ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পবিত্র জুমার নামাজের গুরুত্ব

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৩০:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ জানুয়ারী ২০২১
  • / ৯৯ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম প্রতিবেদন:
করোনাভাইরাসের এ মহামারীতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে মসজিদে যাওয়া সময়ের দাবি। জুমা বিশ্বের মুসলমানদের সাপ্তাহিক ঈদের দিন। জুমার গুরুত্ব, তাৎপর্য ও ফজিলত প্রসঙ্গে সুরা জুমার ৯ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের জন্য আজান দেওয়া হয় তখন তোমরা আল্লাহর ইবাদতের জন্য দ্রুত যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বোঝ।’ এ আয়াতের মাধ্যমে জুমার নামাজের গুরুত্ব অনুধাবন করা যায়। জুমার নামাজের তাগিদ শুধু কোরআনেই নয়, হাদিসেও এসেছে। হজরত তারিক ইবনে শিহাব (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘ক্রীতদাস, মহিলা, নাবালেগ শিশু ও অসুস্থ ব্যক্তি- এ চার প্রকার মানুষ ছাড়া সব মুসলমানের ওপর জুমার নামাজ জামাতে আদায় করা অপরিহার্য কর্তব্য।’ আবু দাউদ, মুসতাদরিকে হাকেম। কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে জুমার নামাজ ছেড়ে দেয় তবে তার ব্যাপারে রয়েছে কঠোর হুঁশিয়ারি। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো শরিয়তসম্মত কারণ ছাড়া জুমার নামাজ বর্জন করবে তার নাম মুনাফিক হিসেবে এমন দফতরে লিপিবদ্ধ হবে যা মুছে ফেলা হবে না এবং পরিবর্তনও করা যাবে না।’ তাফসিরে মাজহারি। জুমার দিন মুসলমানের সাপ্তাহিক ঈদের দিন এবং এটি দিনগুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠ। ইবনে মাজায় বর্ণিত হাদিসে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘নিঃসন্দেহে জুমার দিন সেরা দিন ও আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম দিন। আল্লাহর কাছে তা ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের দিনের চেয়েও উত্তম।’ আর মুসলিমের হাদিসে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যেসব দিনে সূর্য উদিত হয়েছে তার মধ্যে সর্বোত্তম হলো জুমার দিন। সে দিনেই আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং সে দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং সে দিনেই জান্নাত থেকে তাঁকে বের করা হয়েছে। যেদিন কিয়ামত হবে সেদিনও হবে জুমার দিন।’ সাপ্তাহিক ঈদ হিসেবে জুমার দিনের ফজিলত অনেক। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জুমার দিনে ফেরেশতারা মসজিদের প্রতিটি দরজায় দাঁড়িয়ে যায়। তারা মসজিদে আগমনকারী মুসল্লিদের নাম পর্যায়ক্রমে লিপিবদ্ধ করতে থাকে। এরপর যখন ইমাম এসে যায় তখন তারা রেজিস্টার বন্ধ করে খুতবা শুনতে থাকে। যে সবার আগে মসজিদে প্রবেশ করে সে একটি উট আল্লাহর রাস্তায় দান করার সওয়াব লাভ করে। যে দুই নম্বরে প্রবেশ করে সে একটি গরু আল্লাহর রাস্তায় দান করার সওয়াব পায়। যে তিন নম্বরে প্রবেশ করে সে একটি দুম্বা দান করার সওয়াব পায়। যে চার নম্বরে প্রবেশ করে সে একটি মুরগি দান করার সওয়াব লাভ করে। আর যে পাঁচ নম্বরে প্রবেশ করে সে একটি ডিম আল্লাহর রাস্তায় দান করার সওয়াব পায়।’ বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে শাফি। লেখক : খতিব, মণিপুর বাইতুল আশরাফ জামে মসজিদ, মিরপুর, ঢাকা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

পবিত্র জুমার নামাজের গুরুত্ব

আপলোড টাইম : ০৯:৩০:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ জানুয়ারী ২০২১

ধর্ম প্রতিবেদন:
করোনাভাইরাসের এ মহামারীতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে মসজিদে যাওয়া সময়ের দাবি। জুমা বিশ্বের মুসলমানদের সাপ্তাহিক ঈদের দিন। জুমার গুরুত্ব, তাৎপর্য ও ফজিলত প্রসঙ্গে সুরা জুমার ৯ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের জন্য আজান দেওয়া হয় তখন তোমরা আল্লাহর ইবাদতের জন্য দ্রুত যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বোঝ।’ এ আয়াতের মাধ্যমে জুমার নামাজের গুরুত্ব অনুধাবন করা যায়। জুমার নামাজের তাগিদ শুধু কোরআনেই নয়, হাদিসেও এসেছে। হজরত তারিক ইবনে শিহাব (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘ক্রীতদাস, মহিলা, নাবালেগ শিশু ও অসুস্থ ব্যক্তি- এ চার প্রকার মানুষ ছাড়া সব মুসলমানের ওপর জুমার নামাজ জামাতে আদায় করা অপরিহার্য কর্তব্য।’ আবু দাউদ, মুসতাদরিকে হাকেম। কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে জুমার নামাজ ছেড়ে দেয় তবে তার ব্যাপারে রয়েছে কঠোর হুঁশিয়ারি। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো শরিয়তসম্মত কারণ ছাড়া জুমার নামাজ বর্জন করবে তার নাম মুনাফিক হিসেবে এমন দফতরে লিপিবদ্ধ হবে যা মুছে ফেলা হবে না এবং পরিবর্তনও করা যাবে না।’ তাফসিরে মাজহারি। জুমার দিন মুসলমানের সাপ্তাহিক ঈদের দিন এবং এটি দিনগুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠ। ইবনে মাজায় বর্ণিত হাদিসে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘নিঃসন্দেহে জুমার দিন সেরা দিন ও আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম দিন। আল্লাহর কাছে তা ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের দিনের চেয়েও উত্তম।’ আর মুসলিমের হাদিসে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যেসব দিনে সূর্য উদিত হয়েছে তার মধ্যে সর্বোত্তম হলো জুমার দিন। সে দিনেই আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং সে দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং সে দিনেই জান্নাত থেকে তাঁকে বের করা হয়েছে। যেদিন কিয়ামত হবে সেদিনও হবে জুমার দিন।’ সাপ্তাহিক ঈদ হিসেবে জুমার দিনের ফজিলত অনেক। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জুমার দিনে ফেরেশতারা মসজিদের প্রতিটি দরজায় দাঁড়িয়ে যায়। তারা মসজিদে আগমনকারী মুসল্লিদের নাম পর্যায়ক্রমে লিপিবদ্ধ করতে থাকে। এরপর যখন ইমাম এসে যায় তখন তারা রেজিস্টার বন্ধ করে খুতবা শুনতে থাকে। যে সবার আগে মসজিদে প্রবেশ করে সে একটি উট আল্লাহর রাস্তায় দান করার সওয়াব লাভ করে। যে দুই নম্বরে প্রবেশ করে সে একটি গরু আল্লাহর রাস্তায় দান করার সওয়াব পায়। যে তিন নম্বরে প্রবেশ করে সে একটি দুম্বা দান করার সওয়াব পায়। যে চার নম্বরে প্রবেশ করে সে একটি মুরগি দান করার সওয়াব লাভ করে। আর যে পাঁচ নম্বরে প্রবেশ করে সে একটি ডিম আল্লাহর রাস্তায় দান করার সওয়াব পায়।’ বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে শাফি। লেখক : খতিব, মণিপুর বাইতুল আশরাফ জামে মসজিদ, মিরপুর, ঢাকা।