ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নতুন উত্তাপে এশিয়া কাপ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:০৩:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  • / ৭১৬ বার পড়া হয়েছে

স্পোর্টস ডেস্ক: কয়েক ঘণ্টা বাদেই পর্দা উঠবে এশিয়া কাপের ১৪তম আসরের। এশিয়ার বিশ্বকাপ কিংবা মিনি বিশ্বকাপ যেটাই বলা হোক না কেন, বিশ্বকাপের পর এশিয়া মহাদেশের জন্য এটি ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সময় যত গড়িয়েছে ততই এশিয়া কাপের উন্মাদনা দিন দিন বেড়েছে। দেখতে দেখতে ৩৬ বছর পার হয়েছে এশিয়া কাপের। আয়োজন হয়েছে ১৩টি আসর (এবারের আসর বাদে)। তারমধ্যে ২০১৬ সালের আসরটি হয়েছিল টি-টোয়েন্টি ফরমেটে। বাকি আসরগুলো ওয়ানডে ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এশিয়া ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) নিয়ম অনুযায়ী বিশ্বকাপকে সামনে রেখে এশিয়া কাপের ফরম্যাট পরিবর্তন করা হবে। ২০১৯ ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ওয়ানডে বিশ্বকাপকে সামনে রেখে এবারের এশিয়া কাপকে ওয়ানডে ফরম্যাটে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এসিসি। এশিয়া কাপের সবচেয়ে সফল দলটির নাম ভারত। এখন পর্যন্ত ছয়বার এশিয়া কাপ শিরোপা জিতেছে এশিয়ার পরাশক্তিরা। তার পরের দলটি শ্রীলঙ্কা। এশিয়া কাপের পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয় সফল দল লঙ্কানরা। তবে এইসব সমীকরণ যে খেলার মাঠে খুব বেশি কাজে আসে না তা গত দুই-তিনটি আসরে দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব।
এবারের এশিয়া কাপে অংশ নেওয়া ছয়টি দল হলো : বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও নবাগত হংকং। তবে স্বাগতিক দল হয়েও দর্শকদের কাতারে থাকতে হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে। এবারের এশিয়া কাপ টুর্নামেন্টে দুইটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। ‘এ’ গ্রুপে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান ও হংকং। আর ‘বি’ গ্রুপে রয়েছে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান।
এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে কে ফেভারিট? এই প্রশ্নের উত্তর এখনই বলা মুশকিল। তবে, ভারত ও পাকিস্তানকে ফেভারিট হিসেবে এগিয়ে রাখবে ক্রিকেটবোদ্ধারা। আসন্ন বিশ্বকাপের জন্য ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে বিশ্রামে রেখেছে ভারত ক্রিকেট বোর্ড। কোহলিবিহীন ভারতকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। কোহলির পরিবর্তে ভারতে অধিনায়কের দায়িত্বে থাকবেন ব্যাটিং সেনসেশন রোহিত শর্মা। এ ছাড়া ভারতের লাইনআপে রয়েছে শিখর ধাওয়ান, মাহেন্দ্র সিং ধোনির মতো দুর্দান্ত ও ভয়ঙ্কর ব্যাটসম্যানরা। যারা যেকোনো বোলিং লাইনআপকে গুঁড়িয়ে দিতে পারে নিজেদের দিনে। অপরদিকে, আরব আমিরাতকে পাকিস্তানের ঘরের মাঠও বলা হয়। আরব আমিরাতে পাকিস্তানের অনেক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। পিসিএলও আয়োজিত হয়েছিল আমিরাতে। সুতরাং ফেভারিটের তালিকায় রয়েছে পাকিস্তানও। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জয়ী পাকদের শক্তি বিশ্বের সেরা বোলিং লাইনআপ। হাসান আলি, মোহাম্মদ আমির, জুনায়েদ খান, ফাহিম আশরাফ, উসমান খান এবং অভিষিক্ত শাহীন আফ্রিদির মতো বিধংসী বোলার রয়েছে পাকিস্তানে।
তবে, সদ্য শেষ হওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে বাংলাদেশের পারফরমেন্স বিবেচনা করলে টাইগারদেরও হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। বাংলাদেশের পাঁচ স্তম্ভ মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদদের চলতি ফর্ম আশা দেখাচ্ছে কোটি ক্রিকেটভক্তদের। তাদের সঙ্গে তরুণরাও যদি তাদের সামর্থ্য প্রমাণ করতে পারে তাহলে যেকোনো দলকে হারাতে পারে টাইগাররা। তা ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজেও প্রমাণ করেছে মাশরাফি বাহিনী। বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই এশিয়া কাপের দ্বিতীয় সফল দল শ্রীলঙ্কাকেও। কিন্তু ডিনেশ চান্দিমাল ও গুনাথিলাকার দলে না থাকা চন্ডিকা হাথুরুসিংহের দলকে ভোগাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে, লাসিথ মালিঙ্গার দলে অন্তর্ভুক্তি লঙ্কানদের কিছুটা হলেও এগিয়ে রাখবে। আফগানিস্তান দলেও কয়েকজন প্রতিভাবান ক্রিকেটার রয়েছে। আক্রমণাত্মক ব্যাটিং ও স্পিন বোলিংয়ে ভালোই দক্ষ আফগান যোদ্ধারা। বিশেষ করে রশিদ খানের মতো বিশ্বমানের লেগ স্পিনার। তাদের দিনে যে কাউকে হারাতে পারে আফগানরা। আর বাছাই পর্ব খেলে আসা হংকং রয়েছে ‘এ’ গ্রুপে। তাদের প্রতিপক্ষ ভারত-পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী দল। তবে, অঘটনের জন্ম দিতে মুখিয়ে থাকবে সদ্য ওয়ানডে মর্যাদা পাওয়া দলটি। এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বে মুকুট কার মাথায় উঠবে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে ক্রিকেটপ্রেমীদের অপেক্ষা করতে হবে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

নতুন উত্তাপে এশিয়া কাপ

আপলোড টাইম : ০৯:০৩:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

স্পোর্টস ডেস্ক: কয়েক ঘণ্টা বাদেই পর্দা উঠবে এশিয়া কাপের ১৪তম আসরের। এশিয়ার বিশ্বকাপ কিংবা মিনি বিশ্বকাপ যেটাই বলা হোক না কেন, বিশ্বকাপের পর এশিয়া মহাদেশের জন্য এটি ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সময় যত গড়িয়েছে ততই এশিয়া কাপের উন্মাদনা দিন দিন বেড়েছে। দেখতে দেখতে ৩৬ বছর পার হয়েছে এশিয়া কাপের। আয়োজন হয়েছে ১৩টি আসর (এবারের আসর বাদে)। তারমধ্যে ২০১৬ সালের আসরটি হয়েছিল টি-টোয়েন্টি ফরমেটে। বাকি আসরগুলো ওয়ানডে ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এশিয়া ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) নিয়ম অনুযায়ী বিশ্বকাপকে সামনে রেখে এশিয়া কাপের ফরম্যাট পরিবর্তন করা হবে। ২০১৯ ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ওয়ানডে বিশ্বকাপকে সামনে রেখে এবারের এশিয়া কাপকে ওয়ানডে ফরম্যাটে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এসিসি। এশিয়া কাপের সবচেয়ে সফল দলটির নাম ভারত। এখন পর্যন্ত ছয়বার এশিয়া কাপ শিরোপা জিতেছে এশিয়ার পরাশক্তিরা। তার পরের দলটি শ্রীলঙ্কা। এশিয়া কাপের পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয় সফল দল লঙ্কানরা। তবে এইসব সমীকরণ যে খেলার মাঠে খুব বেশি কাজে আসে না তা গত দুই-তিনটি আসরে দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব।
এবারের এশিয়া কাপে অংশ নেওয়া ছয়টি দল হলো : বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও নবাগত হংকং। তবে স্বাগতিক দল হয়েও দর্শকদের কাতারে থাকতে হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে। এবারের এশিয়া কাপ টুর্নামেন্টে দুইটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। ‘এ’ গ্রুপে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান ও হংকং। আর ‘বি’ গ্রুপে রয়েছে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান।
এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে কে ফেভারিট? এই প্রশ্নের উত্তর এখনই বলা মুশকিল। তবে, ভারত ও পাকিস্তানকে ফেভারিট হিসেবে এগিয়ে রাখবে ক্রিকেটবোদ্ধারা। আসন্ন বিশ্বকাপের জন্য ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে বিশ্রামে রেখেছে ভারত ক্রিকেট বোর্ড। কোহলিবিহীন ভারতকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। কোহলির পরিবর্তে ভারতে অধিনায়কের দায়িত্বে থাকবেন ব্যাটিং সেনসেশন রোহিত শর্মা। এ ছাড়া ভারতের লাইনআপে রয়েছে শিখর ধাওয়ান, মাহেন্দ্র সিং ধোনির মতো দুর্দান্ত ও ভয়ঙ্কর ব্যাটসম্যানরা। যারা যেকোনো বোলিং লাইনআপকে গুঁড়িয়ে দিতে পারে নিজেদের দিনে। অপরদিকে, আরব আমিরাতকে পাকিস্তানের ঘরের মাঠও বলা হয়। আরব আমিরাতে পাকিস্তানের অনেক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। পিসিএলও আয়োজিত হয়েছিল আমিরাতে। সুতরাং ফেভারিটের তালিকায় রয়েছে পাকিস্তানও। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জয়ী পাকদের শক্তি বিশ্বের সেরা বোলিং লাইনআপ। হাসান আলি, মোহাম্মদ আমির, জুনায়েদ খান, ফাহিম আশরাফ, উসমান খান এবং অভিষিক্ত শাহীন আফ্রিদির মতো বিধংসী বোলার রয়েছে পাকিস্তানে।
তবে, সদ্য শেষ হওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে বাংলাদেশের পারফরমেন্স বিবেচনা করলে টাইগারদেরও হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। বাংলাদেশের পাঁচ স্তম্ভ মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদদের চলতি ফর্ম আশা দেখাচ্ছে কোটি ক্রিকেটভক্তদের। তাদের সঙ্গে তরুণরাও যদি তাদের সামর্থ্য প্রমাণ করতে পারে তাহলে যেকোনো দলকে হারাতে পারে টাইগাররা। তা ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজেও প্রমাণ করেছে মাশরাফি বাহিনী। বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই এশিয়া কাপের দ্বিতীয় সফল দল শ্রীলঙ্কাকেও। কিন্তু ডিনেশ চান্দিমাল ও গুনাথিলাকার দলে না থাকা চন্ডিকা হাথুরুসিংহের দলকে ভোগাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে, লাসিথ মালিঙ্গার দলে অন্তর্ভুক্তি লঙ্কানদের কিছুটা হলেও এগিয়ে রাখবে। আফগানিস্তান দলেও কয়েকজন প্রতিভাবান ক্রিকেটার রয়েছে। আক্রমণাত্মক ব্যাটিং ও স্পিন বোলিংয়ে ভালোই দক্ষ আফগান যোদ্ধারা। বিশেষ করে রশিদ খানের মতো বিশ্বমানের লেগ স্পিনার। তাদের দিনে যে কাউকে হারাতে পারে আফগানরা। আর বাছাই পর্ব খেলে আসা হংকং রয়েছে ‘এ’ গ্রুপে। তাদের প্রতিপক্ষ ভারত-পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী দল। তবে, অঘটনের জন্ম দিতে মুখিয়ে থাকবে সদ্য ওয়ানডে মর্যাদা পাওয়া দলটি। এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বে মুকুট কার মাথায় উঠবে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে ক্রিকেটপ্রেমীদের অপেক্ষা করতে হবে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।