ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পুঁজিবাজার নিম্ন মুখী

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২৫:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই ২০১৯
  • / ২৫৩ বার পড়া হয়েছে

আস্থার সংকট কাটাতে ব্যবস্থা নিন
আবার নি¤œমুখী দেশের পুঁজিবাজার। দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ধস। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা ডিএসই সূচক কমে আড়াই বছর পেছনে ফিরে গেছে। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ বা সিএসই সূচকও কমেছে। সব খাতের শেয়ারের দরই পড়ে যাচ্ছে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা ফের রাস্তায় নেমে মিছিল, মানববন্ধন করছে। ১৫ দফা দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে তারা। বাজারের অস্বাভাবিক চরিত্র ও স্টেকহোল্ডারদের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কমিটি ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবে। নতুন বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সবার প্রত্যাশা ছিল বাজেট পাসের পর বাজার ভালো হবে। কিন্তু সেটা না হয়ে উল্টো বাজারে দরপতন চলছেই। কেন এমন হলো? বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির চাপেই যে বাজারে এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু এই চাপটা তৈরি হলো কেন? বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নিষ্ক্রিয়তা এবং আস্থাহীনতা ও বাজার আরো পড়ে যাওয়ার শঙ্কায় ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা শেয়ার ছেড়ে দেওয়ায় বাজারে পতন দীর্ঘায়িত হচ্ছে। পতন ঠেকিয়ে বাজারকে সাপোর্ট দিতে রাষ্ট্রায়ত্ত আইসিবির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে বিনিয়োগকারীরা। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন ব্যাংকগুলোর কাছে টাকা নেই। সরকারের শীর্ষ মহল থেকে বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও ব্যাংকঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামেনি। তারল্য সংকটে বাজারে লেনদেন বাড়ছে না। তাঁরা মনে করছেন, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি আরেকটি নতুন সমস্যা হিসেবে যোগ হয়েছে বাজারে। গ্যাসের দাম বাড়ায় কম্পানিগুলোর মুনাফা কমতে পারে বলে ধারণা করছে বিনিয়োগকারীরা। এর প্রভাবও পড়েছে বাজারে। অন্যদিকে আরো একটি বাজে উদাহরণ সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। দুরবস্থার কারণে এবং আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে না পারায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের কোনো ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান অবসায়ন বা লিকুইডেশনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। দায়দেনা শোধ করতে গঠন করা হবে দীর্ঘমেয়াদি স্কিম। সে অনুযায়ী গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনায় নিয়োগ হবেন একজন অবসায়ক বা লিকুইডেটর। সোজাসাপ্টা যে কথাটি বলে দেওয়া যেতে পারে তা হচ্ছে, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের কোনো আস্থা নেই। এক ধরনের অস্থিরতা চলছে। আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সেই আতঙ্কে নতুন কেউ শেয়ার কিনছে না। যাদের আছে তারা বিক্রি করে দিচ্ছে। সব কিছু মিলিয়ে আস্থার যে সংকট তৈরি হয়েছে, তা থেকে মুক্ত হতে না পারলে দেশের পুঁজিবাজারে জোয়ার আসবে না। আস্থা ফিরে আসার জন্য গভর্ন্যান্স ভালো করার সিদ্ধান্ত দৃশ্যমান হচ্ছে না বাজার বিশ্লেষকদের কাছে। কাজেই পুঁজিবাজার রক্ষায় এবং বাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে বলে আমরা মনে করি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

পুঁজিবাজার নিম্ন মুখী

আপলোড টাইম : ০৯:২৫:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই ২০১৯

আস্থার সংকট কাটাতে ব্যবস্থা নিন
আবার নি¤œমুখী দেশের পুঁজিবাজার। দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ধস। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা ডিএসই সূচক কমে আড়াই বছর পেছনে ফিরে গেছে। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ বা সিএসই সূচকও কমেছে। সব খাতের শেয়ারের দরই পড়ে যাচ্ছে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা ফের রাস্তায় নেমে মিছিল, মানববন্ধন করছে। ১৫ দফা দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে তারা। বাজারের অস্বাভাবিক চরিত্র ও স্টেকহোল্ডারদের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কমিটি ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবে। নতুন বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সবার প্রত্যাশা ছিল বাজেট পাসের পর বাজার ভালো হবে। কিন্তু সেটা না হয়ে উল্টো বাজারে দরপতন চলছেই। কেন এমন হলো? বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির চাপেই যে বাজারে এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু এই চাপটা তৈরি হলো কেন? বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নিষ্ক্রিয়তা এবং আস্থাহীনতা ও বাজার আরো পড়ে যাওয়ার শঙ্কায় ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা শেয়ার ছেড়ে দেওয়ায় বাজারে পতন দীর্ঘায়িত হচ্ছে। পতন ঠেকিয়ে বাজারকে সাপোর্ট দিতে রাষ্ট্রায়ত্ত আইসিবির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে বিনিয়োগকারীরা। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন ব্যাংকগুলোর কাছে টাকা নেই। সরকারের শীর্ষ মহল থেকে বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও ব্যাংকঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামেনি। তারল্য সংকটে বাজারে লেনদেন বাড়ছে না। তাঁরা মনে করছেন, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি আরেকটি নতুন সমস্যা হিসেবে যোগ হয়েছে বাজারে। গ্যাসের দাম বাড়ায় কম্পানিগুলোর মুনাফা কমতে পারে বলে ধারণা করছে বিনিয়োগকারীরা। এর প্রভাবও পড়েছে বাজারে। অন্যদিকে আরো একটি বাজে উদাহরণ সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। দুরবস্থার কারণে এবং আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে না পারায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের কোনো ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান অবসায়ন বা লিকুইডেশনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। দায়দেনা শোধ করতে গঠন করা হবে দীর্ঘমেয়াদি স্কিম। সে অনুযায়ী গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনায় নিয়োগ হবেন একজন অবসায়ক বা লিকুইডেটর। সোজাসাপ্টা যে কথাটি বলে দেওয়া যেতে পারে তা হচ্ছে, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের কোনো আস্থা নেই। এক ধরনের অস্থিরতা চলছে। আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সেই আতঙ্কে নতুন কেউ শেয়ার কিনছে না। যাদের আছে তারা বিক্রি করে দিচ্ছে। সব কিছু মিলিয়ে আস্থার যে সংকট তৈরি হয়েছে, তা থেকে মুক্ত হতে না পারলে দেশের পুঁজিবাজারে জোয়ার আসবে না। আস্থা ফিরে আসার জন্য গভর্ন্যান্স ভালো করার সিদ্ধান্ত দৃশ্যমান হচ্ছে না বাজার বিশ্লেষকদের কাছে। কাজেই পুঁজিবাজার রক্ষায় এবং বাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে বলে আমরা মনে করি।