ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

দুই ভাইসহ তিনজন জখম, চারজন আটক

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৩:০১:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ এপ্রিল ২০২০
  • / ২৯১ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গায় নবগঙ্গা নদী খননকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংর্ঘষ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গার হায়দারপুরে নবগঙ্গা নদী খননকে কেন্দ্র করে নদী পাড়ের দুই জমির মালিকের মধ্যে বিরোধের জেরে সংর্ঘষে দুই ভাইসহ তিনজন গুরুতর জখম হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে হায়দারপুর বুচেতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পুলিশ গুরুতর জখম অবস্থায় আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। আহত ব্যক্তিরা হলেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পদ্মবিলা ইউনিনের হায়দারপুর গ্রামের উত্তরপাড়ার মৃত শুকুর আলীর দুই ছেলে মধু মালিথা (৪৯), জধু মালিথা (৩৬) ও একই এলাকার মৃত শমসের আলীর ছেলে রেজাউল হক (৪২)। এদের মধ্যে মধু মালিথা ও জধু মালিথার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়াই জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। এদিকে, এ ঘটনায় গতকালই চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন চুয়াডাঙ্গা নুরনগরের রিয়াদ, গুপিনাথপুরের ইনামুল, সাতগাড়ীর সাগর ও তপু। চুয়াডাঙ্গা সদর থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদেরকে অঅটক করে।
জানা যায়, হায়দারপুর বুচেতলা এলাকায় মধ্য দিয়ে বয়ে চলেছে নবগঙ্গা নদী। যার খনন কাজ চলমান রয়েছে। এই এলাকায় নবগঙ্গার এক পাড়ে স্থানীয় শলকের একটি পুকুর ও অপর পাড়ে মধু মালিথা ও জধু মালিথা দুই ভাইয়ের ফসলি জমি রয়েছে। নবগঙ্গা খননের ফলে শলকের পুকুরটি নবগঙ্গার মধ্যে পড়ে যেতে পরে এমন আশঙ্কায় শলক প্রভাব খাটিয়ে খননকাজকে একটু ঘুরিয়ে দিতে চাইলে মধু মালিথা ও জধু মালিথার জমি খননের মধ্যে পড়ার আশঙ্কায় পড়ে। এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এ সংঘর্ষে মধু মালিথা, জধু মালিথা ও একই এলাকার রেজাউল হক গুরুতর জখম হন। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পুলিশের সহায়তায় আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে দ্রুত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাইদুজ্জামান আহতদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রদান করেন এবং মধু মালিথা ও জধু মালিথার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী যুবক ইসরাফিল ইসলাম জানান, শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নবগঙ্গা খননকে কেন্দ্র করে মধু মালিথা ও জধু মালিথার সঙ্গে শলকের বাগবিত-ার সৃষ্টি হয়। এরই এক পর্যায়ে শলকের পক্ষের কয়েকজন ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নবগঙ্গার পাড়ে পৌঁছায় এবং মধু মালিথা ও জধু মালিথার ওপর আক্রমণ করেন। এতে দেশীয় অস্ত্রের কোপে মধু মালিথা, জধু মালিথাসহ রেজাউল হক গুরুতর জখম হন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাইদুজ্জামান বলেন, দুপুর ১২টার দিকে গুরুতর জখম মধু মালিথা ও জধু মালিথাকে জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। তাঁদের দুইজনের শরীরেই দেশীয় ধারালো অস্ত্রের একাধিক জখম ছিল। তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান, ‘হায়দারপুরে নবগঙ্গা পাড়ের জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে তিনজন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে আমি নিজে ঘটনাস্থলে যেয়ে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করি। এ বিষয়ে চারজনকে আটক করা হয়েছে। তবে ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

দুই ভাইসহ তিনজন জখম, চারজন আটক

আপলোড টাইম : ০৩:০১:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ এপ্রিল ২০২০

চুয়াডাঙ্গায় নবগঙ্গা নদী খননকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংর্ঘষ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গার হায়দারপুরে নবগঙ্গা নদী খননকে কেন্দ্র করে নদী পাড়ের দুই জমির মালিকের মধ্যে বিরোধের জেরে সংর্ঘষে দুই ভাইসহ তিনজন গুরুতর জখম হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে হায়দারপুর বুচেতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পুলিশ গুরুতর জখম অবস্থায় আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। আহত ব্যক্তিরা হলেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পদ্মবিলা ইউনিনের হায়দারপুর গ্রামের উত্তরপাড়ার মৃত শুকুর আলীর দুই ছেলে মধু মালিথা (৪৯), জধু মালিথা (৩৬) ও একই এলাকার মৃত শমসের আলীর ছেলে রেজাউল হক (৪২)। এদের মধ্যে মধু মালিথা ও জধু মালিথার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়াই জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। এদিকে, এ ঘটনায় গতকালই চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন চুয়াডাঙ্গা নুরনগরের রিয়াদ, গুপিনাথপুরের ইনামুল, সাতগাড়ীর সাগর ও তপু। চুয়াডাঙ্গা সদর থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদেরকে অঅটক করে।
জানা যায়, হায়দারপুর বুচেতলা এলাকায় মধ্য দিয়ে বয়ে চলেছে নবগঙ্গা নদী। যার খনন কাজ চলমান রয়েছে। এই এলাকায় নবগঙ্গার এক পাড়ে স্থানীয় শলকের একটি পুকুর ও অপর পাড়ে মধু মালিথা ও জধু মালিথা দুই ভাইয়ের ফসলি জমি রয়েছে। নবগঙ্গা খননের ফলে শলকের পুকুরটি নবগঙ্গার মধ্যে পড়ে যেতে পরে এমন আশঙ্কায় শলক প্রভাব খাটিয়ে খননকাজকে একটু ঘুরিয়ে দিতে চাইলে মধু মালিথা ও জধু মালিথার জমি খননের মধ্যে পড়ার আশঙ্কায় পড়ে। এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এ সংঘর্ষে মধু মালিথা, জধু মালিথা ও একই এলাকার রেজাউল হক গুরুতর জখম হন। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পুলিশের সহায়তায় আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে দ্রুত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাইদুজ্জামান আহতদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রদান করেন এবং মধু মালিথা ও জধু মালিথার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী যুবক ইসরাফিল ইসলাম জানান, শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নবগঙ্গা খননকে কেন্দ্র করে মধু মালিথা ও জধু মালিথার সঙ্গে শলকের বাগবিত-ার সৃষ্টি হয়। এরই এক পর্যায়ে শলকের পক্ষের কয়েকজন ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নবগঙ্গার পাড়ে পৌঁছায় এবং মধু মালিথা ও জধু মালিথার ওপর আক্রমণ করেন। এতে দেশীয় অস্ত্রের কোপে মধু মালিথা, জধু মালিথাসহ রেজাউল হক গুরুতর জখম হন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাইদুজ্জামান বলেন, দুপুর ১২টার দিকে গুরুতর জখম মধু মালিথা ও জধু মালিথাকে জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। তাঁদের দুইজনের শরীরেই দেশীয় ধারালো অস্ত্রের একাধিক জখম ছিল। তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান, ‘হায়দারপুরে নবগঙ্গা পাড়ের জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে তিনজন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে আমি নিজে ঘটনাস্থলে যেয়ে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করি। এ বিষয়ে চারজনকে আটক করা হয়েছে। তবে ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’