ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বিশ্ব মা দিবস আরো মর্যাদাময় ও মহীয়ান হয়ে উঠুক

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৫১:৩১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ মে ২০১৮
  • / ৩৯১ বার পড়া হয়েছে

এ পৃথিবীতে মায়ের সাথে সন্তানের সম্পর্কের চেয়ে মধুর সম্পর্ক আর নেই। নদীর মতো প্রবহমান মানুষের জীবন। নদী প্রবাহ যেমন থেমে থাকে না, মানুষের জীবনও সেরকমই। জীবনের চলার পথে মানুষ এগিয়ে যেতে থাকে। এ চলমান জীবনের একটি পর্যায়ে নারী এসে পুরুষের সাথে বিবাহের অচ্ছেদ্য বন্ধনে বাঁধা পড়ে। জীবনের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়। প্রেম-ভালোবাসা-সংসারের দিনযাপন আর অভিজ্ঞতার পথ বেয়ে পুরুষ হয় পিতা আর স্ত্রী হয় মা। মাতৃত্ব হচ্ছে নারীর চিরন্তন রূপ। সে মাতৃত্বের সার্বিক প্রকাশ ঘটে তার সন্তানকে লালন করার মধ্যে। এক বা একাধিক সন্তানকে ঘিরে রচিত হয় ¯েœহ-মমতা-ভালোবাসার এক নতুন পৃথিবী। পিতা-মাতার জীবনের সব আশা-আকাক্সক্ষা, অপূর্ণ স্বপ্ন সন্তানদের ঘিরে ভবিষ্যতের পথে অগ্রসর হয়। শিশুর জন্ম থেকে শুরু করে তার বড় হয়ে ওঠা পর্যন্ত সময়কালটি আবর্তিত হয় মাকে ঘিরে। প্রকৃতির নিয়ম হচ্ছে নারী হবে মা। এটি নারীর প্রকৃতিগত প্রাপ্তি। নারীর মা হওয়া তার জীবনের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। একটি সদ্যজাত শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো থেকে শুরু করে তাকে তিল তিল করে বড় করে তোলার দায়িত্বটি পরম যতœ ও নিষ্ঠার সাথে পালন করেন মা। যে মা সন্তানকে দশ মাস গর্ভে ধারণ করেন, ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর অপরিসীম মায়া-মমতায় পৃথিবীর বুকে ধীরে ধীরে বড় করে তোলেন, মানুষের কোনো ভাষাতেই, কোনো কথাতেই বুঝি সেই মায়ের অবদানের পূর্ণ পরিচয় তুলে ধরা যায় না। মা তো মা-ই। মা’র কোনো তুলনা হয় না। শ্রদ্ধা, সম্মান, ভক্তি, সেবা, ভালোবাসা দিয়ে মা’র দানের হয়তো কিছুটা প্রতিদান দেয়া যেতে পারে। সভ্যতার শুরু থেকেই মানুষকে মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল দেখা যায়। সব কালে, সব দেশে চিরকালই মায়ের ভূমিকা এক ও অভিন্ন। প্রতিটি মা’ই সন্তানের প্রতি যেমন যতœবান তেমনি তার অমঙ্গলের ব্যাপারে শঙ্কিত। সভ্যতার আদি যুগে পুত্র যখন জঙ্গলে শিকার করতে গেছে তখন উদ্বিগ্ন মা তার পথ চেয়ে বসে থেকেছেন। পরবর্তীতে সন্তান যখন লড়াই করতে গেছে তখন মায়ের বুক শঙ্কায় দুর দুর করেছে। আধুনিক যুগে সন্তান যখন পড়াশোনা করতে দূর দেশে গেছে তখন মমতাময়ী মা তার ফেরার আশায় দিন গুনেছেন। এখন সংসারে একটু সচ্ছলতা আনার আশায় পুত্র যখন হাজার হাজার মাইল দূরের দেশে চাকরি নিয়ে চলে যায় তখন ফোনে তার কণ্ঠ শোনার জন্য আকুল হয়ে থাকেন। পৃথিবীর সব দেশের মা’ই সন্তানের মৃত্যুতে বুক চাপড়ে কাঁদেন, তার আহাজারিতে ভরে ওঠে আকাশ-বাতাস। কোনো প্রলোভন দিয়েই কোনো মাকে তার সন্তানের বিরুদ্ধে কোনো ক্ষতিকর কাজে লিপ্ত করানো যায় না। মা শিশুকালে বুক দিয়ে সন্তানকে আগলে রাখেন, সন্তান বড় হলেও তার জন্য প্রয়োজনে নিজের জীবন দিতেও দ্বিধা করেন না। নারীরা বিশ্বের দেশে দেশে প্রশাসন, কূটনীতি, বিজ্ঞান চর্চা, মহাকাশ গবেষণা, প্রযুক্তির আবিষ্কার, মানবিক কার্যক্রমসহ সব ক্ষেত্রেই অনেকখানি অগ্রসর হয়েছেন। ক্রমবর্ধমান সাফল্য নারীর সাফল্যের প্রান্তরে সোনালি চাদর বিছিয়ে দিক, বিশ্ব মা দিবসকে আরো মর্যাদাময় ও মহীয়ান করে তুলুকÑ এটাই ঐকান্তিক কামনা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

বিশ্ব মা দিবস আরো মর্যাদাময় ও মহীয়ান হয়ে উঠুক

আপলোড টাইম : ০৮:৫১:৩১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ মে ২০১৮

এ পৃথিবীতে মায়ের সাথে সন্তানের সম্পর্কের চেয়ে মধুর সম্পর্ক আর নেই। নদীর মতো প্রবহমান মানুষের জীবন। নদী প্রবাহ যেমন থেমে থাকে না, মানুষের জীবনও সেরকমই। জীবনের চলার পথে মানুষ এগিয়ে যেতে থাকে। এ চলমান জীবনের একটি পর্যায়ে নারী এসে পুরুষের সাথে বিবাহের অচ্ছেদ্য বন্ধনে বাঁধা পড়ে। জীবনের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়। প্রেম-ভালোবাসা-সংসারের দিনযাপন আর অভিজ্ঞতার পথ বেয়ে পুরুষ হয় পিতা আর স্ত্রী হয় মা। মাতৃত্ব হচ্ছে নারীর চিরন্তন রূপ। সে মাতৃত্বের সার্বিক প্রকাশ ঘটে তার সন্তানকে লালন করার মধ্যে। এক বা একাধিক সন্তানকে ঘিরে রচিত হয় ¯েœহ-মমতা-ভালোবাসার এক নতুন পৃথিবী। পিতা-মাতার জীবনের সব আশা-আকাক্সক্ষা, অপূর্ণ স্বপ্ন সন্তানদের ঘিরে ভবিষ্যতের পথে অগ্রসর হয়। শিশুর জন্ম থেকে শুরু করে তার বড় হয়ে ওঠা পর্যন্ত সময়কালটি আবর্তিত হয় মাকে ঘিরে। প্রকৃতির নিয়ম হচ্ছে নারী হবে মা। এটি নারীর প্রকৃতিগত প্রাপ্তি। নারীর মা হওয়া তার জীবনের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। একটি সদ্যজাত শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো থেকে শুরু করে তাকে তিল তিল করে বড় করে তোলার দায়িত্বটি পরম যতœ ও নিষ্ঠার সাথে পালন করেন মা। যে মা সন্তানকে দশ মাস গর্ভে ধারণ করেন, ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর অপরিসীম মায়া-মমতায় পৃথিবীর বুকে ধীরে ধীরে বড় করে তোলেন, মানুষের কোনো ভাষাতেই, কোনো কথাতেই বুঝি সেই মায়ের অবদানের পূর্ণ পরিচয় তুলে ধরা যায় না। মা তো মা-ই। মা’র কোনো তুলনা হয় না। শ্রদ্ধা, সম্মান, ভক্তি, সেবা, ভালোবাসা দিয়ে মা’র দানের হয়তো কিছুটা প্রতিদান দেয়া যেতে পারে। সভ্যতার শুরু থেকেই মানুষকে মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল দেখা যায়। সব কালে, সব দেশে চিরকালই মায়ের ভূমিকা এক ও অভিন্ন। প্রতিটি মা’ই সন্তানের প্রতি যেমন যতœবান তেমনি তার অমঙ্গলের ব্যাপারে শঙ্কিত। সভ্যতার আদি যুগে পুত্র যখন জঙ্গলে শিকার করতে গেছে তখন উদ্বিগ্ন মা তার পথ চেয়ে বসে থেকেছেন। পরবর্তীতে সন্তান যখন লড়াই করতে গেছে তখন মায়ের বুক শঙ্কায় দুর দুর করেছে। আধুনিক যুগে সন্তান যখন পড়াশোনা করতে দূর দেশে গেছে তখন মমতাময়ী মা তার ফেরার আশায় দিন গুনেছেন। এখন সংসারে একটু সচ্ছলতা আনার আশায় পুত্র যখন হাজার হাজার মাইল দূরের দেশে চাকরি নিয়ে চলে যায় তখন ফোনে তার কণ্ঠ শোনার জন্য আকুল হয়ে থাকেন। পৃথিবীর সব দেশের মা’ই সন্তানের মৃত্যুতে বুক চাপড়ে কাঁদেন, তার আহাজারিতে ভরে ওঠে আকাশ-বাতাস। কোনো প্রলোভন দিয়েই কোনো মাকে তার সন্তানের বিরুদ্ধে কোনো ক্ষতিকর কাজে লিপ্ত করানো যায় না। মা শিশুকালে বুক দিয়ে সন্তানকে আগলে রাখেন, সন্তান বড় হলেও তার জন্য প্রয়োজনে নিজের জীবন দিতেও দ্বিধা করেন না। নারীরা বিশ্বের দেশে দেশে প্রশাসন, কূটনীতি, বিজ্ঞান চর্চা, মহাকাশ গবেষণা, প্রযুক্তির আবিষ্কার, মানবিক কার্যক্রমসহ সব ক্ষেত্রেই অনেকখানি অগ্রসর হয়েছেন। ক্রমবর্ধমান সাফল্য নারীর সাফল্যের প্রান্তরে সোনালি চাদর বিছিয়ে দিক, বিশ্ব মা দিবসকে আরো মর্যাদাময় ও মহীয়ান করে তুলুকÑ এটাই ঐকান্তিক কামনা।