ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বাজেটে মূল্যষ্ফীতি বাড়বে : চাপে সাধারণ মানুষ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৪:৩৬:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ জুন ২০১৭
  • / ৪০২ বার পড়া হয়েছে

44837-cpdamar

সমীকরণ ডেস্ক: আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নে কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই। বাজেট বাস্তবায়ন নিয়েই সংশয় রয়েছে। ভ্যাট, করারোপ ও সিডি ভ্যাটের কারণে মূল্যষ্ফীতি বাড়বে। এতে নিম্ন ও মধ্যবিত্তসহ সাধারণ মানুষ বেশি চাপে পড়বে বলে মনে করছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য। গতকাল শুক্রবার (০২ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সিডিপির বিশ্লেষণ তুলে ধরতে গিয়ে তিনি এসব মন্তব্য করেন। সিপিডির বাজেট বিশ্লেষনে তিনি বলেন, বর্তমান করনীতি ও ভ্যাট আইনের কারণে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। প্রস্তাবিত বাজেটে পরিসংখ্যানগত বেশ অসংগতি রয়েছে। বাজেটে সরকার যে আটটি অনুমানের কথা বলেছে তার ৫টি নিয়ে সিপিডির সংশয় রয়েছে। সিপিডির পর্যালোচনা তুলে ধরে ড. দেবপ্রিয় বলেন, আগামী অর্থবছর ৭ দশমিক ৪ শতাংশ যে প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে এটা অবাস্তব। এই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য অতিরিক্ত এক লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ দরকার হবে। যার মধ্যে বেসরকারী খাতের বিনিয়োগ ৬৬ হাজার কোটি টাকা এবং সরকারী খাতে ৫০ হাজার কোটি টাকার। কিন্তু বর্তমানে যে পরিস্থিতি তাতে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ বাড়বে না। তিনি বলেন, রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্দি ধরা হয়েছে ৩১ দশমিক ৮ শতাংশ। যেখানে গড়ে ১৫ দশমিক ৩ শতাংশের বেশি হয়নি। ঘাটতি অর্থায়নের হিসাব মেলাতে সরকার ঘাটতির অংক পুরোটাই বৈদেশিক সাহায্যের উপর ফেলেছে। যে পরিমাণ বৈদেশিক সহায়তা ধরা হয়েছে বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো দিন এতোটা ব্যবহার হয়নি। সিপিডির বিশ্লেষন হলো, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির যে আকার ধরা হয়েছে তা বাস্তবায়নের সক্ষমতা আমাদের নেই। এটা বাস্তবায়নও অসম্ভব। যেখানে শেষ মাসে এসে বাস্তবায়ন ২২ শতাংশ দেখানো হয়, এটা নিয়ে সন্দেহ আছে। এডিপির ৫৬ শতাংশ অর্থ যাবে চলমান প্রকল্পের পেছনে। ৯ শতাংশ প্রকল্প বহুদিন ধরে লছে। পিপিপির ৩৬টি প্রকল্প আজও শেষ হচ্ছে না। তাদের বিশ্লেষন, রাজস্ব ব্যয়ের ২২ শতাংশই যাবে বেতন ও ভাতা খাতে। এডিপি ও রাজস্ব খাত মিলে মোট ৩ হাজার কোটি টাকা থোক নামে বিশেষ খাতে রাখা হয়েছে। কিন্তু এটি কোথায় ব্যয় হবে তার কোনো উল্লেখ বাজেট বক্তৃতায় নেই। স্বাস্থ্য খাতের মাথাপিছু ব্যয়ের তেমন কোনো। গ্রগতি নেই। কালো টাকা সাদা করার চলমান প্রকিয়াই অব্যাহত রাখা হয়েছে। ভ্যাট ভিত্তিক রাজস্ব আদায়ে সরকার আগামী বছর ধাক্কা খাবে। যারাই কর দিচ্ছে বোঝা তাদের উপর বাড়ানো হয়েছে। ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাজেটে যে হারে করের আওতা বাড়ানো হয়েছে সে হারে আমরা সক্ষমতা বাড়াতে পারি নি। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো অভিমত ব্যক্ত করেন- সংস্থাটির অপর সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, পরিচালক (গবেষনা) ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

বাজেটে মূল্যষ্ফীতি বাড়বে : চাপে সাধারণ মানুষ

আপলোড টাইম : ০৪:৩৬:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ জুন ২০১৭

44837-cpdamar

সমীকরণ ডেস্ক: আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নে কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই। বাজেট বাস্তবায়ন নিয়েই সংশয় রয়েছে। ভ্যাট, করারোপ ও সিডি ভ্যাটের কারণে মূল্যষ্ফীতি বাড়বে। এতে নিম্ন ও মধ্যবিত্তসহ সাধারণ মানুষ বেশি চাপে পড়বে বলে মনে করছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য। গতকাল শুক্রবার (০২ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সিডিপির বিশ্লেষণ তুলে ধরতে গিয়ে তিনি এসব মন্তব্য করেন। সিপিডির বাজেট বিশ্লেষনে তিনি বলেন, বর্তমান করনীতি ও ভ্যাট আইনের কারণে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। প্রস্তাবিত বাজেটে পরিসংখ্যানগত বেশ অসংগতি রয়েছে। বাজেটে সরকার যে আটটি অনুমানের কথা বলেছে তার ৫টি নিয়ে সিপিডির সংশয় রয়েছে। সিপিডির পর্যালোচনা তুলে ধরে ড. দেবপ্রিয় বলেন, আগামী অর্থবছর ৭ দশমিক ৪ শতাংশ যে প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে এটা অবাস্তব। এই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য অতিরিক্ত এক লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ দরকার হবে। যার মধ্যে বেসরকারী খাতের বিনিয়োগ ৬৬ হাজার কোটি টাকা এবং সরকারী খাতে ৫০ হাজার কোটি টাকার। কিন্তু বর্তমানে যে পরিস্থিতি তাতে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ বাড়বে না। তিনি বলেন, রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্দি ধরা হয়েছে ৩১ দশমিক ৮ শতাংশ। যেখানে গড়ে ১৫ দশমিক ৩ শতাংশের বেশি হয়নি। ঘাটতি অর্থায়নের হিসাব মেলাতে সরকার ঘাটতির অংক পুরোটাই বৈদেশিক সাহায্যের উপর ফেলেছে। যে পরিমাণ বৈদেশিক সহায়তা ধরা হয়েছে বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো দিন এতোটা ব্যবহার হয়নি। সিপিডির বিশ্লেষন হলো, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির যে আকার ধরা হয়েছে তা বাস্তবায়নের সক্ষমতা আমাদের নেই। এটা বাস্তবায়নও অসম্ভব। যেখানে শেষ মাসে এসে বাস্তবায়ন ২২ শতাংশ দেখানো হয়, এটা নিয়ে সন্দেহ আছে। এডিপির ৫৬ শতাংশ অর্থ যাবে চলমান প্রকল্পের পেছনে। ৯ শতাংশ প্রকল্প বহুদিন ধরে লছে। পিপিপির ৩৬টি প্রকল্প আজও শেষ হচ্ছে না। তাদের বিশ্লেষন, রাজস্ব ব্যয়ের ২২ শতাংশই যাবে বেতন ও ভাতা খাতে। এডিপি ও রাজস্ব খাত মিলে মোট ৩ হাজার কোটি টাকা থোক নামে বিশেষ খাতে রাখা হয়েছে। কিন্তু এটি কোথায় ব্যয় হবে তার কোনো উল্লেখ বাজেট বক্তৃতায় নেই। স্বাস্থ্য খাতের মাথাপিছু ব্যয়ের তেমন কোনো। গ্রগতি নেই। কালো টাকা সাদা করার চলমান প্রকিয়াই অব্যাহত রাখা হয়েছে। ভ্যাট ভিত্তিক রাজস্ব আদায়ে সরকার আগামী বছর ধাক্কা খাবে। যারাই কর দিচ্ছে বোঝা তাদের উপর বাড়ানো হয়েছে। ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাজেটে যে হারে করের আওতা বাড়ানো হয়েছে সে হারে আমরা সক্ষমতা বাড়াতে পারি নি। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো অভিমত ব্যক্ত করেন- সংস্থাটির অপর সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, পরিচালক (গবেষনা) ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।