ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পুলিশের অপরাধ প্রবণতা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৪৭:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ মার্চ ২০২০
  • / ২১৩ বার পড়া হয়েছে

তদন্ত করে কার্যকর ব্যবস্থা নিন
পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপকর্মে জড়ানোর অভিযোগ বরাবরই রয়েছে। ঢাকাসহ সারা দেশের থানা ও ইউনিটগুলোতে কঠোর নজরদারি সত্ত্বেও পুলিশের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। আবার এটাও ঠিক যে কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অপকর্মের অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত হচ্ছে। বদলি, প্রত্যাহার বা সাময়িক বরখাস্তের মতো ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে কিন্তু পুলিশের অপরাধ বন্ধ হচ্ছে না। মাঠপর্যায়ের কিছু অসাধু পুলিশ সদস্য চাহিদা অনুযায়ী টাকা না পেলে যে কাউকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিতে দ্বিধা করছে না। আর এই বিভাগটির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ হচ্ছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পুলিশ সদর দপ্তর অভিযুক্ত সদস্যদের গুরুদণ্ড না দিয়ে লঘুদণ্ড দেয়। ভুক্তভোগী অনেকেরই অভিযোগ, ফৌজদারি মামলার অপরাধ করলেও বেশির ভাগ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দিয়েই ইতি টানা হয়। অনেক সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার বা সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একপর্যায়ে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে এলে সময় নিয়ে কৌশলী তদন্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে রক্ষা করা হয়। দু-চারজনের জন্য পুরো পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট হবে, এটা মানা যায় না বলে অতীতে পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা বারবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। পুলিশের অপরাধ প্রবণতা কমিয়ে আনতে পুলিশ সুপারদের কাছে বিশেষ নির্দেশনাও গেছে। কিন্তু তার পরও থেমে নেই পুলিশের অপরাধ তৎপরতা। গত বুধবার নারী নির্যাতনের পৃথক অভিযোগে রাজধানীর দুই থানার ওসিসহ ১৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে যাত্রাবাড়ী থানার ওসিসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে দক্ষিণ খান থানার ওসিসহ ১০ পুলিশের বিরুদ্ধে আনা শ্লীলতাহানির অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন, পিবিআইকে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত একটি সুশৃঙ্খল বাহিনীর অর্জন কিছু সদস্যের অনৈতিকতা ও অসাধুতার জন্য নিশ্চয়ই নষ্ট হতে দেওয়া যায় না। আইনবিরোধী কর্মকাণ্ড ও দুষ্কৃতকারীদের তৎপরতা নিয়ন্ত্রণ করে সমাজে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করাই হচ্ছে পুলিশের প্রথম ও প্রধান কাজ। কিন্তু এই বাহিনীর কিছু সদস্য যদি জেনে-বুঝে অপকর্মে লিপ্ত হয়, তাহলে এরচেয়ে দুঃখজনক তো আর কিছু নেই। পুলিশের যেসব সদস্য এই অপকর্মের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এ বাহিনীর ওপর মানুষের আস্থা কমে আসবে। পুলিশ বিশ্বাসযোগ্যতা হারালে তা হবে দেশের জন্য বড় ক্ষতি। কাজেই আমরা প্রত্যাশা করি অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে সঠিক তদন্ত হবে। অপরাধ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টিও নিশ্চিত করা হোক।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

পুলিশের অপরাধ প্রবণতা

আপলোড টাইম : ১০:৪৭:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ মার্চ ২০২০

তদন্ত করে কার্যকর ব্যবস্থা নিন
পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপকর্মে জড়ানোর অভিযোগ বরাবরই রয়েছে। ঢাকাসহ সারা দেশের থানা ও ইউনিটগুলোতে কঠোর নজরদারি সত্ত্বেও পুলিশের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। আবার এটাও ঠিক যে কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অপকর্মের অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত হচ্ছে। বদলি, প্রত্যাহার বা সাময়িক বরখাস্তের মতো ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে কিন্তু পুলিশের অপরাধ বন্ধ হচ্ছে না। মাঠপর্যায়ের কিছু অসাধু পুলিশ সদস্য চাহিদা অনুযায়ী টাকা না পেলে যে কাউকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিতে দ্বিধা করছে না। আর এই বিভাগটির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ হচ্ছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পুলিশ সদর দপ্তর অভিযুক্ত সদস্যদের গুরুদণ্ড না দিয়ে লঘুদণ্ড দেয়। ভুক্তভোগী অনেকেরই অভিযোগ, ফৌজদারি মামলার অপরাধ করলেও বেশির ভাগ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দিয়েই ইতি টানা হয়। অনেক সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার বা সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একপর্যায়ে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে এলে সময় নিয়ে কৌশলী তদন্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে রক্ষা করা হয়। দু-চারজনের জন্য পুরো পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট হবে, এটা মানা যায় না বলে অতীতে পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা বারবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। পুলিশের অপরাধ প্রবণতা কমিয়ে আনতে পুলিশ সুপারদের কাছে বিশেষ নির্দেশনাও গেছে। কিন্তু তার পরও থেমে নেই পুলিশের অপরাধ তৎপরতা। গত বুধবার নারী নির্যাতনের পৃথক অভিযোগে রাজধানীর দুই থানার ওসিসহ ১৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে যাত্রাবাড়ী থানার ওসিসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে দক্ষিণ খান থানার ওসিসহ ১০ পুলিশের বিরুদ্ধে আনা শ্লীলতাহানির অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন, পিবিআইকে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত একটি সুশৃঙ্খল বাহিনীর অর্জন কিছু সদস্যের অনৈতিকতা ও অসাধুতার জন্য নিশ্চয়ই নষ্ট হতে দেওয়া যায় না। আইনবিরোধী কর্মকাণ্ড ও দুষ্কৃতকারীদের তৎপরতা নিয়ন্ত্রণ করে সমাজে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করাই হচ্ছে পুলিশের প্রথম ও প্রধান কাজ। কিন্তু এই বাহিনীর কিছু সদস্য যদি জেনে-বুঝে অপকর্মে লিপ্ত হয়, তাহলে এরচেয়ে দুঃখজনক তো আর কিছু নেই। পুলিশের যেসব সদস্য এই অপকর্মের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এ বাহিনীর ওপর মানুষের আস্থা কমে আসবে। পুলিশ বিশ্বাসযোগ্যতা হারালে তা হবে দেশের জন্য বড় ক্ষতি। কাজেই আমরা প্রত্যাশা করি অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে সঠিক তদন্ত হবে। অপরাধ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টিও নিশ্চিত করা হোক।