ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পক্ষ নেবে না বাংলাদেশ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫৮:৫৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ মার্চ ২০১৯
  • / ২৭৯ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ ডেস্ক:
ভারত-পাকিস্তান চলমান উত্তেজনায় বাংলাদেশ কোনো পক্ষ নেবে না, প্রতিক্রিয়াও দেখাবে না। তবে পরিস্থিতির ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছে ঢাকা। এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশের বিদেশনীতি দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারের প্রতিনিধিরা। ঢাকা মনে করে, এটি একান্তই দুই প্রতিবেশী দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। যদিও ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার ছায়া এরই মধ্যে বাংলাদেশ সীমান্তে পড়তে শুরু করেছে। বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফকে সতর্ক অবস্থায় রেখেছে ভারত। দেশটির সীমান্তরক্ষা বাহিনী বিএসএফের এক কর্মকর্তার বরাতে দিল্লির সরকারি বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, সীমান্তজুড়ে বিএসএফ এলার্ট জারি করেছে। ভারত ও পাকিস্তান সীমান্তের উত্তেজনার সুযোগ যেন কোনো দুর্বৃত্ত অথবা সন্ত্রাসী নিতে না পারে সে জন্য বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফকে সতর্ক রাখা হয়েছে। সীমান্তে সব রকম প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সীমান্তে ভারতের সতর্ক অবস্থানের বিষয়েও ঢাকা কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখানোর নীতি নিয়েছে। খোদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনও এ নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হননি। ওআইসি সম্মেলনে যোগ দিতে আবুধাবির উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার আগে টেলিফোনে কথা হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে। অন্য অনেক বিষয়ে কথা বললেও ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফ-এর এলার্ট জারি সংক্রান্ত প্রশ্নে মন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, ‘না এ বিষয়ে কোনো কমেন্ট করবো না।’ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অবশ্য ঢাকার বাইরে এক অনুষ্ঠানের সাইড লাইনে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপে বলেছেন, বাংলাদেশ শান্তি চায়। শান্তির পক্ষেই ঢাকার অবস্থান।
উল্লেখ্য, গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পালওয়ামায় সন্ত্রাসী হামলায় ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনীর কমপক্ষে ৪০ সদস্য নিহত হন। বাংলাদেশ ওই ঘটনার নিন্দা জানায়। নয়াদিল্লিস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে পাঠানো বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ নিন্দা জানান। সেখানে তিনি ব্যক্তিগতভাবে এবং বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের পক্ষে গভীর সমবেদনা জানান। ওই হামলাকে কাপুরুষোচিত বলেও বার্তায় উল্লেখ করা হয়।
ওই হামলার দায় স্বীকার করে পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী জৈশ ই মোহাম্মদ। হামলায় পাকিস্তান সরকারের মদত থাকার অভিযোগ তোলে ভারত। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা চলছে। কাশ্মীরের আকাশসীমায় লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েছে ভারত ও পাকিস্তান। বুধবার ভারত, পাকিস্তান উভয়েই দাবি করেছে তারা পরস্পরের যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে। গত দু’দিনে বিমান হামলা ছাড়াও দুই দেশের স্থলবাহিনীর মধ্যে এক ডজনের বেশি স্থানে গুলিবিনিময় হয়েছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এবারই প্রথম ভারতীয় যুদ্ধবিমান পাকিস্তানের ভেতরে গিয়ে হামলা চালায়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ বিশ্বশক্তিগুলো দুই পক্ষকেই বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছে। স্মরণ করা যায়, বাংলাদেশের দুর্দিনের বন্ধু ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সঙ্গে ২২১৬.৭ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

পক্ষ নেবে না বাংলাদেশ

আপলোড টাইম : ০৯:৫৮:৫৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ মার্চ ২০১৯

সমীকরণ ডেস্ক:
ভারত-পাকিস্তান চলমান উত্তেজনায় বাংলাদেশ কোনো পক্ষ নেবে না, প্রতিক্রিয়াও দেখাবে না। তবে পরিস্থিতির ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছে ঢাকা। এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশের বিদেশনীতি দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারের প্রতিনিধিরা। ঢাকা মনে করে, এটি একান্তই দুই প্রতিবেশী দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। যদিও ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার ছায়া এরই মধ্যে বাংলাদেশ সীমান্তে পড়তে শুরু করেছে। বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফকে সতর্ক অবস্থায় রেখেছে ভারত। দেশটির সীমান্তরক্ষা বাহিনী বিএসএফের এক কর্মকর্তার বরাতে দিল্লির সরকারি বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, সীমান্তজুড়ে বিএসএফ এলার্ট জারি করেছে। ভারত ও পাকিস্তান সীমান্তের উত্তেজনার সুযোগ যেন কোনো দুর্বৃত্ত অথবা সন্ত্রাসী নিতে না পারে সে জন্য বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফকে সতর্ক রাখা হয়েছে। সীমান্তে সব রকম প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সীমান্তে ভারতের সতর্ক অবস্থানের বিষয়েও ঢাকা কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখানোর নীতি নিয়েছে। খোদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনও এ নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হননি। ওআইসি সম্মেলনে যোগ দিতে আবুধাবির উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার আগে টেলিফোনে কথা হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে। অন্য অনেক বিষয়ে কথা বললেও ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফ-এর এলার্ট জারি সংক্রান্ত প্রশ্নে মন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, ‘না এ বিষয়ে কোনো কমেন্ট করবো না।’ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অবশ্য ঢাকার বাইরে এক অনুষ্ঠানের সাইড লাইনে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপে বলেছেন, বাংলাদেশ শান্তি চায়। শান্তির পক্ষেই ঢাকার অবস্থান।
উল্লেখ্য, গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পালওয়ামায় সন্ত্রাসী হামলায় ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনীর কমপক্ষে ৪০ সদস্য নিহত হন। বাংলাদেশ ওই ঘটনার নিন্দা জানায়। নয়াদিল্লিস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে পাঠানো বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ নিন্দা জানান। সেখানে তিনি ব্যক্তিগতভাবে এবং বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের পক্ষে গভীর সমবেদনা জানান। ওই হামলাকে কাপুরুষোচিত বলেও বার্তায় উল্লেখ করা হয়।
ওই হামলার দায় স্বীকার করে পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী জৈশ ই মোহাম্মদ। হামলায় পাকিস্তান সরকারের মদত থাকার অভিযোগ তোলে ভারত। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা চলছে। কাশ্মীরের আকাশসীমায় লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েছে ভারত ও পাকিস্তান। বুধবার ভারত, পাকিস্তান উভয়েই দাবি করেছে তারা পরস্পরের যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে। গত দু’দিনে বিমান হামলা ছাড়াও দুই দেশের স্থলবাহিনীর মধ্যে এক ডজনের বেশি স্থানে গুলিবিনিময় হয়েছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এবারই প্রথম ভারতীয় যুদ্ধবিমান পাকিস্তানের ভেতরে গিয়ে হামলা চালায়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ বিশ্বশক্তিগুলো দুই পক্ষকেই বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছে। স্মরণ করা যায়, বাংলাদেশের দুর্দিনের বন্ধু ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সঙ্গে ২২১৬.৭ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে।