ইপেপার । আজশনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পরিদর্শক ছাড়া কেউ পরীক্ষার হলে ঢুকবে না

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৩৭:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২০
  • / ১৭৮ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গায় এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রস্তুতি সভায় জেলা প্রশাসক
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষা পূর্ববর্তী প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে চারটায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘অনিয়ম প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট কেউ ব্যর্থ হলে আমাদের জানাবেন, আমরা সহযোগিতা করব। যেসব শিক্ষকদের বিরুদ্ধে পূর্বে অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের দায়িত্ব থেকে বিরত রাখতে হবে। বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক ওই পরীক্ষার দিন দায়িত্বে থাকতে পারবেন না। এ জন্য সবার নাম ও পদবী উল্লিখিত চেস কার্ড ব্যবহার করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, পরীক্ষার্থীরা যাতে মনোরম পরিবেশে বসে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে, সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে কেন্দ্র এলাকায় ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে হবে। পরীক্ষা কেন্দ্রে সুষ্ঠ ও নকল মুক্ত পরিবেশে নিশ্চিত করার লক্ষে নীতিমালা মেনে কক্ষ পরিদর্শক নিয়োগ করার জন্য খেয়াল রাখতে হবে। নকল করার অবৈধ পন্থা অবলম্বনের কারণে এ জেলার ভাবমূর্তি নষ্ট হয়, এমন কর্যক্রম কঠোরভাবে প্রতিরোধ করা হবে।
সভায় বিগত বছরের কার্যবিবরণী পাঠ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মনিরা পারভীন। এ সময় বিভিন্ন উপজেলা পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব ও শিক্ষকরা তাঁদের মত প্রকাশ করেন। সবার মতামতের ভিত্তিতে এ সময় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সিদ্ধান্তসমূহের মধ্যে রয়েছে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে একযোগে এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা বোর্ডের নিদের্শনা অনুসারে কেন্দ্র সচিব সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে কক্ষ পরিদর্শক নিয়োগ করবে। পরীক্ষার পূর্বে প্রত্যেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কেন্দ্র সচিব পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে উপজেলা পর্যায়ে প্রস্তুতি সভা করবে। পরীক্ষা পরিচালনা বিষয়ে কক্ষ পরিদর্শকের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করবে। কেন্দ্র সচিবগণ সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের পরিদর্শকদের নিয়ে প্রস্তুতি সভা করতে হবে। তাদের পরীক্ষা নিতিমালা ও কার্যবিবরণী সীদ্ধান্তসমূহ পাঠ করে শুনিয়ে বাস্তবায়ন করতে হবে। কেন্দ্র সচিব পরীক্ষার্থীদের সিটপ্লান নির্ণয় করবে। পরীক্ষায় বেঞ্চে দুজন করে বসবে। বেঞ্চের সিটপ্লান জেড আকারে হতে হবে এবং একজন লোক যাতে স্বাভাবিকভাবে চলাফেলা করতে পারেন, এমন দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কোনো মতেই এক বেঞ্চে একই স্কুলের দুই শিক্ষার্থী বসতে পারবে না। কোনো কেন্দ্র সচিব নকল প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরীক্ষার হলে কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবে না। শুধুমাত্র কেন্দ্র সচিব তার অফিসকক্ষে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন।
পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রে প্রবেশের সময় তাদের তল্লাশী করতে হবে। শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামাদী ছাড়া অন্য কিছু সঙ্গে নিতে পারবে না। পুলিশের পাহারা প্রশ্নপত্র কেন্দ্রগুলোতে পৌঁছাতে হবে। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কেন্দ্রগুলোতে বিদুৎ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে বিকল্প ব্যবস্থা রাখতে হবে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষকদের কক্ষ পরিদর্শনের দায়িত্ব দেওয়া যাবে না। আত্মীয় আছে, এমন শিক্ষককে কেন্দ্র পরিদর্শন থেকে বিরত রাখতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো শিক্ষক তথ্য গোপন রাখলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রের আশেপাশে ফটোকপির দোকান খোলা রাখা যাবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যনেজিং কমিটি/গভনিং বর্ডির সদস্যরা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। পরীক্ষা চলাকালীন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কন্ট্রোলরুম সার্বক্ষণিক খোলা রাখা হবে; এজন্য একটা মোবাইল নম্বরও চালু করা হয়েছে। সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইয়াহ্ ইয়া খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কুমার দাসসহ বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণ।
উল্লেখ্য, প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও স্বত:স্ফূর্তভাবে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। এবছর জেলার ২৮টি কেন্দ্রে মোট ১৩ হাজার ৪৪৪ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেবে। এর মধ্যে এসএসসি পরীক্ষায় ১০ হাজার ৪৬৯ জন, দাখিল পরীক্ষার্থী ১ হাজার ৭৮৬ জন ও এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষায় ১ হাজার ১৮৯ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

পরিদর্শক ছাড়া কেউ পরীক্ষার হলে ঢুকবে না

আপলোড টাইম : ১০:৩৭:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২০

চুয়াডাঙ্গায় এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রস্তুতি সভায় জেলা প্রশাসক
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষা পূর্ববর্তী প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে চারটায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘অনিয়ম প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট কেউ ব্যর্থ হলে আমাদের জানাবেন, আমরা সহযোগিতা করব। যেসব শিক্ষকদের বিরুদ্ধে পূর্বে অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের দায়িত্ব থেকে বিরত রাখতে হবে। বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক ওই পরীক্ষার দিন দায়িত্বে থাকতে পারবেন না। এ জন্য সবার নাম ও পদবী উল্লিখিত চেস কার্ড ব্যবহার করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, পরীক্ষার্থীরা যাতে মনোরম পরিবেশে বসে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে, সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে কেন্দ্র এলাকায় ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে হবে। পরীক্ষা কেন্দ্রে সুষ্ঠ ও নকল মুক্ত পরিবেশে নিশ্চিত করার লক্ষে নীতিমালা মেনে কক্ষ পরিদর্শক নিয়োগ করার জন্য খেয়াল রাখতে হবে। নকল করার অবৈধ পন্থা অবলম্বনের কারণে এ জেলার ভাবমূর্তি নষ্ট হয়, এমন কর্যক্রম কঠোরভাবে প্রতিরোধ করা হবে।
সভায় বিগত বছরের কার্যবিবরণী পাঠ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মনিরা পারভীন। এ সময় বিভিন্ন উপজেলা পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব ও শিক্ষকরা তাঁদের মত প্রকাশ করেন। সবার মতামতের ভিত্তিতে এ সময় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সিদ্ধান্তসমূহের মধ্যে রয়েছে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে একযোগে এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা বোর্ডের নিদের্শনা অনুসারে কেন্দ্র সচিব সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে কক্ষ পরিদর্শক নিয়োগ করবে। পরীক্ষার পূর্বে প্রত্যেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কেন্দ্র সচিব পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে উপজেলা পর্যায়ে প্রস্তুতি সভা করবে। পরীক্ষা পরিচালনা বিষয়ে কক্ষ পরিদর্শকের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করবে। কেন্দ্র সচিবগণ সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের পরিদর্শকদের নিয়ে প্রস্তুতি সভা করতে হবে। তাদের পরীক্ষা নিতিমালা ও কার্যবিবরণী সীদ্ধান্তসমূহ পাঠ করে শুনিয়ে বাস্তবায়ন করতে হবে। কেন্দ্র সচিব পরীক্ষার্থীদের সিটপ্লান নির্ণয় করবে। পরীক্ষায় বেঞ্চে দুজন করে বসবে। বেঞ্চের সিটপ্লান জেড আকারে হতে হবে এবং একজন লোক যাতে স্বাভাবিকভাবে চলাফেলা করতে পারেন, এমন দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কোনো মতেই এক বেঞ্চে একই স্কুলের দুই শিক্ষার্থী বসতে পারবে না। কোনো কেন্দ্র সচিব নকল প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরীক্ষার হলে কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবে না। শুধুমাত্র কেন্দ্র সচিব তার অফিসকক্ষে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন।
পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রে প্রবেশের সময় তাদের তল্লাশী করতে হবে। শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামাদী ছাড়া অন্য কিছু সঙ্গে নিতে পারবে না। পুলিশের পাহারা প্রশ্নপত্র কেন্দ্রগুলোতে পৌঁছাতে হবে। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কেন্দ্রগুলোতে বিদুৎ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে বিকল্প ব্যবস্থা রাখতে হবে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষকদের কক্ষ পরিদর্শনের দায়িত্ব দেওয়া যাবে না। আত্মীয় আছে, এমন শিক্ষককে কেন্দ্র পরিদর্শন থেকে বিরত রাখতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো শিক্ষক তথ্য গোপন রাখলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রের আশেপাশে ফটোকপির দোকান খোলা রাখা যাবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যনেজিং কমিটি/গভনিং বর্ডির সদস্যরা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। পরীক্ষা চলাকালীন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কন্ট্রোলরুম সার্বক্ষণিক খোলা রাখা হবে; এজন্য একটা মোবাইল নম্বরও চালু করা হয়েছে। সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইয়াহ্ ইয়া খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কুমার দাসসহ বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণ।
উল্লেখ্য, প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও স্বত:স্ফূর্তভাবে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। এবছর জেলার ২৮টি কেন্দ্রে মোট ১৩ হাজার ৪৪৪ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেবে। এর মধ্যে এসএসসি পরীক্ষায় ১০ হাজার ৪৬৯ জন, দাখিল পরীক্ষার্থী ১ হাজার ৭৮৬ জন ও এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষায় ১ হাজার ১৮৯ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিবে।