ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

দিনে নেই সূর্যের দেখা : বৃষ্টির পিছু তীব্র শীত

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:০৭:০২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯
  • / ২১২ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরসহ দেশের মধ্যাঞ্চলে কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশ, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি

সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায়, সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত যশোরে
নিজস্ব প্রতিবেদক:
মেঘলা ও কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশ থেকে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরসহ দেশের মধ্যাঞ্চলে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। এই বৃষ্টি শেষে শীত আরও জেঁকে বসবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আজ শুক্রবারও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। শীত ঋতুতে এই অকাল বর্ষণের পিছু পিছু আসছে তীব্র আকারের শৈত্যপ্রবাহ। আরও জেঁকে বসবে শীত। দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, ঢাকা বিভাগসহ মধ্যাঞ্চলে হাঁড় কাঁপানো প্রচণ্ড শীত ও ঘন কুয়াশা পড়তে পারে আসছে সপ্তাহ থেকেই। এতে করে থমকে যেতে পারে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। জানুয়ারির গোড়াতে তীব্র শৈত্যপ্রবাহে পারদ ৪ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও নিচে নেমে যেতে পারে। বাড়তে পারে কুয়াশার ঘনত্ব।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘন কুয়াশা আর মেঘের সাথে হালকা কিংবা ঝিরি ঝিরি ইলশে গুঁড়ি বৃষ্টিপাতের কারণে অনেক জেলায় জনজীবনে ঘটে ছন্দপতন। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় যশোরে ৫ মিলিমিটার। এ সময় ঢাকা, ফরিদপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগ ও খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরে হালকা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিসহ দেশের কয়েক জায়গায় অস্থায়ী হালকা বৃষ্টি ঝরেছে। গতকাল সকালে দেশের সর্ব-উত্তরের জনপদ তেঁতুলিয়ায় ঘন কুয়াশা ও কনকনে হাওয়ার মধ্যেই পারদ নেমে আসে ৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। যা চলতি শীত মৌসুমে দেশের এ যাবৎ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আগের দিন (বুধবার) তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রার ছিল ৬.২ ডিগ্রি সে.। গতকাল কক্সবাজারে ছিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৬.৮ ডিগ্রি সে.। ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২১.৮ এবং সর্বনিম্ন ১২.৫ ডিগ্রি সে.। চট্টগ্রামে তাপমাত্রা ছিল সর্বোচ্চ ২৬.৬ এবং সর্বনিম্ন ১৩.৫ ডিগ্রি সে.। পৌষের প্রথম দুই-তিন দিন পর থেকেই অব্যাহত ঘন কুয়াশার সঙ্গে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ, সেই সঙ্গে ধুলোবালুর দূষণের কারণে ঘরে ঘরে এখন ঠান্ডাজনিত রোগী। হাসপাতাল-ক্লিনিক-ডাক্তারের চেম্বারেও বেড়েছে রোগীর ভিড়। সর্দি-কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, চর্মরোগসহ হরেক রোগব্যাধিতে অসুস্থ হয়ে পড়ছে অনেকেই।
এদিকে, আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, খুলনা, বরিশাল, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় হালকা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে সারা দেশে ৪৮ লাখ ৫২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের শৈত্যপ্রবাহে বীজতলা রক্ষার্থে পরামর্শ দিচ্ছেন। কৃষি কর্মকর্তারা জানান, শৈত্যপ্রবাহের সময় বীজতলা স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢেকে দেওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে কৃষকদের। শৈত্যপ্রবাহে মাঠে মাঠে কৃষিকাজকর্মের গতি অনেকটা কমে গেছে। সবজি, ফুল ও অন্যান্য কৃষিকাজে কৃষকদের মাঠে উপস্থিতি ঘটছে কম।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বর্তমানে আকাশ মেঘলা রয়েছে। এ কারণে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়বে। তবে বৃষ্টি শেষে শুক্রবার রাত থেকে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণের প্রভাবে এমনিতেই সারা দিনে দেখা মেলেনি সূর্যের। রাতভর ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাসে শীতের প্রকোপ বেড়েছে বলে জানান তারা। এদিকে, এই হাড়-কাঁপানো শীতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন-আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। মৃদু শৈত্য প্রবাহে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহে আকাশে মেঘ ছিল বলে তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছিল। আকাশে মেঘ থাকলে তাপমাত্রা সাধারণত কিছুটা বৃদ্ধি পায়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

দিনে নেই সূর্যের দেখা : বৃষ্টির পিছু তীব্র শীত

আপলোড টাইম : ১১:০৭:০২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯

চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরসহ দেশের মধ্যাঞ্চলে কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশ, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি

সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায়, সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত যশোরে
নিজস্ব প্রতিবেদক:
মেঘলা ও কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশ থেকে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরসহ দেশের মধ্যাঞ্চলে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। এই বৃষ্টি শেষে শীত আরও জেঁকে বসবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আজ শুক্রবারও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। শীত ঋতুতে এই অকাল বর্ষণের পিছু পিছু আসছে তীব্র আকারের শৈত্যপ্রবাহ। আরও জেঁকে বসবে শীত। দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, ঢাকা বিভাগসহ মধ্যাঞ্চলে হাঁড় কাঁপানো প্রচণ্ড শীত ও ঘন কুয়াশা পড়তে পারে আসছে সপ্তাহ থেকেই। এতে করে থমকে যেতে পারে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। জানুয়ারির গোড়াতে তীব্র শৈত্যপ্রবাহে পারদ ৪ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও নিচে নেমে যেতে পারে। বাড়তে পারে কুয়াশার ঘনত্ব।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘন কুয়াশা আর মেঘের সাথে হালকা কিংবা ঝিরি ঝিরি ইলশে গুঁড়ি বৃষ্টিপাতের কারণে অনেক জেলায় জনজীবনে ঘটে ছন্দপতন। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় যশোরে ৫ মিলিমিটার। এ সময় ঢাকা, ফরিদপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগ ও খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরে হালকা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিসহ দেশের কয়েক জায়গায় অস্থায়ী হালকা বৃষ্টি ঝরেছে। গতকাল সকালে দেশের সর্ব-উত্তরের জনপদ তেঁতুলিয়ায় ঘন কুয়াশা ও কনকনে হাওয়ার মধ্যেই পারদ নেমে আসে ৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। যা চলতি শীত মৌসুমে দেশের এ যাবৎ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আগের দিন (বুধবার) তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রার ছিল ৬.২ ডিগ্রি সে.। গতকাল কক্সবাজারে ছিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৬.৮ ডিগ্রি সে.। ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২১.৮ এবং সর্বনিম্ন ১২.৫ ডিগ্রি সে.। চট্টগ্রামে তাপমাত্রা ছিল সর্বোচ্চ ২৬.৬ এবং সর্বনিম্ন ১৩.৫ ডিগ্রি সে.। পৌষের প্রথম দুই-তিন দিন পর থেকেই অব্যাহত ঘন কুয়াশার সঙ্গে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ, সেই সঙ্গে ধুলোবালুর দূষণের কারণে ঘরে ঘরে এখন ঠান্ডাজনিত রোগী। হাসপাতাল-ক্লিনিক-ডাক্তারের চেম্বারেও বেড়েছে রোগীর ভিড়। সর্দি-কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, চর্মরোগসহ হরেক রোগব্যাধিতে অসুস্থ হয়ে পড়ছে অনেকেই।
এদিকে, আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, খুলনা, বরিশাল, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় হালকা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে সারা দেশে ৪৮ লাখ ৫২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের শৈত্যপ্রবাহে বীজতলা রক্ষার্থে পরামর্শ দিচ্ছেন। কৃষি কর্মকর্তারা জানান, শৈত্যপ্রবাহের সময় বীজতলা স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢেকে দেওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে কৃষকদের। শৈত্যপ্রবাহে মাঠে মাঠে কৃষিকাজকর্মের গতি অনেকটা কমে গেছে। সবজি, ফুল ও অন্যান্য কৃষিকাজে কৃষকদের মাঠে উপস্থিতি ঘটছে কম।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বর্তমানে আকাশ মেঘলা রয়েছে। এ কারণে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়বে। তবে বৃষ্টি শেষে শুক্রবার রাত থেকে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণের প্রভাবে এমনিতেই সারা দিনে দেখা মেলেনি সূর্যের। রাতভর ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাসে শীতের প্রকোপ বেড়েছে বলে জানান তারা। এদিকে, এই হাড়-কাঁপানো শীতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন-আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। মৃদু শৈত্য প্রবাহে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহে আকাশে মেঘ ছিল বলে তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছিল। আকাশে মেঘ থাকলে তাপমাত্রা সাধারণত কিছুটা বৃদ্ধি পায়।