ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার শঙ্কা!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:০৯:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুন ২০২০
  • / ১৬৩ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহে সরকারি মূল্য থেকে বাজারে ধানের দাম বেশি পাচ্ছেন কৃষকেরা
প্রতিবেদক, ঝিনাইদহ:
ঝিনাইদহে অভ্যন্তরীন বোরো ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না। সরকারি মূল্য থেকে বর্তমান বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় এবারের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শেখ আনোয়ারুল কবির জানান, এ বছর জেলার ৬ উপজেলা থেকে ১৪ হাজার ১৪২ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এখন পর্যন্ত মাত্র ১২১ টন ধান সংগ্রহ হয়েছে। কার্ডধারী, অ্যাপসের মাধ্যমে নির্বাচিত কৃষক এবার ধান দিচ্ছে না। যার মূল কারণ হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকেরা খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করছেন না। আমন ধান বিক্রয়ের মৌসুমে ঝিনাইদহ জেলায় ধান ক্রয় সিন্ডিকেট ২৫০০ থেকে ৫০০০ টাকায় কৃষকের কাছ থেকে কার্ড নিয়ে বাজার থেকে সস্তায় ধান কিনে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। খাদ্যগুদামের কয়েকজন কর্মচারী এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে খাদ্যগুদামেরই এক কর্তা জানান। এ বছরও সিন্ডিকেটের টার্গেট ছিল। কিন্তু সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় খাদ্যগুদামে ধান দিচ্ছেন না কৃষকেরা। গত মৌসুমে মোটেও চাষ নেই, এমন অনেকের নামে লটারি বাধে। অথচ বড় মাপের চাষি হয়েও লটারি না বাধায় ধান বিক্রয় করতে পারেননি অনেকেই।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক মাস আগে বোরো ধান ঘরে তুলেছেন তাঁরা। ভরা মৌসুমেও প্রকারভেদে ধানের দাম ১ হাজার থেকে ১২ শ টাকা বিক্রি হয়েছে। বর্তমান বিভিন্ন হাটবাজারে একই দামে ধান বিক্রি হচ্ছে। এবার সরকারি সংগ্রহ মূল্য ধার্য করা করা হয়েছে প্রতি কেজি ২৬ টাকা। অর্থাৎ প্রতি মণ ১ হাজার ৪০ টাকা। যে কারণে তাঁরা ধান দিতে অনীহা প্রকাশ করছেন।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হাটগোপালপুরের কৃষক নাজির উদ্দিন বলেন, সরকারি খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করলে পাব ১ হাজার ৪০ টাকা। সেখানে গেলেও ধান ভিজা আছে, চিটা আছেসহ নানা ঝামেলায় পড়তে হয়। এখন বাজারে ধানের দাম বেশি বলে ধান বিক্রি করে দিয়েছি।
শৈলকুপার খন্দকবাড়ীয়া গ্রামের কৃষক নবিদুল ইসলাম বলেন, ‘অন্যান্য বছর ধানের দাম কম হওয়ার কারণে আমরা ধান বিক্রি করতে গেলে দালাল চক্র আমাদের ধান বিক্রি করতে দিত না। তাই এবার ধানের দাম বেশি হওয়ার কারণে আমরা ধান দিচ্ছি না।’
জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বলেন, অভ্যন্তরীন বোরো ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না এটা ঠিক। তবে ধান সংগ্রহের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্যে কৃষকের ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা। কৃষক ধানের দাম ভালো পেয়েছে এটাই ভালো।
এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস জানান, চলতি বছর এ জেলায় ৭৭ হাজার ৫৩৫ হেক্টরে বোরো চাষ হয়েছে। আর ধান উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ টন। আর দাম ভালো পাওয়ায় আগামীতে ধান চাষে তাঁরা আগ্রহী হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার শঙ্কা!

আপলোড টাইম : ১০:০৯:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুন ২০২০

ঝিনাইদহে সরকারি মূল্য থেকে বাজারে ধানের দাম বেশি পাচ্ছেন কৃষকেরা
প্রতিবেদক, ঝিনাইদহ:
ঝিনাইদহে অভ্যন্তরীন বোরো ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না। সরকারি মূল্য থেকে বর্তমান বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় এবারের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শেখ আনোয়ারুল কবির জানান, এ বছর জেলার ৬ উপজেলা থেকে ১৪ হাজার ১৪২ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এখন পর্যন্ত মাত্র ১২১ টন ধান সংগ্রহ হয়েছে। কার্ডধারী, অ্যাপসের মাধ্যমে নির্বাচিত কৃষক এবার ধান দিচ্ছে না। যার মূল কারণ হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকেরা খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করছেন না। আমন ধান বিক্রয়ের মৌসুমে ঝিনাইদহ জেলায় ধান ক্রয় সিন্ডিকেট ২৫০০ থেকে ৫০০০ টাকায় কৃষকের কাছ থেকে কার্ড নিয়ে বাজার থেকে সস্তায় ধান কিনে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। খাদ্যগুদামের কয়েকজন কর্মচারী এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে খাদ্যগুদামেরই এক কর্তা জানান। এ বছরও সিন্ডিকেটের টার্গেট ছিল। কিন্তু সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় খাদ্যগুদামে ধান দিচ্ছেন না কৃষকেরা। গত মৌসুমে মোটেও চাষ নেই, এমন অনেকের নামে লটারি বাধে। অথচ বড় মাপের চাষি হয়েও লটারি না বাধায় ধান বিক্রয় করতে পারেননি অনেকেই।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক মাস আগে বোরো ধান ঘরে তুলেছেন তাঁরা। ভরা মৌসুমেও প্রকারভেদে ধানের দাম ১ হাজার থেকে ১২ শ টাকা বিক্রি হয়েছে। বর্তমান বিভিন্ন হাটবাজারে একই দামে ধান বিক্রি হচ্ছে। এবার সরকারি সংগ্রহ মূল্য ধার্য করা করা হয়েছে প্রতি কেজি ২৬ টাকা। অর্থাৎ প্রতি মণ ১ হাজার ৪০ টাকা। যে কারণে তাঁরা ধান দিতে অনীহা প্রকাশ করছেন।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হাটগোপালপুরের কৃষক নাজির উদ্দিন বলেন, সরকারি খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করলে পাব ১ হাজার ৪০ টাকা। সেখানে গেলেও ধান ভিজা আছে, চিটা আছেসহ নানা ঝামেলায় পড়তে হয়। এখন বাজারে ধানের দাম বেশি বলে ধান বিক্রি করে দিয়েছি।
শৈলকুপার খন্দকবাড়ীয়া গ্রামের কৃষক নবিদুল ইসলাম বলেন, ‘অন্যান্য বছর ধানের দাম কম হওয়ার কারণে আমরা ধান বিক্রি করতে গেলে দালাল চক্র আমাদের ধান বিক্রি করতে দিত না। তাই এবার ধানের দাম বেশি হওয়ার কারণে আমরা ধান দিচ্ছি না।’
জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বলেন, অভ্যন্তরীন বোরো ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না এটা ঠিক। তবে ধান সংগ্রহের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্যে কৃষকের ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা। কৃষক ধানের দাম ভালো পেয়েছে এটাই ভালো।
এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস জানান, চলতি বছর এ জেলায় ৭৭ হাজার ৫৩৫ হেক্টরে বোরো চাষ হয়েছে। আর ধান উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ টন। আর দাম ভালো পাওয়ায় আগামীতে ধান চাষে তাঁরা আগ্রহী হবে।