ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বজ্রপাতে সারাদেশে প্রাণহানি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৬:১২:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ মে ২০১৮
  • / ৩৫৮ বার পড়া হয়েছে

বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টির মত প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি বেড়েই চলেছে। বজ্রপাতে গত দুইদিনে সারাদেশে অন্তত ৫০ জনের মৃত্য্যু এবং ২ শতাধিক মানুষ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে বজ্রপাত বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা পরিসংখ্যান বা পত্রিকায় প্রকাশিত সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশী বলেই ধরে নেয়া যায়। যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে হতাহতের এই হার ভয়াবহ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর, দুর্যোগ ফোরামসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হিসাব অনুসারে গত ৫ বছরে বজ্রপাতে সারাদেশে ৩ হাজারের বেশী মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। আবহাওয়া অধিদফতরের গত ৭ বছরের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ২০১১ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত বজ্রপাতের সংখ্যা এবং হতাহতের পরিমান ক্রমাগত হারে বাড়ছে। আমরা সামুদ্রিক ঝড় ও আবহাওয়ার সতর্ক সংকেত প্রচার করি, বন্যার্তদের জন্য আশ্রয় ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করি। কিন্তু বজ্রপাতে মৃত্যুর হার কমিয়ে আনার প্রায়োগিক কোন ব্যবস্থা আপাতত আমাদের হাতে নেই। সাম্প্রতিক সময়ে বজ্রপাতে মৃত্যুর হার বৃদ্ধির প্রবণতা দেশের মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে। অস্বাভাবিক ক্ষরা, বন্যা, সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের মত বজ্রপাত বৃদ্ধির জন্যও ভূ-মন্ডলের উষ্ণায়ণ ও জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রবণতাকে দায়ী করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
চলতি গ্রীষ্মের শুরু থেকেকই অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের সাথে অস্বাভাবিক মাত্রার শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাতে প্রাণহানি, ফসলহানি, গাছপালা ও কাঁচা বাড়িঘর ধ্বংসের হার অতীতের যে কোন সময়ের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। বজ্রপাতে হতাহতের হার বৃদ্ধি আমাদের আবারো স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে, অপরিকল্পিত শিল্পায়ণ, নগরায়ণ এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমুহের নির্লিপ্ত ভূমিকা আমাদেরকে আরো বড় বড় বিপদের দিকে ঠেলে দিতে শুরু করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রাণঘাতি বজ্রপাত বৃদ্ধির পেছনে অন্যান্য অনুঘটকগুলোর সাথে ভূ-পৃষ্টে বসানো ধাতব পিলার চুরি এবং অপরিকল্পিতভাবে বসানো মোবাইল ফোন টাওয়ারকেও দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। রোদে-বৃষ্টিতে নিরলস কাজ করেই দেশের কৃষককরা ১৬ কোটি মানুষের খাদ্যের যোগান নিশ্চিত করেন। একইভাবে নানা ঝুঁকি নিয়ে দেশের শ্রমিকরাও দেশের উন্নয়নের চাকা সচল রাখতে কাজ করেন। বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে বিশেষজ্ঞরা জনসাধারণের জন্য বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। বিশেষত: বাড়িতে বজ্র নিরোধক দন্ড স্থাপন এবং বজ্রপাতের সময় ধাতব কল, শিঁিড়র রেলিং বা পাইপ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকা, বৈদ্যুতিক তার ও সরঞ্জাম থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকা, খোলা জায়গায় কোন বড় গাছের নিচে আশ্রয় না নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

বজ্রপাতে সারাদেশে প্রাণহানি

আপলোড টাইম : ০৬:১২:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ মে ২০১৮

বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টির মত প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি বেড়েই চলেছে। বজ্রপাতে গত দুইদিনে সারাদেশে অন্তত ৫০ জনের মৃত্য্যু এবং ২ শতাধিক মানুষ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে বজ্রপাত বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা পরিসংখ্যান বা পত্রিকায় প্রকাশিত সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশী বলেই ধরে নেয়া যায়। যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে হতাহতের এই হার ভয়াবহ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর, দুর্যোগ ফোরামসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হিসাব অনুসারে গত ৫ বছরে বজ্রপাতে সারাদেশে ৩ হাজারের বেশী মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। আবহাওয়া অধিদফতরের গত ৭ বছরের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ২০১১ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত বজ্রপাতের সংখ্যা এবং হতাহতের পরিমান ক্রমাগত হারে বাড়ছে। আমরা সামুদ্রিক ঝড় ও আবহাওয়ার সতর্ক সংকেত প্রচার করি, বন্যার্তদের জন্য আশ্রয় ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করি। কিন্তু বজ্রপাতে মৃত্যুর হার কমিয়ে আনার প্রায়োগিক কোন ব্যবস্থা আপাতত আমাদের হাতে নেই। সাম্প্রতিক সময়ে বজ্রপাতে মৃত্যুর হার বৃদ্ধির প্রবণতা দেশের মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে। অস্বাভাবিক ক্ষরা, বন্যা, সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের মত বজ্রপাত বৃদ্ধির জন্যও ভূ-মন্ডলের উষ্ণায়ণ ও জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রবণতাকে দায়ী করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
চলতি গ্রীষ্মের শুরু থেকেকই অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের সাথে অস্বাভাবিক মাত্রার শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাতে প্রাণহানি, ফসলহানি, গাছপালা ও কাঁচা বাড়িঘর ধ্বংসের হার অতীতের যে কোন সময়ের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। বজ্রপাতে হতাহতের হার বৃদ্ধি আমাদের আবারো স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে, অপরিকল্পিত শিল্পায়ণ, নগরায়ণ এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমুহের নির্লিপ্ত ভূমিকা আমাদেরকে আরো বড় বড় বিপদের দিকে ঠেলে দিতে শুরু করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রাণঘাতি বজ্রপাত বৃদ্ধির পেছনে অন্যান্য অনুঘটকগুলোর সাথে ভূ-পৃষ্টে বসানো ধাতব পিলার চুরি এবং অপরিকল্পিতভাবে বসানো মোবাইল ফোন টাওয়ারকেও দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। রোদে-বৃষ্টিতে নিরলস কাজ করেই দেশের কৃষককরা ১৬ কোটি মানুষের খাদ্যের যোগান নিশ্চিত করেন। একইভাবে নানা ঝুঁকি নিয়ে দেশের শ্রমিকরাও দেশের উন্নয়নের চাকা সচল রাখতে কাজ করেন। বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে বিশেষজ্ঞরা জনসাধারণের জন্য বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। বিশেষত: বাড়িতে বজ্র নিরোধক দন্ড স্থাপন এবং বজ্রপাতের সময় ধাতব কল, শিঁিড়র রেলিং বা পাইপ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকা, বৈদ্যুতিক তার ও সরঞ্জাম থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকা, খোলা জায়গায় কোন বড় গাছের নিচে আশ্রয় না নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।