ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ওপর সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ারে রাঙ্গামাটিতে নিহত ৭

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:২২:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০১৯
  • / ২৩১ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:
নিরুত্তাপ উপজেলা পরিষদের ভোটে এবার উত্তাপ ছড়াল রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি। ওই উপজেলায় কংলাক ভোটকেন্দ্র থেকে নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে ফেরার পথে ৯ কিলো নামক স্থানে সন্ত্রাসীরা নির্বাচনী কর্মকর্তা-কর্মচারী বহনকারী গাড়িকে লক্ষ্য করে ব্রাশফায়ার করে। এতে নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাসহ ৭ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে দুজন নারী। গুরুতর আহত হয়েছেন ১১ জন। রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার মো. আলমগীর কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন- বাঘাইছড়ি কিশালয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার মো. আমির হোসেন ও মন্টু চাকমা, পোলিং অফিসার আবু তৈয়ব, ভিডিপি সদস্য মিহির কান্তি দত্ত, মো. আল আমিন, বিলকিস আক্তার ও জাহানারা বেগম। আহত ১১ জনকে স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হেলিকপ্টারযোগে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পুরো বাঘাইছড়ি উপজেলায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি।
স্থানীয়া জানান, রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার কংলাকে ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শেষে বাঘাইছড়ি উপজেলায় ফেরার পথে বাঘাইছড়ির ৯ কিলোমিটার এলাকায় পাহাড় থেকে নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের বহন করা গাড়ির ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়। এ সময় গাড়িতে থাকা সবাই আহত হন। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় বিজিবি, সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে বাঘাইছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে নিয়ে আসে। এদিকে এই ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থার বিরাজ করছে। গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জোরদার করা হয়েছে। তবে কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ জানাতে পারেনি।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ জানিয়েছেন, রাঙ্গামাটি বাঘাইছড়ি উপজেলার তিনটি নির্বাচন কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ শেষে সরঞ্জাম নিয়ে বাঘাইছড়ি আসার পথে সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা চালায়। এই ঘটনায় ঘটনাস্থলে ৬ জন নিহত হন। তিনি বলেন, আহত ২৬ জনের মধ্যে ১১ জনের অবস্থা আশঙ্কজনক হওয়ায় হেলিকপ্টারে করে তাদের চট্টগ্রাম সিএমএইচে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আহত অপর ১৫ জনকে বাঘাইছড়ি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, বাঘাইছড়ি উপজেলায় নিরাপত্তা জোরদার করতে অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
এ ঘটনার মধ্য দিয়ে পাহাড় আবারো অশান্ত হয়ে উঠল। এখন প্রশ্ন ওঠেছে এটা কী নির্বাচনী সহিংসতা, নাকি পাহাড়ে বিদ্যমান সহিংসতার বহিঃপ্রকাশ। ধারণা করা হচ্ছে, পাহাড়ে জনসংহতি সমিতির দুই গ্রুপের বিদ্যমান দ্বন্দ্বের বলি হলো নির্বাচনী কাজে দায়িত্বপ্রাপ্তরা। স্থানীয় একটি সূত্র দাবি করেছে, জনসংহতি সমিতির সন্তু লারমা গ্রুপের প্রার্থী বড় ঋষি চাকমা হেরে যাওয়ায় তার সমর্থিত সন্ত্রাসী গ্রুপ এ হামলা করে থাকতে পারে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ওপর সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ারে রাঙ্গামাটিতে নিহত ৭

আপলোড টাইম : ১১:২২:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০১৯

সমীকরণ প্রতিবেদন:
নিরুত্তাপ উপজেলা পরিষদের ভোটে এবার উত্তাপ ছড়াল রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি। ওই উপজেলায় কংলাক ভোটকেন্দ্র থেকে নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে ফেরার পথে ৯ কিলো নামক স্থানে সন্ত্রাসীরা নির্বাচনী কর্মকর্তা-কর্মচারী বহনকারী গাড়িকে লক্ষ্য করে ব্রাশফায়ার করে। এতে নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাসহ ৭ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে দুজন নারী। গুরুতর আহত হয়েছেন ১১ জন। রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার মো. আলমগীর কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন- বাঘাইছড়ি কিশালয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার মো. আমির হোসেন ও মন্টু চাকমা, পোলিং অফিসার আবু তৈয়ব, ভিডিপি সদস্য মিহির কান্তি দত্ত, মো. আল আমিন, বিলকিস আক্তার ও জাহানারা বেগম। আহত ১১ জনকে স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হেলিকপ্টারযোগে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পুরো বাঘাইছড়ি উপজেলায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি।
স্থানীয়া জানান, রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার কংলাকে ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শেষে বাঘাইছড়ি উপজেলায় ফেরার পথে বাঘাইছড়ির ৯ কিলোমিটার এলাকায় পাহাড় থেকে নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের বহন করা গাড়ির ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়। এ সময় গাড়িতে থাকা সবাই আহত হন। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় বিজিবি, সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে বাঘাইছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে নিয়ে আসে। এদিকে এই ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থার বিরাজ করছে। গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জোরদার করা হয়েছে। তবে কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ জানাতে পারেনি।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ জানিয়েছেন, রাঙ্গামাটি বাঘাইছড়ি উপজেলার তিনটি নির্বাচন কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ শেষে সরঞ্জাম নিয়ে বাঘাইছড়ি আসার পথে সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা চালায়। এই ঘটনায় ঘটনাস্থলে ৬ জন নিহত হন। তিনি বলেন, আহত ২৬ জনের মধ্যে ১১ জনের অবস্থা আশঙ্কজনক হওয়ায় হেলিকপ্টারে করে তাদের চট্টগ্রাম সিএমএইচে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আহত অপর ১৫ জনকে বাঘাইছড়ি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, বাঘাইছড়ি উপজেলায় নিরাপত্তা জোরদার করতে অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
এ ঘটনার মধ্য দিয়ে পাহাড় আবারো অশান্ত হয়ে উঠল। এখন প্রশ্ন ওঠেছে এটা কী নির্বাচনী সহিংসতা, নাকি পাহাড়ে বিদ্যমান সহিংসতার বহিঃপ্রকাশ। ধারণা করা হচ্ছে, পাহাড়ে জনসংহতি সমিতির দুই গ্রুপের বিদ্যমান দ্বন্দ্বের বলি হলো নির্বাচনী কাজে দায়িত্বপ্রাপ্তরা। স্থানীয় একটি সূত্র দাবি করেছে, জনসংহতি সমিতির সন্তু লারমা গ্রুপের প্রার্থী বড় ঋষি চাকমা হেরে যাওয়ায় তার সমর্থিত সন্ত্রাসী গ্রুপ এ হামলা করে থাকতে পারে।