ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নারীসহ উভয়পক্ষের ৬ জন আহত : থানায় তিন অভিযোগ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫২:৫৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
  • / ৩২৩ বার পড়া হয়েছে

জীবননগরের তেঁতুলিয়া গ্রামে মসজিদ কমিটি গঠন নিয়ে দু’গ্রুপের সংঘর্ষ
জীবননগর অফিস: জীবননগরে মসজিদের নতুন কমিটি গঠন করাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৬ জন আহত হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে জীবননগর পৌরসভার ৭নং ওর্য়াড তেতুলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, গত কয়েক দিন আগে তেতুলিয়া গ্রামের জামে মসজিদের কমিটি গঠন করাকে কেন্দ্র করে তেতুলিয়া গ্রামের আমিন উদ্দিনের ছেলে আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কমিশনার সাদ (৫০) ও একই গ্রামের হাসানের সাথে মতভেদ সৃষ্টি হয়। এতে সাদ আহম্মেদ গ্রুপের লোকজন হাসান গ্রুপের লোকজনের উপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় হাসান গ্রুপের সদস্যরা বাদি হয়ে জীবননগর থানায় আমিন উদ্দিনের ছেলে সাদ আহম্মেদ (৫০) সাদ আহম্মেদের ছেলে প্রিন্স (১৯) মাহাতাবের ছেলে কলিং (২৩) এর নামে মামলা করে। মামলার কথা শুনে গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার সময় সাদ আহম্মেদর ছেলে, স্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন হাসান গ্রুপের সদস্যদের উপর হামলা করে। এ হামলায় হাসান গ্রুপের সুলতান বিশ্বাসের ছেলে মতিয়ার বিশ্বাস (৪৫) মতিয়ার বিশ্বাসের ছেলে কাজল (১৬) মতিয়ার বিশ্বাসের মেয়ে মধুমালা (২৪) মোশারফের ছেলে হাসান (৪২) এবং হাসানের মেয়ে বৃষ্টিকে (১৮) পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এক পর্যায় দুই গ্রুপের মধ্যে একটি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এতে সাদ গ্রুপের আতিয়ার রহমানের ছেলে মিলন (২৮) এবং শুকুর আলীর ছেলে ইদ্রিস আলী (৪০) আহত হয়। এদিকে স্থানীয় এলাকাবাসী আহত উভয়পক্ষের সদস্যদের চিকিৎসার জন্য জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের ভর্তি করেন।
আহত হাসান অভিযোগ করে বলেন, আমাদের গ্রামের মসজিদের নতুন কমিটি গঠনের জন্য এলাকার সকলে আলোচনা করলে মসজিদে সাদ আহম্মেদর পক্ষের কিছু লোকজন তাকে সম্পাদক হিসাবে প্রস্তাব তোলে। এ প্রস্তাবে অনেকে সম্মতি না দেওয়ায় সে ক্ষিপ্ত হয়। এলাকাবাসীর দাবি ছিল সাদ যেহেতু ঈদগা কমিটির সাধারন সম্পাদক সেই হিসাবে এক ব্যাক্তি দুটি পদে না দিয়ে অন্য কারও দেওয়া হোক। আমি তাতে সম্মতি দেওয়ায় আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়। আমি গতকাল শনিবার সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে বাজারের উদ্দেশ্য ব্যবসার জন্য ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। পথেমধ্যে সাদ, তার ছেলে ও তার স্ত্রী বাড়ি থেকে বের হয়ে আমাকে গালিগালাজ করে করে আমি তার প্রতিবাদ করলে তারা আমার আর আমার মেয়েকে মারধর করে এবং আমার নিকট থাকা ব্যাগের ভিতরে ১লক্ষ টাকা নিয়ে নেই এবং আমার মেয়ের গলার চেইন ছিড়ে নেই। এ সময় আমার ভাইরা এলে তারা আমাদের পরিবারের উপর হামলা করে।
এ ব্যাপারে সাদ আহম্মেদের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি কারও মারধর করিনি বরং হাসান ও তার লোকজন নিয়ে প্রায় আমার কাছে চাঁদা চায়। আমি তাতে রাজি না হওয়ায় তারা মসজিদের কমিটি গঠনের দোহায় দিয়ে গতকাল আমার বাড়িতে হামলা চালায় এবং বাড়ি থেকে স্বর্নের চেইন ও বালা নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমি জীবননগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।
এ ব্যাপারে জীবননগর পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, তেতুলিয়া গ্রামে যে ঘটনা ঘটেছে এ বিষয়টি আমি শুনেছি আমরা এ বিষয়টি মিমাংশা করার জন্য চেষ্টা করছি। যেহেতু দুই পক্ষের লোকজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে তাই একটু সুস্থ হলেই দুই পক্ষকে নিয়ে এবং স্থানীয় ওর্য়াড কাউন্সিলর ও সুধীমহলকে সাথে নিয়ে এটি মিটিয়ে ফেলব।
এ ব্যাপারে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদুর রহমান জানান, তেতুলিয়া গ্রামে মসজিদের কমিটি গঠন করাকে কেন্দ্র করে যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে এ ঘটনায় দুই পক্ষ থানায় তিনটি অভিযোগ করেছে। তবে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে তদন্তের পরে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এ ঘটনায় পুরো এলাকা জুড়ে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। যখন তখন হতে বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটতে পারে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

নারীসহ উভয়পক্ষের ৬ জন আহত : থানায় তিন অভিযোগ

আপলোড টাইম : ০৯:৫২:৫৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৮

জীবননগরের তেঁতুলিয়া গ্রামে মসজিদ কমিটি গঠন নিয়ে দু’গ্রুপের সংঘর্ষ
জীবননগর অফিস: জীবননগরে মসজিদের নতুন কমিটি গঠন করাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৬ জন আহত হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে জীবননগর পৌরসভার ৭নং ওর্য়াড তেতুলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, গত কয়েক দিন আগে তেতুলিয়া গ্রামের জামে মসজিদের কমিটি গঠন করাকে কেন্দ্র করে তেতুলিয়া গ্রামের আমিন উদ্দিনের ছেলে আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কমিশনার সাদ (৫০) ও একই গ্রামের হাসানের সাথে মতভেদ সৃষ্টি হয়। এতে সাদ আহম্মেদ গ্রুপের লোকজন হাসান গ্রুপের লোকজনের উপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় হাসান গ্রুপের সদস্যরা বাদি হয়ে জীবননগর থানায় আমিন উদ্দিনের ছেলে সাদ আহম্মেদ (৫০) সাদ আহম্মেদের ছেলে প্রিন্স (১৯) মাহাতাবের ছেলে কলিং (২৩) এর নামে মামলা করে। মামলার কথা শুনে গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার সময় সাদ আহম্মেদর ছেলে, স্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন হাসান গ্রুপের সদস্যদের উপর হামলা করে। এ হামলায় হাসান গ্রুপের সুলতান বিশ্বাসের ছেলে মতিয়ার বিশ্বাস (৪৫) মতিয়ার বিশ্বাসের ছেলে কাজল (১৬) মতিয়ার বিশ্বাসের মেয়ে মধুমালা (২৪) মোশারফের ছেলে হাসান (৪২) এবং হাসানের মেয়ে বৃষ্টিকে (১৮) পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এক পর্যায় দুই গ্রুপের মধ্যে একটি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এতে সাদ গ্রুপের আতিয়ার রহমানের ছেলে মিলন (২৮) এবং শুকুর আলীর ছেলে ইদ্রিস আলী (৪০) আহত হয়। এদিকে স্থানীয় এলাকাবাসী আহত উভয়পক্ষের সদস্যদের চিকিৎসার জন্য জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের ভর্তি করেন।
আহত হাসান অভিযোগ করে বলেন, আমাদের গ্রামের মসজিদের নতুন কমিটি গঠনের জন্য এলাকার সকলে আলোচনা করলে মসজিদে সাদ আহম্মেদর পক্ষের কিছু লোকজন তাকে সম্পাদক হিসাবে প্রস্তাব তোলে। এ প্রস্তাবে অনেকে সম্মতি না দেওয়ায় সে ক্ষিপ্ত হয়। এলাকাবাসীর দাবি ছিল সাদ যেহেতু ঈদগা কমিটির সাধারন সম্পাদক সেই হিসাবে এক ব্যাক্তি দুটি পদে না দিয়ে অন্য কারও দেওয়া হোক। আমি তাতে সম্মতি দেওয়ায় আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়। আমি গতকাল শনিবার সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে বাজারের উদ্দেশ্য ব্যবসার জন্য ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। পথেমধ্যে সাদ, তার ছেলে ও তার স্ত্রী বাড়ি থেকে বের হয়ে আমাকে গালিগালাজ করে করে আমি তার প্রতিবাদ করলে তারা আমার আর আমার মেয়েকে মারধর করে এবং আমার নিকট থাকা ব্যাগের ভিতরে ১লক্ষ টাকা নিয়ে নেই এবং আমার মেয়ের গলার চেইন ছিড়ে নেই। এ সময় আমার ভাইরা এলে তারা আমাদের পরিবারের উপর হামলা করে।
এ ব্যাপারে সাদ আহম্মেদের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি কারও মারধর করিনি বরং হাসান ও তার লোকজন নিয়ে প্রায় আমার কাছে চাঁদা চায়। আমি তাতে রাজি না হওয়ায় তারা মসজিদের কমিটি গঠনের দোহায় দিয়ে গতকাল আমার বাড়িতে হামলা চালায় এবং বাড়ি থেকে স্বর্নের চেইন ও বালা নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমি জীবননগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।
এ ব্যাপারে জীবননগর পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, তেতুলিয়া গ্রামে যে ঘটনা ঘটেছে এ বিষয়টি আমি শুনেছি আমরা এ বিষয়টি মিমাংশা করার জন্য চেষ্টা করছি। যেহেতু দুই পক্ষের লোকজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে তাই একটু সুস্থ হলেই দুই পক্ষকে নিয়ে এবং স্থানীয় ওর্য়াড কাউন্সিলর ও সুধীমহলকে সাথে নিয়ে এটি মিটিয়ে ফেলব।
এ ব্যাপারে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদুর রহমান জানান, তেতুলিয়া গ্রামে মসজিদের কমিটি গঠন করাকে কেন্দ্র করে যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে এ ঘটনায় দুই পক্ষ থানায় তিনটি অভিযোগ করেছে। তবে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে তদন্তের পরে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এ ঘটনায় পুরো এলাকা জুড়ে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। যখন তখন হতে বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটতে পারে।