ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বাড়ছে কিশোর অপরাধ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৩১:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ জুন ২০১৯
  • / ২৪৭ বার পড়া হয়েছে

প্রতিকারে প্রয়োজন নিয়মিত পর্যবেক্ষণ
সারা দেশে ভয়াবহ আকারে বাড়ছে কিশোর অপরাধের ঘটনা। স্কুলের গ-ি পেরোনোর আগেই অনেকে জড়িয়ে পড়ছে অপরাধীচক্রের সঙ্গে। ঘটাচ্ছে ভয়ংকর সব অপরাধ। সম্প্রতি পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ইভটিজিং কিংবা মহল্লাভিত্তিক বখাটেপনা নয়, কিশোররা গ্রুপ তৈরি করে পরিকল্পিত হত্যায় অংশ নিচ্ছে। সহপাঠীকে অপহরণ করে দাবি করছে মুক্তিপণ। এমনকি ধর্ষণ ঘটনায়ও জড়াচ্ছে তাদের নাম। কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র ও পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর সারা দেশে পাঁচ শতাধিক মামলা হচ্ছে কিশোর অপরাধসংক্রান্ত। সম্প্রতি মামলার সংখ্যা কিছুটা কমলেও কিশোরদের অপরাধের ধরন বেড়েছে। কেন এমন হচ্ছে? কিশোরদের এভাবে অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠার কারণ কী? সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় যে কিশোর অপরাধ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, পারিপার্শ্বিক নানা কারণে অনেক আগে থেকেই অপরাধী তালিকায় নাম এসেছে অল্পবয়সীদের। তাঁরা মনে করেন, দুর্বল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির পাশাপাশি পারিবারিক শিক্ষার অভাবও এর জন্য অনেকাংশে দায়ী। সন্তানের শিক্ষা ও চরিত্র গঠনের প্রতি অভিভাবকদের যতটা মনোযোগ দেওয়া দরকার, তা প্রায়ই দেওয়া হয় না। আবার মাদক বিক্রেতা থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ পর্যন্ত অনেকেই নিজের সামান্য লাভের জন্য কিশোরদের অপরাধ জগতে টেনে নেন। অপরাধমূলক কর্মকা-ে কিশোরদের ব্যবহার করেন। ফলে একসময় এই কিশোররা পরিবারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তখন শুধু পাড়া-পড়শির নয়, নিজের পরিবারের জন্যও তারা বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাদের দেশের কিশোররা বর্তমানে অনেক উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। কিশোর অপরাধপ্রবণতা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ফেসবুকের মাধ্যমে গ্রুপ তৈরি করে নানা অপরাধ করছে কিশোররা। ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোনের কুপ্রভাবে অনেকে পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। বাড়ছে কিশোর অপরাধ। এখন এলাকাভিত্তিক সামাজিক কর্মকা- নেই বললেই চলে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে না, খেলার মাঠ কমে এসেছে। সামাজিকভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন না থাকায় কিশোররা সাইবার জগতে ঢুকছে। সেখান থেকে যা শিখছে, তা প্রয়োগ করতে গিয়ে তারা বিপথগামী হচ্ছে বলেই মনে করছেন অপরাধ ও সমাজ বিশেষজ্ঞরা। এ থেকে মুক্তির উপায় কী? পরিবার ও সামাজিক পর্যায়ে সঠিক পরিচর্যা ও পর্যবেক্ষণ কিশোর অপরাধ কমাতে অনেক সাহায্য করবে। পরিবার ও সমাজে যদি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ থাকে, তাহলে কিশোররা অপরাধমূলক ঘটনায় কম জড়াবে। আমরা আশা করব, কিশোরদের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে যে সামাজিক ও পারিবারিক অনুশাসন দরকার, তা যথাযথভাবে প্রয়োগ করা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

বাড়ছে কিশোর অপরাধ

আপলোড টাইম : ১১:৩১:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ জুন ২০১৯

প্রতিকারে প্রয়োজন নিয়মিত পর্যবেক্ষণ
সারা দেশে ভয়াবহ আকারে বাড়ছে কিশোর অপরাধের ঘটনা। স্কুলের গ-ি পেরোনোর আগেই অনেকে জড়িয়ে পড়ছে অপরাধীচক্রের সঙ্গে। ঘটাচ্ছে ভয়ংকর সব অপরাধ। সম্প্রতি পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ইভটিজিং কিংবা মহল্লাভিত্তিক বখাটেপনা নয়, কিশোররা গ্রুপ তৈরি করে পরিকল্পিত হত্যায় অংশ নিচ্ছে। সহপাঠীকে অপহরণ করে দাবি করছে মুক্তিপণ। এমনকি ধর্ষণ ঘটনায়ও জড়াচ্ছে তাদের নাম। কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র ও পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর সারা দেশে পাঁচ শতাধিক মামলা হচ্ছে কিশোর অপরাধসংক্রান্ত। সম্প্রতি মামলার সংখ্যা কিছুটা কমলেও কিশোরদের অপরাধের ধরন বেড়েছে। কেন এমন হচ্ছে? কিশোরদের এভাবে অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠার কারণ কী? সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় যে কিশোর অপরাধ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, পারিপার্শ্বিক নানা কারণে অনেক আগে থেকেই অপরাধী তালিকায় নাম এসেছে অল্পবয়সীদের। তাঁরা মনে করেন, দুর্বল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির পাশাপাশি পারিবারিক শিক্ষার অভাবও এর জন্য অনেকাংশে দায়ী। সন্তানের শিক্ষা ও চরিত্র গঠনের প্রতি অভিভাবকদের যতটা মনোযোগ দেওয়া দরকার, তা প্রায়ই দেওয়া হয় না। আবার মাদক বিক্রেতা থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ পর্যন্ত অনেকেই নিজের সামান্য লাভের জন্য কিশোরদের অপরাধ জগতে টেনে নেন। অপরাধমূলক কর্মকা-ে কিশোরদের ব্যবহার করেন। ফলে একসময় এই কিশোররা পরিবারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তখন শুধু পাড়া-পড়শির নয়, নিজের পরিবারের জন্যও তারা বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাদের দেশের কিশোররা বর্তমানে অনেক উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। কিশোর অপরাধপ্রবণতা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ফেসবুকের মাধ্যমে গ্রুপ তৈরি করে নানা অপরাধ করছে কিশোররা। ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোনের কুপ্রভাবে অনেকে পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। বাড়ছে কিশোর অপরাধ। এখন এলাকাভিত্তিক সামাজিক কর্মকা- নেই বললেই চলে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে না, খেলার মাঠ কমে এসেছে। সামাজিকভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন না থাকায় কিশোররা সাইবার জগতে ঢুকছে। সেখান থেকে যা শিখছে, তা প্রয়োগ করতে গিয়ে তারা বিপথগামী হচ্ছে বলেই মনে করছেন অপরাধ ও সমাজ বিশেষজ্ঞরা। এ থেকে মুক্তির উপায় কী? পরিবার ও সামাজিক পর্যায়ে সঠিক পরিচর্যা ও পর্যবেক্ষণ কিশোর অপরাধ কমাতে অনেক সাহায্য করবে। পরিবার ও সমাজে যদি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ থাকে, তাহলে কিশোররা অপরাধমূলক ঘটনায় কম জড়াবে। আমরা আশা করব, কিশোরদের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে যে সামাজিক ও পারিবারিক অনুশাসন দরকার, তা যথাযথভাবে প্রয়োগ করা হবে।