ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পরিচ্ছন্ন কর্মীর আবেদনে নিরাপত্তা কর্মীর পরীক্ষা!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৪৯:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • / ৭৬১ বার পড়া হয়েছে

দামুড়হুদার বড়বলদিয়া দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে নানা প্রশ্ন
দর্শনা অফিস:
দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের বুইচিতলা বড়বলদিয়া দাখিল মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত তিনটি পদের নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নিয়োগের নিমিত্তে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের তিনটি পদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর দুটি পদে নিয়োগ প্রদানের অনুমোদন দেয়। কিন্তু এ অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞপ্তি সংশোধন না করেই পরীক্ষা গ্রহণ করেছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।
জানা যায়, দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের বুইচিতলা বড়বলদিয়া দাখিল মাদ্রাসায় একজন সহকারী গ্রন্থগারিক, একজন আয়া ও একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী নিয়োগের নিমিত্তে চুয়াডাঙ্গার স্থানীয় একটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ চাকরি প্রার্থীদের নিকট দরখাস্ত আহ্বান করা হয়। পরবর্তীতে এ ৩টি পদের অনুকূলে ২০১৮ জনবল কাঠামো অনুযায়ী ৩০/০৮/২০২০ তারিখে এ তিনটি পদে নিয়োগের জন্য মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের নিকট মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ অনুমতি চায়।
এ অনুমতি প্রসঙ্গে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর গত ৯ সেপ্টেম্বর চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার বুইচিতলা বড়বলদিয়া দাখিল মাদ্রসার ‘নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া’ (২০১৮ জনবল কাঠামো অনুযায়ী নবসৃষ্ট) দুটি পদের অনুকূলে ডিজি মহোদয়ের প্রতিনিধি মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের (পরিদর্শক) মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনকে মনোনয়নপূর্বক নিয়োগ প্রক্রিয়ার অনুমতি প্রদান করে।
সদর দপ্তরের এ নিয়োগ পরিপত্রের ভিত্তিতে মাদ্রাসার সুপার ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি একটি স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় সরকারি বিধি ২০১৮ মোতাবেক দামুড়হুদার বুইচিতলা বড়বলদিয়া দাখিল মাদ্রসার ১ জন সহকারী গ্রন্থগারিক, ১ জন আয়া ও ১ জন পরিচ্ছন্ন কর্মী আবশ্যক এমন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। অথচ বিজ্ঞপ্তিটি হবে দামুড়হুদার বুইচিতলা বড়বলদিয়া দাখিল মাদ্রসার ১ জন নিরাপত্তা কর্মী ও ১ জন আয়া আবশ্যক। কিন্তু মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পত্রিকায় সংশোধনী বিজ্ঞপ্তি না ছেপেই মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের অনুমতি পরিপত্র অনুযায়ী ‘নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া’ এ দুটি পদের জন্য গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বুইচিতলা বড়বলদিয়া দাখিল মাদ্রাসা কার্যালয়ে লিখিত পরীক্ষা ও সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে। যেটা আসলে নিয়মের মধ্যে পড়ে না। তাই এই নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকে নাম প্রকাশ না শর্তে বলছেন, এই নিয়োগে আর্থিক লেন-দেন সংক্রান্ত কোনো ঝামেলাও থাকতে পারে।
এ বিষয়ে বুইচিতলা বড়বলদিয়া দাখিল মাদ্রসার সুপার আবু তালহার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মতিন জানান, ‘বিষয়টি হচ্ছে নিরাপত্তা কর্মী, আয়া, পরিচ্ছন্ন কর্মী, দপ্তরী এ ধরনের পদগুলো সব ৪র্থ শ্রেণির। ভুল করেই হোক আর যেভাবেই হোক, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিতে দিয়ে দিয়েছে। এ বিষয়টি সদর দপ্তরের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষও জানে।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিদর্শক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন জানান, ‘এ বিষয় সম্পর্কে আমার জানা নেই। ওই মাদ্রাসা সুপারের নিকট থেকে বিষয়টি জানতে পেরেছি। তবে বিধি-বিধানের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়াসহ সকল কর্মকাণ্ড হতে হবে। আমরা কেউ বিধি-বিধানের বাইরে নই।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

পরিচ্ছন্ন কর্মীর আবেদনে নিরাপত্তা কর্মীর পরীক্ষা!

আপলোড টাইম : ০৮:৪৯:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

দামুড়হুদার বড়বলদিয়া দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে নানা প্রশ্ন
দর্শনা অফিস:
দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের বুইচিতলা বড়বলদিয়া দাখিল মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত তিনটি পদের নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নিয়োগের নিমিত্তে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের তিনটি পদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর দুটি পদে নিয়োগ প্রদানের অনুমোদন দেয়। কিন্তু এ অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞপ্তি সংশোধন না করেই পরীক্ষা গ্রহণ করেছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।
জানা যায়, দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের বুইচিতলা বড়বলদিয়া দাখিল মাদ্রাসায় একজন সহকারী গ্রন্থগারিক, একজন আয়া ও একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী নিয়োগের নিমিত্তে চুয়াডাঙ্গার স্থানীয় একটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ চাকরি প্রার্থীদের নিকট দরখাস্ত আহ্বান করা হয়। পরবর্তীতে এ ৩টি পদের অনুকূলে ২০১৮ জনবল কাঠামো অনুযায়ী ৩০/০৮/২০২০ তারিখে এ তিনটি পদে নিয়োগের জন্য মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের নিকট মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ অনুমতি চায়।
এ অনুমতি প্রসঙ্গে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর গত ৯ সেপ্টেম্বর চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার বুইচিতলা বড়বলদিয়া দাখিল মাদ্রসার ‘নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া’ (২০১৮ জনবল কাঠামো অনুযায়ী নবসৃষ্ট) দুটি পদের অনুকূলে ডিজি মহোদয়ের প্রতিনিধি মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের (পরিদর্শক) মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনকে মনোনয়নপূর্বক নিয়োগ প্রক্রিয়ার অনুমতি প্রদান করে।
সদর দপ্তরের এ নিয়োগ পরিপত্রের ভিত্তিতে মাদ্রাসার সুপার ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি একটি স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় সরকারি বিধি ২০১৮ মোতাবেক দামুড়হুদার বুইচিতলা বড়বলদিয়া দাখিল মাদ্রসার ১ জন সহকারী গ্রন্থগারিক, ১ জন আয়া ও ১ জন পরিচ্ছন্ন কর্মী আবশ্যক এমন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। অথচ বিজ্ঞপ্তিটি হবে দামুড়হুদার বুইচিতলা বড়বলদিয়া দাখিল মাদ্রসার ১ জন নিরাপত্তা কর্মী ও ১ জন আয়া আবশ্যক। কিন্তু মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পত্রিকায় সংশোধনী বিজ্ঞপ্তি না ছেপেই মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের অনুমতি পরিপত্র অনুযায়ী ‘নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া’ এ দুটি পদের জন্য গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বুইচিতলা বড়বলদিয়া দাখিল মাদ্রাসা কার্যালয়ে লিখিত পরীক্ষা ও সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে। যেটা আসলে নিয়মের মধ্যে পড়ে না। তাই এই নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকে নাম প্রকাশ না শর্তে বলছেন, এই নিয়োগে আর্থিক লেন-দেন সংক্রান্ত কোনো ঝামেলাও থাকতে পারে।
এ বিষয়ে বুইচিতলা বড়বলদিয়া দাখিল মাদ্রসার সুপার আবু তালহার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মতিন জানান, ‘বিষয়টি হচ্ছে নিরাপত্তা কর্মী, আয়া, পরিচ্ছন্ন কর্মী, দপ্তরী এ ধরনের পদগুলো সব ৪র্থ শ্রেণির। ভুল করেই হোক আর যেভাবেই হোক, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিতে দিয়ে দিয়েছে। এ বিষয়টি সদর দপ্তরের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষও জানে।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিদর্শক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন জানান, ‘এ বিষয় সম্পর্কে আমার জানা নেই। ওই মাদ্রাসা সুপারের নিকট থেকে বিষয়টি জানতে পেরেছি। তবে বিধি-বিধানের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়াসহ সকল কর্মকাণ্ড হতে হবে। আমরা কেউ বিধি-বিধানের বাইরে নই।’