ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:২০:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ মার্চ ২০২০
  • / ২১৩ বার পড়া হয়েছে

বাজার সামাল দিতে কার্যকর ব্যবস্থা নিন
রোজা আসতে এখনো প্রায় দুই মাস বাকি। রোজার সময় ভোক্তাদের এক ধরনের মানসিক প্রস্তুতি থাকে। এ সময় বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়বে এ প্রস্তুতি নিয়েই ক্রেতারা বাজারে যান। তাতে সংসারে টান পড়ে। কিন্তু কিছু তো করার নেই। বাজারের অদৃশ্য সিন্ডিকেট থেকে বাংলাদেশের ভোক্তাদের রেহাই মিলছে না। আর এই সিন্ডিকেট এতই শক্তিশালী যে সরকারও সেখানে হাত দিতে পারে না। এমনকি বিকল্প বাজারব্যবস্থাও সেভাবে গড়ে তোলা যায়নি এই সিন্ডিকেটের দাপটে। এটাকে এক ধরনের অসহায় আত্মসমর্পণ বলা যেতে পারে। অর্থনীতির কোনো সূত্র নয়, বাংলাদেশের বাজারে পণ্যমূল্য নির্ভর করে ব্যবসায়ীদের মর্জির ওপর। ব্যতিক্রম কখনো ঘটতে দেখা যায়নি। যেমন চলতি বছরের শুরু থেকেই কোনো কারণ ছাড়াই বেড়েছে চালের দাম। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি চালে বেড়েছে তিন থেকে চার টাকা। পর্যাপ্ত জোগান থাকলেও সিন্ডিকেট করে চিনি ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছেন। এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা অজুহাত দাঁড় করিয়েছেন বিশ্ববাজারে চিনির দাম বেশি। ডাল, ভোজ্য তেল, শুকনা মরিচ, এলাচ, রসুন ও খেজুরের দামও বাড়তি। প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, কোনো পণ্যের দাম গত এক বছরে ২০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ সূত্র জানাচ্ছে, গত ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত মাসব্যাপী গড় দামের হিসাবে মসুর ডাল, সয়াবিন তেল, মসলার মধ্যে রসুন, আদা, শুকনা মরিচ, ধনিয়া, কালিজিরা ও এলাচের দাম বেড়েছে। অর্থাৎ নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনো পণ্যেই ক্রেতার স্বস্তি নেই। প্রয়োজনীয় পণ্যের কোনো কোনোটির দাম আবার নতুন করে বাড়ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে বাড়তি চাপে পড়তে হয় মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষকে। প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবং তাদের আয় না বাড়ায় ব্যয় সমন্বয় করতে হিমশিম খেতে হয়। কাউকে কাউকে প্রয়োজনীয় অন্য খরচ বাদ দিয়ে হলেও খাদ্যসামগ্রীতে অগ্রাধিকার দিতে হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যয় সংকোচন নীতিতেও যেতে হয় তাদের। আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য করে তাল মেলাতে পারে না। পানি ও বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। এই মূল্যবৃদ্ধি কিন্তু শুধু পণ্য দুটিতেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। কলকারখানায় উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়বে। বাড়িভাড়াও বাড়বে। সব ক্ষেত্রেই ভোক্তার ওপর চাপ সৃষ্টি হবে। কোনো সন্দেহ নেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, উন্নয়নও হচ্ছে। দেশের সাধারণ মানুষ তথা নিম্নমধ্যবিত্ত ও স্বল্পবিত্ত মানুষ কি উন্নয়নের এই সুফলের ছিটেফোঁটাও পাচ্ছে? নাকি বাজার সব খেয়ে ফেলছে? কোনোভাবেই তো পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করা যাচ্ছে না। জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছেই। সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। আপাতত বাজার সামাল দিন। স্বস্তি ফেরাতে এর কোনো বিকল্প নেই।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি

আপলোড টাইম : ১০:২০:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ মার্চ ২০২০

বাজার সামাল দিতে কার্যকর ব্যবস্থা নিন
রোজা আসতে এখনো প্রায় দুই মাস বাকি। রোজার সময় ভোক্তাদের এক ধরনের মানসিক প্রস্তুতি থাকে। এ সময় বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়বে এ প্রস্তুতি নিয়েই ক্রেতারা বাজারে যান। তাতে সংসারে টান পড়ে। কিন্তু কিছু তো করার নেই। বাজারের অদৃশ্য সিন্ডিকেট থেকে বাংলাদেশের ভোক্তাদের রেহাই মিলছে না। আর এই সিন্ডিকেট এতই শক্তিশালী যে সরকারও সেখানে হাত দিতে পারে না। এমনকি বিকল্প বাজারব্যবস্থাও সেভাবে গড়ে তোলা যায়নি এই সিন্ডিকেটের দাপটে। এটাকে এক ধরনের অসহায় আত্মসমর্পণ বলা যেতে পারে। অর্থনীতির কোনো সূত্র নয়, বাংলাদেশের বাজারে পণ্যমূল্য নির্ভর করে ব্যবসায়ীদের মর্জির ওপর। ব্যতিক্রম কখনো ঘটতে দেখা যায়নি। যেমন চলতি বছরের শুরু থেকেই কোনো কারণ ছাড়াই বেড়েছে চালের দাম। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি চালে বেড়েছে তিন থেকে চার টাকা। পর্যাপ্ত জোগান থাকলেও সিন্ডিকেট করে চিনি ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছেন। এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা অজুহাত দাঁড় করিয়েছেন বিশ্ববাজারে চিনির দাম বেশি। ডাল, ভোজ্য তেল, শুকনা মরিচ, এলাচ, রসুন ও খেজুরের দামও বাড়তি। প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, কোনো পণ্যের দাম গত এক বছরে ২০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ সূত্র জানাচ্ছে, গত ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত মাসব্যাপী গড় দামের হিসাবে মসুর ডাল, সয়াবিন তেল, মসলার মধ্যে রসুন, আদা, শুকনা মরিচ, ধনিয়া, কালিজিরা ও এলাচের দাম বেড়েছে। অর্থাৎ নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনো পণ্যেই ক্রেতার স্বস্তি নেই। প্রয়োজনীয় পণ্যের কোনো কোনোটির দাম আবার নতুন করে বাড়ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে বাড়তি চাপে পড়তে হয় মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষকে। প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবং তাদের আয় না বাড়ায় ব্যয় সমন্বয় করতে হিমশিম খেতে হয়। কাউকে কাউকে প্রয়োজনীয় অন্য খরচ বাদ দিয়ে হলেও খাদ্যসামগ্রীতে অগ্রাধিকার দিতে হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যয় সংকোচন নীতিতেও যেতে হয় তাদের। আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য করে তাল মেলাতে পারে না। পানি ও বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। এই মূল্যবৃদ্ধি কিন্তু শুধু পণ্য দুটিতেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। কলকারখানায় উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়বে। বাড়িভাড়াও বাড়বে। সব ক্ষেত্রেই ভোক্তার ওপর চাপ সৃষ্টি হবে। কোনো সন্দেহ নেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, উন্নয়নও হচ্ছে। দেশের সাধারণ মানুষ তথা নিম্নমধ্যবিত্ত ও স্বল্পবিত্ত মানুষ কি উন্নয়নের এই সুফলের ছিটেফোঁটাও পাচ্ছে? নাকি বাজার সব খেয়ে ফেলছে? কোনোভাবেই তো পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করা যাচ্ছে না। জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছেই। সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। আপাতত বাজার সামাল দিন। স্বস্তি ফেরাতে এর কোনো বিকল্প নেই।