ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

প্রতিবেশীর হক

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১৬:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭
  • / ৫০১ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক: সমাজে মানুষ একে অপরকে সহযোগিতা করে। মানুষের ভালোমন্দ, শত্রু-মিত্র, উপকার-অপকার এসব কিছু নির্ভর করে প্রতিবেশীর ওপর। ইসলাম ধর্মে প্রতিবেশীর ব্যাপারে যথেষ্ট গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। পবিত্র কেরানে মহান রাব্বুল আলামিন বলেন, ‘মা-বাবার সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করো। আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতিম এবং মিসকিনদের সঙ্গে সদাচার করো। সদ্ব্যবহার করো পরিচিত অপরিচিত প্রতিবেশী ও সাময়িক প্রতিবেশী এবং মুসাফিরদের সঙ্গে। (সূরা নীসা: ৩৬)। ওই আয়াত থেকে প্রতিবেশীকে আমরা তিনভাগে বিভক্ত করতে পারি। ১. নিকটতর আত্মীয় প্রতিবেশী। ২. অনাত্মীয় প্রতিবেশী এবং ৩. সাময়িক প্রতিবেশী। প্রতিবেশী কেবল তারাই নয়, যারা নিজ বাড়ির একান্ত আশপাশে বসবাস করে। এর সীমারেখা আরো বিস্তৃত। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেন, তোমাদের ডানে-বামে, সামনে-পেছনে চল্লিশটি বাড়ি পর্যন্ত প্রতিবেশীর আওতার অন্তর্ভুক্ত। (বোখারি: /২৯০১)। প্রতিবেশী অভাবী হলে তার অভাব পূরণে আর্থিক সাহায্য সহযোগিতা করা। পীড়িত হলে তার সেবা করা। সুখে-দুঃখে সদাসর্বদা তার পাশে দাঁড়ানো। নিজে যা খাবে সম্ভব হলে প্রতিবেশীকেও তার কিছু অংশ দেয়া। নতুবা এমনভাবে আহার করা যেন প্রতিবেশী টের না পায়। এ বিষয়টি মহানবী (সা.)- এর বাণীতে উচ্চারিত হয়েছে এভাবে, ‘সে ব্যক্তি মুমিন নয় যে রাত যাপন করল পরিতৃপ্ত অবস্থায় অথচ তার পাশে তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত এবং সে তা জানে।’ (তহাবী শরীফ: ১/২৫) ওই হাদিসে শুধু খাবারের কথা উল্লেখ করা হলেও উদ্দেশ্য শুধু খাবারই নয়; বরং উদ্দেশ্য হলো, প্রতিবেশী কোনো কষ্ট ভোগ করলে সাধ্যানুযায়ী খোঁজখবর রাখা এবং সহযোগিতা করা। প্রতিবেশীর ভেতর কেউ মারা গেলে তার জানাজার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিবেশীর হক আদায়ের কারণে একদিকে আল্লাহ ও তার রাসুল (সা.) খুশি হন, অপরদিকে সে সমাজে হয়ে ওঠে একজন মর্যাদাশীল ব্যক্তি। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর কসম, ঐ ব্যক্তি মুমিন নয়; আল্লাহর কসম, ঐ ব্যক্তি মুমিন নয়; আল্লাহর কসম, ঐ ব্যক্তি মুমিন নয়। উপস্থিত সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ কোন ব্যক্তি মুমিন নয়? প্রতি উত্তরে তিনি বললেন, যার প্রতিবেশী তার অনিষ্ট থেকে নিরাপদ নয়।’ (বোখারী: ২/৮৮৯) ওই হাদিসের বর্ণনা বিন্যাসের প্রতি লক্ষ্য করলে বুঝে আসবে, প্রতিবেশীর হকের বিষয়টিকে রাসুল (সা.) কিরূপ তীব্রভাবে অনুভব করেছিলেন এবং অন্যদের মধ্যে কিরূপ চেতনা সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার ওপরই প্রতিবেশীর হুকুম আরোপিত।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

প্রতিবেশীর হক

আপলোড টাইম : ১০:১৬:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ধর্ম ডেস্ক: সমাজে মানুষ একে অপরকে সহযোগিতা করে। মানুষের ভালোমন্দ, শত্রু-মিত্র, উপকার-অপকার এসব কিছু নির্ভর করে প্রতিবেশীর ওপর। ইসলাম ধর্মে প্রতিবেশীর ব্যাপারে যথেষ্ট গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। পবিত্র কেরানে মহান রাব্বুল আলামিন বলেন, ‘মা-বাবার সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করো। আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতিম এবং মিসকিনদের সঙ্গে সদাচার করো। সদ্ব্যবহার করো পরিচিত অপরিচিত প্রতিবেশী ও সাময়িক প্রতিবেশী এবং মুসাফিরদের সঙ্গে। (সূরা নীসা: ৩৬)। ওই আয়াত থেকে প্রতিবেশীকে আমরা তিনভাগে বিভক্ত করতে পারি। ১. নিকটতর আত্মীয় প্রতিবেশী। ২. অনাত্মীয় প্রতিবেশী এবং ৩. সাময়িক প্রতিবেশী। প্রতিবেশী কেবল তারাই নয়, যারা নিজ বাড়ির একান্ত আশপাশে বসবাস করে। এর সীমারেখা আরো বিস্তৃত। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেন, তোমাদের ডানে-বামে, সামনে-পেছনে চল্লিশটি বাড়ি পর্যন্ত প্রতিবেশীর আওতার অন্তর্ভুক্ত। (বোখারি: /২৯০১)। প্রতিবেশী অভাবী হলে তার অভাব পূরণে আর্থিক সাহায্য সহযোগিতা করা। পীড়িত হলে তার সেবা করা। সুখে-দুঃখে সদাসর্বদা তার পাশে দাঁড়ানো। নিজে যা খাবে সম্ভব হলে প্রতিবেশীকেও তার কিছু অংশ দেয়া। নতুবা এমনভাবে আহার করা যেন প্রতিবেশী টের না পায়। এ বিষয়টি মহানবী (সা.)- এর বাণীতে উচ্চারিত হয়েছে এভাবে, ‘সে ব্যক্তি মুমিন নয় যে রাত যাপন করল পরিতৃপ্ত অবস্থায় অথচ তার পাশে তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত এবং সে তা জানে।’ (তহাবী শরীফ: ১/২৫) ওই হাদিসে শুধু খাবারের কথা উল্লেখ করা হলেও উদ্দেশ্য শুধু খাবারই নয়; বরং উদ্দেশ্য হলো, প্রতিবেশী কোনো কষ্ট ভোগ করলে সাধ্যানুযায়ী খোঁজখবর রাখা এবং সহযোগিতা করা। প্রতিবেশীর ভেতর কেউ মারা গেলে তার জানাজার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিবেশীর হক আদায়ের কারণে একদিকে আল্লাহ ও তার রাসুল (সা.) খুশি হন, অপরদিকে সে সমাজে হয়ে ওঠে একজন মর্যাদাশীল ব্যক্তি। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর কসম, ঐ ব্যক্তি মুমিন নয়; আল্লাহর কসম, ঐ ব্যক্তি মুমিন নয়; আল্লাহর কসম, ঐ ব্যক্তি মুমিন নয়। উপস্থিত সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ কোন ব্যক্তি মুমিন নয়? প্রতি উত্তরে তিনি বললেন, যার প্রতিবেশী তার অনিষ্ট থেকে নিরাপদ নয়।’ (বোখারী: ২/৮৮৯) ওই হাদিসের বর্ণনা বিন্যাসের প্রতি লক্ষ্য করলে বুঝে আসবে, প্রতিবেশীর হকের বিষয়টিকে রাসুল (সা.) কিরূপ তীব্রভাবে অনুভব করেছিলেন এবং অন্যদের মধ্যে কিরূপ চেতনা সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার ওপরই প্রতিবেশীর হুকুম আরোপিত।