ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বিসিএসে পেশা বদল

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:১৪:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই ২০২০
  • / ৩১৩ বার পড়া হয়েছে

সুবিধা ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে
বিশেষায়িত শিক্ষায় শিক্ষিত ব্যক্তিরা বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে অন্য পেশায় যাচ্ছেন। এটা খবর হিসেবে নতুন নয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই পেশা বদলের হার বাড়ছে। তাই প্রশ্ন উঠছে, বিশেষায়িত লোকজন কেন বিসিএস দিয়ে অন্য পেশায় যাচ্ছেন? সমস্যাটি কোথায়? পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) অবশ্য এ বিষয়ক তথ্য আলাদা করে রাখে না। রাখার কথাও নয়। তারা যোগ্য প্রার্থী পেলে নির্বাচিত করবে। ক্যাডার চয়েস তাদের বিষয় নয়। সেটা প্রার্থীদের ঠিক করার বিষয়। পরীক্ষায় মেধাই তাদের কাছে বিবেচ্য। পিএসসির কাজ যোগ্যতা ও পছন্দ অনুযায়ী ক্যাডার বণ্টন করা। বিসিএস পাস করা বিভিন্ন পেশাজীবীর তথ্য থেকে জানা যায়, ৩৬তম বিসিএসে নির্বাচিত দুই হাজার ৩২৩ প্রার্থীর মধ্যে শতাধিক ডাক্তার, প্রকৌশলী ও কৃষিবিদ নিজ পেশায় না গিয়ে প্রশাসন, পররাষ্ট্র বা পুলিশ ক্যাডারে যোগদান করেছেন। এই হার প্রায় ৪.৩০ শতাংশ। ৩৭তম বিসিএসে এক হাজার ৩১৪ জনের মধ্যে বিশেষায়িত শিক্ষাগ্রহণকারী রয়েছেন প্রায় ৮০ জন (প্রায় ৬.০৮ শতাংশ)। সর্বশেষ ৩৮তম বিসিএসে দুই হাজার ২০৪ জন প্রার্থীর মধ্যে প্রায় ১৭০ জন ডাক্তার-প্রকৌশলী-কৃষিবিদ রয়েছেন (প্রায় ৭.৭১ শতাংশ)। পেশা বদল হতেই পারে। কথা হচ্ছে, বিশেষায়িত শিক্ষিতদের মধ্যে পেশা বদলের হিড়িক দেখা দিলে সমস্যা। কারণ তাঁদের বিশেষ উদ্দেশ্যে বিশেষ কাজের জন্য তৈরি করা হয়। সাধারণ শিক্ষিতদের চেয়ে তাঁদের জন্য রাষ্ট্রের খরচও বেশি। কেন তাঁরা তাঁদের পেশার বিশেষত্ব রক্ষা করবেন না? কারণ সম্মান ও প্রতাপ। যাঁরা পেশা বদল করছেন তাঁদের বক্তব্য, প্রশাসন ক্যাডারে চাকরির মূল্য বিশেষ ক্যাডারের চেয়ে অনেক বেশি। তাঁদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা থাকে। তাঁদের পদোন্নতির ধারাবাহিকতা থাকে। চাকরির শুরু থেকে তাঁরা নানা সুবিধা পান। বিশেষায়িত ক্যাডারে পদোন্নতি এত সহজ নয়। প্রশাসন, পররাষ্ট্র, পুলিশ ক্যাডারের লোকজন সাত-আট বছর পর যে অবস্থানে পৌঁছেন একই মর্যাদার অবস্থানে পৌঁছতে বিশেষায়িত ক্যাডারের লোকজনের ২০ থেকে ২৫ বছর সময় লাগে। মূলত মর্যাদাই বড় সমস্যা। প্রভাব-প্রতিপত্তির বিষয়ও রয়েছে। তাঁদের মেধাও বেশি, অথচ মূল্যায়ন নেই। এসব কারণেই বিশেষায়িতরা অন্য পেশায় ঝুঁকছেন। সমস্যাটি শিক্ষা ও কর্মসংস্থান পরিকল্পনায়। ব্যতিক্রমী ঘটনা বাদ দিলে বিশেষায়িতদের নিজ পেশায়ই থাকা উচিত। সেটার জন্যই তাঁদের তৈরি করা হয়েছে। তাঁদেরও যদি পদোন্নতির ধারা ঠিক থাকে, মর্যাদা নিশ্চিত হয়, মেধার মূল্যায়ন হয়, তাহলে যে সমস্যা দেখা দিয়েছে তা থাকবে না।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

বিসিএসে পেশা বদল

আপলোড টাইম : ০৮:১৪:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই ২০২০

সুবিধা ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে
বিশেষায়িত শিক্ষায় শিক্ষিত ব্যক্তিরা বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে অন্য পেশায় যাচ্ছেন। এটা খবর হিসেবে নতুন নয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই পেশা বদলের হার বাড়ছে। তাই প্রশ্ন উঠছে, বিশেষায়িত লোকজন কেন বিসিএস দিয়ে অন্য পেশায় যাচ্ছেন? সমস্যাটি কোথায়? পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) অবশ্য এ বিষয়ক তথ্য আলাদা করে রাখে না। রাখার কথাও নয়। তারা যোগ্য প্রার্থী পেলে নির্বাচিত করবে। ক্যাডার চয়েস তাদের বিষয় নয়। সেটা প্রার্থীদের ঠিক করার বিষয়। পরীক্ষায় মেধাই তাদের কাছে বিবেচ্য। পিএসসির কাজ যোগ্যতা ও পছন্দ অনুযায়ী ক্যাডার বণ্টন করা। বিসিএস পাস করা বিভিন্ন পেশাজীবীর তথ্য থেকে জানা যায়, ৩৬তম বিসিএসে নির্বাচিত দুই হাজার ৩২৩ প্রার্থীর মধ্যে শতাধিক ডাক্তার, প্রকৌশলী ও কৃষিবিদ নিজ পেশায় না গিয়ে প্রশাসন, পররাষ্ট্র বা পুলিশ ক্যাডারে যোগদান করেছেন। এই হার প্রায় ৪.৩০ শতাংশ। ৩৭তম বিসিএসে এক হাজার ৩১৪ জনের মধ্যে বিশেষায়িত শিক্ষাগ্রহণকারী রয়েছেন প্রায় ৮০ জন (প্রায় ৬.০৮ শতাংশ)। সর্বশেষ ৩৮তম বিসিএসে দুই হাজার ২০৪ জন প্রার্থীর মধ্যে প্রায় ১৭০ জন ডাক্তার-প্রকৌশলী-কৃষিবিদ রয়েছেন (প্রায় ৭.৭১ শতাংশ)। পেশা বদল হতেই পারে। কথা হচ্ছে, বিশেষায়িত শিক্ষিতদের মধ্যে পেশা বদলের হিড়িক দেখা দিলে সমস্যা। কারণ তাঁদের বিশেষ উদ্দেশ্যে বিশেষ কাজের জন্য তৈরি করা হয়। সাধারণ শিক্ষিতদের চেয়ে তাঁদের জন্য রাষ্ট্রের খরচও বেশি। কেন তাঁরা তাঁদের পেশার বিশেষত্ব রক্ষা করবেন না? কারণ সম্মান ও প্রতাপ। যাঁরা পেশা বদল করছেন তাঁদের বক্তব্য, প্রশাসন ক্যাডারে চাকরির মূল্য বিশেষ ক্যাডারের চেয়ে অনেক বেশি। তাঁদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা থাকে। তাঁদের পদোন্নতির ধারাবাহিকতা থাকে। চাকরির শুরু থেকে তাঁরা নানা সুবিধা পান। বিশেষায়িত ক্যাডারে পদোন্নতি এত সহজ নয়। প্রশাসন, পররাষ্ট্র, পুলিশ ক্যাডারের লোকজন সাত-আট বছর পর যে অবস্থানে পৌঁছেন একই মর্যাদার অবস্থানে পৌঁছতে বিশেষায়িত ক্যাডারের লোকজনের ২০ থেকে ২৫ বছর সময় লাগে। মূলত মর্যাদাই বড় সমস্যা। প্রভাব-প্রতিপত্তির বিষয়ও রয়েছে। তাঁদের মেধাও বেশি, অথচ মূল্যায়ন নেই। এসব কারণেই বিশেষায়িতরা অন্য পেশায় ঝুঁকছেন। সমস্যাটি শিক্ষা ও কর্মসংস্থান পরিকল্পনায়। ব্যতিক্রমী ঘটনা বাদ দিলে বিশেষায়িতদের নিজ পেশায়ই থাকা উচিত। সেটার জন্যই তাঁদের তৈরি করা হয়েছে। তাঁদেরও যদি পদোন্নতির ধারা ঠিক থাকে, মর্যাদা নিশ্চিত হয়, মেধার মূল্যায়ন হয়, তাহলে যে সমস্যা দেখা দিয়েছে তা থাকবে না।