ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

প্রাণঘাতী ক্যান্সার নির্মূল করে যে থেরাপি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:০৬:৩৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ জুন ২০১৮
  • / ৩১০ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক: একসময় স্তন-ক্যান্সারের রোগী ছিলেন জুডি পার্কিন্স স্তন-ক্যান্সারের একেবারে শেষ-ধাপ, স্টেজ-৪ এ ছিলেন জুডি পার্কিনসন। ডাক্তাররা তাকে শেষ কথা শুনিয়ে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, তার আয়ু হতে পারে বড় জোড় আর মাস তিনেক। কিন্তু সেই জুডি বেঁচে আছেন আজ দুই বছর। আর এরচেয়েও বড় বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, তার শরীরে ক্যান্সারের আর কোনো লক্ষণই নেই। কিন্তু কীভাবে হলো এই অসাধ্য সাধন? মার্কিন গবেষকেরা বলছেন, নতুন ধরনের এক থেরাপি আবিষ্কার হয়েছে। যেটির সহ্যাতায় জুডি বিস্ময়করভাবে বেঁচে আছেন। নতুন এই থেরাপি পদ্ধতিতে তার শরীরে ৯০ বিলিয়ন ক্যান্সার নির্মূলকারী রোগ প্রতিরোধক সেল পাম্প করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউট বলেছে, এই থেরাপিটি এখনো পরীক্ষণ পর্যায়ে রয়েছে। তবে, এটিকে সব ধরণের ক্যান্সার চিকিৎসাতেই কাজে লাগানো সম্ভব। ক্যান্সারকে পরাস্ত করা সেই জুডি বসবাস করেন অ্যামেরিকার ফ্লোরিডায়। তাকে ডাক্তাররা বলেছিল, শরীরের অন্যান্য জায়গাতেও ছড়িয়ে পড়েছে ক্যান্সার। তাই এটিকে প্রচলিত পদ্ধতিতে থেরাপি দিয়েও তার সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম। তাছাড়া জুডির লিভারে টেনিস-বল আকারের একটি বড় টিউমার ছিল। জুডি বলছিলেন, থেরাপি নিতে শুর” করার সপ্তাহখানেক পর তিনি খেয়াল করলেন যে তার টিউমারটি আকার ছোটো হয়ে এসেছে। এরপর আরো এক-দুই সপ্তাহ থেরাপি নেয়ার পর সেই টিউমারটি একেবারে মিলিয়ে যায় বলেও জানান জুডি। এই থেরাপির পর যখন জুডির প্রথম পরীক্ষাটা হলো, সেটির প্রতিবেদন হাতে পেয়ে তার আশপাশে থাকা হাসপাতালের সব স্টাফরা একযোগে সব লাফালাফি করছিলো। সেই জুডিই এখন সুস্থ শরীরে নৌকো চালিয়ে জলপথে নানান জায়গায় ঘুরে বেড়ান। লিভিং থেরাপি: এই থেরাপির ক্ষেত্রে রোগীর শরীর থেকেই সেল নিয়ে ‘লিভিং ড্রাগ’ প্রস্তুত করে সেন্টার অফ ক্যান্সার রিসার্চ। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউট এর প্রধান ড. স্টিভেন রোজেনবার্গ বলেছেন, নতুন এই থেরাপি পদ্ধতিটি পার্সোনালাইজড একটি চিকিৎসা। এটির কথাই এতদিন মানুষ কল্পনা করতো। এই ইমিউন-থেরাপিতে মূলত রোগীর জেনেটিক এবনরমালিটিজ বা জিনের অস্বাভাবিকতাকে খুঁজে বের করা হয়। তারপর এর উপর ভিত্তি করে হয় পরবর্তী থেরাপির ব্যবস্থা। জুডির ক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছে। পার্সোনালাইজড এই ইমিউন-থেরাপি এখনো পরীক্ষণ পর্যায়ে রয়েছে। বহুল ব্যাবহারের জন্য বাজারে ছাড়বার আগেই এটিকে আরো বেশ কিছু নিরীক্ষার ভেতর দিয়ে যেতে হবে। এই থেরাপিকে ক্যান্সার চিকিৎসায় একটি বিরাট বাঁক-বদল হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।-বিবিসি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

প্রাণঘাতী ক্যান্সার নির্মূল করে যে থেরাপি

আপলোড টাইম : ১০:০৬:৩৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ জুন ২০১৮

প্রযুক্তি ডেস্ক: একসময় স্তন-ক্যান্সারের রোগী ছিলেন জুডি পার্কিন্স স্তন-ক্যান্সারের একেবারে শেষ-ধাপ, স্টেজ-৪ এ ছিলেন জুডি পার্কিনসন। ডাক্তাররা তাকে শেষ কথা শুনিয়ে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, তার আয়ু হতে পারে বড় জোড় আর মাস তিনেক। কিন্তু সেই জুডি বেঁচে আছেন আজ দুই বছর। আর এরচেয়েও বড় বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, তার শরীরে ক্যান্সারের আর কোনো লক্ষণই নেই। কিন্তু কীভাবে হলো এই অসাধ্য সাধন? মার্কিন গবেষকেরা বলছেন, নতুন ধরনের এক থেরাপি আবিষ্কার হয়েছে। যেটির সহ্যাতায় জুডি বিস্ময়করভাবে বেঁচে আছেন। নতুন এই থেরাপি পদ্ধতিতে তার শরীরে ৯০ বিলিয়ন ক্যান্সার নির্মূলকারী রোগ প্রতিরোধক সেল পাম্প করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউট বলেছে, এই থেরাপিটি এখনো পরীক্ষণ পর্যায়ে রয়েছে। তবে, এটিকে সব ধরণের ক্যান্সার চিকিৎসাতেই কাজে লাগানো সম্ভব। ক্যান্সারকে পরাস্ত করা সেই জুডি বসবাস করেন অ্যামেরিকার ফ্লোরিডায়। তাকে ডাক্তাররা বলেছিল, শরীরের অন্যান্য জায়গাতেও ছড়িয়ে পড়েছে ক্যান্সার। তাই এটিকে প্রচলিত পদ্ধতিতে থেরাপি দিয়েও তার সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম। তাছাড়া জুডির লিভারে টেনিস-বল আকারের একটি বড় টিউমার ছিল। জুডি বলছিলেন, থেরাপি নিতে শুর” করার সপ্তাহখানেক পর তিনি খেয়াল করলেন যে তার টিউমারটি আকার ছোটো হয়ে এসেছে। এরপর আরো এক-দুই সপ্তাহ থেরাপি নেয়ার পর সেই টিউমারটি একেবারে মিলিয়ে যায় বলেও জানান জুডি। এই থেরাপির পর যখন জুডির প্রথম পরীক্ষাটা হলো, সেটির প্রতিবেদন হাতে পেয়ে তার আশপাশে থাকা হাসপাতালের সব স্টাফরা একযোগে সব লাফালাফি করছিলো। সেই জুডিই এখন সুস্থ শরীরে নৌকো চালিয়ে জলপথে নানান জায়গায় ঘুরে বেড়ান। লিভিং থেরাপি: এই থেরাপির ক্ষেত্রে রোগীর শরীর থেকেই সেল নিয়ে ‘লিভিং ড্রাগ’ প্রস্তুত করে সেন্টার অফ ক্যান্সার রিসার্চ। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউট এর প্রধান ড. স্টিভেন রোজেনবার্গ বলেছেন, নতুন এই থেরাপি পদ্ধতিটি পার্সোনালাইজড একটি চিকিৎসা। এটির কথাই এতদিন মানুষ কল্পনা করতো। এই ইমিউন-থেরাপিতে মূলত রোগীর জেনেটিক এবনরমালিটিজ বা জিনের অস্বাভাবিকতাকে খুঁজে বের করা হয়। তারপর এর উপর ভিত্তি করে হয় পরবর্তী থেরাপির ব্যবস্থা। জুডির ক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছে। পার্সোনালাইজড এই ইমিউন-থেরাপি এখনো পরীক্ষণ পর্যায়ে রয়েছে। বহুল ব্যাবহারের জন্য বাজারে ছাড়বার আগেই এটিকে আরো বেশ কিছু নিরীক্ষার ভেতর দিয়ে যেতে হবে। এই থেরাপিকে ক্যান্সার চিকিৎসায় একটি বিরাট বাঁক-বদল হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।-বিবিসি।