ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

দু’গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা : পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫৫:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ মে ২০১৯
  • / ২৭৯ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গায় মার্কায মসজিদে তাবলীগ জামায়াতের যুবায়ের-সাদ পন্থীদের
নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রথম রোজাতে চুয়াডাঙ্গা দৌলতদিয়াড় মার্কায মসজিদে যোহরের নামাজ পড়তে যাওয়াকে কেন্দ্র করে তাবলীগ জামায়াতের দু’গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। একপর্যায়ে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে যুবায়ের পন্থীরা মার্কায়ে অবস্থান করলেও সাদ পন্থীরা বড় বাজার থানা মসজিদে যোহরের নামাজ আদায় করেন। নামাজের পর উভয় পক্ষকে ডেকে পরিস্থিতি শান্ত রাখার নির্দেশ দেন সদর থানার ওসি আবু জিহাদ খাঁন। গতকাল মঙ্গলবার সাদ পন্থীরা দৌলতদিয়াড় মার্কায মসজিদে প্রথম রোজার যোহরের নামাজ আদায়সহ তাবলিগ জামায়াতের সাথীদের নিয়ে একত্রে আলাপ আলোচনা করতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, গত বছর ডিসেম্বরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দান থেকে তাবলীগ জামায়াত দু’টি গ্রুপে ভাগ হয়ে যায়। ধর্মীয় কিছু মতাদর্শ নিয়ে এই বিভেদ সৃষ্টি হয়। একটি গ্রুপ অনুসরণ করে তাবলীগ জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা ভারতের মাওলানা সাদ কান্দালভীকে। অপর আর একটি গ্রুপ অনুসরণ করে তাবালীগ জামায়াত বাংলাদেশের বিশিষ্ট মুরব্বী কাকরাইল মার্কাযের প্রবীণ শুরা সদস্য হাফেজ মাওলানা যুবায়েরকে। আর এই দুটি গ্রুপের দ্বন্দ্ব এখন জেলায় জেলায়।
গতকাল চুয়াডাঙ্গা দৌলতদিয়াড় মার্কায মসজিদে সাদ পন্থীরা প্রথম রোজার যোহরের নামাজ আদায়সহ তাবলীগ জামায়াতের সাথীদের নিয়ে একত্রে আলাপ আলোচনা করতে গেলে, মার্কাযে অবস্থান করা যুবায়েরপন্থীরা মার্কাযের মেইন সড়কে অবস্থান নেয়। এসময় তারা সাদ পন্থীদের ভিতরে প্রবেশ করতে বাধা প্রদান করাসহ বিভিন্ন প্রকার উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করে। এসময় সড়কের ধারে অবস্থান করা সাদ পন্থীরা অভিযোগ করে বলেন, মার্কাযে তারা ইবাদত করবে আমাদের করতে দেবেনা। তারা তাবলীগি কার্যক্রম করবে, আমাদের করতে দেবে না। যার কারণে তারা মার্কাযে প্রবেশ করতে বাধা প্রদান করছে। বেশ কিছু সময় ধরে উভয়পক্ষ উত্তেজিত হলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি শান্ত করেন। এসময় পুলিশের নির্দেশমত সাদ পন্থী তাবলীগ জামায়াতের সাথীরা বড় বাজার থানা মসজিদে যোহরের নামাজ আদায় করেন। পরে নামাজ শেষ হলে তাবলীগ জামায়াতের উভয়পক্ষকে থানায় ডেকে নিয়ে পরিস্থিতি শান্ত রাখাসহ নিজেদেরকেও শান্ত থাকার নির্দেশ দেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আবু জিহাদ ফকরুল আলম খাঁন। তাছাড়া আগামী এক সপ্তাহ’র মধ্যে তাবলীগ জামায়াতের উভয়পক্ষকে নিয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হবে বলে জানান ওসি জিহাদ।
এ বিষয়ে তাবলীগ জামায়াতের সাদ পন্থীদের একজনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী গতকাল প্রথম রোজার দিন যোহরের সময় জেলা মার্কায মসজিদে নামাজ আদায়সহ আলাপ আলোচনা করার কথা ছিলো তাদের। সে হিসেবে সাদ পন্থী চুয়াডাঙ্গা জেলার ৪ থানার তাবলীগের সদস্যদের নিয়ে গতকাল যোহরের আগে তারা দৌলতদিয়াড় মার্কায মসজিদের সামনে উপস্থিত হয়। এসময় মার্কায এ অবস্থান করা যুবায়ের পন্থীরা তাদের ভিতরে প্রবেশ করতে বাধা প্রদানকরাসহ বিভিন্ন উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলতে থাকে। পরে পুলিশের কথামত তারা বড় বাজার থানা মসজিদে নামাজ আদায় করে।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা তাবলীগ জামায়াতের আমীর আইনুল ইসলাম বলেন, ইবাদত এক জিনিস আর তাবলীগি কার্যক্রম আলাদা জিনিস। একই স্থানে দু’গ্রুপ তাবলীগি কার্যক্রম করলে ফ্যাসাদ হবে। উনারা আলাদা কাজ করছেন, উনাদের সিস্টেমই আলাদা।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি আবু জিহাদ ফকরুল আলম খাঁন জানান, প্রথম রোজার দিন তাবলীগ জামায়াতের সাদ পন্থীরা যোহরের নামাজ আদায় করার জন্য দৌলতদিয়ার মার্কাযের সামনে উপস্থিত হলে অপর পক্ষ বাধা দেয়। উত্তেজিত পরিস্থিতিতে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে উভয়পক্ষকে সরিয়ে দেয়। পরে নামাজ শেষে থানাতে ডেকে উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার নির্দেশ দেন। এসময় তিনি আরো বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের দু’গ্রুপকে নিয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে বসে সমাধান করা হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

দু’গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা : পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ

আপলোড টাইম : ০৯:৫৫:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ মে ২০১৯

চুয়াডাঙ্গায় মার্কায মসজিদে তাবলীগ জামায়াতের যুবায়ের-সাদ পন্থীদের
নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রথম রোজাতে চুয়াডাঙ্গা দৌলতদিয়াড় মার্কায মসজিদে যোহরের নামাজ পড়তে যাওয়াকে কেন্দ্র করে তাবলীগ জামায়াতের দু’গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। একপর্যায়ে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে যুবায়ের পন্থীরা মার্কায়ে অবস্থান করলেও সাদ পন্থীরা বড় বাজার থানা মসজিদে যোহরের নামাজ আদায় করেন। নামাজের পর উভয় পক্ষকে ডেকে পরিস্থিতি শান্ত রাখার নির্দেশ দেন সদর থানার ওসি আবু জিহাদ খাঁন। গতকাল মঙ্গলবার সাদ পন্থীরা দৌলতদিয়াড় মার্কায মসজিদে প্রথম রোজার যোহরের নামাজ আদায়সহ তাবলিগ জামায়াতের সাথীদের নিয়ে একত্রে আলাপ আলোচনা করতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, গত বছর ডিসেম্বরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দান থেকে তাবলীগ জামায়াত দু’টি গ্রুপে ভাগ হয়ে যায়। ধর্মীয় কিছু মতাদর্শ নিয়ে এই বিভেদ সৃষ্টি হয়। একটি গ্রুপ অনুসরণ করে তাবলীগ জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা ভারতের মাওলানা সাদ কান্দালভীকে। অপর আর একটি গ্রুপ অনুসরণ করে তাবালীগ জামায়াত বাংলাদেশের বিশিষ্ট মুরব্বী কাকরাইল মার্কাযের প্রবীণ শুরা সদস্য হাফেজ মাওলানা যুবায়েরকে। আর এই দুটি গ্রুপের দ্বন্দ্ব এখন জেলায় জেলায়।
গতকাল চুয়াডাঙ্গা দৌলতদিয়াড় মার্কায মসজিদে সাদ পন্থীরা প্রথম রোজার যোহরের নামাজ আদায়সহ তাবলীগ জামায়াতের সাথীদের নিয়ে একত্রে আলাপ আলোচনা করতে গেলে, মার্কাযে অবস্থান করা যুবায়েরপন্থীরা মার্কাযের মেইন সড়কে অবস্থান নেয়। এসময় তারা সাদ পন্থীদের ভিতরে প্রবেশ করতে বাধা প্রদান করাসহ বিভিন্ন প্রকার উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করে। এসময় সড়কের ধারে অবস্থান করা সাদ পন্থীরা অভিযোগ করে বলেন, মার্কাযে তারা ইবাদত করবে আমাদের করতে দেবেনা। তারা তাবলীগি কার্যক্রম করবে, আমাদের করতে দেবে না। যার কারণে তারা মার্কাযে প্রবেশ করতে বাধা প্রদান করছে। বেশ কিছু সময় ধরে উভয়পক্ষ উত্তেজিত হলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি শান্ত করেন। এসময় পুলিশের নির্দেশমত সাদ পন্থী তাবলীগ জামায়াতের সাথীরা বড় বাজার থানা মসজিদে যোহরের নামাজ আদায় করেন। পরে নামাজ শেষ হলে তাবলীগ জামায়াতের উভয়পক্ষকে থানায় ডেকে নিয়ে পরিস্থিতি শান্ত রাখাসহ নিজেদেরকেও শান্ত থাকার নির্দেশ দেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আবু জিহাদ ফকরুল আলম খাঁন। তাছাড়া আগামী এক সপ্তাহ’র মধ্যে তাবলীগ জামায়াতের উভয়পক্ষকে নিয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হবে বলে জানান ওসি জিহাদ।
এ বিষয়ে তাবলীগ জামায়াতের সাদ পন্থীদের একজনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী গতকাল প্রথম রোজার দিন যোহরের সময় জেলা মার্কায মসজিদে নামাজ আদায়সহ আলাপ আলোচনা করার কথা ছিলো তাদের। সে হিসেবে সাদ পন্থী চুয়াডাঙ্গা জেলার ৪ থানার তাবলীগের সদস্যদের নিয়ে গতকাল যোহরের আগে তারা দৌলতদিয়াড় মার্কায মসজিদের সামনে উপস্থিত হয়। এসময় মার্কায এ অবস্থান করা যুবায়ের পন্থীরা তাদের ভিতরে প্রবেশ করতে বাধা প্রদানকরাসহ বিভিন্ন উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলতে থাকে। পরে পুলিশের কথামত তারা বড় বাজার থানা মসজিদে নামাজ আদায় করে।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা তাবলীগ জামায়াতের আমীর আইনুল ইসলাম বলেন, ইবাদত এক জিনিস আর তাবলীগি কার্যক্রম আলাদা জিনিস। একই স্থানে দু’গ্রুপ তাবলীগি কার্যক্রম করলে ফ্যাসাদ হবে। উনারা আলাদা কাজ করছেন, উনাদের সিস্টেমই আলাদা।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি আবু জিহাদ ফকরুল আলম খাঁন জানান, প্রথম রোজার দিন তাবলীগ জামায়াতের সাদ পন্থীরা যোহরের নামাজ আদায় করার জন্য দৌলতদিয়ার মার্কাযের সামনে উপস্থিত হলে অপর পক্ষ বাধা দেয়। উত্তেজিত পরিস্থিতিতে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে উভয়পক্ষকে সরিয়ে দেয়। পরে নামাজ শেষে থানাতে ডেকে উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার নির্দেশ দেন। এসময় তিনি আরো বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের দু’গ্রুপকে নিয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে বসে সমাধান করা হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।