ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

দামুড়হুদা বৃক্ষমেলা থেকে অপহৃত স্কুলছাত্র নিখোঁজের ৩২ দিন পর নির্ভরযোগ্য সূত্রে ঝিনাইদহ র‌্যাবের চুয়াডাঙ্গায় অভিযান সেপটি ট্যাংকি থেকে অপহৃত সজীবের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার : ছেলে হারিয়ে মা বাকরুদ্ধ হত্যাকাণ্ডে জড়িত লাইট কারখানার মালিক রাকিব মেম্বার ধরাছোঁয়ার বাইরে : রাকিব মেম্বারের শ্বশুড় শ্বাশুড়িসহ গ্রেফতার ৩

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৪২:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬
  • / ৩০৭ বার পড়া হয়েছে

cwtwfgনিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলায় ২৯ জুলাই কৃষি মেলা  থেকে  অপহৃত স্কুলছাত্র মাহফুজ আলম  সজিবের লাশ ৩২ দিন পর উদ্ধার করেছে ঝিনাইদহ র‌্যাব-৬। গতকাল বুধবার সকাল ১১.৩০টায় চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সিঅ্যান্ডবি পাড়ার একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে তার অর্ধগলিত  লাশ উদ্ধার করা হয়।
সজিব দামুড়হুদা উপজেলার দশমীপাড়ার মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে এবং চুয়াডাঙ্গা ভি জে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল।  ঝিনাইদহ র‌্যাব-৬ এর অধিনায়ক মেজর মনির আহম্মেদ জানান, সজিব অপহরণের পর থেকেই তাকে উদ্ধারে অভিযানে নামে র‌্যাব। গত মঙ্গলবার রাতে র‌্যাব একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে  নিশ্চিত হয় যে, চুয়াডাঙ্গার আলুকদিয়া ইউপি মেম্বার রকিবুল ইসলামের চুয়াডাঙ্গা শহরের সিঅ্যান্ডবি পাড়ার লাইট কারখানার সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে সজিবকে হত্যা করে লাশ গুম করে রাখা হয়েছে। এরপরই রাত ৪টা থেকে সজীবের মরদেহ উদ্ধারের অভিযানে নামে র‌্যাব-৬ এবং বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের সহযোগিতায় লাশ উদ্ধার করে।
অধিনায়ক মেজর মনির আহম্মেদ আরো জানান, সজিবকে অপহরণের দু/একদিনের মধ্যেই তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। লাইট কারখানার মালিক চুয়াডাঙ্গা সদরের আরুকদিয়ার ঈমান আলির ছেলে রাকিব মেম্বার (২৮) এবং তার ছোট ভাই আল-আমিন(২৫), দামুড়হুদা থানার উজিরপুর গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে মামুন (২২), দামুড়হুদা ব্রিজ পাড়ার আব্দুল কাদেরের ছেলে শাকিল (২১), চুয়াডাঙ্গা শহরের সিএ্যান্ডবি পাড়ার মৃত হামিদুল ইসলামের ছেলে সবুজ (২৩), হাটকালুগঞ্জের ওয়াজেদ আলীর ছেলে পিনু (২৯) কৌশলে আতœগোপন করেছে। তাদের গ্রেফতারের জোর অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান এই কর্মকর্তা। তিনি আরো বলেন পরবর্তীতে উক্ত ঘটনায়  লাইট কারখানার বাড়ী মালিক ও রাকিব মেম্বারের শুশুর, শাশুড়ী ও শালা চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার কেদারগঞ্জ সিএন্ডবিপাড়ার মৃত আব্দুল গনির ছেলে কুরবান আলী(৬৫) তার স্ত্রী মোছাঃ জুলেখা বেগম(৫৫) ও তার মতিয়ার রহমানকে(৩২) সন্দেহজনকভাবে গ্রেফতার করে দামুড়হুদা থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। এদিকে সজীবের লাশ তার নিজ গ্রামে পৌছাঁলে শোকের মাতম শুরু হয়। ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ মা বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। গতকালই তার নিজ গ্রামে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
যেভাবে অপহরণ সজীব: দামুড়হুদা উপজেলা প্রাঙ্গনে কৃষি মেলা গত জুলাই মাসের ২৯ তারিখে স্কুলছাত্র মাহফুজ আলম সজিব অপহরণ হয়। এর ৩দিন পরে ২০লাখ টাকা মুক্তিপণ অপহরণকারীরা সজীবের পরিবারের কাছে দাবী করে। মুক্তিপণের টাকা সজীবের পরিবার অপহরণকারীদের দিয়েছিলো কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে অপহরণের ৩২দিন পরে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সিঅ্যান্ডবি পাড়ার একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে তার অর্ধগলিত  লাশ উদ্ধার জনমনে নানান প্রশ্নের যোগান দিয়েছে।
সাধারণ মানুষের গুঞ্জন: অপহরণ হওয়া সজীবের লাশ উদ্ধার হওয়ার পর থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এলাকায় সরেজমিনে গেলে অনেকে অনেক কথা বলতে থাকে। অনেকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় অনেকে বলেন, নিহত স্কুলছাত্র সজীবের বাবা তার মায়ের পরোকিয়ার জন্য বছর খানেক আগে আত্মহত্যা করে। এরপর থেকে সজীব তার নানাবাড়ী থেকে ভিজে স্কুলে পড়াশোনা করতো। সজীবের বাবার মৃত্যুরপরে সজীবের সাথে তার মায়ের মাঝে মাঝে ঝগড়া বাধতো। সঝেিবর বাবা মৃত্যুর আগে নিজের সব সম্পত্তি সজীবের নামে উইল করে গেছেন। মায়ের পরোকিয়া নাকি সম্পত্তি বিষয়টি সম্পর্কে কেউ মুখ খুলতে রাজী হয়নি। তবে সজীবের অপহরণ এবং লাশ গুমের পিছনে কার হাত আর সেটা কি উদ্যোশে সেটাও পরিস্কার হওয়া যায়নি।
পরিবারের দাবী নিখোঁজ: ঘটনার পর থেকে হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহভাজন লাইট কারখানার মালিক চুয়াডাঙ্গা সদরের আলুকদিয়ার ঈমান আলির ছেলে রাকিব মেম্বার (২৮) এবং তার ছোট ভাই আল-আমিন(২৫), দামুড়হুদা থানার উজিরপুর গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে মামুন (২২), দামুড়হুদা ব্রিজ পাড়ার আব্দুল কাদেরের ছেলে শাকিল (২১), চুয়াডাঙ্গা শহরের সিএ্যান্ডবি পাড়ার মৃত হামিদুল ইসলামের ছেলে সবুজ (২৩), হাটকালুগঞ্জের ওয়াজেদ আলীর ছেলে পিনু (২৯) কৌশঁলে আত্মগোপন করেছে বলে ঝিনাইদহ র‌্যাব-৬ এর অধিনায়ক মেজর মনির আহম্মেদ সাংবাদিকদের জানান। অন্যদিকে হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহভাজনদের পরিবারের দাবী তাদের সন্তানদের মঙ্গলবার রাত থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহভাজন লাইট কারখানার মালিক চুয়াডাঙ্গা সদরের আলুকদিয়ার ঈমান আলির ছেলে রাকিব মেম্বারের স্ত্রীর দাবী তার স্বামী নিখোঁজ মঙ্গলবার রাত থেকে নিখোজ রয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

দামুড়হুদা বৃক্ষমেলা থেকে অপহৃত স্কুলছাত্র নিখোঁজের ৩২ দিন পর নির্ভরযোগ্য সূত্রে ঝিনাইদহ র‌্যাবের চুয়াডাঙ্গায় অভিযান সেপটি ট্যাংকি থেকে অপহৃত সজীবের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার : ছেলে হারিয়ে মা বাকরুদ্ধ হত্যাকাণ্ডে জড়িত লাইট কারখানার মালিক রাকিব মেম্বার ধরাছোঁয়ার বাইরে : রাকিব মেম্বারের শ্বশুড় শ্বাশুড়িসহ গ্রেফতার ৩

আপলোড টাইম : ১১:৪২:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

cwtwfgনিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলায় ২৯ জুলাই কৃষি মেলা  থেকে  অপহৃত স্কুলছাত্র মাহফুজ আলম  সজিবের লাশ ৩২ দিন পর উদ্ধার করেছে ঝিনাইদহ র‌্যাব-৬। গতকাল বুধবার সকাল ১১.৩০টায় চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সিঅ্যান্ডবি পাড়ার একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে তার অর্ধগলিত  লাশ উদ্ধার করা হয়।
সজিব দামুড়হুদা উপজেলার দশমীপাড়ার মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে এবং চুয়াডাঙ্গা ভি জে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল।  ঝিনাইদহ র‌্যাব-৬ এর অধিনায়ক মেজর মনির আহম্মেদ জানান, সজিব অপহরণের পর থেকেই তাকে উদ্ধারে অভিযানে নামে র‌্যাব। গত মঙ্গলবার রাতে র‌্যাব একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে  নিশ্চিত হয় যে, চুয়াডাঙ্গার আলুকদিয়া ইউপি মেম্বার রকিবুল ইসলামের চুয়াডাঙ্গা শহরের সিঅ্যান্ডবি পাড়ার লাইট কারখানার সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে সজিবকে হত্যা করে লাশ গুম করে রাখা হয়েছে। এরপরই রাত ৪টা থেকে সজীবের মরদেহ উদ্ধারের অভিযানে নামে র‌্যাব-৬ এবং বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের সহযোগিতায় লাশ উদ্ধার করে।
অধিনায়ক মেজর মনির আহম্মেদ আরো জানান, সজিবকে অপহরণের দু/একদিনের মধ্যেই তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। লাইট কারখানার মালিক চুয়াডাঙ্গা সদরের আরুকদিয়ার ঈমান আলির ছেলে রাকিব মেম্বার (২৮) এবং তার ছোট ভাই আল-আমিন(২৫), দামুড়হুদা থানার উজিরপুর গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে মামুন (২২), দামুড়হুদা ব্রিজ পাড়ার আব্দুল কাদেরের ছেলে শাকিল (২১), চুয়াডাঙ্গা শহরের সিএ্যান্ডবি পাড়ার মৃত হামিদুল ইসলামের ছেলে সবুজ (২৩), হাটকালুগঞ্জের ওয়াজেদ আলীর ছেলে পিনু (২৯) কৌশলে আতœগোপন করেছে। তাদের গ্রেফতারের জোর অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান এই কর্মকর্তা। তিনি আরো বলেন পরবর্তীতে উক্ত ঘটনায়  লাইট কারখানার বাড়ী মালিক ও রাকিব মেম্বারের শুশুর, শাশুড়ী ও শালা চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার কেদারগঞ্জ সিএন্ডবিপাড়ার মৃত আব্দুল গনির ছেলে কুরবান আলী(৬৫) তার স্ত্রী মোছাঃ জুলেখা বেগম(৫৫) ও তার মতিয়ার রহমানকে(৩২) সন্দেহজনকভাবে গ্রেফতার করে দামুড়হুদা থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। এদিকে সজীবের লাশ তার নিজ গ্রামে পৌছাঁলে শোকের মাতম শুরু হয়। ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ মা বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। গতকালই তার নিজ গ্রামে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
যেভাবে অপহরণ সজীব: দামুড়হুদা উপজেলা প্রাঙ্গনে কৃষি মেলা গত জুলাই মাসের ২৯ তারিখে স্কুলছাত্র মাহফুজ আলম সজিব অপহরণ হয়। এর ৩দিন পরে ২০লাখ টাকা মুক্তিপণ অপহরণকারীরা সজীবের পরিবারের কাছে দাবী করে। মুক্তিপণের টাকা সজীবের পরিবার অপহরণকারীদের দিয়েছিলো কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে অপহরণের ৩২দিন পরে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সিঅ্যান্ডবি পাড়ার একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে তার অর্ধগলিত  লাশ উদ্ধার জনমনে নানান প্রশ্নের যোগান দিয়েছে।
সাধারণ মানুষের গুঞ্জন: অপহরণ হওয়া সজীবের লাশ উদ্ধার হওয়ার পর থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এলাকায় সরেজমিনে গেলে অনেকে অনেক কথা বলতে থাকে। অনেকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় অনেকে বলেন, নিহত স্কুলছাত্র সজীবের বাবা তার মায়ের পরোকিয়ার জন্য বছর খানেক আগে আত্মহত্যা করে। এরপর থেকে সজীব তার নানাবাড়ী থেকে ভিজে স্কুলে পড়াশোনা করতো। সজীবের বাবার মৃত্যুরপরে সজীবের সাথে তার মায়ের মাঝে মাঝে ঝগড়া বাধতো। সঝেিবর বাবা মৃত্যুর আগে নিজের সব সম্পত্তি সজীবের নামে উইল করে গেছেন। মায়ের পরোকিয়া নাকি সম্পত্তি বিষয়টি সম্পর্কে কেউ মুখ খুলতে রাজী হয়নি। তবে সজীবের অপহরণ এবং লাশ গুমের পিছনে কার হাত আর সেটা কি উদ্যোশে সেটাও পরিস্কার হওয়া যায়নি।
পরিবারের দাবী নিখোঁজ: ঘটনার পর থেকে হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহভাজন লাইট কারখানার মালিক চুয়াডাঙ্গা সদরের আলুকদিয়ার ঈমান আলির ছেলে রাকিব মেম্বার (২৮) এবং তার ছোট ভাই আল-আমিন(২৫), দামুড়হুদা থানার উজিরপুর গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে মামুন (২২), দামুড়হুদা ব্রিজ পাড়ার আব্দুল কাদেরের ছেলে শাকিল (২১), চুয়াডাঙ্গা শহরের সিএ্যান্ডবি পাড়ার মৃত হামিদুল ইসলামের ছেলে সবুজ (২৩), হাটকালুগঞ্জের ওয়াজেদ আলীর ছেলে পিনু (২৯) কৌশঁলে আত্মগোপন করেছে বলে ঝিনাইদহ র‌্যাব-৬ এর অধিনায়ক মেজর মনির আহম্মেদ সাংবাদিকদের জানান। অন্যদিকে হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহভাজনদের পরিবারের দাবী তাদের সন্তানদের মঙ্গলবার রাত থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহভাজন লাইট কারখানার মালিক চুয়াডাঙ্গা সদরের আলুকদিয়ার ঈমান আলির ছেলে রাকিব মেম্বারের স্ত্রীর দাবী তার স্বামী নিখোঁজ মঙ্গলবার রাত থেকে নিখোজ রয়েছে।