ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

দামুড়হুদা গোপালপুরে চিকিৎসা নিয়ে বাণিজ্য

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:০৭:১২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল ২০১৭
  • / ৩২০ বার পড়া হয়েছে

unnamedভারত থেকে আসা কথিত ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এলাকাবাসির
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে চলছে অপচিকিৎসা ও অর্থবাণিজ্য। ভারতের নদীয়া জেলা থেকে আসা কথিত ডাক্তার ইমরান এই অপচিকিৎসা ও সরল মানুষকে ঠগিয়ে অর্থবাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে এলাকাবাসি। সেইসাথে গরীব অসহায় রোগীদের কাছ থেকে চিকিৎসার নামে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিরুদ্ধে এবং দ্রুত অপচিকিৎসার হাত থেকে সাধারন মানুষকে রক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা। এ অভিযোগের সত্যতা অনুসন্ধানের জন্য ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানা যায়, বাংলাদেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতিপত্র ছাড়া ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা ভিজিটে রোগী দেখছেন চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন স্থানে। এর মধ্য উল্লেখযোগ্য স্থান, দামুড়হুদা উপজেলার গোপালপুর গ্রাম, আলমডাঙ্গা উপজেলার বেতবাড়িয়া, ভাংবাড়িয়াসহ আশপাশের এলাকাতে। রোগীদের বক্তব্য, রামনগর স্কুলের দফতরি আহসান চাচা জানান, তিনি এবং তার স্ত্রী মোছাঃ রমেছা বেগমের জন্য কথিত ডাক্তারের কাছ থেকে বিশেষ একটা রোগের জন্য ঔষধ নেয় পাঁচ হাজার টাকার। আহসান চাচার অভিযোগ এই ঔষধ সেবনে তিনি তার স্ত্রীর কোন উপকার হয়নি বরং তার স্ত্রী রমেছা এই ঔষধ সেবনে আরো অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং তাকে রাজশাহী মেডিকেল পর্যন্ত নিতে হয়। গোপালপুর গ্রামের দক্ষিপাড়ার ইসলামের স্ত্রী শেফালি খাতুন জানান, তিনি এবং তার ছেলে আরিফের জন্য কথিত ডাক্তারের কাছ থেকে ঔষধ নেয় পাঁচ হাজার টাকার, তিনিও একই অভিযোগ করেন যে ঔষধ সেবনে কোন ফল পাইনি। এরপর কথা হয় গোপালপুর দক্ষিপাড়ার লাড্ডুর সাথে। তার অভিযোগ তিনিও অন্যদের মতো দুই হাজার পাঁচশত টাকার ঔষধ নেয়। যা সেবন করে তার শরীর ফুলে যায় এবং তিনি প্রায় সাতদিন যাবৎ শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। আরো কথা হয় গোপালপুর গ্রামের হানেপের ছেলে স্বপনের সাথে, তিনি জানান তার পিতা হানেপের জন্য দুই হাজার পাঁচশত টাকার ঔষধ নেয়, তাতে কোন উপকার হয়নি বলে তিনি দাবি করেন। স্বপন আরো জানান, তার খালু খাদিমপুর গ্রামের পচা ঔষধ নেয় দুই হাজার টাকার। তিনিও একই অভিযোগ করেন, ঔষধ সেবনে কোন কাজ হয়নি। এছাড়াও গোপালপুর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক ডাঃ ছোলায়মান হক ছেলে জানান, তার একটা বিশেষ রোগের জন্য তিনি নিজেও এই ঔষধ সেবন করেন। কিন্তু কোন উপকার পাইনি বরং পার্শপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, যত দ্রুত সম্ভব এ ধরনের অপচিকিৎসা বন্ধ করা দরকার। পুরো এলাকা ঘুরে দেখা যায় এ ধরনের অভিযোগ প্রায় অনেকের। কথিত ডাক্তার ইমরান বলেন, সে ভারতের নদীয়া জেলা থেকে বাংলাদেশে বেড়াতে এসেছে। সে আরো জানায়, গোপালপুর গ্রামের কয়েকজনের অনুরোধে রোগী দেখা শুরু করে এখন সে ৩০০-৫০০ টাকা ভিজিটে গোপালপুরসহ আশপাশ এলাকার সব রোগের চিকিৎসা করছে। এবং চোরাই পথে ভারত থেকে প্রয়োজনীয় ঔষধ এনে রোগীদের সরবরাহ করছে।
রোগীদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইমরান বলেন, আমি পাশ করা ডাক্তার নই। তাই বাংলাদেশ মেডিকেল কাউন্সিলের সদস্যও নই। তবে আমি ন্যাচারাল পাতি ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা করি। আমার দেওয়া ঔষধে ৩০-৪০ দিনের মধ্য কাজ করবে। এত অভিযোগের পরও কিভাবে আইনের চোখ ফাকি কোন বাধা বিপত্তি ছাড়া চিকিৎসা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা অনতিবিলম্বে ভুয়া এই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করে সাধারণ মানুষকে প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

দামুড়হুদা গোপালপুরে চিকিৎসা নিয়ে বাণিজ্য

আপলোড টাইম : ০৫:০৭:১২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল ২০১৭

unnamedভারত থেকে আসা কথিত ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এলাকাবাসির
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে চলছে অপচিকিৎসা ও অর্থবাণিজ্য। ভারতের নদীয়া জেলা থেকে আসা কথিত ডাক্তার ইমরান এই অপচিকিৎসা ও সরল মানুষকে ঠগিয়ে অর্থবাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে এলাকাবাসি। সেইসাথে গরীব অসহায় রোগীদের কাছ থেকে চিকিৎসার নামে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিরুদ্ধে এবং দ্রুত অপচিকিৎসার হাত থেকে সাধারন মানুষকে রক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা। এ অভিযোগের সত্যতা অনুসন্ধানের জন্য ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানা যায়, বাংলাদেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতিপত্র ছাড়া ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা ভিজিটে রোগী দেখছেন চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন স্থানে। এর মধ্য উল্লেখযোগ্য স্থান, দামুড়হুদা উপজেলার গোপালপুর গ্রাম, আলমডাঙ্গা উপজেলার বেতবাড়িয়া, ভাংবাড়িয়াসহ আশপাশের এলাকাতে। রোগীদের বক্তব্য, রামনগর স্কুলের দফতরি আহসান চাচা জানান, তিনি এবং তার স্ত্রী মোছাঃ রমেছা বেগমের জন্য কথিত ডাক্তারের কাছ থেকে বিশেষ একটা রোগের জন্য ঔষধ নেয় পাঁচ হাজার টাকার। আহসান চাচার অভিযোগ এই ঔষধ সেবনে তিনি তার স্ত্রীর কোন উপকার হয়নি বরং তার স্ত্রী রমেছা এই ঔষধ সেবনে আরো অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং তাকে রাজশাহী মেডিকেল পর্যন্ত নিতে হয়। গোপালপুর গ্রামের দক্ষিপাড়ার ইসলামের স্ত্রী শেফালি খাতুন জানান, তিনি এবং তার ছেলে আরিফের জন্য কথিত ডাক্তারের কাছ থেকে ঔষধ নেয় পাঁচ হাজার টাকার, তিনিও একই অভিযোগ করেন যে ঔষধ সেবনে কোন ফল পাইনি। এরপর কথা হয় গোপালপুর দক্ষিপাড়ার লাড্ডুর সাথে। তার অভিযোগ তিনিও অন্যদের মতো দুই হাজার পাঁচশত টাকার ঔষধ নেয়। যা সেবন করে তার শরীর ফুলে যায় এবং তিনি প্রায় সাতদিন যাবৎ শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। আরো কথা হয় গোপালপুর গ্রামের হানেপের ছেলে স্বপনের সাথে, তিনি জানান তার পিতা হানেপের জন্য দুই হাজার পাঁচশত টাকার ঔষধ নেয়, তাতে কোন উপকার হয়নি বলে তিনি দাবি করেন। স্বপন আরো জানান, তার খালু খাদিমপুর গ্রামের পচা ঔষধ নেয় দুই হাজার টাকার। তিনিও একই অভিযোগ করেন, ঔষধ সেবনে কোন কাজ হয়নি। এছাড়াও গোপালপুর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক ডাঃ ছোলায়মান হক ছেলে জানান, তার একটা বিশেষ রোগের জন্য তিনি নিজেও এই ঔষধ সেবন করেন। কিন্তু কোন উপকার পাইনি বরং পার্শপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, যত দ্রুত সম্ভব এ ধরনের অপচিকিৎসা বন্ধ করা দরকার। পুরো এলাকা ঘুরে দেখা যায় এ ধরনের অভিযোগ প্রায় অনেকের। কথিত ডাক্তার ইমরান বলেন, সে ভারতের নদীয়া জেলা থেকে বাংলাদেশে বেড়াতে এসেছে। সে আরো জানায়, গোপালপুর গ্রামের কয়েকজনের অনুরোধে রোগী দেখা শুরু করে এখন সে ৩০০-৫০০ টাকা ভিজিটে গোপালপুরসহ আশপাশ এলাকার সব রোগের চিকিৎসা করছে। এবং চোরাই পথে ভারত থেকে প্রয়োজনীয় ঔষধ এনে রোগীদের সরবরাহ করছে।
রোগীদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইমরান বলেন, আমি পাশ করা ডাক্তার নই। তাই বাংলাদেশ মেডিকেল কাউন্সিলের সদস্যও নই। তবে আমি ন্যাচারাল পাতি ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা করি। আমার দেওয়া ঔষধে ৩০-৪০ দিনের মধ্য কাজ করবে। এত অভিযোগের পরও কিভাবে আইনের চোখ ফাকি কোন বাধা বিপত্তি ছাড়া চিকিৎসা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা অনতিবিলম্বে ভুয়া এই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করে সাধারণ মানুষকে প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেছে।