ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বিকাশে প্রতারণা বাড়ছে : ২২ হাজার টাকা খোয়ালেন চুয়াডাঙ্গার কলেজছাত্র

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১১:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর ২০১৭
  • / ১৪৬৪ বার পড়া হয়েছে

আফজালুল হক: আপনার মুঠোফোনে একটা বিকাশ মেসেজ আসলো। ১/২ মিনিট পরেই কল দিয়ে কেউ একজন বলবে ভাই আপনার বিকাশ নাম্বারে ভুল করে কিছু টাকা চলে গেছে। আমি এই সেই বিকাশ দোকান থেকে বলছি। আপনি হয়তো বিকাশ একাউন্ট চেক না করেই মেসেজ দেখে বলে দিলেন ‘হ্যা’ এসেছে। অপরপ্রান্ত থেকে বলবে ভাই এই টাকাটা দয়া করে এই নাম্বারে বিকাশ করে দেন। আপনি কথামত কাজ করলেন। আপনার বিকাশ একাউন্ট থেকে আপনার টাকা প্রতারকের হাতে চলে গেল। পরে বিষয়টি বোঝার পর আপনি কল সেন্টারে কল করে অভিযোগ দিলেন। কলসেন্টার আপনার অভিযোগ শুনে লিখে রাখল। কিন্তু প্রতারকও সনাক্ত হবে না। আপনি টাকা ফেরতও পাবেন না। এভাবে প্রতারিত হচ্ছেন বিকাশ গ্রাহকেরা।
বিভিন্ন সূত্রমতে, একটি প্রতারক চক্র দেশজুড়ে প্রতারণার জাল বুনে আছে। তাদের লোক বিকাশ দোকানগুলোর আশেপাশে ঘুর ঘুর করে। কে টাকা তুলছে, কে পাঠাচ্ছে এসব নজরদারি করে। পরে সেখান থেকেই প্রতারণার ফাঁদ আটে। সেই ফাঁদে বেশিরভাগ মানুষই পড়ে যায়। গতকাল সোমবার বিকালে অভিনব এক প্রতারণার শিকার হয়েছেন চুয়াডাঙ্গা সরকারী কলেজের এক ছাত্র।
জানা গেছে, ওই ছাত্রের বিকাশ একাউন্টে ৫ হাজার টাকা ছিল। গতকাল বিকালে ওই ছাত্রের মোবাইলে ০১৮৮৫৭২৬০৬৭ নম্বর থেকে ফোন আসে। ভুলে কিছু টাকা মোবাইলে চলে গেছে জানিয়ে ওই ব্যক্তি টাকাগুলো ফেরত চাই ওই ছাত্রের কাছে। ওই ছাত্র কোনো এসএমএস না পাওয়ার কথা জানালে ওই ব্যক্তি বলেন, নেটওয়ার্কের সমস্যার কারণে হয়ত এসএমএস যায়নি, ব্যালেন্স চেক করলেই আপনি টাকা দেখতে পাবেন। এরপর তার ব্যালেন্স চেক করে একাউন্টে ৩৫ হাজার টাকা দেখতে পান এবং কিছুক্ষণ পর এসএমএসও পান। এরপর ওই ছাত্র দেখতে পান যে তার ব্যালেন্স শুন্য। তখন প্রতারক বলে আপনি ওই টাকা ফেরত পেতে বিকাশ নাম্বারে ৩০ হাজার টাকা দেয়। আমার নাম্বারের টাকা পাঠালে তার মোবাইলে ৩৫ হাজার টাকা চলে আসবে। পরে চুয়াডাঙ্গা শহরের পান্না সিনেমা হলের পাশে হক স্টোর থেকে ২২ হাজার টাকা পাঠায়। আরো ৮ হাজার টাকা পাঠানোর কথা বললে দোকানদার জুয়েলের সন্দেহ হয়, তখনই ধরা পড়ে বিষয়টি। পরে ওই কলেজছাত্রকে আটকে রেখে পরিবারের লোকজনের খবর দেন দোকানদার জুয়েল। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পুলিশ ও ছাত্রের পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিতি হয়। কলেজছাত্রের পিতা এসে নগদ ২২ হাজার টাকা পরিষোধ করে ছেলেকে নিয়ে যান।
এসব প্রতারকদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও খুঁজে বের করতে পারে না। কারন তারা খুবই সুচতর। ঘনঘন নাম্বার পরিবর্তন করে। বিকাশ কর্তৃপক্ষও এ বিষয়ে উদাসিন ভূমিকা পালন করে। উল্লেখ্য, ওই ছাত্রের পরিবারের অনুরোধে এবং তার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ও পুলিশের তদন্তের স্বার্থে বিকাশ নাম্বার ও ছাত্রের পরিচয়টি প্রকাশ করা হলোনা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

বিকাশে প্রতারণা বাড়ছে : ২২ হাজার টাকা খোয়ালেন চুয়াডাঙ্গার কলেজছাত্র

আপলোড টাইম : ১০:১১:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর ২০১৭

আফজালুল হক: আপনার মুঠোফোনে একটা বিকাশ মেসেজ আসলো। ১/২ মিনিট পরেই কল দিয়ে কেউ একজন বলবে ভাই আপনার বিকাশ নাম্বারে ভুল করে কিছু টাকা চলে গেছে। আমি এই সেই বিকাশ দোকান থেকে বলছি। আপনি হয়তো বিকাশ একাউন্ট চেক না করেই মেসেজ দেখে বলে দিলেন ‘হ্যা’ এসেছে। অপরপ্রান্ত থেকে বলবে ভাই এই টাকাটা দয়া করে এই নাম্বারে বিকাশ করে দেন। আপনি কথামত কাজ করলেন। আপনার বিকাশ একাউন্ট থেকে আপনার টাকা প্রতারকের হাতে চলে গেল। পরে বিষয়টি বোঝার পর আপনি কল সেন্টারে কল করে অভিযোগ দিলেন। কলসেন্টার আপনার অভিযোগ শুনে লিখে রাখল। কিন্তু প্রতারকও সনাক্ত হবে না। আপনি টাকা ফেরতও পাবেন না। এভাবে প্রতারিত হচ্ছেন বিকাশ গ্রাহকেরা।
বিভিন্ন সূত্রমতে, একটি প্রতারক চক্র দেশজুড়ে প্রতারণার জাল বুনে আছে। তাদের লোক বিকাশ দোকানগুলোর আশেপাশে ঘুর ঘুর করে। কে টাকা তুলছে, কে পাঠাচ্ছে এসব নজরদারি করে। পরে সেখান থেকেই প্রতারণার ফাঁদ আটে। সেই ফাঁদে বেশিরভাগ মানুষই পড়ে যায়। গতকাল সোমবার বিকালে অভিনব এক প্রতারণার শিকার হয়েছেন চুয়াডাঙ্গা সরকারী কলেজের এক ছাত্র।
জানা গেছে, ওই ছাত্রের বিকাশ একাউন্টে ৫ হাজার টাকা ছিল। গতকাল বিকালে ওই ছাত্রের মোবাইলে ০১৮৮৫৭২৬০৬৭ নম্বর থেকে ফোন আসে। ভুলে কিছু টাকা মোবাইলে চলে গেছে জানিয়ে ওই ব্যক্তি টাকাগুলো ফেরত চাই ওই ছাত্রের কাছে। ওই ছাত্র কোনো এসএমএস না পাওয়ার কথা জানালে ওই ব্যক্তি বলেন, নেটওয়ার্কের সমস্যার কারণে হয়ত এসএমএস যায়নি, ব্যালেন্স চেক করলেই আপনি টাকা দেখতে পাবেন। এরপর তার ব্যালেন্স চেক করে একাউন্টে ৩৫ হাজার টাকা দেখতে পান এবং কিছুক্ষণ পর এসএমএসও পান। এরপর ওই ছাত্র দেখতে পান যে তার ব্যালেন্স শুন্য। তখন প্রতারক বলে আপনি ওই টাকা ফেরত পেতে বিকাশ নাম্বারে ৩০ হাজার টাকা দেয়। আমার নাম্বারের টাকা পাঠালে তার মোবাইলে ৩৫ হাজার টাকা চলে আসবে। পরে চুয়াডাঙ্গা শহরের পান্না সিনেমা হলের পাশে হক স্টোর থেকে ২২ হাজার টাকা পাঠায়। আরো ৮ হাজার টাকা পাঠানোর কথা বললে দোকানদার জুয়েলের সন্দেহ হয়, তখনই ধরা পড়ে বিষয়টি। পরে ওই কলেজছাত্রকে আটকে রেখে পরিবারের লোকজনের খবর দেন দোকানদার জুয়েল। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পুলিশ ও ছাত্রের পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিতি হয়। কলেজছাত্রের পিতা এসে নগদ ২২ হাজার টাকা পরিষোধ করে ছেলেকে নিয়ে যান।
এসব প্রতারকদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও খুঁজে বের করতে পারে না। কারন তারা খুবই সুচতর। ঘনঘন নাম্বার পরিবর্তন করে। বিকাশ কর্তৃপক্ষও এ বিষয়ে উদাসিন ভূমিকা পালন করে। উল্লেখ্য, ওই ছাত্রের পরিবারের অনুরোধে এবং তার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ও পুলিশের তদন্তের স্বার্থে বিকাশ নাম্বার ও ছাত্রের পরিচয়টি প্রকাশ করা হলোনা।