ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পিটুনিতে চাঁদাবাজদের ভৌঁ-দৌ!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৩০:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ জুন ২০১৯
  • / ২৮৬ বার পড়া হয়েছে

মহাসড়কে অবৈধ চাঁদা আদায় : সেনা সদস্যদের বাধা
ঝিনাইদহ অফিস:
মহাসড়কে পরিবহন থেকে জোরপূর্বক অবৈধ চাঁদা উত্তোলনের সময় সেনাবাহিনী হাতে ফরিদ উদ্দিন, শরিফুল ও কবির হোসেন নামের তিন চাঁদাবাজ প্রথমে ভৌঁ-দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেলেও পরে ধরাশায়ী হন। সেনা সদস্যরা তাঁদের ধরে বেধড়ক মারধর করেছেন। পরে চাঁদাবাজরা আর চাঁদাবাজি করবেন না, এমন মুচলেকা দিয়ে মাফ চেয়ে রক্ষা পান। গতকাল মঙ্গবার দুপুরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কালীগঞ্জ শহরের টিএন্ডটি অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিদিনের ন্যায় দুপুর ১২টার দিকে শহরের মেইন বাসস্ট্যান্ড থেকে দুই শ গজ দূরে টিএন্ডটি অফিসের সামনে চার-পাঁচ জনের একদল চাঁদাবাজ মহাসড়কে বাস-ট্রাকসহ বিভিন্ন পরিবহন থামিয়ে চাঁদা তুলছিলের। এতে করে সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি এসে ওই যানজটে পড়ে। সেনা সদস্যরা গাড়ি থেকে নেমে এসে দেখেন, চার-পাঁচ জন যুবক লাঠি নিয়ে বাস-ট্রাক থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করছেন। তাঁরা চাঁদাবাজদের ধাওয়া করলে কয়েকজন পালিয়ে গেলেও তিনজনকে ধরে বেধড়ক মারধর করেন। পরে চাঁদাবাজি আর করবেন না বলে মাফ চেয়ে রক্ষা পান চাঁদাবাজেরা। তাঁরা হলেন শহরের আড়পাড়া গ্রামের ফরিদ উদ্দিন, ফয়লা গ্রামের শরিফুল ইসলাম ও কবির হোসেন।
উল্লেখ্য, বছরের পর বছর একটি মহলের নির্দেশে ওই চাঁদাবাজেরা কালীগঞ্জ মহাসড়কে বিভিন্ন যানবাহন থেকে চাঁদা উত্তোলন করতেন। গত ঈদের আগ থেকে প্রশাসনের নির্দেশে মহাসড়কে সব ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধ ঘোষণা করায় কিছু দিনের জন্য চাঁদা তোলা বন্ধ ছিল। কিন্তু প্রশাসনের ওই নির্দেশ অমান্য করে এ সপ্তাহ থেকেই আবারও চাঁদা তোলা শুরু করেন ওই চাঁদাবাজেরা। সর্বশেষ মঙ্গলবার সেনাসদস্যদের হাতে মার খেয়ে পালিয়েছেন তাঁরা। তাঁরা প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা এখানে ও কলা হাটের মোড় সড়কে লাল কাপড়ের পতাকা লাঠির মাথায় বেঁধে বাস-ট্রাকসহ পিকআপ ও বিভিন্ন যানবাহন থেকে অবৈধভাবে জোরপূর্বক ৬০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করতেন। এক সঙ্গে পাঁচজন করে চাঁদার টাকা আদায় করতেন তাঁরা। কোনো যানবাহন টাকা না দিলে তাঁদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয় ও লুকিং গ্লাস ভেঙে দেওয়া হয়। এ টাকা তোলার ফলে এখানে প্রতিদিন তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ঈদের তিন দিন আগে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার ঘোষণা দেওয়ার পর সড়কে অবৈধ চাঁদার টাকা আদায় বন্ধ থাকে। অবশেষে আবার ৯ তারিখ সকাল থেকে যানবাহনে চাঁদার টাকা আদায় শুরু হয়। কয়েক বছর ধরে ঝিনাইদহ জেলাজুড়ে বেশ কয়েকটি সড়কে চাঁদার টাকা জোরপূর্বক আদায় হয়ে আসছে। এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইউনুচ আলী জানান, তিনি ওই সময়ে মিটিংয়ে ছিলেন। রাস্তায় চাঁদা তোলা-সংক্রান্ত মারধরের কোনো ঘটনা তিনি জানেন না।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

পিটুনিতে চাঁদাবাজদের ভৌঁ-দৌ!

আপলোড টাইম : ০৯:৩০:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ জুন ২০১৯

মহাসড়কে অবৈধ চাঁদা আদায় : সেনা সদস্যদের বাধা
ঝিনাইদহ অফিস:
মহাসড়কে পরিবহন থেকে জোরপূর্বক অবৈধ চাঁদা উত্তোলনের সময় সেনাবাহিনী হাতে ফরিদ উদ্দিন, শরিফুল ও কবির হোসেন নামের তিন চাঁদাবাজ প্রথমে ভৌঁ-দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেলেও পরে ধরাশায়ী হন। সেনা সদস্যরা তাঁদের ধরে বেধড়ক মারধর করেছেন। পরে চাঁদাবাজরা আর চাঁদাবাজি করবেন না, এমন মুচলেকা দিয়ে মাফ চেয়ে রক্ষা পান। গতকাল মঙ্গবার দুপুরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কালীগঞ্জ শহরের টিএন্ডটি অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিদিনের ন্যায় দুপুর ১২টার দিকে শহরের মেইন বাসস্ট্যান্ড থেকে দুই শ গজ দূরে টিএন্ডটি অফিসের সামনে চার-পাঁচ জনের একদল চাঁদাবাজ মহাসড়কে বাস-ট্রাকসহ বিভিন্ন পরিবহন থামিয়ে চাঁদা তুলছিলের। এতে করে সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি এসে ওই যানজটে পড়ে। সেনা সদস্যরা গাড়ি থেকে নেমে এসে দেখেন, চার-পাঁচ জন যুবক লাঠি নিয়ে বাস-ট্রাক থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করছেন। তাঁরা চাঁদাবাজদের ধাওয়া করলে কয়েকজন পালিয়ে গেলেও তিনজনকে ধরে বেধড়ক মারধর করেন। পরে চাঁদাবাজি আর করবেন না বলে মাফ চেয়ে রক্ষা পান চাঁদাবাজেরা। তাঁরা হলেন শহরের আড়পাড়া গ্রামের ফরিদ উদ্দিন, ফয়লা গ্রামের শরিফুল ইসলাম ও কবির হোসেন।
উল্লেখ্য, বছরের পর বছর একটি মহলের নির্দেশে ওই চাঁদাবাজেরা কালীগঞ্জ মহাসড়কে বিভিন্ন যানবাহন থেকে চাঁদা উত্তোলন করতেন। গত ঈদের আগ থেকে প্রশাসনের নির্দেশে মহাসড়কে সব ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধ ঘোষণা করায় কিছু দিনের জন্য চাঁদা তোলা বন্ধ ছিল। কিন্তু প্রশাসনের ওই নির্দেশ অমান্য করে এ সপ্তাহ থেকেই আবারও চাঁদা তোলা শুরু করেন ওই চাঁদাবাজেরা। সর্বশেষ মঙ্গলবার সেনাসদস্যদের হাতে মার খেয়ে পালিয়েছেন তাঁরা। তাঁরা প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা এখানে ও কলা হাটের মোড় সড়কে লাল কাপড়ের পতাকা লাঠির মাথায় বেঁধে বাস-ট্রাকসহ পিকআপ ও বিভিন্ন যানবাহন থেকে অবৈধভাবে জোরপূর্বক ৬০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করতেন। এক সঙ্গে পাঁচজন করে চাঁদার টাকা আদায় করতেন তাঁরা। কোনো যানবাহন টাকা না দিলে তাঁদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয় ও লুকিং গ্লাস ভেঙে দেওয়া হয়। এ টাকা তোলার ফলে এখানে প্রতিদিন তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ঈদের তিন দিন আগে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার ঘোষণা দেওয়ার পর সড়কে অবৈধ চাঁদার টাকা আদায় বন্ধ থাকে। অবশেষে আবার ৯ তারিখ সকাল থেকে যানবাহনে চাঁদার টাকা আদায় শুরু হয়। কয়েক বছর ধরে ঝিনাইদহ জেলাজুড়ে বেশ কয়েকটি সড়কে চাঁদার টাকা জোরপূর্বক আদায় হয়ে আসছে। এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইউনুচ আলী জানান, তিনি ওই সময়ে মিটিংয়ে ছিলেন। রাস্তায় চাঁদা তোলা-সংক্রান্ত মারধরের কোনো ঘটনা তিনি জানেন না।