ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বসতবাড়িসহ পুকুর ও ফসলি জমির ক্ষতির শঙ্কা!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৫১:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • / ১৩২ বার পড়া হয়েছে

জীবননগরে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির ওপর কালভার্ট নির্মাণের অভিযোগ
জীবননগর অফিস:
জীবননগর উপজলার মনোহরপুর ইউনিয়নের মাধবখালী গ্রামে এলজিইডি কর্তৃক মালিকানা জমির ওপর সরকারি কালভার্ট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পাকা বসতবাড়ি, মাছের পুকুর ও ফসলী জমির ব্যপক ক্ষতির অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী গ্রামবাসী।
জানা যায়, সম্প্রতি জীবনগর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যালয় কর্তৃক মাধবখালী গ্রামের ও মাঠের পানি নিষ্কাশনের জন্য নতুন একটি কার্লভাট নির্মাণের প্রকল্পের কাজ হাতে নেয়। কিন্তু কালভার্টি নির্মাণ করতে যেয়ে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ মাধবখালী গ্রামের বেশকিছু ব্যক্তির ব্যক্তি মালিকানা জমি দখল করে কালভার্টটির প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করে। এতে করে গ্রামের বেশকিছু ব্যক্তির বসতবাড়ি, মাছের পুকুর ও ফসলি জমির ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দেয়। ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে মাধবখালী গ্রামের আবদার রহমানর ছেলে আব্দুল জবার খান তাঁর বসতভিটা ও নিজ জমি রক্ষার জন্য জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, ‘সরকারি এই কালভার্টি নির্মাণ করতে যেয়ে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান সরকারি জমিতে না করে আমার ও আশপাশের ব্যক্তি মালিকানা জমি এমনকি বসতবাড়ির জমিতে জোরপূর্বক মাটি কেটে কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে।’
তিনি সমীকরণকে জানান, ‘সরকারের জমি না থাকলেও জনস্বার্থে কালভার্ট নির্মাণের জন্য আমার বসতবাড়ি ক্ষয়-ক্ষতি না হয়, এমন আশঙ্কামুক্ত নির্মাণকাজ হলে আমার আপত্তি নেয়। তা ছাড়া যেখান কালভার্ট তৈরি করা হচ্ছে, সেখানে আমার বসতবাড়ি রয়েছে। পানি হলেই মাটি ধসে যাবে। পাশাপাশি কালভার্ট দিয়ে যে পানি বের হয়ে যাবে, সেটাও আমাদের নিজেদের মালিকানা জমিত ঢুকবে। সে কারণেও বেশ কয়েকটি মাছের পুকুর ও ফসলী জমির ক্ষতি হবে। এ বিষয় আমি উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মুনিম লিংকন, জেলা প্রকৌশলী ও জীবননগর থানায় একটি লিখিত অভিযাগ দিয়েছি। কিন্তু কোনো ফল পাইনি। তাছাড়া একাধিকবার বলা সত্ত্বেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কেউ কথা না শুনে কাজ করতে আসে। অবশেষে আমি কাজটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছি।’
একই কথা বলেন মৎস্য ব্যবসায়ী রাজেদুল ইসলাম। তিনি বলন, ‘কালভার্ট হোক, এটা আমরা সবাই চাই। কিন্তু কালভার্টটি সম্পূর্ণ মালিকানা জমির ওপর তৈরি করা হচ্ছে। এই কালভার্টটা দিয়ে যে পানি বের হবে, তা আমাদের পুকুরে পড়বে। তাছাড়া আমাদের এখানে ৩০ বিঘা জমির ওপর জলকার রয়েছে। ইতোমধ্যেই আমাদের পুকুর পাড় নষ্ট হয়ে গেছে। যদি এই কালভার্টটি এখানে তৈরি হয়, তাহলে এই মহল্লার ৩০টি পরিবার চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
মনোহরপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার মিনারুল ইসলাম বলেন, ‘যেখানে কালভার্ট তৈরি করা হচ্ছে, সেখানে এর আগেও একটা কালভার্ট ছিল। তবে সেটা মালিকানা জমি না সরকারি জমির ওপর হচ্ছে, এটা আমি বলতে পারব না। তবে কালভার্ট দিয়ে যে পানি বের হবে, তা সম্পূর্ণ মালিকানা জমির ওপর পড়বে।’
চুয়াডাঙ্গা জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ সানা বলেন, ‘জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের মাধবখালী গ্রামে কালভার্ট নির্মাণের বিষয় নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, এ বিষয়ে আমার কাছে তেমন কোনো অভিযোগ নেই। অভিযোগ পেলে সরেজমিনে তদন্ত করা হবে।’
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মুনিম লিংকন বলেন, ‘মাধবখালী গ্রামে কালভার্ট নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ বিষয়ে আমি শুনেছি। যেহেতু সরকারিভাবে একটা ডিজাইন করা হয়ে গেছে, সেহেতু পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তারপরও আমি উপজেলা প্রকৌশলীকে বিষয়টি বলেছি। এটা তিনি সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

বসতবাড়িসহ পুকুর ও ফসলি জমির ক্ষতির শঙ্কা!

আপলোড টাইম : ০৮:৫১:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

জীবননগরে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির ওপর কালভার্ট নির্মাণের অভিযোগ
জীবননগর অফিস:
জীবননগর উপজলার মনোহরপুর ইউনিয়নের মাধবখালী গ্রামে এলজিইডি কর্তৃক মালিকানা জমির ওপর সরকারি কালভার্ট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পাকা বসতবাড়ি, মাছের পুকুর ও ফসলী জমির ব্যপক ক্ষতির অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী গ্রামবাসী।
জানা যায়, সম্প্রতি জীবনগর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যালয় কর্তৃক মাধবখালী গ্রামের ও মাঠের পানি নিষ্কাশনের জন্য নতুন একটি কার্লভাট নির্মাণের প্রকল্পের কাজ হাতে নেয়। কিন্তু কালভার্টি নির্মাণ করতে যেয়ে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ মাধবখালী গ্রামের বেশকিছু ব্যক্তির ব্যক্তি মালিকানা জমি দখল করে কালভার্টটির প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করে। এতে করে গ্রামের বেশকিছু ব্যক্তির বসতবাড়ি, মাছের পুকুর ও ফসলি জমির ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দেয়। ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে মাধবখালী গ্রামের আবদার রহমানর ছেলে আব্দুল জবার খান তাঁর বসতভিটা ও নিজ জমি রক্ষার জন্য জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, ‘সরকারি এই কালভার্টি নির্মাণ করতে যেয়ে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান সরকারি জমিতে না করে আমার ও আশপাশের ব্যক্তি মালিকানা জমি এমনকি বসতবাড়ির জমিতে জোরপূর্বক মাটি কেটে কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে।’
তিনি সমীকরণকে জানান, ‘সরকারের জমি না থাকলেও জনস্বার্থে কালভার্ট নির্মাণের জন্য আমার বসতবাড়ি ক্ষয়-ক্ষতি না হয়, এমন আশঙ্কামুক্ত নির্মাণকাজ হলে আমার আপত্তি নেয়। তা ছাড়া যেখান কালভার্ট তৈরি করা হচ্ছে, সেখানে আমার বসতবাড়ি রয়েছে। পানি হলেই মাটি ধসে যাবে। পাশাপাশি কালভার্ট দিয়ে যে পানি বের হয়ে যাবে, সেটাও আমাদের নিজেদের মালিকানা জমিত ঢুকবে। সে কারণেও বেশ কয়েকটি মাছের পুকুর ও ফসলী জমির ক্ষতি হবে। এ বিষয় আমি উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মুনিম লিংকন, জেলা প্রকৌশলী ও জীবননগর থানায় একটি লিখিত অভিযাগ দিয়েছি। কিন্তু কোনো ফল পাইনি। তাছাড়া একাধিকবার বলা সত্ত্বেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কেউ কথা না শুনে কাজ করতে আসে। অবশেষে আমি কাজটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছি।’
একই কথা বলেন মৎস্য ব্যবসায়ী রাজেদুল ইসলাম। তিনি বলন, ‘কালভার্ট হোক, এটা আমরা সবাই চাই। কিন্তু কালভার্টটি সম্পূর্ণ মালিকানা জমির ওপর তৈরি করা হচ্ছে। এই কালভার্টটা দিয়ে যে পানি বের হবে, তা আমাদের পুকুরে পড়বে। তাছাড়া আমাদের এখানে ৩০ বিঘা জমির ওপর জলকার রয়েছে। ইতোমধ্যেই আমাদের পুকুর পাড় নষ্ট হয়ে গেছে। যদি এই কালভার্টটি এখানে তৈরি হয়, তাহলে এই মহল্লার ৩০টি পরিবার চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
মনোহরপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার মিনারুল ইসলাম বলেন, ‘যেখানে কালভার্ট তৈরি করা হচ্ছে, সেখানে এর আগেও একটা কালভার্ট ছিল। তবে সেটা মালিকানা জমি না সরকারি জমির ওপর হচ্ছে, এটা আমি বলতে পারব না। তবে কালভার্ট দিয়ে যে পানি বের হবে, তা সম্পূর্ণ মালিকানা জমির ওপর পড়বে।’
চুয়াডাঙ্গা জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ সানা বলেন, ‘জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের মাধবখালী গ্রামে কালভার্ট নির্মাণের বিষয় নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, এ বিষয়ে আমার কাছে তেমন কোনো অভিযোগ নেই। অভিযোগ পেলে সরেজমিনে তদন্ত করা হবে।’
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মুনিম লিংকন বলেন, ‘মাধবখালী গ্রামে কালভার্ট নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ বিষয়ে আমি শুনেছি। যেহেতু সরকারিভাবে একটা ডিজাইন করা হয়ে গেছে, সেহেতু পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তারপরও আমি উপজেলা প্রকৌশলীকে বিষয়টি বলেছি। এটা তিনি সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবে।’