ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বিদ্যুৎ বাণিজ্যে নীতিমালা হচ্ছে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৪৭:১৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল ২০১৯
  • / ৩১৮ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:
কোনো ধরনের নীতিমালা ছাড়াই এতদিন বিদ্যুৎ আমদানি চলছিল। এবার নীতিমালা তৈরির কাজে হাত দিয়েছে সরকার। আর এই নীতিমালায় আমদানির পাশাপাশি রপ্তানির সুযোগ রেখে আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ বাণিজ্যের (ক্রস বর্ডার ইলেক্ট্রিসিটি ট্রেড) জন্য নীতিমালাটি করা হবে। পাওয়ার সেলের করা নতুন এ নীতিমালা গত সপ্তাহে বিদ্যুৎ বিভাগে জমা দেয়া হয়েছে।
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ব্যবসাকে একটি নীতির আওতায় আনা জরুরি। এতদিন কোনো নীতিমালাই ছিল না। আমরা এখন ভারতের পাশাপাশি নেপাল এবং ভুটানকে অন্তর্ভুক্ত করছি। ফলে আমাদের নীতি প্রণয়ন জরুরি হয়ে উঠেছিল। আর এই নীতির উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে আমদানির সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ রপ্তানি। বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, আমাদের এখন উদ্যোগ নিতে হবে বিদ্যুৎ রপ্তানির। যেহেতু আমরা আমদানির জন্য লাইন এবং অবকাঠামো নির্মাণ করছি, সেই লাইন দিয়েই আমরা রপ্তানিও করতে পারবো। এতে বিদ্যুৎ খাত স্বনির্ভর হবে। আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ বাণিজ্যের নীতিমালাতে আমদানির একটি সুনির্দিষ্ট পরিমাণ বেঁধে দেয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, মোট উৎপাদন বার্ষিক সর্বোচ্চ উৎপাদনের ১৫ ভাগের বেশি আমদানি করা যাবে না। উৎপাদন ক্ষমতা যা-ই হোক না কেন, প্রকৃত উৎপাদনের ১৫ ভাগের মধ্যে আমদানিকে রাখার কথা বলা হয়েছে এতে। আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ বাণিজ্যের ক্ষেত্রে লাইন এবং সাবস্টেশন নির্মাণে বাংলাদেশ উদার হতে চায়। নীতিমালায় বলা হয়েছে, নিজেদের এলাকায় গ্রিড লাইন এবং সাবস্টেশন নির্মাণ করবে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ। আর সীমান্তের ওপারে সংশ্লিষ্ট দেশ চাইলে তারা নিজেদের গ্রিড বাংলাদেশের কাছে ভাড়া দিতে পারবে বা নতুন গ্রিড তারা নির্মাণ করে দিতে পারবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ হুইলিং চার্জ (ইউনিটপ্রতি সঞ্চালন ব্যয়) পরিশোধ করবে। ভারতের মতো বাংলাদেশেও স্পট মার্কেটিং বা বিদ্যুতের বাজার তৈরি করা যেতে পারে বলে নীতিমালায় বলা হয়েছে।
বলা হচ্ছে, ভারতে যেমন প্রতিদিন সকাল-বিকাল পাইকারি ক্রেতাদের জন্য বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করে, বাংলাদেশেও তা সম্ভব। তবে অবশ্যই এ জন্য সরকারি নিয়ম-নীতির মধ্যে থাকতে হবে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় বা ত্রিপাক্ষিকভাবে যেকোনো প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে। রপ্তানিকারক দেশের সরকারি বা বেসরকারি কোনো কোম্পানির কাছ থেকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ কিনতে পারবে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার, দাতা সংস্থা বা অন্য কোনো উৎস থেকে ঋণ নিতে পারবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ এখন ভারতের কাছ থেকে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে। ভারতের কাছ থেকে আরও এক হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া ভারতে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করে আদানি পাওয়ার বাংলাদেশের কাছে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বেচতে চাইছে। সরকার এ বিষয়ে আদানির সঙ্গে চুক্তিও করেছে। অন্যদিকে নেপালের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে বাংলাদেশ। সমঝোতার আলোকে দুই দেশ যৌথবিনিয়োগের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি গ্রিড লাইন নির্মাণে রুট নির্ধারণ করছে। এছাড়া ভুটানের সঙ্গে একটি ত্রিপাক্ষিক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করার বিষয়েও আলোচনা চলছে। সেখানে বাংলাদেশ ও ভুটানের সঙ্গী হচ্ছে ভারত। এটি এপ্রিলের মধ্যে সই হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

বিদ্যুৎ বাণিজ্যে নীতিমালা হচ্ছে

আপলোড টাইম : ১০:৪৭:১৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল ২০১৯

সমীকরণ প্রতিবেদন:
কোনো ধরনের নীতিমালা ছাড়াই এতদিন বিদ্যুৎ আমদানি চলছিল। এবার নীতিমালা তৈরির কাজে হাত দিয়েছে সরকার। আর এই নীতিমালায় আমদানির পাশাপাশি রপ্তানির সুযোগ রেখে আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ বাণিজ্যের (ক্রস বর্ডার ইলেক্ট্রিসিটি ট্রেড) জন্য নীতিমালাটি করা হবে। পাওয়ার সেলের করা নতুন এ নীতিমালা গত সপ্তাহে বিদ্যুৎ বিভাগে জমা দেয়া হয়েছে।
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ব্যবসাকে একটি নীতির আওতায় আনা জরুরি। এতদিন কোনো নীতিমালাই ছিল না। আমরা এখন ভারতের পাশাপাশি নেপাল এবং ভুটানকে অন্তর্ভুক্ত করছি। ফলে আমাদের নীতি প্রণয়ন জরুরি হয়ে উঠেছিল। আর এই নীতির উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে আমদানির সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ রপ্তানি। বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, আমাদের এখন উদ্যোগ নিতে হবে বিদ্যুৎ রপ্তানির। যেহেতু আমরা আমদানির জন্য লাইন এবং অবকাঠামো নির্মাণ করছি, সেই লাইন দিয়েই আমরা রপ্তানিও করতে পারবো। এতে বিদ্যুৎ খাত স্বনির্ভর হবে। আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ বাণিজ্যের নীতিমালাতে আমদানির একটি সুনির্দিষ্ট পরিমাণ বেঁধে দেয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, মোট উৎপাদন বার্ষিক সর্বোচ্চ উৎপাদনের ১৫ ভাগের বেশি আমদানি করা যাবে না। উৎপাদন ক্ষমতা যা-ই হোক না কেন, প্রকৃত উৎপাদনের ১৫ ভাগের মধ্যে আমদানিকে রাখার কথা বলা হয়েছে এতে। আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ বাণিজ্যের ক্ষেত্রে লাইন এবং সাবস্টেশন নির্মাণে বাংলাদেশ উদার হতে চায়। নীতিমালায় বলা হয়েছে, নিজেদের এলাকায় গ্রিড লাইন এবং সাবস্টেশন নির্মাণ করবে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ। আর সীমান্তের ওপারে সংশ্লিষ্ট দেশ চাইলে তারা নিজেদের গ্রিড বাংলাদেশের কাছে ভাড়া দিতে পারবে বা নতুন গ্রিড তারা নির্মাণ করে দিতে পারবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ হুইলিং চার্জ (ইউনিটপ্রতি সঞ্চালন ব্যয়) পরিশোধ করবে। ভারতের মতো বাংলাদেশেও স্পট মার্কেটিং বা বিদ্যুতের বাজার তৈরি করা যেতে পারে বলে নীতিমালায় বলা হয়েছে।
বলা হচ্ছে, ভারতে যেমন প্রতিদিন সকাল-বিকাল পাইকারি ক্রেতাদের জন্য বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করে, বাংলাদেশেও তা সম্ভব। তবে অবশ্যই এ জন্য সরকারি নিয়ম-নীতির মধ্যে থাকতে হবে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় বা ত্রিপাক্ষিকভাবে যেকোনো প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে। রপ্তানিকারক দেশের সরকারি বা বেসরকারি কোনো কোম্পানির কাছ থেকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ কিনতে পারবে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার, দাতা সংস্থা বা অন্য কোনো উৎস থেকে ঋণ নিতে পারবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ এখন ভারতের কাছ থেকে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে। ভারতের কাছ থেকে আরও এক হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া ভারতে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করে আদানি পাওয়ার বাংলাদেশের কাছে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বেচতে চাইছে। সরকার এ বিষয়ে আদানির সঙ্গে চুক্তিও করেছে। অন্যদিকে নেপালের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে বাংলাদেশ। সমঝোতার আলোকে দুই দেশ যৌথবিনিয়োগের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি গ্রিড লাইন নির্মাণে রুট নির্ধারণ করছে। এছাড়া ভুটানের সঙ্গে একটি ত্রিপাক্ষিক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করার বিষয়েও আলোচনা চলছে। সেখানে বাংলাদেশ ও ভুটানের সঙ্গী হচ্ছে ভারত। এটি এপ্রিলের মধ্যে সই হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।