ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পিশাচদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখতে চাই

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১৯:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুন ২০১৯
  • / ২৩৬ বার পড়া হয়েছে

নরসিংদীতে দুর্বৃত্তের আগুনে দগ্ধ কলেজছাত্রী ফুলন রানী বর্মণ ১৩ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে না ফেরার দেশে চলে গেলেন। গত বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তার মৃত্যু হয়। তার অকাল মৃত্যুতে আমরাও ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত। ১৩ জুন রাত সাড়ে ৮টার দিকে নরসিংদীর বীরপুরে কলেজছাত্রী ফুলন দোকান থেকে কেক নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে হামলার শিকার হন। বাড়ির আঙিনায় পৌঁছামাত্র পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা অজ্ঞাতনামা দুই দুর্বৃত্ত তার হাত ও মুখ চেপে পাশের নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়। তার আর্তচিৎকারে লোকজন তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তাকে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানান, তার শরীরের ১২ ভাগ পুড়ে গেছে। ১৪ জুন নরসিংদী সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন ফুলনের বাবা যোগেন্দ্র চন্দ্র বর্মণ। তদন্তে নেমে মৃতের পিসতুতো ভাইসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পুলিশ জানায়, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ফুলনের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন চিকিৎসক পার্থ শংকর পাল গণমাধ্যমকে বলেন, আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফুলন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তার শরীরে ২১ ভাগ ডিপ বার্ন ছিল। এ ছাড়া ইনফেকশনও হয়েছিল। চিকিৎসকরা তাকে বাঁচাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছেন। ফুলন তার পরিবারের সঙ্গে নরসিংদী পৌর এলাকার বীরপুরে থাকতেন। গত বছর তিনি স্থানীয় উদয়ন কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। আর্থিক অসঙ্গতির কারণে তার পড়ালেখা বন্ধ ছিল। ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির ওপর পর্যায়ক্রমে যে অন্যায় ও নৃশংসতা সংঘটিত হয়েছে তাতে সমাজের গভীরতর ব্যাধিই প্রকট হয়ে উঠেছে। একইসঙ্গে কেঁপে উঠেছে সমাজের মর্মমূলও। এর কিছুদিন পর কলেজছাত্রী ফুলন হত্যাকা-ের শিকার হলো। এ দায় আমাদের সবার। আমরা একেকটা ঘটনা ঘটলে একেকবার সোচ্চার হই, তারপর ভুলে যাই। এ ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন তার বাবা-মা। বিচার তো হতেই হবে। এখানে বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। কারণ এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকা-। ফুলন হত্যার সঙ্গে জড়িত প্রতিটা পিশাচের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখতে চাই। এই বিচারকাজের মনিটরিং এবং ফলোআপ থেকে আমরা যেন বিচ্যুত না হই।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

পিশাচদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখতে চাই

আপলোড টাইম : ১০:১৯:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুন ২০১৯

নরসিংদীতে দুর্বৃত্তের আগুনে দগ্ধ কলেজছাত্রী ফুলন রানী বর্মণ ১৩ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে না ফেরার দেশে চলে গেলেন। গত বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তার মৃত্যু হয়। তার অকাল মৃত্যুতে আমরাও ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত। ১৩ জুন রাত সাড়ে ৮টার দিকে নরসিংদীর বীরপুরে কলেজছাত্রী ফুলন দোকান থেকে কেক নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে হামলার শিকার হন। বাড়ির আঙিনায় পৌঁছামাত্র পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা অজ্ঞাতনামা দুই দুর্বৃত্ত তার হাত ও মুখ চেপে পাশের নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়। তার আর্তচিৎকারে লোকজন তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তাকে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানান, তার শরীরের ১২ ভাগ পুড়ে গেছে। ১৪ জুন নরসিংদী সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন ফুলনের বাবা যোগেন্দ্র চন্দ্র বর্মণ। তদন্তে নেমে মৃতের পিসতুতো ভাইসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পুলিশ জানায়, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ফুলনের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন চিকিৎসক পার্থ শংকর পাল গণমাধ্যমকে বলেন, আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফুলন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তার শরীরে ২১ ভাগ ডিপ বার্ন ছিল। এ ছাড়া ইনফেকশনও হয়েছিল। চিকিৎসকরা তাকে বাঁচাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছেন। ফুলন তার পরিবারের সঙ্গে নরসিংদী পৌর এলাকার বীরপুরে থাকতেন। গত বছর তিনি স্থানীয় উদয়ন কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। আর্থিক অসঙ্গতির কারণে তার পড়ালেখা বন্ধ ছিল। ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির ওপর পর্যায়ক্রমে যে অন্যায় ও নৃশংসতা সংঘটিত হয়েছে তাতে সমাজের গভীরতর ব্যাধিই প্রকট হয়ে উঠেছে। একইসঙ্গে কেঁপে উঠেছে সমাজের মর্মমূলও। এর কিছুদিন পর কলেজছাত্রী ফুলন হত্যাকা-ের শিকার হলো। এ দায় আমাদের সবার। আমরা একেকটা ঘটনা ঘটলে একেকবার সোচ্চার হই, তারপর ভুলে যাই। এ ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন তার বাবা-মা। বিচার তো হতেই হবে। এখানে বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। কারণ এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকা-। ফুলন হত্যার সঙ্গে জড়িত প্রতিটা পিশাচের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখতে চাই। এই বিচারকাজের মনিটরিং এবং ফলোআপ থেকে আমরা যেন বিচ্যুত না হই।