ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নতুন মন্ত্রিসভার শপথ কাল সবার নজর এখন বঙ্গভবনের দিকে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:২৬:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ জানুয়ারী ২০১৯
  • / ২৭১ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ ডেস্ক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর শপথ নিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও জোটের এমপিরা। এবার সবার দৃষ্টি নতুন মন্ত্রিসভার দিকে। এর আকার কেমন হবে, কারা বাদ পড়ছেন, নতুন কারা আসছেন- এসব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সবার মুখে মুখে। সর্বত্রই এ নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। দলমত নির্বিশেষে সবার চোখ পত্রিকা, টেলিভিশন ও অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোর ওপর। পিছিয়ে নেই ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। নবনির্বাচিত এমপিদের মধ্যেও কৌতূহল- কে ডাক পাচ্ছেন আগামীকাল সোমবার বঙ্গভবনে অনুষ্ঠেয় মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে। শুধু তাই নয়, ‘প্রিয় নেতাকে মন্ত্রিসভায় দেখতে চাই’- এমন দাবি নিয়ে ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সভা-সমাবেশ করেছেন নেতাকর্মীরা। তবে এবার নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য একটি মন্ত্রিসভা উপহার দেবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। যিনি টানা তৃতীয় মেয়াদ ও চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে নতুন নজির সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন। সোমবার বিকাল সাড়ে তিনটায় বঙ্গভবনে প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। শপথ অনুষ্ঠানের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ছুটির দিনেও সচিবালয়, গণভবন ও বঙ্গভবনে ছোটাছুটি করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। শনিবার রাত ১০টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নতুন মন্ত্রীদের জন্য সরকারি পরিবহনপুলের ৪০টি গাড়ি প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট সূত্র।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগসহ ক্ষমতাসীন দলের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এবার মন্ত্রিসভার কলেবর কমছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। নতুন মন্ত্রিসভার সদস্য ব্যক্তিদের নাম, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, অবস্থান তালিকাবদ্ধ করা হচ্ছে। তালিকায় স্থান পাওয়া মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের শপথ অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ জানাতে আজ বিকাল থেকে টেলিফোন করা শুরু করবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এক্ষেত্রে ঢাকার বাইরে অবস্থানকারীদের আগে ফোন দেয়া হবে। সোমবার সকালেও অনেকে টেলিফোন পাবেন। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যেই মন্ত্রিসভায় স্থান দিতে দক্ষ, যোগ্য, কর্মঠ ও ত্যাগী নেতাদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রস্তুত করেছেন। এই তালিকায় চমকে দেয়ার মতো কিছু নাম আছে। আছেন প্রবাসীরাও। এমপি নন এমন বেশ কয়েক নেতাও আছেন। আছেন ব্যবসায়ী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বও। এছাড়া তৃণমূলের দু’জন নেতার নাম আছে এই তালিকায়। একঝাঁক তরুণকে স্থান দিতে বর্তমান মন্ত্রিসভার অনেক সদস্যকে বাদের তালিকায় রাখা হয়েছে। সূত্র আরও জানায়, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী যারা দলে প্রভাবশালী ও কেন্দ্রে যোগাযোগ আছে তাদের সবাই মন্ত্রী হতে চায়। যাদের এমপি হওয়া নিয়েই দুশ্চিন্তায় ছিল দল, সেসব এমপিও নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী হতে চান। এ লক্ষ্যে তারা দৌড়ঝাঁপ করছেন দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে। আওয়ামী ভাবাপন্ন ব্যবসায়ী, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, আইনজীবীরাও আছেন এই দৌড়ে। মুখিয়ে আছেন সেই কাঙ্ক্ষিত টেলিফোন পেতে। সংসদ সদস্যদের বাইরে টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রিত্ব পেতেও অনেকে অপেক্ষায় আছেন। শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও সকাল থেকেই খোলা ছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এদিন সকালে সচিবালয়ে নিজ দফতরে এসেছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। এছাড়া এ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ের সচিবরাও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এসেছিলেন। তারা নতুন মন্ত্রীদের শপথ গ্রহণের ফাইল তৈরির কাজসহ আনুষঙ্গিক কাজগুলো সম্পন্ন করেছেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব শফিউল আজিম বলেন, ‘সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টায় নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেবে বলে আশা করছি। এই অনুষ্ঠানটি পরিচালনার দায়িত্ব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের। তাই এ সংশ্লিষ্ট কাজগুলো গুছিয়ে রাখার জন্যই আজ সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও আমরা কাজ করেছি।’ সূত্র জানায়, শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব নাজমুল হক সিদ্দিকীর নেতৃত্বে একটি টিম বঙ্গভবনে যায়। বঙ্গভবনের দরবার হলে আয়োজিত নতুন মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজনের ব্যবস্থাপনার তদারকি করতেই তারা বঙ্গভবনে গেছেন বলে শোনা গেছে। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে সরকার গঠনের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর আগে সেদিন সকালে শেখ হাসিনা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন। এরপর আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে তাকে সংসদ নেতা নির্বাচিত করা হয়। এদিকে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে, নতুন মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়ছেন বিতর্কিত, অদক্ষ ও বয়সের ভারে ন্যুব্জ বেশ কয়েকজন বর্তমান মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী। আর মন্ত্রিসভায় স্থান পেতে যাচ্ছেন কয়েকজন নতুন মুখ ও সাবেক মন্ত্রী। থাকছে টেকনোক্র্যাট কোটায় তিন থেকে চারজন। বড় বড় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন, আইসিটিতে বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলানো ও ডিজিটাল খাতে বাংলাদেশকে বিশ্বের ‘রোল মডেল’ হিসেবে পরিচিত করতে নতুনদের এগিয়ে রাখছে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সব মিলিয়ে এবারের মন্ত্রিসভায় প্রকৃত অর্থেই বড় ধরনের চমক থাকছে বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন দলের একাধিক নীতিনির্ধারক।
আওয়ামী লীগের আরেকটি সূত্র জানায়, মেধা ও দক্ষতার সংমিশ্রণে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করতে চান আওয়ামী লীগ সভাপতি। সে লক্ষ্যে মন্ত্রিপরিষদে এবার নতুন যুক্ত হচ্ছেন- যারা সৎ, সাহসী, দক্ষ ও পরীক্ষিত। শিক্ষিত তরুণ ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির, কোথাও কোনো বদনাম নেই- এমন এমপিদের মধ্য থেকে মন্ত্রিসভায় স্থান দেয়া হচ্ছে। নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শুক্রবার বলেন, ‘নতুন মন্ত্রিসভায় বিশাল একটা চমক আসবে। বিশাল বিজয়ের সঙ্গে বিশাল প্রত্যাশা। জনগণেরও এখানে একটা প্রত্যাশা রয়েছে। সেই প্রত্যাশার প্রতিধ্বনি তো করতে পারেন একজনই (শেখ হাসিনা)। কেবিনেটের বিষয়টা সম্পূর্ণ তার বিষয়। এটা প্রধানমন্ত্রীর এরিয়া, এখানে অন্য কারও প্রবেশের সুযোগ নেই। ওবায়দুল কাদের বলেন, নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে আওয়ামী লীগের পথচলা। তবে বিশাল জয়ের সঙ্গে বিশাল চমকও থাকতে পারে। ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৮ আসনের মধ্যে ২৫৭টিতে জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। জোটগতভাবে তারা পেয়েছে ২৮৮ আসন। অন্যদিকে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি ও তাদের জোটসঙ্গীরা সব মিলিয়ে মাত্র সাতটি আসন পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা টানা তৃতীয় মেয়াদে ও চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন। ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তিনি। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জিতে ১২ জানুয়ারি তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তিনি।
সূত্র জানায়, বর্তমান মন্ত্রিসভার অনেকেই বাদের তালিকায় আছেন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন অনেক আগেই। নতুন করে মন্ত্রিসভায় থাকার ইচ্ছা আমলে নিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। এছাড়া বাদের তালিকায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ের নাম শোনা যাচ্ছে। এই তিনজন একাদশ সংসদ নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন পাননি। বাদের তালিকায় আরও আছেন বর্তমান মন্ত্রিসভায় জাতীয় পার্টির তিনজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী। তারা হলেন- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু। পরিপূর্ণ বিরোধী দল হিসেবে সংসদে ভূমিকা রাখার অঙ্গীকারে মন্ত্রিসভায় না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। আগেই বাদ পড়েছেন চার টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী মতিউর রহমান, মোস্তাফা জব্বার, ইয়াফেস ওসমান ও নুরুল ইসলাম বিএসসি। এছাড়া বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী মুহা. ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বাদ পড়তে পারেন। ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী একেএম শাহজাহান কামাল, তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী আছেন বাদ পড়ার তালিকায়। এছাড়া বর্তমান মন্ত্রিসভার কয়েকজন প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রীর পদোন্নতি হতে পারে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব।
পুরনোদের মধ্যে নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পেতে যাচ্ছেন- শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, পানিসম্পদমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, ধর্মমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, অর্থ এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। তবে এসব মন্ত্রীর অনেকেরই মন্ত্রণালয় পরিবর্তনের আভাস পাওয়া গেছে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা যায়, নতুন মুখ হিসেবে মন্ত্রিসভায় যাদের স্থান পাওয়ার সম্ভাবনা আছে, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ছোট ভাই একে আবদুল মোমেন, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শ ম রেজাউল করিম, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. আবদুল আজিজ, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ এবং সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আকবর হোসেন পাঠান ওরফে নায়ক ফারুক। নতুন মুখ হিসেবে আরও যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ, গোলাম দস্তগীর গাজী, নূর ই আলম চৌধুরী লিটন, দীপংকর তালুকদার, জাহিদ আহসান রাসেল, র আ ম উবায়দুল মোক্তাদীর চৌধুরী, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের ছেলে নাজমুল হাসান পাপন, ডা. হাবিবে মিল্লাত, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম রহমতুল্লাহ, জাতীয় নেতা তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা সিমিন হোসেন রিমি এবং জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ। টেকনোক্রেট কোটায় অর্থনীতিবিদ ড. ফরাসউদ্দিন এবং আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীকে মন্ত্রিসভায় স্থান দেয়া হতে পারে। এছাড়া মন্ত্রী হওয়ার তালিকায় আছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য- সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক- জাহাঙ্গীর কবীর নানক ও আবদুর রহমান এবং সাংগঠনিক সম্পাদক- আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও বিএম মোজাম্মেল হক। এদের মধ্যে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থেকে টেকনোক্র্যাট কোটায় একজন মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী ও সাংগঠনিক সম্পাদক থেকে একজনকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী করা হতে পারে। এর বাইরে থাকা দুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও ডা. দীপু মনির মধ্যে একজনের ঠাঁই হতে পারে নতুন মন্ত্রিসভায়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

নতুন মন্ত্রিসভার শপথ কাল সবার নজর এখন বঙ্গভবনের দিকে

আপলোড টাইম : ১১:২৬:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ জানুয়ারী ২০১৯

সমীকরণ ডেস্ক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর শপথ নিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও জোটের এমপিরা। এবার সবার দৃষ্টি নতুন মন্ত্রিসভার দিকে। এর আকার কেমন হবে, কারা বাদ পড়ছেন, নতুন কারা আসছেন- এসব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সবার মুখে মুখে। সর্বত্রই এ নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। দলমত নির্বিশেষে সবার চোখ পত্রিকা, টেলিভিশন ও অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোর ওপর। পিছিয়ে নেই ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। নবনির্বাচিত এমপিদের মধ্যেও কৌতূহল- কে ডাক পাচ্ছেন আগামীকাল সোমবার বঙ্গভবনে অনুষ্ঠেয় মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে। শুধু তাই নয়, ‘প্রিয় নেতাকে মন্ত্রিসভায় দেখতে চাই’- এমন দাবি নিয়ে ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সভা-সমাবেশ করেছেন নেতাকর্মীরা। তবে এবার নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য একটি মন্ত্রিসভা উপহার দেবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। যিনি টানা তৃতীয় মেয়াদ ও চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে নতুন নজির সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন। সোমবার বিকাল সাড়ে তিনটায় বঙ্গভবনে প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। শপথ অনুষ্ঠানের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ছুটির দিনেও সচিবালয়, গণভবন ও বঙ্গভবনে ছোটাছুটি করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। শনিবার রাত ১০টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নতুন মন্ত্রীদের জন্য সরকারি পরিবহনপুলের ৪০টি গাড়ি প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট সূত্র।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগসহ ক্ষমতাসীন দলের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এবার মন্ত্রিসভার কলেবর কমছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। নতুন মন্ত্রিসভার সদস্য ব্যক্তিদের নাম, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, অবস্থান তালিকাবদ্ধ করা হচ্ছে। তালিকায় স্থান পাওয়া মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের শপথ অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ জানাতে আজ বিকাল থেকে টেলিফোন করা শুরু করবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এক্ষেত্রে ঢাকার বাইরে অবস্থানকারীদের আগে ফোন দেয়া হবে। সোমবার সকালেও অনেকে টেলিফোন পাবেন। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যেই মন্ত্রিসভায় স্থান দিতে দক্ষ, যোগ্য, কর্মঠ ও ত্যাগী নেতাদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রস্তুত করেছেন। এই তালিকায় চমকে দেয়ার মতো কিছু নাম আছে। আছেন প্রবাসীরাও। এমপি নন এমন বেশ কয়েক নেতাও আছেন। আছেন ব্যবসায়ী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বও। এছাড়া তৃণমূলের দু’জন নেতার নাম আছে এই তালিকায়। একঝাঁক তরুণকে স্থান দিতে বর্তমান মন্ত্রিসভার অনেক সদস্যকে বাদের তালিকায় রাখা হয়েছে। সূত্র আরও জানায়, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী যারা দলে প্রভাবশালী ও কেন্দ্রে যোগাযোগ আছে তাদের সবাই মন্ত্রী হতে চায়। যাদের এমপি হওয়া নিয়েই দুশ্চিন্তায় ছিল দল, সেসব এমপিও নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী হতে চান। এ লক্ষ্যে তারা দৌড়ঝাঁপ করছেন দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে। আওয়ামী ভাবাপন্ন ব্যবসায়ী, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, আইনজীবীরাও আছেন এই দৌড়ে। মুখিয়ে আছেন সেই কাঙ্ক্ষিত টেলিফোন পেতে। সংসদ সদস্যদের বাইরে টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রিত্ব পেতেও অনেকে অপেক্ষায় আছেন। শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও সকাল থেকেই খোলা ছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এদিন সকালে সচিবালয়ে নিজ দফতরে এসেছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। এছাড়া এ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ের সচিবরাও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এসেছিলেন। তারা নতুন মন্ত্রীদের শপথ গ্রহণের ফাইল তৈরির কাজসহ আনুষঙ্গিক কাজগুলো সম্পন্ন করেছেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব শফিউল আজিম বলেন, ‘সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টায় নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেবে বলে আশা করছি। এই অনুষ্ঠানটি পরিচালনার দায়িত্ব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের। তাই এ সংশ্লিষ্ট কাজগুলো গুছিয়ে রাখার জন্যই আজ সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও আমরা কাজ করেছি।’ সূত্র জানায়, শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব নাজমুল হক সিদ্দিকীর নেতৃত্বে একটি টিম বঙ্গভবনে যায়। বঙ্গভবনের দরবার হলে আয়োজিত নতুন মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজনের ব্যবস্থাপনার তদারকি করতেই তারা বঙ্গভবনে গেছেন বলে শোনা গেছে। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে সরকার গঠনের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর আগে সেদিন সকালে শেখ হাসিনা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন। এরপর আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে তাকে সংসদ নেতা নির্বাচিত করা হয়। এদিকে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে, নতুন মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়ছেন বিতর্কিত, অদক্ষ ও বয়সের ভারে ন্যুব্জ বেশ কয়েকজন বর্তমান মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী। আর মন্ত্রিসভায় স্থান পেতে যাচ্ছেন কয়েকজন নতুন মুখ ও সাবেক মন্ত্রী। থাকছে টেকনোক্র্যাট কোটায় তিন থেকে চারজন। বড় বড় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন, আইসিটিতে বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলানো ও ডিজিটাল খাতে বাংলাদেশকে বিশ্বের ‘রোল মডেল’ হিসেবে পরিচিত করতে নতুনদের এগিয়ে রাখছে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সব মিলিয়ে এবারের মন্ত্রিসভায় প্রকৃত অর্থেই বড় ধরনের চমক থাকছে বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন দলের একাধিক নীতিনির্ধারক।
আওয়ামী লীগের আরেকটি সূত্র জানায়, মেধা ও দক্ষতার সংমিশ্রণে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করতে চান আওয়ামী লীগ সভাপতি। সে লক্ষ্যে মন্ত্রিপরিষদে এবার নতুন যুক্ত হচ্ছেন- যারা সৎ, সাহসী, দক্ষ ও পরীক্ষিত। শিক্ষিত তরুণ ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির, কোথাও কোনো বদনাম নেই- এমন এমপিদের মধ্য থেকে মন্ত্রিসভায় স্থান দেয়া হচ্ছে। নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শুক্রবার বলেন, ‘নতুন মন্ত্রিসভায় বিশাল একটা চমক আসবে। বিশাল বিজয়ের সঙ্গে বিশাল প্রত্যাশা। জনগণেরও এখানে একটা প্রত্যাশা রয়েছে। সেই প্রত্যাশার প্রতিধ্বনি তো করতে পারেন একজনই (শেখ হাসিনা)। কেবিনেটের বিষয়টা সম্পূর্ণ তার বিষয়। এটা প্রধানমন্ত্রীর এরিয়া, এখানে অন্য কারও প্রবেশের সুযোগ নেই। ওবায়দুল কাদের বলেন, নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে আওয়ামী লীগের পথচলা। তবে বিশাল জয়ের সঙ্গে বিশাল চমকও থাকতে পারে। ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৮ আসনের মধ্যে ২৫৭টিতে জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। জোটগতভাবে তারা পেয়েছে ২৮৮ আসন। অন্যদিকে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি ও তাদের জোটসঙ্গীরা সব মিলিয়ে মাত্র সাতটি আসন পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা টানা তৃতীয় মেয়াদে ও চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন। ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তিনি। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জিতে ১২ জানুয়ারি তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তিনি।
সূত্র জানায়, বর্তমান মন্ত্রিসভার অনেকেই বাদের তালিকায় আছেন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন অনেক আগেই। নতুন করে মন্ত্রিসভায় থাকার ইচ্ছা আমলে নিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। এছাড়া বাদের তালিকায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ের নাম শোনা যাচ্ছে। এই তিনজন একাদশ সংসদ নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন পাননি। বাদের তালিকায় আরও আছেন বর্তমান মন্ত্রিসভায় জাতীয় পার্টির তিনজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী। তারা হলেন- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু। পরিপূর্ণ বিরোধী দল হিসেবে সংসদে ভূমিকা রাখার অঙ্গীকারে মন্ত্রিসভায় না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। আগেই বাদ পড়েছেন চার টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী মতিউর রহমান, মোস্তাফা জব্বার, ইয়াফেস ওসমান ও নুরুল ইসলাম বিএসসি। এছাড়া বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী মুহা. ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বাদ পড়তে পারেন। ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী একেএম শাহজাহান কামাল, তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী আছেন বাদ পড়ার তালিকায়। এছাড়া বর্তমান মন্ত্রিসভার কয়েকজন প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রীর পদোন্নতি হতে পারে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব।
পুরনোদের মধ্যে নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পেতে যাচ্ছেন- শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, পানিসম্পদমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, ধর্মমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, অর্থ এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। তবে এসব মন্ত্রীর অনেকেরই মন্ত্রণালয় পরিবর্তনের আভাস পাওয়া গেছে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা যায়, নতুন মুখ হিসেবে মন্ত্রিসভায় যাদের স্থান পাওয়ার সম্ভাবনা আছে, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ছোট ভাই একে আবদুল মোমেন, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শ ম রেজাউল করিম, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. আবদুল আজিজ, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ এবং সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আকবর হোসেন পাঠান ওরফে নায়ক ফারুক। নতুন মুখ হিসেবে আরও যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ, গোলাম দস্তগীর গাজী, নূর ই আলম চৌধুরী লিটন, দীপংকর তালুকদার, জাহিদ আহসান রাসেল, র আ ম উবায়দুল মোক্তাদীর চৌধুরী, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের ছেলে নাজমুল হাসান পাপন, ডা. হাবিবে মিল্লাত, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম রহমতুল্লাহ, জাতীয় নেতা তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা সিমিন হোসেন রিমি এবং জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ। টেকনোক্রেট কোটায় অর্থনীতিবিদ ড. ফরাসউদ্দিন এবং আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীকে মন্ত্রিসভায় স্থান দেয়া হতে পারে। এছাড়া মন্ত্রী হওয়ার তালিকায় আছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য- সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক- জাহাঙ্গীর কবীর নানক ও আবদুর রহমান এবং সাংগঠনিক সম্পাদক- আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও বিএম মোজাম্মেল হক। এদের মধ্যে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থেকে টেকনোক্র্যাট কোটায় একজন মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী ও সাংগঠনিক সম্পাদক থেকে একজনকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী করা হতে পারে। এর বাইরে থাকা দুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও ডা. দীপু মনির মধ্যে একজনের ঠাঁই হতে পারে নতুন মন্ত্রিসভায়।