ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বন্ধ ঘোষণার পরেও অবৈধভাবেই চলছে কার্যক্রম!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২২:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগাস্ট ২০২০
  • / ১৩৭ বার পড়া হয়েছে

জীবননগরের পাঁচটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে সাময়িক বন্ধ রাখার নির্দেশ
জাহিদ বাবু/মিথুন মাহমুদ:
জীবননগরে দীর্ঘদিন যাবত অবৈধভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে বেশ কয়েকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার। অবশেষে প্রশাসনের কঠোর ভূমিকায় জীবননগর শহরের অবৈধভাবে পারিচালিত হওয়া পাঁচটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান এ নির্দেশনা প্রদান করেছেন। বন্ধ হওয়া পাঁচটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার হলো- জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থিত ফাইভ স্টার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শাপলা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ইসলামী ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও সময় ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এদিকে, প্রশাসনিকভাবে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো বন্ধ ঘোষণা করলেও এখনো বেশ কয়েকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার অবৈধভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এমনকি ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর প্রচার মাইকগুলো ও জীবননগর শহরের অলি-গলিতে বেশ উচ্চস্বরে বাজছে। যা জনসাধারণের মধ্যে নানা ধরনের প্রশ্ন উদ্রেক করেছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, জীবননগর শহরের শাপলা ডায়াগনস্টিক ও সময় ডায়াগনস্টি সেন্টারে সাধারণ রোগীদের বিটি টেস্ট দিয়ে মোটা অংকের অর্থ নিয়ে থাকে। যার অর্থ (বালতি) টেস্ট। শুধু শাপলা বা সময় ডায়াগনস্টিক সেন্টার নয়, এ রকম শহরের বেশ কিছু আলিশান ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে, যেখানে রোগীদের জীবন নিয়ে রীতিমতো বাণিজ্য চলছে। ওই সব ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে সামান্য সর্দি-জ্বরের রোগী গেলেই দেওয়া হয় পাঁচ প্রকারের টেস্ট। আর এই টেস্টের টাকা জোগাড় করতেই হিমশিম অবস্থা রোগীসহ তাদের স্বজনদের।
ভুক্তভোগী এক রোগী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি বেশ কয়েক দিন ধরে অসুস্থ ছিলাম। রক্ত পরীক্ষার জন্য শাপলা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়েছিলাম। যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার শরীর থেকে রক্ত নিয়ে টাইফয়েড পরীক্ষা, প্রসাব পরীক্ষা, ডায়াবেটিকস পরীক্ষা, কফ পরীক্ষাসহ কয়েকটি টেস্ট করে দুই হাজার টাকা বিল করে। ডাক্তার দেখানো তো দূরে থাক, টেস্টের টাকা দিয়ে আমি আর কোনো ওষুধ কিনতে পারিনি। চিকিৎসার নামে যেন এরা কসাইখানা খুলে রেখেছে।’
জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জুলিয়েট পারউইন বলেন, ‘জীবননগর শহরের পাঁচটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকের অনলাইনে কোনো কাগজপত্র নেই। তাই তাঁদের ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যদি কেউ এ আদেশ অমান্য করেন, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. এস এম মারুফ হাসান বলেন, কোনো যন্ত্রভাবে ডায়াগনস্টিক সেন্টার চলবে না। সরকারি যে নিয়ম আছে, সে অনুযায়ী ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদের নিয়ম-কানুন এবং সব কাগজপত্র রেখেই ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনা করতে হবে। সরকারি নিয়ম অমান্য করে কেউ ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনা করতে পারবে না। যারা এখন করেনি, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

বন্ধ ঘোষণার পরেও অবৈধভাবেই চলছে কার্যক্রম!

আপলোড টাইম : ০৯:২২:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগাস্ট ২০২০

জীবননগরের পাঁচটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে সাময়িক বন্ধ রাখার নির্দেশ
জাহিদ বাবু/মিথুন মাহমুদ:
জীবননগরে দীর্ঘদিন যাবত অবৈধভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে বেশ কয়েকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার। অবশেষে প্রশাসনের কঠোর ভূমিকায় জীবননগর শহরের অবৈধভাবে পারিচালিত হওয়া পাঁচটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান এ নির্দেশনা প্রদান করেছেন। বন্ধ হওয়া পাঁচটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার হলো- জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থিত ফাইভ স্টার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শাপলা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ইসলামী ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও সময় ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এদিকে, প্রশাসনিকভাবে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো বন্ধ ঘোষণা করলেও এখনো বেশ কয়েকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার অবৈধভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এমনকি ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর প্রচার মাইকগুলো ও জীবননগর শহরের অলি-গলিতে বেশ উচ্চস্বরে বাজছে। যা জনসাধারণের মধ্যে নানা ধরনের প্রশ্ন উদ্রেক করেছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, জীবননগর শহরের শাপলা ডায়াগনস্টিক ও সময় ডায়াগনস্টি সেন্টারে সাধারণ রোগীদের বিটি টেস্ট দিয়ে মোটা অংকের অর্থ নিয়ে থাকে। যার অর্থ (বালতি) টেস্ট। শুধু শাপলা বা সময় ডায়াগনস্টিক সেন্টার নয়, এ রকম শহরের বেশ কিছু আলিশান ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে, যেখানে রোগীদের জীবন নিয়ে রীতিমতো বাণিজ্য চলছে। ওই সব ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে সামান্য সর্দি-জ্বরের রোগী গেলেই দেওয়া হয় পাঁচ প্রকারের টেস্ট। আর এই টেস্টের টাকা জোগাড় করতেই হিমশিম অবস্থা রোগীসহ তাদের স্বজনদের।
ভুক্তভোগী এক রোগী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি বেশ কয়েক দিন ধরে অসুস্থ ছিলাম। রক্ত পরীক্ষার জন্য শাপলা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়েছিলাম। যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার শরীর থেকে রক্ত নিয়ে টাইফয়েড পরীক্ষা, প্রসাব পরীক্ষা, ডায়াবেটিকস পরীক্ষা, কফ পরীক্ষাসহ কয়েকটি টেস্ট করে দুই হাজার টাকা বিল করে। ডাক্তার দেখানো তো দূরে থাক, টেস্টের টাকা দিয়ে আমি আর কোনো ওষুধ কিনতে পারিনি। চিকিৎসার নামে যেন এরা কসাইখানা খুলে রেখেছে।’
জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জুলিয়েট পারউইন বলেন, ‘জীবননগর শহরের পাঁচটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকের অনলাইনে কোনো কাগজপত্র নেই। তাই তাঁদের ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যদি কেউ এ আদেশ অমান্য করেন, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. এস এম মারুফ হাসান বলেন, কোনো যন্ত্রভাবে ডায়াগনস্টিক সেন্টার চলবে না। সরকারি যে নিয়ম আছে, সে অনুযায়ী ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদের নিয়ম-কানুন এবং সব কাগজপত্র রেখেই ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনা করতে হবে। সরকারি নিয়ম অমান্য করে কেউ ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনা করতে পারবে না। যারা এখন করেনি, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।