ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

দারিদ্র্যের ‘ইতিহাস হওয়া’ কি আসলেই সম্ভব?

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২০
  • / ২০৮ বার পড়া হয়েছে

জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের একটি বক্তব্য উদ্ধৃতি করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবির বলেন, মানুষ কিন্তু সম্পদ ভাগাভাগি করে না। সম্পদ যদি সবাই ভাগাভাগি করতাম, যেখানে প্রয়োজন সেখানে দিতাম; সেটা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে হোক, সামাজিকভাবে হোক, পারিবারিকভাবে হোক আর ব্যক্তিগতভাবে হোক; তাহলে কিন্তু আমাদের দারিদ্র্য ইতিহাসে চলে যেতো। শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এলজিইডি ভবনে প্রাইম ব্যাংকের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। গত এক দশক ধরে বাংলাদেশ পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে রেকর্ড গড়ে চলছে। বিভিন্ন পরিসংখ্যান অনুসারে গড়ে পৌনে সাত শতাংশ হারে বেড়েছে অর্থনীতির আয়তন। যা যে কোনো তথ্য-বিশ্লেষনের বিচারে বিস্ময়ের। এরআগে চীন, ভারত কিংবা ভিয়েতনাম ছাড়া এমন সাফল্য আর কেউ দেখাতে পারেনি। দেশের অর্থনীতির এই অগ্রযাত্রা খুব কাছ থেকে দেখেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর। তবে পরিসংখ্যানের উল্টা দিকে যে তথ্য আছে, তাও হয়তো দেখেছেন গর্ভনর। আর তা হচ্ছে, প্রবৃদ্ধি বাড়লেও বৈষম্য পৌঁছেছে নতুন উচ্চতায়। বিশ্বব্যাংকসহ নানা প্রতিষ্ঠানের দৃষ্টিতে দেশে প্রবৃদ্ধি বাড়লেও তা থেকে সুফল পাচ্ছে না গরিব মানুষ। দারিদ্র্যের হার কমলেও নেই আগের মতো গতি। কাজের সুযোগও বাড়ছে না প্রত্যাশা অনুযায়ী। বিভিন্ন পরিসংখ্যান মতে, অর্থবছর ২০১৭ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত, প্রবৃদ্ধি ধারাবাহিকভাবে বাড়লেও কমেছে শ্রমমজুরি বৃদ্ধির হার। উল্টো বেড়েছে পুঁজি বিনিয়োগ থেকে মুনাফা। তার অর্থ হলো এই প্রবৃদ্ধি থেকে গরিব মানুষের তুলনায় সুবিধা নিয়েছেন ধনীরা। অন্যদিকে, নতুন কাজের সুযোগ বাড়াতেও ছিল না কার্যকর ভূমিকা। দেশের ধনী বৃদ্ধির হার যেমন রকেট গতিতে বাড়ছে, তেমনি গরিব মানুষের বসবাসে বিশ্বে পঞ্চম বাংলাদেশ। এইরকম দ্বি-মূখী অবস্থা পরিবর্তন আসলে সময়ের দাবি। সবকিছু মিলিয়ে দেশের উন্নয়ন চিত্রের অবস্থা ও গর্ভনরসহ আরো দায়িত্বশীল পদে যারা আছেন তাদের সবার কার্যকর পদক্ষেপে দেশে প্রকৃত পরিবর্তন আসবে বলে আমাদের আশাবাদ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

দারিদ্র্যের ‘ইতিহাস হওয়া’ কি আসলেই সম্ভব?

আপলোড টাইম : ০৯:৫৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২০

জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের একটি বক্তব্য উদ্ধৃতি করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবির বলেন, মানুষ কিন্তু সম্পদ ভাগাভাগি করে না। সম্পদ যদি সবাই ভাগাভাগি করতাম, যেখানে প্রয়োজন সেখানে দিতাম; সেটা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে হোক, সামাজিকভাবে হোক, পারিবারিকভাবে হোক আর ব্যক্তিগতভাবে হোক; তাহলে কিন্তু আমাদের দারিদ্র্য ইতিহাসে চলে যেতো। শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এলজিইডি ভবনে প্রাইম ব্যাংকের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। গত এক দশক ধরে বাংলাদেশ পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে রেকর্ড গড়ে চলছে। বিভিন্ন পরিসংখ্যান অনুসারে গড়ে পৌনে সাত শতাংশ হারে বেড়েছে অর্থনীতির আয়তন। যা যে কোনো তথ্য-বিশ্লেষনের বিচারে বিস্ময়ের। এরআগে চীন, ভারত কিংবা ভিয়েতনাম ছাড়া এমন সাফল্য আর কেউ দেখাতে পারেনি। দেশের অর্থনীতির এই অগ্রযাত্রা খুব কাছ থেকে দেখেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর। তবে পরিসংখ্যানের উল্টা দিকে যে তথ্য আছে, তাও হয়তো দেখেছেন গর্ভনর। আর তা হচ্ছে, প্রবৃদ্ধি বাড়লেও বৈষম্য পৌঁছেছে নতুন উচ্চতায়। বিশ্বব্যাংকসহ নানা প্রতিষ্ঠানের দৃষ্টিতে দেশে প্রবৃদ্ধি বাড়লেও তা থেকে সুফল পাচ্ছে না গরিব মানুষ। দারিদ্র্যের হার কমলেও নেই আগের মতো গতি। কাজের সুযোগও বাড়ছে না প্রত্যাশা অনুযায়ী। বিভিন্ন পরিসংখ্যান মতে, অর্থবছর ২০১৭ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত, প্রবৃদ্ধি ধারাবাহিকভাবে বাড়লেও কমেছে শ্রমমজুরি বৃদ্ধির হার। উল্টো বেড়েছে পুঁজি বিনিয়োগ থেকে মুনাফা। তার অর্থ হলো এই প্রবৃদ্ধি থেকে গরিব মানুষের তুলনায় সুবিধা নিয়েছেন ধনীরা। অন্যদিকে, নতুন কাজের সুযোগ বাড়াতেও ছিল না কার্যকর ভূমিকা। দেশের ধনী বৃদ্ধির হার যেমন রকেট গতিতে বাড়ছে, তেমনি গরিব মানুষের বসবাসে বিশ্বে পঞ্চম বাংলাদেশ। এইরকম দ্বি-মূখী অবস্থা পরিবর্তন আসলে সময়ের দাবি। সবকিছু মিলিয়ে দেশের উন্নয়ন চিত্রের অবস্থা ও গর্ভনরসহ আরো দায়িত্বশীল পদে যারা আছেন তাদের সবার কার্যকর পদক্ষেপে দেশে প্রকৃত পরিবর্তন আসবে বলে আমাদের আশাবাদ।