দের পক্ষে কথা বলায় বিসিবি সভাপতি নারাজ হয়েছিলেন। প্রস্তাবের তথ্য গোপন করে সাকিব ভুল করলেও অপরাধ করেননি বলে সতীর্থদের বিশ^াস। শুধু সাকিবের সতীর্থরা কেন? পুরো দেশবাসীর বিশ^াস। কিন্তু বিসিবি শাস্তির কথা আগে জেনেও না জানার ভান করে যে নাটক সাজাচ্ছে তাতে সাকিব ভক্তরা হতাশ। ম্যাচ ফিক্সিংয়ের দায়ে দুবছর নিষিদ্ধ হওয়া মোহাম্মদ আশরাফুলের আইনজীবী ব্যারিস্টার খালেদ মাহমুদ হামিদ চৌধুরী বলেন, আইসিসির আইনে আপিল করার সুযোগ না থাকলেও এমন কঠিন আইনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে বিষয়টা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। বিসিবি সাকিবের হয়ে আইসিসির কাছে শাস্তি কমানোর অনুরোধ করতে পারে। তিনি আরো বলেন, সাকিবের মতো অন্যরা যেন একই ভুল না করে সে জন্য বিসিবিকে এখন থেকেই সচেতনামূলক কার্যক্রম শুরু করতে হবে।
সাকিব এক বছর মাঠের বাইরে থাকবেন। এ সত্য বেশ পীড়াদায়ক বলে মনে করেন ক্রিকেটবোদ্ধারা। চারদিকে গুঞ্জন চলছে, সাকিবকে যে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে তার পেছনে কলকাঠি নেড়েছে বিসিসিআই ও আইসিসি। আর এ ঘটনার এ টু জেড বিসিসিও জানে বলে সবার সন্দেহ। বিসিবির সাবেক সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী মনে করেন, সাকিবের শাস্তির বিষয়টি পরিকল্পিতভাবে হয়েছে। আইসিসি এবং বিসিবির মধ্যে সম্ভবত সমন্বয় ছিল। তিনি বলেন, একই তারিখে কয়েকটি ঘটনা ঘটল। আইসিসির রিপোর্টে আছে বিস্তারিত। ২৯ অক্টোবর সাকিবকে আনুষ্ঠানিকভাবে জেরা করা হলো। ওই তারিখেই সাকিব স্বীকার করল, লেটার অব এগ্রিমেন্ট সই করল। একই দিনে আইসিসি এই সংবাদ তাদের ওয়েবসাইটে দিল। ২৯ অক্টোবর বিসিবির মিটিং চলল। একই দিনে এই ঘোষণার পর ইন্ডিয়ার টিম ঘোষণা করা হলো। সব একই দিনে! তার মানে এই কাজটি নিশ্চয়ই আইসিসির সঙ্গে সমন্বয় করে ক্রিকেট বোর্ড করেছে। না হলে ক্রিকেট বোর্ডের সভা কেন বিকেল ৩টা থেকে শুরু হবে? শুরু হলেও কেন আইসিসির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা পর্যন্ত চলল। এত ঘটনা একদিনে কীভাবে হয়। বিসিবির বোর্ড মিটিংয়ের শিডিউল ছিল ৩টায়। তারপর আবার টিম ঘোষণা হলো। তার মানে তারা জানত ২৯ অক্টোবর আইসিসির সিদ্ধান্ত আসবে।
আইসিসি ওয়েবসাইটে সাকিবের শাস্তির রায়ের যে কপি দেয়া হয়েছে তার ১৭ ধারার ১.৭.৩.৭ কোডে বলা হয়েছে আইসিসি এবং বিসিসিআইয়ের যৌথ সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে। অন্যদিকে যে আইনে সাকিবকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেই আইনটি বলবৎ হয়েছে ২০১৮ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি। সাকিব প্রথম প্রস্তাব পান ২০১৮ সালের ১৯ জানুয়ারি এর পর ২৩ জানুয়ারি পান দ্বিতীয় প্রস্তাব তদন্ত শুরু হয় ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি। সাকিবকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ২৩ জানুয়ারি এবং ২৭ আগস্ট। ২.৪.৪ কোডে যে শাস্তি দেয়া হয়েছে তা ধোপে টিকে না। তবে ২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল আইপিএল চলাকালে তৃতীয় প্রস্তাব পাওয়ায় আইসিসির ২.৬ ধারায় ছয় মাসের শাস্তি পেতে পারেন সাকিব।
ভারতের ধারাভাষ্যকার ও ক্রিকেট-বিশ্লেষক হর্ষ ভোগলে সাকিবের শাস্তি পাওয়ার বিষয়ে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব খুঁজতে বারণ করেছেন। সাকিবের খেলা তিনি ভালোবাসেন। তবে হর্ষ মনে করেন, বড় বাঁচাই বেঁচে গেছেন সাকিব। ‘স্বীকার করছি সাকিব আল হাসানকে নিয়ে বাংলাদেশে যা ঘটেছে তাতে হতভম্ব ও হতাশ লাগছে। সাকিব ক্রিকেটের বড় তারকা এবং এ মুহূর্তে সবচেয়ে ভালো খেলোয়াড়দের একজন। অনেক অভিজ্ঞ। সে একজন খেলোয়াড় যাকে গোটা দেশ সমর্থন দেয়, তার দিকে তাকিয়ে থাকে। আর তাই সাকিব অনৈতিক প্রস্তাব পাওয়ার কথা জানায়নি, এ ব্যাপারটি ভীষণ বিভ্রান্তিকর। এটা একবার নয়, তিন-তিনবার ঘটেছে। আমি বিস্মিত, কারণ সাকিব এ ধরনের (জুয়াড়ির প্রস্তাব) আচরণ জানানোর ব্যাপারে সব সময়ই সোচ্চার। ২০১৩ সালে বিপিএলে তা করেছে, যেবার মোহাম্মদ আশরাফুল নিষিদ্ধ হলো। সে বাংলাদেশের একজন গর্বিত ক্রিকেটার। তার মতো কেউ অজ্ঞতার ছায়ার আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পারে না।
আকসুর কাছে নিজের দোষ স্বীকার করেছেন সাকিব এবং মেনে নিয়েছেন আইসিসির দেয়া শাস্তি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এখন সাকিবের বিষয়ে কী ভাবছে, এ বিষয়ে গতকাল বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন বলেন, এ বিষয়ে বিসিবির করণীয় খুবই সীমিত। যেহেতু সাকিব এই বিষয়টি স্বীকার করে একটি চুক্তির মধ্যে চলে গেছে। তারপরও আমরা দেখব। আইনি বিষয়গুলো নিয়ে কীভাবে কাজ করা যায়। আমরা ইতোমধ্যে আমাদের আইনি বিভাগের (লিগ্যাল কমিটি) সঙ্গে কথা বলছি। এ বিষয়ে কোনো সুযোগ আছে কিনা, সেটা আমরা ওয়ার্ক আউট করব। বিসিবির প্রধান নির্বাহী এটিও মনে করিয়ে দেন, লিগ্যাল কমিটির সঙ্গে কথা বলা মানেই এমন না যে নিশ্চিতভাবে শাস্তি কমে যাবে সাকিবের। বরং এ বিষয়ে যৌক্তিক আলোচনার পর যদি কোনো পথ মেলে, সেটিই অনুসরণ করবে বিসিবি।
সাকিবের শাস্তির পেছনে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) কোনো ভূমিকা নেই বলে জানিয়েছেন বোর্ডটির দুর্নীতিবিরোধী ইউনিটের প্রধান অজিত সিং। তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ম্যাচে জুয়াড়ির কাছে তৃতীয়বার প্রস্তাব পান তিনি। তাতে সাকিবের এই ঘটনায় জড়িয়ে পড়েছে ভারতেরও নাম। অজিত সিং এই বিষয়ে স্পষ্ট করে জানান, এই তদন্তে বোর্ডের কোনো ভূমিকা নেই এবং সবকিছুই করেছে আইসিসি। বিসিসিআইর এসিইউ প্রধান বলেছেন, আমরা যে আইপিএল মৌসুমের কথা বলছি, ওই সময়ে দুর্নীতিবিরোধী বিষয়গুলো আইসিসি দেখভাল করেছিল। পুরো তদন্তটা হয়েছে আইসিসির মাধ্যমে। এতে বিসিসিআইর কোনো ভূমিকা নেই।
সাকিব ভক্তরা বিসিবি, আইসিসি এবং বিসিসিআইয়ের মিষ্টি মিষ্টি কথা বিশ^াস করছে না। তাদের ধারণা, এই তিন সংস্থার যৌথ ভূমিকার কারণেই লঘু পাপে গুরুদ- পেয়েছেন বাংলাদেশের প্রাণখ্যাত সাকিব আল হাসান। অনেকের অভিমত, সাকিব যদি দ্রুত শাস্তি মেনে নেয়ার সিদ্ধান্ত না নিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের সময় নিতেন তা হলে হয়ত শাস্তি এক বছর না হয়ে ছয় মাস হতো।