ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

প্রথমদিনে চুয়াডাঙ্গায় ৬৫ ও মেহেরপুরে ৬৮ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:০১:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • / ২০০ বার পড়া হয়েছে

সারা দেশের ন্যায় চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহে অভিন্ন প্রশ্নে এসএসসি সমমানের পরীক্ষা শুরু
সমীকরণ ডেস্ক:
সারা দেশের ন্যায় চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহে উৎসবমুখর পরিবেশ এবং কঠোর নিরাপত্তায় একযোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা। গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় এসএসসির বাংলা প্রথমপত্র, এসএসসি ভকেশনালের বাংলা দ্বিতীয়পত্র এবং দাখিলের কোরআন মাজিদ ও তাজবিদ বিষয়ের পরীক্ষার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
চুয়াডাঙ্গা:
চুয়াডাঙ্গায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে এসএসসি ও সমমানের প্রথম দিনের পরীক্ষা। গতকাল সোমবারের পরীক্ষায় কোথাও কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা বহিষ্কারের খবর পাওয়া যায়নি। তবে চুয়াডাঙ্গা জেলার চার উপজেলায় মোট ৬৫ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল বলে জেলা প্রশাসনের শিক্ষা শাখা সূত্রে জানা গেছে। প্রশ্নফাঁস রোধে খাকি খামের পরিবর্তে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল পেপার খামে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়েছে। এ কারণে প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো আশঙ্কা নেই বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। এ ছাড়া বিশেষ পদ্ধতিতে প্রতিটি কক্ষে ভিন্ন সেট (ক, খ, গ, ঘ) নির্ধারিত প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে হয়েছে পরীক্ষার্থীদের। প্রশ্ন ফাঁস রোধ ও পরীক্ষা নকলমুক্ত রাখতে কেন্দ্রগুলোর প্রতিটি কক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনসহ কর্তৃপক্ষ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
তথ্য মতে, প্রথম দিনের পরীক্ষায় জেলার মোট ১২ হাজার ৩৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১১ হাজার ৯৭০ জন অংশ নিয়েছে। বাকি ৬৫ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। এর মধ্যে এসএসসি (সাধারণ) বাংলা প্রথমপত্র বিষয়ের পরীক্ষায় মোট ৯ হাজার ৫৭৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিতির সংখ্যা ছিল ৯ হাজার ৫৩৮ জন। অনুপস্থিত ৩৯ জন। এসএসসি ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় বাংলা-২ বিষয়ের পরীক্ষায় মোট ১ হাজার ৪৩৭ পরীক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত ছিল ১ হাজার ৪৩১ জন। অনুপস্থিত ৬ জন। দাখিল কোরআন মাজিদ ও তাজবিদ বিষয়ের পরীক্ষায় ১ হাজার ২১ জনের মধ্যে উপস্থিত ছিল ১ হাজার ১ জন। অনুপস্থিত ২০ জন।
এদিকে, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিন থেকেই কেন্দ্রগুলোতে ছিল কড়া নিরাপত্তা। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা, অনিয়ম এড়াতে এবং প্রশ্নফাঁস রোধে সার্বক্ষণিক চারটি ভিজিলেন্সটিম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট ও পুলিশ সদস্যরা মাঠে ছিলেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গা ভি. জে সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ও সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার। এ সময় তিনি জানান, ফেসবুকে বা অন্য কোনোভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁসের আশঙ্কা নেই। প্রশ্ন ফাঁসের গুজবে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের কান না দেওয়ার আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক।
আলমডাঙ্গা:
আলমডাঙ্গায় এসএসসি, দাখিল ও ভোকেশনাল পরীক্ষার প্রথম দিন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল আলমডাঙ্গা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র ও মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা বাংলা ১ম পত্র পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। অন্যদিকে, আলমডাঙ্গা আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে দাখিল পরীক্ষার ১ম দিন কোরআন মাজিদ ও তাজবিদ বিষয়ে এবং মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ভোকেশনাল পরিক্ষার্থীরা বাংলা দ্বিতিয়পত্র পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। আলমডাঙ্গা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট পরিক্ষার্থী ৭৭০ জন, অনুপস্থিত ৮ জন। এদের মধ্যে ছাত্র ২৭১, ছাত্রী ৪৯১জন। পরীক্ষা কেন্দ্রের সার্বক্ষণিক দায়িত্বে ছিলেন যুব উন্নয়ন ও বিআরডিবি অফিসার ও কেন্দ্র সচিব প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম। মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ১ হাজার ৮১ জন। অনুপস্থিত ৮ জন। ছাত্র ৫৮৭ জন, ছাত্রী ৪৯৪ জন। পরীক্ষা কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক দায়িত্বে ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল বারি, কেন্দ্র সচিব প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান। আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে মোট ২৪৬ জন। অনুপস্থিত ৬ জন। কেন্দ্রে সর্বক্ষণিক দায়িত্বে ছিলেন কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম। মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ভোকেশনাল পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ৩৫৭ জন। অনুপস্থিত ৫ জন। কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক দায়িত্বে ছিলেন একাডেমিক সুপারভাইজার ইমরুল কায়েস ও কেন্দ্র সচিব আবু তালেব। বেলা ১১টার দিকে আলমডাঙ্গা বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি মনিরা পারভীন কেন্দ্র পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ ছাড়াও আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিটন আলী আলমডাঙ্গার প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন।
আন্দুলবাড়িয়া:
জীবননগরের আন্দুলবাড়িয়া বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শান্তিপূর্ণভাবে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা ১০টায় দুটি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। আন্দুলবাড়িয়া বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৫৫ জন ছাত্র ও ১০৯ জন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এ কেন্দ্রে ১ জন মেয়ে অনুস্থিত ছিল। আন্দুলবাড়িয়া বহুমুখী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৪২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র সংখ্যা ১২২ জন ও ছাত্রী সংখ্যা ২২ জন। এ কেন্দ্রের সব পরীক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। দুপুর ১২টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেড শিবনী রাণী সরকার কেন্দ্র দুটি পরিদর্শন করেন। আন্দুলবাড়িয়া বহুমুখী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেন উপজেলা মৎস সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান।
মেহেরপুর


সারা দেশের ন্যায় মেহেরপুর জেলাতেও একযোগে এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষা শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় মেহেরপুর জেলার ৩টি উপজেলায় একযোগে এই এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর মেহেরপুর জেলা থেকে এসএসসি পরীক্ষায় মোট ৮ হাজার ১২৩ জন, দাখিল পরীক্ষায় ৫৯৮ জন এবং এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষায় মোট ১ হাজার ৬৯ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা। তবে এর মধ্যে পরীক্ষার ১ম দিনে ৬৮ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল।
মেহেরপুরে এ বছর অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী সংখ্যা মেহেরপুর সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ১ হাজার ১২৪ জন, সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ৮৯৪ জন, আমঝুপি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৬৪২ জন, গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ৫৮৭ জন, গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪১৮ জন, বামন্দী নিশিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ৬৬৩ জন, জুগিরঘোপা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৩০৭ জন, মুজিবনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৮৮৮ জন, সাহেবনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪০৪ জন, বামুন্দি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪৯৫ জন, বেতবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৬২৮ জন, রায়পুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৬০৪ জন এবং দারিয়াপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪৬৯। এদিকে, দাখিল পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী সংখ্যা মেহেরপুর দারুল উলুম আহমদিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে ৩৫৩ জন ও গাংনী সিদ্দিকিয়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে ২৪৫ জন। এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষায় শিক্ষার্থী সংখ্যা মেহেরপুর টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ৪৪৭ জন, গাংনী সন্ধানি স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ৪৬৯ জন এবং দারিয়াপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৫৩ জন। পরীক্ষা চলাকালে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক মো. আতাউল গনি মেহেরপুরের বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক পরীক্ষা কেন্দ্রের পরীক্ষা-ব্যবস্থাপনায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। গতকাল সোমবার থেকে শুরু হওয়া ১ম দিনে এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষায় মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে মোট ৬৮ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল। জানা গেছে, এসএসসি পরীক্ষার বাংলা প্রথমপত্রে মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে ৪১ জন, দাখিল পরীক্ষায় কোরআন মাজিদ ও তাজবিদ বিষয়ের ১৫ জন এবং এসএসসি ভোকেশনালের বাংলা দ্বিতীয়পত্রে ১২ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে আসেনি।
ঝিনাইদহ:
ঝিনাইদহে এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষার প্রথম দিন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলার মোট ৬টি উপজেলার ৫৪টি কেন্দ্রের মধ্যে এসএসসিতে ৩৬টি, দাখিলে ৯টি এবং ভোকেশনালে ৯টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। জেলায় মোট ১৯ হাজার ৭৯৬ জন পরীক্ষার্থী এ বছর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। প্রথম দিনের পরীক্ষায় এসএসসিতে ১৬ হাজার ৩৬ জন, দাখিলে ২ হাজার ৪৬১ জন এবং এসএসসি ভোকেশনালে ১ হাজার ২৯৯ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে বলে জানা গেছে। প্রথম দিনের পরীক্ষায় অনুপস্থিত ১৩৬ জনের মধ্যে এসএসসিতে ৭৪, দাখিলে ৫৩ এবং ভোকেশনালে ৯ জন পরীক্ষার্থী। তবে প্রথম দিন কোনো পরীক্ষার্থী বহিষ্কারের খবর পাওয়া যায়নি। পরীক্ষা শেষে ঝিনাইদহ সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের কয়েকজন পরীক্ষার্থীর কাছে জানতে চাইলে তারা বলে, পরীক্ষা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে, প্রশ্ন ভালো হয়েছে এবং প্রশ্নে কোনো ভুলত্রুটি চোখে পড়েনি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

প্রথমদিনে চুয়াডাঙ্গায় ৬৫ ও মেহেরপুরে ৬৮ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত

আপলোড টাইম : ১১:০১:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০

সারা দেশের ন্যায় চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহে অভিন্ন প্রশ্নে এসএসসি সমমানের পরীক্ষা শুরু
সমীকরণ ডেস্ক:
সারা দেশের ন্যায় চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহে উৎসবমুখর পরিবেশ এবং কঠোর নিরাপত্তায় একযোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা। গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় এসএসসির বাংলা প্রথমপত্র, এসএসসি ভকেশনালের বাংলা দ্বিতীয়পত্র এবং দাখিলের কোরআন মাজিদ ও তাজবিদ বিষয়ের পরীক্ষার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
চুয়াডাঙ্গা:
চুয়াডাঙ্গায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে এসএসসি ও সমমানের প্রথম দিনের পরীক্ষা। গতকাল সোমবারের পরীক্ষায় কোথাও কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা বহিষ্কারের খবর পাওয়া যায়নি। তবে চুয়াডাঙ্গা জেলার চার উপজেলায় মোট ৬৫ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল বলে জেলা প্রশাসনের শিক্ষা শাখা সূত্রে জানা গেছে। প্রশ্নফাঁস রোধে খাকি খামের পরিবর্তে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল পেপার খামে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়েছে। এ কারণে প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো আশঙ্কা নেই বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। এ ছাড়া বিশেষ পদ্ধতিতে প্রতিটি কক্ষে ভিন্ন সেট (ক, খ, গ, ঘ) নির্ধারিত প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে হয়েছে পরীক্ষার্থীদের। প্রশ্ন ফাঁস রোধ ও পরীক্ষা নকলমুক্ত রাখতে কেন্দ্রগুলোর প্রতিটি কক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনসহ কর্তৃপক্ষ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
তথ্য মতে, প্রথম দিনের পরীক্ষায় জেলার মোট ১২ হাজার ৩৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১১ হাজার ৯৭০ জন অংশ নিয়েছে। বাকি ৬৫ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। এর মধ্যে এসএসসি (সাধারণ) বাংলা প্রথমপত্র বিষয়ের পরীক্ষায় মোট ৯ হাজার ৫৭৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিতির সংখ্যা ছিল ৯ হাজার ৫৩৮ জন। অনুপস্থিত ৩৯ জন। এসএসসি ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় বাংলা-২ বিষয়ের পরীক্ষায় মোট ১ হাজার ৪৩৭ পরীক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত ছিল ১ হাজার ৪৩১ জন। অনুপস্থিত ৬ জন। দাখিল কোরআন মাজিদ ও তাজবিদ বিষয়ের পরীক্ষায় ১ হাজার ২১ জনের মধ্যে উপস্থিত ছিল ১ হাজার ১ জন। অনুপস্থিত ২০ জন।
এদিকে, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিন থেকেই কেন্দ্রগুলোতে ছিল কড়া নিরাপত্তা। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা, অনিয়ম এড়াতে এবং প্রশ্নফাঁস রোধে সার্বক্ষণিক চারটি ভিজিলেন্সটিম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট ও পুলিশ সদস্যরা মাঠে ছিলেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গা ভি. জে সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ও সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার। এ সময় তিনি জানান, ফেসবুকে বা অন্য কোনোভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁসের আশঙ্কা নেই। প্রশ্ন ফাঁসের গুজবে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের কান না দেওয়ার আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক।
আলমডাঙ্গা:
আলমডাঙ্গায় এসএসসি, দাখিল ও ভোকেশনাল পরীক্ষার প্রথম দিন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল আলমডাঙ্গা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র ও মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা বাংলা ১ম পত্র পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। অন্যদিকে, আলমডাঙ্গা আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে দাখিল পরীক্ষার ১ম দিন কোরআন মাজিদ ও তাজবিদ বিষয়ে এবং মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ভোকেশনাল পরিক্ষার্থীরা বাংলা দ্বিতিয়পত্র পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। আলমডাঙ্গা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট পরিক্ষার্থী ৭৭০ জন, অনুপস্থিত ৮ জন। এদের মধ্যে ছাত্র ২৭১, ছাত্রী ৪৯১জন। পরীক্ষা কেন্দ্রের সার্বক্ষণিক দায়িত্বে ছিলেন যুব উন্নয়ন ও বিআরডিবি অফিসার ও কেন্দ্র সচিব প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম। মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ১ হাজার ৮১ জন। অনুপস্থিত ৮ জন। ছাত্র ৫৮৭ জন, ছাত্রী ৪৯৪ জন। পরীক্ষা কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক দায়িত্বে ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল বারি, কেন্দ্র সচিব প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান। আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে মোট ২৪৬ জন। অনুপস্থিত ৬ জন। কেন্দ্রে সর্বক্ষণিক দায়িত্বে ছিলেন কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম। মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ভোকেশনাল পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ৩৫৭ জন। অনুপস্থিত ৫ জন। কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক দায়িত্বে ছিলেন একাডেমিক সুপারভাইজার ইমরুল কায়েস ও কেন্দ্র সচিব আবু তালেব। বেলা ১১টার দিকে আলমডাঙ্গা বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি মনিরা পারভীন কেন্দ্র পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ ছাড়াও আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিটন আলী আলমডাঙ্গার প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন।
আন্দুলবাড়িয়া:
জীবননগরের আন্দুলবাড়িয়া বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শান্তিপূর্ণভাবে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা ১০টায় দুটি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। আন্দুলবাড়িয়া বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৫৫ জন ছাত্র ও ১০৯ জন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এ কেন্দ্রে ১ জন মেয়ে অনুস্থিত ছিল। আন্দুলবাড়িয়া বহুমুখী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৪২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র সংখ্যা ১২২ জন ও ছাত্রী সংখ্যা ২২ জন। এ কেন্দ্রের সব পরীক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। দুপুর ১২টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেড শিবনী রাণী সরকার কেন্দ্র দুটি পরিদর্শন করেন। আন্দুলবাড়িয়া বহুমুখী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেন উপজেলা মৎস সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান।
মেহেরপুর


সারা দেশের ন্যায় মেহেরপুর জেলাতেও একযোগে এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষা শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় মেহেরপুর জেলার ৩টি উপজেলায় একযোগে এই এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর মেহেরপুর জেলা থেকে এসএসসি পরীক্ষায় মোট ৮ হাজার ১২৩ জন, দাখিল পরীক্ষায় ৫৯৮ জন এবং এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষায় মোট ১ হাজার ৬৯ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা। তবে এর মধ্যে পরীক্ষার ১ম দিনে ৬৮ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল।
মেহেরপুরে এ বছর অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী সংখ্যা মেহেরপুর সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ১ হাজার ১২৪ জন, সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ৮৯৪ জন, আমঝুপি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৬৪২ জন, গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ৫৮৭ জন, গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪১৮ জন, বামন্দী নিশিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ৬৬৩ জন, জুগিরঘোপা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৩০৭ জন, মুজিবনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৮৮৮ জন, সাহেবনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪০৪ জন, বামুন্দি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪৯৫ জন, বেতবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৬২৮ জন, রায়পুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৬০৪ জন এবং দারিয়াপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪৬৯। এদিকে, দাখিল পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী সংখ্যা মেহেরপুর দারুল উলুম আহমদিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে ৩৫৩ জন ও গাংনী সিদ্দিকিয়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে ২৪৫ জন। এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষায় শিক্ষার্থী সংখ্যা মেহেরপুর টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ৪৪৭ জন, গাংনী সন্ধানি স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ৪৬৯ জন এবং দারিয়াপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৫৩ জন। পরীক্ষা চলাকালে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক মো. আতাউল গনি মেহেরপুরের বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক পরীক্ষা কেন্দ্রের পরীক্ষা-ব্যবস্থাপনায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। গতকাল সোমবার থেকে শুরু হওয়া ১ম দিনে এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষায় মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে মোট ৬৮ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল। জানা গেছে, এসএসসি পরীক্ষার বাংলা প্রথমপত্রে মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে ৪১ জন, দাখিল পরীক্ষায় কোরআন মাজিদ ও তাজবিদ বিষয়ের ১৫ জন এবং এসএসসি ভোকেশনালের বাংলা দ্বিতীয়পত্রে ১২ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে আসেনি।
ঝিনাইদহ:
ঝিনাইদহে এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষার প্রথম দিন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলার মোট ৬টি উপজেলার ৫৪টি কেন্দ্রের মধ্যে এসএসসিতে ৩৬টি, দাখিলে ৯টি এবং ভোকেশনালে ৯টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। জেলায় মোট ১৯ হাজার ৭৯৬ জন পরীক্ষার্থী এ বছর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। প্রথম দিনের পরীক্ষায় এসএসসিতে ১৬ হাজার ৩৬ জন, দাখিলে ২ হাজার ৪৬১ জন এবং এসএসসি ভোকেশনালে ১ হাজার ২৯৯ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে বলে জানা গেছে। প্রথম দিনের পরীক্ষায় অনুপস্থিত ১৩৬ জনের মধ্যে এসএসসিতে ৭৪, দাখিলে ৫৩ এবং ভোকেশনালে ৯ জন পরীক্ষার্থী। তবে প্রথম দিন কোনো পরীক্ষার্থী বহিষ্কারের খবর পাওয়া যায়নি। পরীক্ষা শেষে ঝিনাইদহ সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের কয়েকজন পরীক্ষার্থীর কাছে জানতে চাইলে তারা বলে, পরীক্ষা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে, প্রশ্ন ভালো হয়েছে এবং প্রশ্নে কোনো ভুলত্রুটি চোখে পড়েনি।